Ajker Patrika

শেরপুরে গণসংযোগে হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশের ঘোষণা জামায়াতের

শেরপুর প্রতিনিধি
শনিবার বিকেলে ও শুক্রবার রাতে জামায়াত ও বিএনপির পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা
শনিবার বিকেলে ও শুক্রবার রাতে জামায়াত ও বিএনপির পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা

শেরপুরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সংসদ সদস্য প্রার্থী হাফেজ রাশেদুল ইসলামের গণসংযোগে হামলার অভিযোগ এবং তা নিয়ে বিএনপি ও জামায়াতের পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে হঠাৎ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে স্থানীয় রাজনীতি। অন্যদিকে এই অবস্থায় পাল্টাপাল্টি হামলার আশঙ্কায় স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে বিরাজ করছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। গতকাল শনিবার বিকেলে শহরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গণসংযোগে হামলার প্রতিবাদে আজ রোববার বিকেল ৪টায় শহরের খোয়ারপাড় শাপলা চত্বর মোড় থেকে থানা মোড় পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী।

জামায়াত নেতাদের অভিযোগ, ২৪ অক্টোবর (শুক্রবার) জুমার নামাজের পর শেরপুর-১ (সদর) আসনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী হাফেজ রাশেদুল ইসলাম সদর উপজেলার চরপক্ষীমারী ইউনিয়নের ডাকপাড়া গ্রামে গণসংযোগে বের হলে স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা বাধা দেন। ওই সময় দুই পক্ষের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। পরে বিএনপির সমর্থকেরা জামায়াত নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করেন। সংঘর্ষে শেরপুর জেলা ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি শফিউল ইসলাম স্বপন ও রাকিবুল হাসানসহ অন্তত ২০ জন আহত হন।

আহত ব্যক্তিদের মধ্যে দুজনকে শেরপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। এদিকে ওই ঘটনার পর শুক্রবার রাতে বিএনপি ও জামায়াতের কর্মীরা এলাকায় মুখোমুখি অবস্থান নেন। সন্ধ্যার পর থেকে শহরে পাল্টাপাল্টি প্রতিবাদ মিছিল হয়। হামলার অভিযোগে রাতে জামায়াত নেতা রাকিবুল হাসান বাদী হয়ে শেরপুর সদর থানায় চারজনের নামসহ অজ্ঞাতনামা ১০-১২ জনের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা হাফিজুর রহমান বলেন, ‘ভোটের গণসংযোগে এমন ন্যক্কারজনক হামলায় শেরপুরবাসী উদ্বিগ্ন ও উৎকণ্ঠিত। এতে আগামী নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।’ তিনি ওই হামলার ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত সকলকে দ্রুত সময়ের মধ্যে শাস্তির আওতায় আনার জন্য ও নিবার্চনী কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান।

সেই সঙ্গে আগামী নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ ও সামগ্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। গণসচেতনতার অংশ হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে রোববার বিকেল ৪টায় শহরের খোয়ারপাড় মোড় থেকে থানা মোড় পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ ঘোষণা করেন তিনি। ওই সময় গণমাধ্যমকর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন শেরপুর-১ (সদর) আসনে জামায়াতের সংসদ সদস্য প্রার্থী হাফেজ রাশেদুল ইসলাম। সংবাদ সম্মেলনে জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ও শেরপুর-২ (শ্রীবরদী-ঝিনাইগাতী) আসনের এমপি প্রার্থী নুরুজ্জামান বাদল, জেলা প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি ও শেরপুর-২ (নকলা-নালিতাবাড়ী) আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী মু. গোলাম কিবরিয়া ভিপিসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে এর আগে হামলার অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে শুক্রবার রাতে শেরপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে জেলা বিএনপি। সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. সিরাজুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ‘জামায়াতের লোকজন পূর্বপরিকল্পিতভাবে ডাকপাড়া গ্রামে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মহড়া দিতে গিয়েছিল। সেখানে কয়েকটি মসজিদে মিটিং-মিছিল করে গ্রামবাসীর মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। পরে এলাকাবাসী এর তীব্র প্রতিবাদ করলে তারা এলাকা ছেড়ে চলে আসে। এরপর থানায় গিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের নামে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে। তারা মিথ্যা কথা বলছে এবং উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করছে।’ তিনি ‘মিথ্যা মামলা’র তীব্র নিন্দা জানিয়ে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির সদস্য সাইফুল ইসলাম স্বপন, আক্রামুজ্জামান রাহাতসহ বিএনপির সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

সুদান: সবুজ স্বর্গে পচে যাচ্ছে খাবার, অন্য পাশে দুর্ভিক্ষে মারা যাচ্ছে শিশু

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পিকআপের ধাক্কায় অটোরিকশাযাত্রী মা-ছেলে নিহত

মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি 
দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ি। ছবি: সংগৃহীত
দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ি। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় পিকআপ ভ্যানের ধাক্কায় মা-ছেলে নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছে তিনজন। আজ রোববার (২৬ অক্টোবর) বেলা ৩টার দিকে উপজেলার বারইয়ারহাট-রামগড় সড়কের করেরহাট ফরেস্ট অফিস এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তিরা হলো ফটিকছড়ি উপজেলার মোহাম্মদপুর গ্রামের জাকির হোসেনের স্ত্রী রাবেয়া বেগম (৩৫) ও ছেলে মো. হোসেন (১০)। আহত ব্যক্তিরা হলো খাগড়াছড়ি জেলার রামগড় উপজেলার কৌচিয়া গ্রামের আনজু বেগম (৪৫) ও তাঁর ছেলে নাহিদুল ইসলাম (৩) এবং নোয়াখালী জেলার চরজব্বর থানার রুহুল আমিনের ছেলে রাশেদ (২০)।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বারইয়ারহাট-রামগড় সড়কের করেরহাট ফরেস্ট অফিস এলাকায় দ্রুতগতির একটি পিকআপ ভ্যান বিপরীত দিক থেকে আসা একটি অটোরিকশাকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলে অটোরিকশার যাত্রী মা-ছেলে নিহত এবং তিনজন আহত হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা হতাহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠান।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক বাঁধন দাশ বলেন, দুজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তারা সম্পর্কে মা-ছেলে। আহত ব্যক্তিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম আবদুল হালিম বলেন, মরদেহ বর্তমানে পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। পরে তাদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। দুর্ঘটনাকবলিত অটোরিকশাটি থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ দুটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

সুদান: সবুজ স্বর্গে পচে যাচ্ছে খাবার, অন্য পাশে দুর্ভিক্ষে মারা যাচ্ছে শিশু

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাঙামাটিতে রাজবন বিহারের প্যাগোডার কাজ পরিদর্শনে দুই থাই প্রকৌশলী

রাঙামাটি প্রতিনিধি 
রাঙামাটির রাজবন বিহারে থাই প্রকৌশলী। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাঙামাটির রাজবন বিহারে থাই প্রকৌশলী। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাঙামাটির রাজবন বিহারে নির্মাণাধীন সবচেয়ে বড় প্যাগোডার কাজের অগ্রগতি দেখতে এসেছেন থাইল্যান্ডের স্থাপত্য শিল্পী ড. সুচাই সিরিরাভেকুল এবং প্রকৌশলী চাইয়াত সাতরাকুম। প্যাগোডার কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে আজ রোববার রাজবন বিহারের আবাসিক ভিক্ষুসংঘ এবং রাজবন বিহারের উপাসক উপাসিকা পরিষদের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা।

আজ সকালে রাজবন বিহার কর্তৃপক্ষ থাইল্যান্ড প্রতিনিধিদলকে সংবর্ধনা দেয় এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।

রাঙামাটির রাজবন বিহারে থাই প্রকৌশলী। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাঙামাটির রাজবন বিহারে থাই প্রকৌশলী। ছবি: আজকের পত্রিকা

পুণ্যার্থীদের দানের টাকায় ২০১৪ সালে রাঙামাটির রাজবন বিহারের পশ্চিম পাশে মাঠে শুরু হয় প্যাগোডার নির্মাণকাজ। রাজবন বিহার কর্তৃপক্ষ জানায়, নির্মাণকাজ শেষ হলে বাংলাদেশে এটি হবে সবচেয়ে বড় বৌদ্ধ প্যাগোডা। রাজবন বিহার এই প্যাগোডার নাম দিয়েছে রাজবন বিহার বিশ্বশান্তি প্যাগোডা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

সুদান: সবুজ স্বর্গে পচে যাচ্ছে খাবার, অন্য পাশে দুর্ভিক্ষে মারা যাচ্ছে শিশু

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শাপলা প্রতীক না পেলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি সারজিসের

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ২০: ৩৬
শাপলা প্রতীক না পেলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি সারজিসের
শাপলা প্রতীক না পেলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি সারজিসের

শাপলা প্রতীক পেতে এনসিপিকে যদি রাজপথে নামতে হয়, তাহলে নির্বাচন কমিশন (ইসি) পুনর্গঠনের আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দলটির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।

আজ রোববার কিশোরগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) জেলা ও উপজেলা কমিটির সমন্বয় সভার মধ্যাহ্ন বিরতিতে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

সারজিস আলম বলেন, ‘আইনগতভাবে শাপলা প্রতীক পেতে এনসিপির কোনো বাধা নেই। এ ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন তাদের পক্ষ থেকে স্বেচ্ছাচারিতা করছে এবং পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করছে। আমরা অভ্যুত্থান-পরবর্তী নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে এ ধরনের স্বেচ্ছাচারদুষ্ট আচরণ কখনো প্রত্যাশা করি না।

‘তারা যদি তাদের জায়গা থেকে স্বাধীন-স্বকীয়তা প্রদর্শন না করতে পারে, তাহলে আগামীর নির্বাচনে তাদের ওপর আমাদের আস্থা রাখতে পারব না। আমরা মনে করি, তাদের নিরপেক্ষতা কাজে এবং কথার মাধ্যমে প্রমাণ করতে হবে। যদি এনসিপিকে শাপলা প্রতীক পেতে রাজপথের কর্মসূচিতে যেতে হয়, তাহলে এনসিপি ওই স্বেচ্ছাচারী নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের আন্দোলনেও যাবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, আওয়ামী লীগ ও ভারতীয় আধিপত্যবাদ প্রশ্নে বিএনপি এবং জামায়াত এককভাবে নেতৃত্ব দিতে পারবে না। সেই জায়গায় তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিত্ব আবশ্যক। এনসিপির প্রতিনিধিত্ব আবশ্যক। আমরা এটাও মনে করি, জুলাই সনদের বাস্তবায়ন, প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কার এবং বিচারিক প্রক্রিয়ার ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করতে এককভাবে বিএনপি এবং জামায়াত তাদের জায়গা থেকে নেতৃত্ব দিতে পারবে না। সেই জায়গা থেকে তরুণ প্রজন্মের এনসিপির অংশগ্রহণ আবশ্যক।’

জুলাই সনদে স্বাক্ষর করা প্রসঙ্গে সারজিস আলম বলেন, ‘এই অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশ বাস্তবতায় আমরা মনে করি, গণতান্ত্রিক উত্তরণের যে প্রক্রিয়া, সেই প্রক্রিয়ায় এনসিপিসহ তরুণদের অংশগ্রহণ অতীব জরুরি। সেই জন্য জুলাই সনদ নিয়ে আমরা আমাদের আপসহীন অবস্থান ব্যক্ত করেছি। অন্যান্য রাজনৈতিক দল যখন জুলাই সনদের প্রশ্নে নিশ্চয়তার যেটি প্রয়োজন ছিল, সেই নিশ্চয়তার প্রসেসিং কীভাবে হবে, কবে হবে—সেটি ঠিক না করে শুধুমাত্র নির্বাচনমুখী আচরণ করে জুলাই সনদে স্বাক্ষর করল; তখন এনসিপি তাদের জায়গা থেকে মেরুদণ্ড সোজা করে নিশ্চয়তা চেয়েছে এবং জুলাই সনদে স্বাক্ষর করেনি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, যেদিন জুলাই সনদ বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা দেওয়া হবে, যেদিন সেই আদেশ জারি করা হবে প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে এবং গণভোটে যদি জুলাইয়ের পক্ষে রায় আসে, তখন কোনো নোট অব ডিসেন্টকে বিবেচনা করা হবে না—এই নিশ্চয়তা যখন আসবে, তখন জনগণের পক্ষে আমরা জুলাই সনদে স্বাক্ষর করব। এনসিপি কোনো নিশ্চয়তা ছাড়া একটি কাগজে স্বাক্ষর করে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করতে পারে না।’

নির্বাচনী জোট প্রসঙ্গে এনসিপির উত্তরাঞ্চলের এ মুখ্য সংগঠক বলেন, ‘এনসিপি শুধু আগামী নির্বাচনে কয়েকটি সিটের জন্য সংসদে যাওয়ার জন্য জোট করার জন্য কাজ করছে না। এনসিপি মনে করে, কোনো রাজনৈতিক দল যদি তাদের জায়গা থেকে জুলাই সনদের প্রত্যেকটি সংস্কার বাস্তবায়নে কমিটেড থাকে, বিচারিক প্রক্রিয়াকে ধারাবাহিকভাবে সামনে এগিয়ে নিয়ে সম্পূর্ণ করতে কমিটেড থাকে, ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কমিটেড থাকে, আওয়ামী লীগ-জাতীয় পার্টিসহ ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কমিটেড থাকে, তাহলে ওই নির্বাচনে তাদের সঙ্গে অ্যালায়েন্স হতে পারি।’

প্রশাসন সম্পর্কিত প্রশ্নের জবাবে এনসিপি নেতা বলেন, ‘প্রশাসনে ঘুরেফিরে এখন পর্যন্ত যাঁরা আছেন, তাঁরা কেউ বিএনপিপন্থী আচরণ করেন, কেউ জামায়াতপন্থী আচরণ করেন, কেউ পূর্বের আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ততা ছিল বলে ওই পন্থী আচরণ করেন। বিশেষ করে যাঁরা ইউএনও আছেন, ওসি আছেন, তাঁদের আচরণটা দলীয় আচরণ আসে। তাঁরা বিভিন্ন দলীয় ইউএনও, দলীয় ওসি হয়ে উঠতে চান। আমাদের জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপার যাঁরা আছেন, তাঁরাও দলীয় জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার হয়ে উঠতে চান।

‘মন্ত্রণালয়ে কিছু সচিব আছেন, তাঁরা দলীয় সচিব হয়ে উঠতে চান। আমরা তাঁদের স্পষ্ট করে বলি, এবার তাঁরা অনেকটাই পার পেয়ে গিয়েছে। কারণ, এই অভ্যুত্থানের অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের মানুষের আগে ছিল না। কিন্তু আগামীতে যদি তাঁরা এই আচরণ বহাল রাখেন, আর আমাদের আবার এই রকম একটা বড় ঘটনার দিকে যেতে হয়, তখন কেউ আর বিন্দুমাত্র আশ্রয় পাবেন না, প্রশ্রয় পাবেন না। আমি অনুরোধ করব আপনাদের যে আপনারা দলীয় প্রশাসন না হয়ে ওঠেন। আপনারা বাংলাদেশের প্রশাসন হয়ে উঠুন। বাংলাদেশের মানুষের হয়ে উঠুন।’

সারজিস আলম বলেন, ‘জুলাইয়ে যারা রাজপথের যোদ্ধা ছিল, শহীদ পরিবাররা ছিল, তাদের এখন হুমকি দেয়। হুমকি দেয় কারা—যারা ’২৪-এ আমাদের এই সহযোদ্ধাদের ওপর হামলা করেছিল, গুলি ছুড়েছিল। তারা এখন টাকার বিনিময়ে, তারা এখন বিভিন্ন নেগোসিয়েশনের বিনিময়ে, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পেছন থেকে আঁতাত করে, ক্ষমতায় থাকা প্রশাসনের কিংবা বিচার বিভাগে থাকা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে আঁতাত করে, তারা জামিন নিয়ে আসছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মনে করি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট যাঁরা আছেন, তাঁরা যদি এই বিষয়ে কঠোর না হন, তাহলে আগামীর বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা আপনারা নিশ্চিত করতে পারবেন না, নির্বাচন একটা অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে যাবে। এই কথাটা দিয়ে আপনারা এই দিকে টানবেন না যে নির্বাচনে অনিশ্চয়তার কথা বলেছে; তার মানে এনসিপি বলে নির্বাচন পেছাতে চায়। না। এটা হচ্ছে বর্তমান বাস্তবতা।

‘যদি আমার একজন আহত যোদ্ধা, আমার একজন শহীদ পরিবারের ওপরে এই ধরনের আক্রমণ হয় এবং অনিরাপত্তায় ভোগে, তাহলে আগামীতে পরিস্থিতি কিছুটা অস্থিতিশীল হবে।’

আহনাফ সাঈদ খানের সভাপতিত্বে সমন্বয় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন এনসিপি ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল্লাহ হায়দার, কেন্দ্রীয় সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) খায়রুল কবির ও সাঈদ উজ্জ্বল এবং কেন্দ্রীয় সদস্য দিদার শাহ। এ সময় এনসিপির জেলা ও উপজেলা কমিটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

সুদান: সবুজ স্বর্গে পচে যাচ্ছে খাবার, অন্য পাশে দুর্ভিক্ষে মারা যাচ্ছে শিশু

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইয়ের সংসারও সামলাতেন, পরিবারে হাহাকার

শরীয়তপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ২০: ৪৬
নিহত আবুল কালাম চোকদার। ছবি: সংগৃহীত
নিহত আবুল কালাম চোকদার। ছবি: সংগৃহীত

শরীয়তপুরের আবুল কালাম চোকদারের সঙ্গে বাড়ির লোকজনের শেষবারের মতো কথা হয়েছিল আজ রোববার দুপুরে। বেলা ১১টার দিকে ভাবি আসমা বেগমকে তিনি জানিয়েছিলেন, কয়েক দিন পরই বাড়ি ফিরবেন। কিন্তু ফেরা আর হলো না তাঁর। মেট্রোরেলের একটি বিয়ারিং প্যাড তাঁর প্রাণ কেড়ে নিল। রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত এই যুবকের মৃত্যুর খবর পৌঁছালে গ্রামজুড়ে নেমে আসে শোকের ছায়া।

নিহত কালামের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার মোক্তারের চর ইউনিয়নের ঈশ্বরকাঠী গ্রামের মৃত আব্দুল জলিল চোকদারের ছেলে আবুল কালাম (৩৬)। চার ভাইয়ের মধ্যে ছোট ছিলেন তিনি। স্ত্রী ও দুই শিশুসন্তান নিয়ে বসবাস করতেন নারায়ণগঞ্জের পাঠানটুলি এলাকায়। গ্রামে থাকা ভাইয়ের সংসারের জন্যও নিয়মিত টাকা পাঠাতেন তিনি।

আজ রোববার দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড খুলে তাঁর ওপর পড়ে। ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। পরে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।

স্বজনদের কান্না। ছবি: আজকের পত্রিকা
স্বজনদের কান্না। ছবি: আজকের পত্রিকা

আবুল কালামের ভাবি আসমা আক্তার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সকালে ফোনে কথা হইছিল। আমি বলছিলাম, ভাইয়ের সাথে কথা বলো, বাড়িতে চলে আসো। সে বলেছিল, কয়েক দিনের মধ্যেই আসবে। কিন্তু ঘণ্টাখানেক পর শুনি—মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে মারা গেছে!’

সরকারের কাছে সুষ্ঠু তদন্ত ও ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে আসমা বলেন, ‘আমাদের সংসারের হাল ও-ই ধরেছিল। এখন ওর সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা দুশ্চিন্তায় আছি।’

ছোটবেলা থেকেই কালাম পরিশ্রমী ছিলেন বলে জানান তাঁর চাচাতো ভাই আব্দুল গণি মিয়া চোকদার। তিনি বলেন, ‘সংসারের বোঝা একা কাঁধে নিয়েছিল সে। হঠাৎ এমন মৃত্যুকে মেনে নেওয়া কঠিন।’

এ বিষয়ে নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল কাইয়ুম খান বলেন, ‘বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা ইতিমধ্যে খবর পেয়েছি। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী পরিবারটিকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

সুদান: সবুজ স্বর্গে পচে যাচ্ছে খাবার, অন্য পাশে দুর্ভিক্ষে মারা যাচ্ছে শিশু

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত