Ajker Patrika

ডিজিটাল জিনের বাদশাহ

সম্পাদকীয়
ডিজিটাল জিনের বাদশাহ

গ্রেপ্তার হয়েছেন জিনের বাদশাহ। ঠিক ধরেছেন, নকল জিনের বাদশাহ। প্রতারণার মাধ্যমে এক ব্যক্তিকে সর্বস্বান্ত করে ফেলেছেন। শেষমেশ বাঁচার শেষ উপায় হিসেবে তিনি জিনের বাদশার ব্যাপারে থানায় অভিযোগ করেন। তারপরই পুলিশের হাতে ধরা পড়েন এই জিনের বাদশাহ।

জামিরুল ইসলাম নামের এই প্রতারক মোবাইল ফোনে নিজেকে জিনের বাদশাহ নামে পরিচয় দিতেন। এলাকার অনেকের সঙ্গেই জিনের বাদশাহ পরিচয়ে তিনি প্রতারণা করেছেন। এখন জেলহাজত তাঁর ঠিকানা। তাঁর কাছ থেকে টাকা ফেরত পাওয়া যাবে কি যাবে না, সেটা এখনই বোঝার উপায় নেই। থানা-পুলিশ-আদালতের মাধ্যমে তার সুরাহা হবে। সেটা তাদের ওপর ছেড়ে দেওয়াই ভালো। তবে এই ডিজিটাল প্রতারণার ব্যাপারে বিস্মিত হওয়ার জায়গাটা ধরেই কথা বলব।

ঘটনাটি রাজশাহীর বাগমারা থানায় ঘটেছে। বাগমারার এমন কোনো জায়গা নেই, যেখানে জ্ঞানের আলো ঢোকেনি। বাংলা ভাইদের মতো কোনো কোনো দানব কদাচিৎ সেখানে দৃশ্যমান হলেও (অন্য জেলা থেকে উঠে আসা) আদতে বাগমারার মানুষ শান্তিপ্রিয়। কিন্তু তাদের কেউ কেউ কতটা কুসংস্কারাচ্ছন্ন, তার একটা উদাহরণ হয়ে রইল জিনের বাদশাহর ঘটনাটা এবং মোটেও অবাক হব না, আমাদের দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের আনাচকানাচে একের পর এক এই ধরনের জিনের বাদশাহরা উদয় হতে থাকলে। একবিংশ শতাব্দীতে এসেও আমাদের দেশের মানুষ এ ধরনের প্রতারকদের পাতা জালে যে ধরা পড়ছে, এ এক ঘটনা বটে! এতে প্রমাণিত হয়, চোখ খুলে চারদিকটা যেমন দেখা হয় না, তেমনি পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় যে বিশাল বিশাল ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বদলে যাচ্ছে সব, সেটাও থেকে যায় ভাবনার বাইরে। এখনো কুসংস্কার আর পশ্চাৎপদতা নিয়ে কায়-কারবার চলছে জোরালোভাবেই।

জাদুটোনা করে মানুষের ওপর প্রভাব ফেলার ব্যবসা তো আজও টিকে আছে। অনেকেই তো এখনো মনে করে, চালপড়া খাওয়ালে চোর ধরা পড়বে, বাণ মেরে ধরাশায়ী করা যাবে শত্রুকে, স্বামী বা স্ত্রীকে উদ্ধার করা যাবে পরকীয়া থেকে। এ রকম কত যে অনাচার এখনো টিকে আছে, তার হিসাব বের করা কঠিন। মানুষ দুটো কারণে এ ধরনের প্রতারকদের বিশ্বাস করে। প্রথমত, যদি নিজেকে অসহায় বোধ করে, এই অসহায়ত্ব থেকে বের হওয়ার কোনো পথ খুঁজে পায় না, দ্বিতীয়ত, সে যদি লোভ করে থাকে।

রাজশাহীর বাগমারায় এই ডিজিটাল জিনের বাদশাহ কীভাবে মোবাইল ফোনে কথা বলে হাতিয়ে নিলেন টাকাপয়সা, গয়নাগাটি, সে বিষয়ে আজকের পত্রিকায় ছাপা হওয়া প্রতিবেদনে কিছু লেখা নেই। যিনি সর্বস্বান্ত হওয়ার পরই কেবল পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন, তিনি কেন প্রথম যখন ফোন পেলেন, তখন পুলিশকে কিছু জানালেন না? কেন তিনি জিনের বাদশাহর কথায় টাকাপয়সা দিয়ে যেতে লাগলেন?

কাণ্ডজ্ঞানহীন মানুষদের কারণেই আসলে জিনের বাদশাহরা টিকে থাকে। কুসংস্কার হটিয়ে দেওয়া আলো এই প্রতারিত মানুষদের মনেও ঢোকে না। আফসোস সেখানেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

মে. জে. ফজলুরের সেভেন সিস্টার্স দখলের মন্তব্য সমর্থন করে না সরকার: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

নির্দেশনা মানেননি পাইলট, মদিনা-ঢাকা ফ্লাইটকে নামতে হলো সিলেটে

গায়ে কেরোসিন ঢেলে কলেজছাত্রীর আত্মহনন, পলাতক ইমাম গ্রেপ্তার

নিজের প্রস্রাব পান করে ‘আশিকি’ অভিনেত্রী অনু আগারওয়াল বললেন, ‘আহা অমৃত’

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত