Ajker Patrika

সাজানো কনের সঙ্গে অশ্লীল ছবি তুলে ব্ল্যাকমেল, চক্রের মূল হোতা গ্রেপ্তার 

নীলফামারী প্রতিনিধি
আপডেট : ৩০ অক্টোবর ২০২১, ১৪: ৫১
সাজানো কনের সঙ্গে অশ্লীল ছবি তুলে ব্ল্যাকমেল, চক্রের মূল হোতা গ্রেপ্তার 

কনে দেখানোর জন্য রংপুর থেকে সৈয়দপুরে ডাকা হয় যুবককে। এরপর বাসায় নিয়ে একাধিক নারীকে পাশে বসিয়ে জোর করে তোলা হয় অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির ছবি। একপর্যায়ে ছবির বিষয় নিয়ে শুরু হয় ব্ল্যাকমেল। মীমাংসা করতে দাবি করা হয় এক লাখ টাকা। এরপর সঙ্গে থাকা টাকা, ডেবিড কার্ডের টাকা—সব নিয়ে বিদায় করা হয় যুবককে। এই প্রতারণা ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী নাজিমুল ইসলাম ওরফে টাইগারকে (৫১) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। টাইগার ওই প্রতারক চক্রের মূল হোতা। তিনি নিজেকে গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করতেন বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন। 

গত বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটেছে নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের নিমবাগান এলাকায়। সেটি ছিল প্রতারক টাইগারের ভাড়া বাসায়। টাইগার নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের পাকা ধরা গ্রামের মকবার আলীর ছেলে। 

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রংপুরের পীরগাছা উপজেলার চালুনিয়া গ্রামের কামরুল হাসান দুলাল তার ছোট ভাই সাদ্দাম হোসেনের বিয়ের জন্য কনের খোঁজ করেন। বিষয়টি পাশের ঝিমিয়া গ্রামের ঘটক বাদল হোসেনকে জানালে তিনি প্রতারণার ফাঁদ পাতেন। তিনিও প্রতারক চক্রের সদস্য। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে সৈয়দপুরে কনে দেখানোর নামে দুলালকে ডেকে নেন ঘটক বাদল। শহরের নিমবাগান এলাকায় প্রতারক চক্রের প্রধান টাইগারের বাসাটিকে কনের বাসা দেখিয়ে ভেতরে বসানো হয়। এ সময় অজ্ঞাত চার-পাঁচজনের একটি দল দুই তরুণীকে দুলালের দুই পাশে বসিয়ে বিভিন্ন অশ্লীল অঙ্গভঙ্গিতে ছবি তোলা হয়। ছবি তোলার পর বিষয়টি মীমাংসার নামে টাইগারের স্ত্রী সহিদা খাতুন টাকা দাবি করেন দুলালের কাছে। এ সময় তাঁর কাছে থাকা ২২ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় প্রতারক চক্র। 

ঘটনা সম্পর্কে আরও জানা যায়, এ সময় ডিবি পুলিশের কর্মকর্তা পরিচয়ে সেখানে উপস্থিত হন ঘটনার মূল হোতা টাইগার। তিনি দুলালের কাছে বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য এক লাখ টাকা দাবি করেন। এতে অস্বীকৃতি জানালে বেদম মারধর করে পকেটে থাকা ডাচ-বাংলা ব্যাংকের এটিএম কার্ড বের করে নেন তিনি। নেওয়া হয় কার্ডের পাসওয়ার্ড। তাৎক্ষণিক প্রতারক চক্র শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের এটিএম বুথ থেকে তুলে নেয় ৫০ হাজার টাকা। এরপর রাত সাড়ে ৮টার দিকে ভয়ভীতি দেখিয়ে সৈয়দপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে কড়া পাহারায় রংপুরগামী বাসে তুলে দেয় দুলালকে। রাত ১২টার দিকে দুলাল সৈয়দপুর থানায় হাজির হয়ে পুলিশকে জানালে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নির্দেশনায় প্রতারক চক্রকে ধরতে মাঠে নামে পুলিশ। রাত ২টার দিকে শহরের চৌধুরী টাওয়ারের গ্রাউন্ড ফ্লোর থেকে গ্রেপ্তার করা হয় টাইগারকে। 

অভিযানে নেতৃত্বে থাকা থানার তদন্ত কর্মকর্তা খায়রুল আনাম বলেন, 'প্রযুক্তি ব্যবহার করে মামলার দুই ঘণ্টার মধ্যে মূল হোতাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। এ সময় তাঁর কাছ থেকে নগদ ৩৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।' 

সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসনাত খান বলেন, 'গ্রেপ্তারকৃত আসামি টাইগারের নামে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। তিনি প্রতারণা ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী। গতকাল শুক্রবার দুপুরে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। আর অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে।'

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত