Ajker Patrika

স্বর্ণালংকারের লোভে বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে খালাকে হত্যা

যশোর প্রতিনিধি
স্বর্ণালংকারের লোভে বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে খালাকে হত্যা

যশোরে রওশন আরা বেগম রোশনী (৫৩) নিজ বাড়িতে একা থাকতেন। তাঁর বাসায় স্বর্ণালংকার ছিল। বাড়িতে ছোট বোনের ছেলের যাতায়াত ছিল। একপর্যায়ে খালার বাড়ির স্বর্ণালংকারের লোভে বন্ধুকে নিয়ে খুনের পরিকল্পনা করে ভাগনে। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ভাগনে ও তাঁর বন্ধু বুরহান রওশনা আরা বেগম রোশনীকে ধারালো ছুরি দিয়ে হত্যা করেন।

আজ বুধবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন অভিযুক্ত ভাগনে মো. রিয়াজুল আলম চৌধুরী হৃদয় (১৯) ও তাঁর বন্ধু মো. বুরহান (২০)।

ক্লুলেস এই মামলাটির রহস্য উদ্‌ঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এ ঘটনায় জড়িত নিহতের বোনের ছেলে রিয়াজুল আলম চৌধুরী হৃদয় ও তাঁর বন্ধু মো. বুরহানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুধবার যশোরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মঞ্জুরুল ইসলামের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তাঁরা।

গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হলেন, যশোর উপশহর এলাকার জনৈক বাবুর বাড়ির ভাড়াটিয়া আবদুল হাকিমের ছেলে মো. বুরহান ও যশোর উপশহর ডি ব্লক এলাকার মৃত মাহমুদ আলম চৌধুরীর ছেলে রিয়াজুল আলম চৌধুরী।

বুধবার সন্ধ্যায় পিবিআই যশোরের পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন ঘটনার বর্ণনা দিয়ে জানান, নিহত রওশন আরা রোশনীর বোনের ছেলে রিয়াজুল আলম চৌধুরী হৃদয়। মাঝে মধ্যে খালা রোশনীর বাড়িতে যাওয়া আসা করতেন। তাঁর খালা বাড়িতে একা থাকতেন। খালার স্বর্ণালংকার ও টাকা পয়সা কোথায় রাখেন সেটা হৃদয় জানতেন। ঘটনার কয়েক দিন পূর্বে হৃদয় তাঁর বন্ধু বুরহানকে সঙ্গে নিয়ে রোশনীকে হত্যা করে স্বর্ণালংকার ও টাকা পয়সা লুণ্ঠনের পরিকল্পনা করেন। 

খালা রওশন আরা বেগম রোশনীকে হত্যার অভিযোগে ভাগনে হৃদয় ও তাঁর বন্ধু বুরহানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ২৯ আগস্ট সকালে হৃদয় পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক তাঁর বন্ধু বুরহানকে সঙ্গে নিয়ে রোশনীর বাড়িতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে বিভিন্ন কথাবার্তা বলেন। কথাবার্তার একপর্যায়ে তারা অতর্কিত ধারালো ছুরি দিয়ে রোশনীর পেটে, বুকে ও গলায় আঘাত করে হত্যা নিশ্চিত করে। এরপর মরদেহ ঘরে থাকা বক্স খাটের কাঠের চালার নিচে লুকিয়ে রাখেন। তারপর রওশন আরা রোশনীর ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোন ও আলমারিতে থাকা স্বর্ণের ও ইমিটেশনের গয়না বের করে নিয়ে পালিয়ে যান। 

এ ঘটনার পর কেউ যাতে তাঁদের সন্দেহ না করে, সে জন্য রোশনীর আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে মিলেমিশে চলাফেরা করেন তাঁরা। এ ঘটনায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটের তৎপরতা বৃদ্ধি পেলে তাঁরা গ্রেপ্তার এড়াতে যশোর থেকে তাঁদের নিজ নিজ আত্মীয়ের বাড়িতে পালিয়ে যান।

পরবর্তীতে আসামিদের গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাঁরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং তাঁদের দেখানো মতে লুণ্ঠিত মালামাল, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু ও হত্যার সময় তাঁদের পরনে থাকা ফেলে দেওয়া কাপড় উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বুরহান ও হৃদয়।

মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ২৯ আগস্ট বিকেলে যশোর শহরের আশ্রম মোড়ের (রেলরোড) বাড়ির বক্স খাটের ভেতর থেকে মোস্তাফিজুর রহমানের স্ত্রী রওশন আরা বেগম রোশনীর (৫৩) মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তার ছেলে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের জন্য আমেরিকায় অবস্থান করছে এবং মেয়ে ঢাকার স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে পড়েন। তিনি বাসায় একাই থাকতেন।

হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ৩১ আগস্ট অজ্ঞাতনামা আসামিদের নামে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন নিহতের মা সেবিনা বেগম। ১৩ সেপ্টেম্বর বাগেরহাটের রামপাল থানার ঝনঝনিয়া গ্রামের মামা হরমুজ আলীর বাড়ি থেকে আসামি মো. বুরহান ও ঢাকার ভাষানটেক এলাকার খালু ইঞ্জিনিয়ার মোক্তার হোসেনের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। এর আগে মামলার আলামত স্বর্ণালংকার কেনাবেচার অভিযোগে আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভিসা ছাড়া পাকিস্তান সফরের চুক্তি হতে পারে শিগগির

স্ত্রীকে হতে হবে নোরা ফাতেহির মতো, না খাইয়ে রেখে তিন ঘণ্টা করে ব্যায়াম করান স্বামী

বাংলাদেশসহ এশিয়ার ৫ দেশে সফর বাতিল করলেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী মেলোনি

বাংলা বলায় কলকাতার মার্কেটে ছুরি, বন্দুকের বাঁট ও হকিস্টিক নিয়ে ছাত্রদের ওপর হামলা

ঢাকা কলেজের বাস ভাঙচুর, আবারও শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, পুলিশের টিয়ার শেল-সাউন্ড গ্রেনেড

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত