রিমন রহমান ও তৌসিফ কাইয়ুম

রাজশাহী: ‘দুঃখিত! রাবিতে নিয়োগপ্রাপ্ত ছাত্রলীগের সংখ্যাটা ১২৫ নয়, ২০-২৫ জন! বাকিটা ধান্দা!’—এটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান খান নাহিদের ফেসবুক স্ট্যাটাস। মেয়াদকালের শেষ সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আবদুস সোবহানের নিয়োগ বাণিজ্য প্রসঙ্গে এভাবেই ক্ষোভ ঝেড়েছেন এই ছাত্রলীগ নেতা।
টানা দুই মেয়াদে উপাচার্যের দায়িত্ব পালন শেষে গত বৃহস্পতিবার পুলিশ পাহারায় ক্যাম্পাস ছেড়ে যান অধ্যাপক ড. আবদুস সোবহান। তবে যাওয়ার আগের দিনই (বুধবার) অস্থায়ী ভিত্তিতে ১৪১ জনকে নিয়োগ দেন। যার মধ্যে ১২৫ জন ছাত্রলীগের নেতাকর্মী রয়েছেন বলে গণমাধ্যমকে বলে যান তিনি।
তবে তালিকা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, নিয়োগ পাওয়াদের মধ্যে ছাত্রলীগের নেতাকর্মী এক-তৃতীয়াংশ। ছাত্রলীগের একাংশের দাবি, বিদায় বেলায় ছাত্রলীগের মাথায় কাঠাল ভেঙ্গে গেছেন চতুর এই উপাচার্য। ছাত্রলীগের নাম বললেও মূলত বড় অংকের লেনদেনের মাধ্যমে নিয়োগ বাণিজ্যই করে গেছেন তিনি।
নিয়োগ পেলেন যাঁরা: বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার মামুন-অর-রশিদ এডহক ভিত্তিতে ১৪১ জনের নিয়োগের কথা জানিয়েছেন গণমাধ্যমে। তবে তালিকায় দেখা গেছে, নিয়োগ পাওয়া ব্যক্তির সংখ্যা ১৩৭ জন। এর মধ্যে শিক্ষক পদে নয়জন, সেকশন অফিসার (কর্মকর্তা) পদে ১৯ জন, উচ্চমান সহকারী (তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী) পদে ৮৫ জন এবং নিম্নমান সহকারী (চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী) পদে ২৪ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
নিয়োগ তালিকা যাচাই করে দেখা গেছে, সেখানে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীর সংখ্যা ৪৫ জনের কম। চাকরি পাওয়া উল্লেখযোগ্য ছাত্রলীগ নেতাদের মধ্যে আছেন— রাবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মাহফুজ আল আমিন, মো. রাসেল, বোরহান উদ্দিন, সরওয়ার হোসেন সানোয়ার, তৌহিদ মেরাশেদ, সুরঞ্জিত প্রসাদ বৃত্ত, ফারুক হাসান, রাবি ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ইলিয়াস হোসেন, সাবেক ছাত্র বৃত্তি বিষয়ক সম্পাদক টগর মো. সালেহ ছাত্রলীগ নেতা আতিকুর রহমান সুমন, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রায়হান মাসুদ, তাজকিন পারভেজ সাতিল, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির রাবি শাখার সাবেক সভাপতি মতিউর রহমান, শিবিরের হামলায় পা হারানো ছাত্রলীগ নেতা আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শামীম প্রমুখ।
অ্যাডহকে নিয়োগ পাওয়াদের তালিকায় চারজন সাংবাদিকও আছেন। আছেন একজন সাংবাদিকের বোনও। নিয়োগ পাওয়া চার সাংবাদিক হলেন— দৈনিক ইত্তেফাকের রাজশাহীর স্টাফ রিপোর্টার মো. আনিসুজ্জামান, মোহনা টিভির ব্যুরো প্রধান মেহেদী হাসান, দৈনিক আমাদের সময়ের ব্যুরো প্রধান আমজাদ হোসেন শিমুল ও স্থানীয় দৈনিক পত্রিকা উত্তরা প্রতিদিনের সাংবাদিক এনায়েত করিম। এদের মধ্যে আনিসুজ্জামান রাজশাহী প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি। বর্তমানে তিনি রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের (আরইউজে) নির্বাহী সদস্য। মেহেদী হাসান শ্যামল রাজশাহী টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের (আরটিজেএ) সভাপতি। এনায়েত করিম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (রাবিসাস) সভাপতি ছিলেন। আমজাদ হোসেন শিমুলও বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা করতেন। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাবেক সদস্য আনিসুজ্জামানকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের সহকারী রেজিস্ট্রার করা হয়েছে। আর সাংবাদিক নেতা মেহেদী হাসান শ্যামলকে ঐতিহ্যবাহী বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘরের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এছাড়া দৈনিক সমকাল ও বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ডিবিসির রাজশাহী ব্যুরো প্রধান সৌরভ হাবিবের ছোট বোন সোনিয়া তাসমিনও চাকরি পেয়েছেন সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে।
তালিকা পর্যালোচনায় দেখা যায়, সংগীত বিভাগে প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ঋত্বিক মাহমুদ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের খন্দকার ফরহাদ হোসেনের (অনিক মাহমুদ) ছেলে। ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে নিয়োগ পাওয়া ইন্দ্রানিল মিশ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক এবং শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. চিত্তরঞ্জন মিশ্র’র ছেলে। ক্রপ সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক খাইরুল ইসলামের স্ত্রী ড. সাবিহা ইয়াসমিনকেও নিয়োগ দেয়া হয়েছে সেন্টার অব এক্সেলেন্স ইন টিচিং অ্যান্ড লার্নিংয়ের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে।
তাপসী রাবেয়া হলের আবাসিক শিক্ষিকা হিসেবে নিয়োগ পাওয়া ফারহানা একরাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক ও অধ্যাপক আব্দুল গণির স্ত্রী। একই হলের সহকারী আবাসিক শিক্ষিকা হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেন রিয়াজির স্ত্রী বুরুজ-ই জোবাইরা। অন্য যাঁরা নিয়োগ পেয়েছেন তাঁদের বিশেষ কোনো পরিচয় পাওয়া যাচ্ছে না। এদের টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
নিম্নপদেও ছাত্রলীগ: নিম্ন পদেও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের অনেককে চাকরি দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ সাবেক ও বর্তমান নেতা–কর্মীরা। ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন নিয়োগ পাওয়া নেতারাও। নিয়োগ পেয়েও কেউ কেউ নিম্নমানের এই পদে যোগ দেননি। সেকশন অফিসার পদে নিয়োগ পাওয়া ১৯ জনের মধ্যে ছাত্রলীগের মাত্র একজন রয়েছেন। নয়জন প্রভাষকের মধ্যে আছেন একজন। এ ছাড়া বাকি সবারই তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
রাবি ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সাদিকুল ইসলাম স্বপন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফরমেশন অ্যান্ড লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাশ করেন। তাকে নিম্নমান সহকারী পদে এডহকে নিয়োগ দেওয়ায় তিনি যোগদান করেননি। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ছাত্রলীগ নেতা–কর্মীদের সেকশন অফিসার হওয়ার যোগ্যতা থাকা স্বত্বেও উপাচার্য তাদের তৃতীয় শ্রেণির চাকরিতে নিয়োগ দিয়েছেন। এর মাধ্যমে তিনি ছাত্রলীগকে অপমান করেছেন। উপাচার্য তার স্বার্থ হাসিলের জন্য ছাত্রলীগকে ব্যবহার করেছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
নিয়োগ পাওয়া রাবি ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ইলিয়াস হোসেন বলেন, ‘ছাত্রলীগের নাম ভাঙানো হয়েছে। এখানে সাধারণ লোকজনকে বেশি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমাদের অনেক ত্যাগী নেতাকর্মীর নিয়োগ হয়নি।’ রাবি ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খালিদ হাসান বিপ্লব বলেন, ‘উপাচার্য শতাধিক ছাত্রলীগ নেতাকে চাকরি দেওয়ার যে দাবি করেছেন তা অসত্য। আমরা খোঁজ নিয়েছি সাবেক ও বর্তমান মিলিয়ে চল্লিশের কম নেতা–কর্মীর চাকরি হয়েছে।’ ছাত্রলীগের কথা বলে নন পলিটিক্যাল লোকজনকে চাকরি দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
এই নিয়োগ যেন না হয় তার জন্য ভিসির শেষ কর্মদিবসে ক্যাম্পাসে গিয়েছিলেন রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা। তখন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা তাঁদের ওপর চড়াও হয়েছিলেন। পুলিশের লাঠিচার্জ আর রাবি ছাত্রলীগের হামলায় মহানগর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাস থেকে পালিয়ে যেতেও বাধ্য হয়। নগর ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা বলছেন, ভিসি যে ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে বড় ব্যবসা করতে যাচ্ছেন, এটি তাঁরা আগেই আঁচ করতে পেরেছিলেন। তাই নিয়োগ ভণ্ডুল করতে তাঁরা ক্যাম্পাসে যান। কিন্তু তাঁদের ওপর হামলা হয়।
শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে জানে না বিভাগ: অ্যাডহক তালিকা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আটটি বিভাগ ও একটি ইনস্টিটিউটে সর্বমোট নয়জন শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে। এদের মধ্যে পাঁচটি বিভাগের সভাপতির সঙ্গে কথা হয় আজকের পত্রিকার। তাঁরা জানান, বিভাগের অ্যাডহকে শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে তাঁরা অবহিত নন। ইতিহাস বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মাহমুদা খাতুন বলেন, ‘গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে শুনেছি আমাদের বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তবে বিভাগের পক্ষ থেকে শিক্ষক চাওয়া হয়নি। এখন ক্যাম্পাস বন্ধ। আমাদের শিক্ষকও লাগছে না।’ একই সুরে কথা বললেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের সভাপতি দীনবন্ধু পাল।
নিয়োগ দিতে পদে পদে অনিয়ম
বিদায় বেলায় ভিসির দেয়া এই নিয়োগের পদে পদে অনিয়ম করা হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রাখলেও ভিসি সোবহান নিজের গায়ের জোরেই নিয়োগ দিয়ে গিয়েছেন। এই নিয়োগের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভাও হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারও নিয়োগপত্রে স্বাক্ষর করেননি। সূত্র জানায়, ভিসি সোবহান নিয়োগপত্রে স্বাক্ষর দেয়ার জন্য রেজিস্ট্রার আবদুস সালামকে চাপ দেন। কিন্তু আবদুস সালাম তা এড়িয়ে যান। পরে একজন ডেপুটি রেজিস্ট্রারকে দিয়ে নিয়োগপত্রে স্বাক্ষর করিয়ে নেন ভিসি। পরদিনই তিনি ক্যাম্পাস ছাড়েন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. মো. হাবীবুর রহমান বলেন, ‘এই নিয়োগের জন্য সিন্ডিকেটের অনুমোদন দরকার। কিন্তু সিন্ডিকেট সভা তো হয়নি। এই নিয়োগের বৈধতা পাওয়ার কথা না।’ আর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-রেজিস্ট্রার মখলেসুর রহমান বলেন, ‘এডহকে নিয়োগ হয় ছয়মাসের জন্য। যাঁরা চাকরি পেয়েছেন তাঁরা ছয়মাস পর আবার আবেদন করবেন। বিশ্ববিদ্যালয় যদি মনে করে তাঁদের দরকার, তাহলে রাখবে। আর তা না হলে ওই ছয়মাস পরই চাকরির মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে।’
ভিসির এই নিয়োগ অনিয়ম করেই দেওয়া হয়েছে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রণালয় বলেছে, গত ১০ ডিসেম্বর মন্ত্রণালয়ে এক চিঠিতে প্রশাসনিক কারণ উল্লেখ করে রাবিতে সকল ধরনের নিয়োগ বন্ধে উপাচার্যকে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু রাবি উপাচার্য তাঁর শেষ কর্মদিবসে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা উপেক্ষা করে বিভিন্ন পদে অবৈধ ও বিধিবহির্ভূতভাবে জনবল নিয়োগ দিয়েছেন। বিদায়ী উপাচার্য কর্তৃক জনবল নিয়োগের বৈধতা পাওয়ার সুযোগ নেই বলে তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে সুপারিশসহ আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব শামীমা বেগম এক চিঠিতে জানিয়েছেন, পরবর্তী উপাচার্য নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব পালন করবেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা।
সার্বিক বিষয় নিয়ে কথা বলতে গতকাল দুপুরে সদ্য বিদায়ী ভিসি আবদুস সোবহানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে দীর্ঘক্ষণ ব্যস্ত পাওয়া যায়। এক পর্যায়ে কল ঢুকলে সেটি কেটে দেয়া হয়। আবদুস সোবহান বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসা ছেড়ে রাবি সংলগ্ন চৌদ্দপাই এলাকায় শিক্ষকদের বিশ্ববিদ্যালয় হাউজিং সোসাইটির (বিহাস) বাসায় উঠেছেন। বৃহস্পতিবার বিকাল থেকেই বিহাসে প্রবেশের মূল ফটকে পুলিশের পাহারা বসানো হয়েছে। অপরিচিত কাউকে সেখানে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। শুক্রবার দুপুরেও সেখানে পুলিশের পাহারা ছিল।
এ বিষয়ে নিয়ে জানতে চাইলে নগরীর মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএসএম সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘ওনার (ভিসি) একটু সমস্যা হতে পারে। তাই পুলিশ পাহারা দেওয়া হয়েছে। এটা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত থাকবে।’ ওসি জানান, বৃহস্পতিবার বিহাসের ফটকে অন্তত ১৫ জন পুলিশ রাখা হয়। শুক্রবার থেকে একজন উপ-পরিদর্শকের (এসআই) নেতৃত্বে চারজন কনস্টেবল থাকছেন।
অধ্যাপক এম আবদুস সোবহান ফলিত রাবির পদার্থবিজ্ঞান ও ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক ছিলেন। তিনি ২০০৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৩ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ভিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে তিনি ২০১৭ সালে আবারও ভিসি হিসেবে দায়িত্ব পান। দ্বিতীয় মেয়াদে ভিসি হিসেবে দায়িত্ব পালনকালেই শিক্ষকতা থেকে অবসর নেন। নানা অনিয়মের কারণে বরাবরই আলোচিত তিনি। তবে গত বৃহস্পতিবার শেষ কর্মদিবসের আগের দিন তাঁর গণহারে চাকরি দিয়ে যাওয়ার বিষয়টি সবকিছুকে ছাপিয়ে গেছে।

রাজশাহী: ‘দুঃখিত! রাবিতে নিয়োগপ্রাপ্ত ছাত্রলীগের সংখ্যাটা ১২৫ নয়, ২০-২৫ জন! বাকিটা ধান্দা!’—এটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান খান নাহিদের ফেসবুক স্ট্যাটাস। মেয়াদকালের শেষ সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আবদুস সোবহানের নিয়োগ বাণিজ্য প্রসঙ্গে এভাবেই ক্ষোভ ঝেড়েছেন এই ছাত্রলীগ নেতা।
টানা দুই মেয়াদে উপাচার্যের দায়িত্ব পালন শেষে গত বৃহস্পতিবার পুলিশ পাহারায় ক্যাম্পাস ছেড়ে যান অধ্যাপক ড. আবদুস সোবহান। তবে যাওয়ার আগের দিনই (বুধবার) অস্থায়ী ভিত্তিতে ১৪১ জনকে নিয়োগ দেন। যার মধ্যে ১২৫ জন ছাত্রলীগের নেতাকর্মী রয়েছেন বলে গণমাধ্যমকে বলে যান তিনি।
তবে তালিকা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, নিয়োগ পাওয়াদের মধ্যে ছাত্রলীগের নেতাকর্মী এক-তৃতীয়াংশ। ছাত্রলীগের একাংশের দাবি, বিদায় বেলায় ছাত্রলীগের মাথায় কাঠাল ভেঙ্গে গেছেন চতুর এই উপাচার্য। ছাত্রলীগের নাম বললেও মূলত বড় অংকের লেনদেনের মাধ্যমে নিয়োগ বাণিজ্যই করে গেছেন তিনি।
নিয়োগ পেলেন যাঁরা: বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার মামুন-অর-রশিদ এডহক ভিত্তিতে ১৪১ জনের নিয়োগের কথা জানিয়েছেন গণমাধ্যমে। তবে তালিকায় দেখা গেছে, নিয়োগ পাওয়া ব্যক্তির সংখ্যা ১৩৭ জন। এর মধ্যে শিক্ষক পদে নয়জন, সেকশন অফিসার (কর্মকর্তা) পদে ১৯ জন, উচ্চমান সহকারী (তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী) পদে ৮৫ জন এবং নিম্নমান সহকারী (চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী) পদে ২৪ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
নিয়োগ তালিকা যাচাই করে দেখা গেছে, সেখানে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীর সংখ্যা ৪৫ জনের কম। চাকরি পাওয়া উল্লেখযোগ্য ছাত্রলীগ নেতাদের মধ্যে আছেন— রাবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মাহফুজ আল আমিন, মো. রাসেল, বোরহান উদ্দিন, সরওয়ার হোসেন সানোয়ার, তৌহিদ মেরাশেদ, সুরঞ্জিত প্রসাদ বৃত্ত, ফারুক হাসান, রাবি ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ইলিয়াস হোসেন, সাবেক ছাত্র বৃত্তি বিষয়ক সম্পাদক টগর মো. সালেহ ছাত্রলীগ নেতা আতিকুর রহমান সুমন, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রায়হান মাসুদ, তাজকিন পারভেজ সাতিল, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির রাবি শাখার সাবেক সভাপতি মতিউর রহমান, শিবিরের হামলায় পা হারানো ছাত্রলীগ নেতা আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শামীম প্রমুখ।
অ্যাডহকে নিয়োগ পাওয়াদের তালিকায় চারজন সাংবাদিকও আছেন। আছেন একজন সাংবাদিকের বোনও। নিয়োগ পাওয়া চার সাংবাদিক হলেন— দৈনিক ইত্তেফাকের রাজশাহীর স্টাফ রিপোর্টার মো. আনিসুজ্জামান, মোহনা টিভির ব্যুরো প্রধান মেহেদী হাসান, দৈনিক আমাদের সময়ের ব্যুরো প্রধান আমজাদ হোসেন শিমুল ও স্থানীয় দৈনিক পত্রিকা উত্তরা প্রতিদিনের সাংবাদিক এনায়েত করিম। এদের মধ্যে আনিসুজ্জামান রাজশাহী প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি। বর্তমানে তিনি রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের (আরইউজে) নির্বাহী সদস্য। মেহেদী হাসান শ্যামল রাজশাহী টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের (আরটিজেএ) সভাপতি। এনায়েত করিম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (রাবিসাস) সভাপতি ছিলেন। আমজাদ হোসেন শিমুলও বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা করতেন। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাবেক সদস্য আনিসুজ্জামানকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের সহকারী রেজিস্ট্রার করা হয়েছে। আর সাংবাদিক নেতা মেহেদী হাসান শ্যামলকে ঐতিহ্যবাহী বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘরের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এছাড়া দৈনিক সমকাল ও বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ডিবিসির রাজশাহী ব্যুরো প্রধান সৌরভ হাবিবের ছোট বোন সোনিয়া তাসমিনও চাকরি পেয়েছেন সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে।
তালিকা পর্যালোচনায় দেখা যায়, সংগীত বিভাগে প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ঋত্বিক মাহমুদ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের খন্দকার ফরহাদ হোসেনের (অনিক মাহমুদ) ছেলে। ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে নিয়োগ পাওয়া ইন্দ্রানিল মিশ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক এবং শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. চিত্তরঞ্জন মিশ্র’র ছেলে। ক্রপ সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক খাইরুল ইসলামের স্ত্রী ড. সাবিহা ইয়াসমিনকেও নিয়োগ দেয়া হয়েছে সেন্টার অব এক্সেলেন্স ইন টিচিং অ্যান্ড লার্নিংয়ের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে।
তাপসী রাবেয়া হলের আবাসিক শিক্ষিকা হিসেবে নিয়োগ পাওয়া ফারহানা একরাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক ও অধ্যাপক আব্দুল গণির স্ত্রী। একই হলের সহকারী আবাসিক শিক্ষিকা হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেন রিয়াজির স্ত্রী বুরুজ-ই জোবাইরা। অন্য যাঁরা নিয়োগ পেয়েছেন তাঁদের বিশেষ কোনো পরিচয় পাওয়া যাচ্ছে না। এদের টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
নিম্নপদেও ছাত্রলীগ: নিম্ন পদেও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের অনেককে চাকরি দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ সাবেক ও বর্তমান নেতা–কর্মীরা। ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন নিয়োগ পাওয়া নেতারাও। নিয়োগ পেয়েও কেউ কেউ নিম্নমানের এই পদে যোগ দেননি। সেকশন অফিসার পদে নিয়োগ পাওয়া ১৯ জনের মধ্যে ছাত্রলীগের মাত্র একজন রয়েছেন। নয়জন প্রভাষকের মধ্যে আছেন একজন। এ ছাড়া বাকি সবারই তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
রাবি ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সাদিকুল ইসলাম স্বপন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফরমেশন অ্যান্ড লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাশ করেন। তাকে নিম্নমান সহকারী পদে এডহকে নিয়োগ দেওয়ায় তিনি যোগদান করেননি। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ছাত্রলীগ নেতা–কর্মীদের সেকশন অফিসার হওয়ার যোগ্যতা থাকা স্বত্বেও উপাচার্য তাদের তৃতীয় শ্রেণির চাকরিতে নিয়োগ দিয়েছেন। এর মাধ্যমে তিনি ছাত্রলীগকে অপমান করেছেন। উপাচার্য তার স্বার্থ হাসিলের জন্য ছাত্রলীগকে ব্যবহার করেছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
নিয়োগ পাওয়া রাবি ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ইলিয়াস হোসেন বলেন, ‘ছাত্রলীগের নাম ভাঙানো হয়েছে। এখানে সাধারণ লোকজনকে বেশি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমাদের অনেক ত্যাগী নেতাকর্মীর নিয়োগ হয়নি।’ রাবি ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খালিদ হাসান বিপ্লব বলেন, ‘উপাচার্য শতাধিক ছাত্রলীগ নেতাকে চাকরি দেওয়ার যে দাবি করেছেন তা অসত্য। আমরা খোঁজ নিয়েছি সাবেক ও বর্তমান মিলিয়ে চল্লিশের কম নেতা–কর্মীর চাকরি হয়েছে।’ ছাত্রলীগের কথা বলে নন পলিটিক্যাল লোকজনকে চাকরি দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
এই নিয়োগ যেন না হয় তার জন্য ভিসির শেষ কর্মদিবসে ক্যাম্পাসে গিয়েছিলেন রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা। তখন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা তাঁদের ওপর চড়াও হয়েছিলেন। পুলিশের লাঠিচার্জ আর রাবি ছাত্রলীগের হামলায় মহানগর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাস থেকে পালিয়ে যেতেও বাধ্য হয়। নগর ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা বলছেন, ভিসি যে ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে বড় ব্যবসা করতে যাচ্ছেন, এটি তাঁরা আগেই আঁচ করতে পেরেছিলেন। তাই নিয়োগ ভণ্ডুল করতে তাঁরা ক্যাম্পাসে যান। কিন্তু তাঁদের ওপর হামলা হয়।
শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে জানে না বিভাগ: অ্যাডহক তালিকা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আটটি বিভাগ ও একটি ইনস্টিটিউটে সর্বমোট নয়জন শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে। এদের মধ্যে পাঁচটি বিভাগের সভাপতির সঙ্গে কথা হয় আজকের পত্রিকার। তাঁরা জানান, বিভাগের অ্যাডহকে শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে তাঁরা অবহিত নন। ইতিহাস বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মাহমুদা খাতুন বলেন, ‘গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে শুনেছি আমাদের বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তবে বিভাগের পক্ষ থেকে শিক্ষক চাওয়া হয়নি। এখন ক্যাম্পাস বন্ধ। আমাদের শিক্ষকও লাগছে না।’ একই সুরে কথা বললেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের সভাপতি দীনবন্ধু পাল।
নিয়োগ দিতে পদে পদে অনিয়ম
বিদায় বেলায় ভিসির দেয়া এই নিয়োগের পদে পদে অনিয়ম করা হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রাখলেও ভিসি সোবহান নিজের গায়ের জোরেই নিয়োগ দিয়ে গিয়েছেন। এই নিয়োগের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভাও হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারও নিয়োগপত্রে স্বাক্ষর করেননি। সূত্র জানায়, ভিসি সোবহান নিয়োগপত্রে স্বাক্ষর দেয়ার জন্য রেজিস্ট্রার আবদুস সালামকে চাপ দেন। কিন্তু আবদুস সালাম তা এড়িয়ে যান। পরে একজন ডেপুটি রেজিস্ট্রারকে দিয়ে নিয়োগপত্রে স্বাক্ষর করিয়ে নেন ভিসি। পরদিনই তিনি ক্যাম্পাস ছাড়েন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. মো. হাবীবুর রহমান বলেন, ‘এই নিয়োগের জন্য সিন্ডিকেটের অনুমোদন দরকার। কিন্তু সিন্ডিকেট সভা তো হয়নি। এই নিয়োগের বৈধতা পাওয়ার কথা না।’ আর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-রেজিস্ট্রার মখলেসুর রহমান বলেন, ‘এডহকে নিয়োগ হয় ছয়মাসের জন্য। যাঁরা চাকরি পেয়েছেন তাঁরা ছয়মাস পর আবার আবেদন করবেন। বিশ্ববিদ্যালয় যদি মনে করে তাঁদের দরকার, তাহলে রাখবে। আর তা না হলে ওই ছয়মাস পরই চাকরির মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে।’
ভিসির এই নিয়োগ অনিয়ম করেই দেওয়া হয়েছে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রণালয় বলেছে, গত ১০ ডিসেম্বর মন্ত্রণালয়ে এক চিঠিতে প্রশাসনিক কারণ উল্লেখ করে রাবিতে সকল ধরনের নিয়োগ বন্ধে উপাচার্যকে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু রাবি উপাচার্য তাঁর শেষ কর্মদিবসে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা উপেক্ষা করে বিভিন্ন পদে অবৈধ ও বিধিবহির্ভূতভাবে জনবল নিয়োগ দিয়েছেন। বিদায়ী উপাচার্য কর্তৃক জনবল নিয়োগের বৈধতা পাওয়ার সুযোগ নেই বলে তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে সুপারিশসহ আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব শামীমা বেগম এক চিঠিতে জানিয়েছেন, পরবর্তী উপাচার্য নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব পালন করবেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা।
সার্বিক বিষয় নিয়ে কথা বলতে গতকাল দুপুরে সদ্য বিদায়ী ভিসি আবদুস সোবহানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে দীর্ঘক্ষণ ব্যস্ত পাওয়া যায়। এক পর্যায়ে কল ঢুকলে সেটি কেটে দেয়া হয়। আবদুস সোবহান বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসা ছেড়ে রাবি সংলগ্ন চৌদ্দপাই এলাকায় শিক্ষকদের বিশ্ববিদ্যালয় হাউজিং সোসাইটির (বিহাস) বাসায় উঠেছেন। বৃহস্পতিবার বিকাল থেকেই বিহাসে প্রবেশের মূল ফটকে পুলিশের পাহারা বসানো হয়েছে। অপরিচিত কাউকে সেখানে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। শুক্রবার দুপুরেও সেখানে পুলিশের পাহারা ছিল।
এ বিষয়ে নিয়ে জানতে চাইলে নগরীর মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএসএম সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘ওনার (ভিসি) একটু সমস্যা হতে পারে। তাই পুলিশ পাহারা দেওয়া হয়েছে। এটা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত থাকবে।’ ওসি জানান, বৃহস্পতিবার বিহাসের ফটকে অন্তত ১৫ জন পুলিশ রাখা হয়। শুক্রবার থেকে একজন উপ-পরিদর্শকের (এসআই) নেতৃত্বে চারজন কনস্টেবল থাকছেন।
অধ্যাপক এম আবদুস সোবহান ফলিত রাবির পদার্থবিজ্ঞান ও ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক ছিলেন। তিনি ২০০৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৩ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ভিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে তিনি ২০১৭ সালে আবারও ভিসি হিসেবে দায়িত্ব পান। দ্বিতীয় মেয়াদে ভিসি হিসেবে দায়িত্ব পালনকালেই শিক্ষকতা থেকে অবসর নেন। নানা অনিয়মের কারণে বরাবরই আলোচিত তিনি। তবে গত বৃহস্পতিবার শেষ কর্মদিবসের আগের দিন তাঁর গণহারে চাকরি দিয়ে যাওয়ার বিষয়টি সবকিছুকে ছাপিয়ে গেছে।

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১ দিন আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৫ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৪ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৪ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

‘দুঃখিত! রাবিতে নিয়োগপ্রাপ্ত ছাত্রলীগের সংখ্যাটা ১২৫ নয়, ২০-২৫ জন! বাকিটা ধান্দা!’—এটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান খান নাহিদের ফেসবুক স্ট্যাটাস। মেয়াদকালের শেষ সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আবদুস সোবহানের নিয়োগ বাণিজ্য প্রসঙ্গে এভাবেই ক্ষোভ ঝেড়েছেন
০৮ মে ২০২১
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৫ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৪ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৪ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

‘দুঃখিত! রাবিতে নিয়োগপ্রাপ্ত ছাত্রলীগের সংখ্যাটা ১২৫ নয়, ২০-২৫ জন! বাকিটা ধান্দা!’—এটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান খান নাহিদের ফেসবুক স্ট্যাটাস। মেয়াদকালের শেষ সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আবদুস সোবহানের নিয়োগ বাণিজ্য প্রসঙ্গে এভাবেই ক্ষোভ ঝেড়েছেন
০৮ মে ২০২১
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৪ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৪ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

‘দুঃখিত! রাবিতে নিয়োগপ্রাপ্ত ছাত্রলীগের সংখ্যাটা ১২৫ নয়, ২০-২৫ জন! বাকিটা ধান্দা!’—এটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান খান নাহিদের ফেসবুক স্ট্যাটাস। মেয়াদকালের শেষ সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আবদুস সোবহানের নিয়োগ বাণিজ্য প্রসঙ্গে এভাবেই ক্ষোভ ঝেড়েছেন
০৮ মে ২০২১
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১ দিন আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৫ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
২৪ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

‘দুঃখিত! রাবিতে নিয়োগপ্রাপ্ত ছাত্রলীগের সংখ্যাটা ১২৫ নয়, ২০-২৫ জন! বাকিটা ধান্দা!’—এটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান খান নাহিদের ফেসবুক স্ট্যাটাস। মেয়াদকালের শেষ সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আবদুস সোবহানের নিয়োগ বাণিজ্য প্রসঙ্গে এভাবেই ক্ষোভ ঝেড়েছেন
০৮ মে ২০২১
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১ দিন আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
৫ দিন আগে
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
২৪ দিন আগে