Ajker Patrika

বিনা মূল্যের বই বিতরণে টাকা আদায়ের অভিযোগ

ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি
আপডেট : ১০ জানুয়ারি ২০২৩, ১০: ১৪
বিনা মূল্যের বই বিতরণে টাকা আদায়ের অভিযোগ

নীলফামারীর ডিমলার ডালিয়া চাপানি উচ্চবিদ্যালয়ে নতুন বই বিতরণে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। তবে প্রধান শিক্ষকের দাবি, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ভর্তি ও সেশন ফি বাবদ ৫০০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে। বইয়ের জন্য কোনো টাকা নেওয়া হয়নি। 

গতকাল রোববার দুপুরে ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের মাঠে কয়েকজন শিক্ষার্থী বই নিতে এসে খালি হাতে ফেরত যাচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পাঁচ থেকে সাতজন শিক্ষার্থী অভিযোগ করে, প্রধান শিক্ষক ৫০০ করে টাকা নিয়ে নতুন বাকি বইগুলো দিচ্ছেন। তারা কয়েক দিন নতুন বই নিতে এলেও টাকা না থাকায় বই পায়নি।

ডালিয়া গ্রামের অভিভাবক সুশীল চন্দ্র রায় বলেন, তাঁর মেয়েকে ভর্তি ও ছেলের এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ করতে স্কুলে যান। তখন জানতে পারেন, বই নিতে হলে ৫০০ টাকা লাগবে। আর ফরম পূরণের জন্য লাগবে ২ হাজার ২০০ টাকা। উপায় না দেখে প্রতিবেশী এক দাদন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে মাসিক ৩০০ টাকা হারে সুদ দেওয়ার শর্তে ৩ হাজার টাকা ধার নেন তিনি। 

সুশীল চন্দ্র রায় বলেন, ‘শুনেছি, সরকার বই ফ্রি দিচ্ছে। তাহলে আমার কাছ থেকে টাকা নিচ্ছে কেন? আমি দিনমজুর মানুষ। দিন আনি দিন খাই। অথচ আমার ছেলেমেয়ে উপবৃত্তির টাকাও পায়নি। এত টাকা একসঙ্গে জোগাড় করা কি আমার পক্ষে সম্ভব!’

সন্ধ্যা রানীসহ কয়েকজন অভিভাবক অভিযোগ করেন, সারা দেশের শিক্ষার্থীরা ১ জানুয়ারি নতুন বই পেয়ে আনন্দ করেছে। তবে ডালিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। সরকার বিনা মূল্যে বই দিচ্ছে। কিন্তু প্রধান শিক্ষক টাকা ছাড়া বই দিচ্ছেন না। 

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা বলেন, ভর্তি ও সেশন ফি বাবদ টাকা আদায়ের পর শিক্ষার্থীদের কাছে নতুন বই বিতরণ করা হয়। সেশন ফি না নিয়ে বই দিলে শিক্ষার্থীরা বই নিয়ে অন্য বিদ্যালয়ে চলে যায়। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডালিয়া চাপানি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হামিদ আজাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ভর্তি ও সেশন ফি বাবদ ৫০০ টাকা নিয়েছি। নতুন বইয়ের জন্য কোনো টাকা নেওয়া হয়নি। বই উৎসবের দিন যারা আসতে পারেনি, শুধু তাদের কাছ থেকে সেশন ফি বাবদ ৫০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে।’ 

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল হালিম বলেন, বর্তমান সরকার ছাত্র-ছাত্রীদের বিনা মূল্যে বই দিচ্ছে। সরকারি বই বিতরণ নীতিমালা অনুযায়ী বিতরণের জন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোনো অর্থ নেওয়ার সুযোগ নেই। যদি কেউ নিয়ে থাকে, তাহলে তা বেআইনি ও অপরাধ। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বেলায়েত হোসেন বলেন, বিনা মূল্যের বই দিতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্ত করতে বলা হয়েছে। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ সময় তিনি দাদন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা নিয়ে ফরম পূরণ করা শিক্ষার্থীকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত