Ajker Patrika

মামাশ্বশুরের বাড়ি থেকে জামাইয়ের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার 

সিরাজদিখান (মুন্সিগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ জুলাই ২০২২, ১৭: ৪৪
মামাশ্বশুরের বাড়ি থেকে জামাইয়ের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার 

মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে মামাশ্বশুরের বাড়ি থেকে জামাইয়ের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় তাঁর গলায় রশি প্যাঁচানো এবং হাত বাঁধা ছিল। আজ বুধবার সকালে উপজেলার চিত্রকোট ইউনিয়নের গোয়ালখালী গ্রামে মৃতের মামাশশুর অজিত মন্ডলের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। 

মৃত ব্যক্তির নাম রাজন মন্ডল (৩০)। তিনি ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ উপজেলার তেঘুরিয়া ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের গোপাল মন্ডলের ছেলে। 

গেল জুন মাসের ৭ তারিখে রাজন মন্ডলের সঙ্গে গোয়ালখালীর চিনিবাস মন্ডলের মেয়ে পূর্ণিমা মন্ডলের (২৪) সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের এক মাসের মাথায় মামাতো শালার বিয়েতে এসেছিলেন তিনি। 

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, রাজন মন্ডল স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে মামাশশুর বিমন মন্ডলের ছেলের বিয়েতে আসেন। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে বিয়ে সম্পন্ন করে পাশের বাড়ির আরেক মামাশশুর অজিত মন্ডলের বিল্ডিংয়ের দ্বিতীয় তলায় ঘুমাতে জান। সকাল ৭টার দিকে বাড়ির লোকজন ফ্যানের সঙ্গে ঝোলানো এবং হাত বাঁধা মরদেহ দেখে পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। 

নিহতের শাশুড়ি অর্চনা মন্ডল বলেন, ‘রাজনসহ আমরা মঙ্গলবার রাতে প্রতিবেশী বিমল মন্ডলের ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠানে এক সঙ্গে আনন্দ-ফুর্তি করেছি। রাতে তাঁরা স্বামী-স্ত্রী এক সঙ্গেই ঘুমিয়েছে। আজ (বুধবার) ভোরে রাজন ঘুম থেকে উঠে আমার ভাইয়ের নতুন বিল্ডিংয়ের বারান্দায় হাটতে গিয়ে একটি রুমের দরজা বন্ধ করে ফ্যানের সাথে ঝুলে আত্মহত্যা করে। আমার মেয়ে পূর্ণিমা তাঁকে খুঁজতে গিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়। রাজন দীর্ঘদিন ধরে মানুষিকভাবে অসুস্থ ছিল। তাঁকে বারবার বুঝিয়েও শেষ রক্ষা হলো না।’ 

রাজনের ছোট ভাই নীল রতন বলেন, ‘আমার ভাইকে তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন হত্যা করেছে। এক মাস হয়নি বিয়ে হয়েছে। কিন্তু এই অল্প কয়েক দিনেই তাঁরা আমার ভাইকে পাগল করে ফেলছে। আমার ভাইকে তাঁর বউ ও শাশুড়িরা সারাক্ষণ চাপে রাখত। তাঁরা আমার মায়ের মতো বড় ভাবিকে নিয়ে ভাইকে সন্দেহ করত। তাঁরা নাকি এই বিয়ে দিয়ে ঠকেছে। তাই তাঁরা আমার ভাইকে মেরে আত্মহত্যার নাটক করেছে।’ 

এ দিকে স্ত্রী পূর্ণিমা মন্ডলের মামা অজিত মন্ডলের প্রতিবেশীরাও রাজনের মৃত্যু নিয়ে নানা কথা বলছেন। এটা হত্যা নাকি আত্মহত্যা কেউ বলতে পারেনি। তবে স্থানীয়দের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। রাজনের বাড়ির পক্ষ এবং শ্বশুরবাড়ির পক্ষ কিছু গোপন করার পাঁয়তারা করছে বলেও জানান স্থানীয়রা। 

এ বিষয়ে সিরাজদিখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একে এম মিজানুল হক বলেন, হাত বাঁধা অবস্থায় গলায় রশি পেঁচিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল। তবে যে রুমে ঘটনাটি ঘটেছে বাহির থেকে ছিটকিনি লাগানো ছিল বলেও অনেকে জানায়। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। হত্যা না আত্মহত্যা চূড়ান্ত মন্তব্য করতে পারছি না। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরে বলা যাবে। এ ঘটনায় আমরা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে থানায় নিয়ে এসেছি। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত