Ajker Patrika

হত্যাকাণ্ডকে পুলিশের প্রতিবেদনে বজ্রপাতে নিহত বলে উল্লেখ করার অভিযোগ

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২০: ২৯
হত্যাকাণ্ডকে পুলিশের প্রতিবেদনে বজ্রপাতে নিহত বলে উল্লেখ করার অভিযোগ

কিশোরগঞ্জে বজ্রপাতে নিহত বলে চালিয়ে দিয়ে একটি হত্যাকাণ্ডকে ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে করিমগঞ্জ উপজেলার গুণধর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে এলাকাবাসীর আয়োজনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে এ অভিযোগ তোলা হয়।

অভিযোগের তির জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর দিকে। মুজিবুল হক কিশোরগঞ্জ–৩ (করিমগঞ্জ–তাড়াইল) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য।

নিহত যুবক রেদওয়ান আহম্মেদ খান লিজন গুনধর ইউনিয়নের গুনধর গ্রামের মরহুম আমিনুল ইসলাম খানের ছেলে। ২০২০ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর দুপুরে উপজেলার জয়কা ইউনিয়নের কিশোরগঞ্জ–মরিচখালী সড়কের পানাহার গ্রামের সামনে মাদলের ব্রিজের নিচ থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

মানববন্ধনে বলা হয়, মুজিবুল হক চুন্নু বজ্রপাতের নাটক সাজিয়ে লিজনের সুপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনাকে ধামাচাপা দিয়েছিলেন। এ ঘটনাটি পুনঃতদন্তের দাবি করেন তাঁরা।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন—নিহত লিজনের মা রুবি আক্তার, ভাই আশিক মিয়া, জয়কা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির, গুণধর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আশরাফ আলী, করিমগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি শাহ মো. হেদায়েত উল্লাহ, উপজেলা যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মুকসিদুল মমিনুল সবুজ, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক পারভেজ, উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জিয়ন কামাল, গুনধর ইউনিয়ন বিএনপির সহ সভাপতি রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

লিজনের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, লিজন খান ঢাকার নবাবগঞ্জে একটি জুতার কারখানায় চাকরি করতেন। ২০২০ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর দুপুরে তিনি ঢাকা থেকে বাড়িতে আসেন। ১৮ সেপ্টেম্বর সকালে মাদলের ব্রিজের নিচে লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন করিমগঞ্জ থানায় খবর দেয়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। পরে লিজনের পরিবার সেই লাশ শনাক্ত করে।

লিজনের লাশের পাশ থেকে কয়েক জোড়া স্যান্ডেল, কোমলপানীয়ের তিনটি বোতল ও একটি মোবাইল ফোন পাওয়া যায়। উদ্ধারকৃত মোবাইল ফোনটি লিজন খানের বলে জানা গেছে। তাঁর মাথায় সামান্য আঘাতের চিহ্নও ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পরিবারের লোকজন জানায়, ঢাকা থেকে এসে বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে ঘোরাঘুরি করে রাত ১০টার দিকে ঘর এসে ঘুমিয়ে পড়েন লিজন। ঘুমানোর ১০ থেকে ২০ মিনিট পর কে বা কারা ফোন কল করে তাঁকে ডেকে নিয়ে যায়। পরের দিন সকালে তাঁর লাশ পাওয়া যায়। থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয়। পরে ২০২১ সালের ৮ নভেম্বর আদালতে হত্যা মামলা হয়। তদন্তের জন্য সিআইডি বা পিবিআইকে দায়িত্ব দেওয়ার দাবি করছিল বাদীপক্ষ। কিন্তু আদালত তা নাকচ করে করিমগঞ্জ থানাকে দেন। পরে এই ঘটনাকে অপমৃত্যু হিসেবে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় পুলিশ। বজ্রপাতে নিহত বলে উল্লেখ করা হয়।

এর নেপথ্যে জাপা নেতা মুজিবুল হক চুন্নু এবং তৎকালীন ওসি মমিনুল হক কলকাঠি নেড়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

মানববন্ধনে লিজনের বড় ভাই আশিক খান বলেন, ‘আমি বিএনপির রাজনীতি করি বলে আমার ভাইকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ড মুজিবুল হক চুন্নুর মদদে হয়েছে। পরে এই হত্যাকাণ্ডকে বজ্রপাতে নিহত বলে চালিয়ে দেওয়া হয়। অথচ আমার ভাইয়ের হত্যাকাণ্ডের দু’দিন আগে থেকে দু’দিন পর পর্যন্ত এলাকায় কোনো বজ্রপাত হয়নি, বৃষ্টিপাত হয়নি। আমার ভাইকে হত্যা করা হয়েছে এটাই মহা সত্য, আর এই মামলা ডিসমিস করে দেয় মুজিবুল হক চুন্নু। এখন দেশ স্বাধীন হয়েছে, আমি এই হত্যাকাণ্ডের পুনঃতদন্ত চাই। আমি আমার ভাইয়ের হত্যার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের শাস্তি চাই।’

লিজনের মা রুবিয়া আক্তার বলেন, ‘গত সরকারের সময় আমরা বিচার পাই নাই। এ সরকারের কাছে আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই। আপনাদের কাছে অনুরোধ আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।’

ওই সময় করিমগঞ্জ থানার তৎকালীন ওসি মো. মমিনুল ইসলাম বলেছিলেন, লিজনের নাক–মুখে রক্তাক্ত কাটা দাগ ছিল। আমরা এখনো ধারণা করতে পারছি না এটা হত্যা নাকি অপমৃত্যু। তিনটি বোতলের মধ্যে যে খালি বোতলটি পাওয়া গেছে সেটি কীটনাশক বা এ রকম কিছু বলে ধারণা করা হচ্ছে। লাশের বুকে, পেটে যে কালো দাগ হয়ে আছে, বজ্রপাতের আঘাতের মতো মনে হচ্ছে। মাথার আঘাতটি ইটের আঘাতের মতো মনে হচ্ছে।

এই অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জাপা মহাসচিব ও কিশোরগঞ্জ–৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘এটা আল্লাহই জানে ভাই। আমি কিছু বলতে পারব না।’

করিমগঞ্জ থানার বর্তমান ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, ‘তখন আমি ছিলাম না। আমি তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে বিষয়টি দেখব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধান ৩ দিনের রিমান্ডে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সেলিম প্রধান। ছবি: সংগৃহীত
সেলিম প্রধান। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর গুলশান থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধানকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আজ সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান এ নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. হারুনুর রশিদ।

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ওই মামলায় সেলিম প্রধানকে আজ কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গুলশান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোজাম্মেল হক মামুন ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

গত ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বারিধারার একটি রেস্তোরাঁ থেকে সেলিম প্রধানসহ ৯ জনকে আটক করে পুলিশ। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ৬ দশমিক ৭ কেজি ওজনের সিসা জব্দ করা হয়। এ ছাড়া সাতটি সিসা স্ট্যান্ড ও অন্যান্য সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় মাদক আইনে মামলা করা হয়। পরে সেলিম প্রধানকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আরেক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জেনেভা ক্যাম্পে জাহিদ হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র‍্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।

জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।

তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিদেশ থেকে আসা পার্সেলের নামে প্রতারণা, ব্যবসায়ীর ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নিল তরুণ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বিদেশ থেকে আসা পার্সেলের নামে প্রতারণা, ব্যবসায়ীর ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নিল তরুণ

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।

এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।

পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।

ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জুয়া, প্রতারণায় জড়িত ৫০ হাজার মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব স্থগিত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জুয়া, প্রতারণায় জড়িত ৫০ হাজার মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব স্থগিত

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।

সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।

ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।

সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।

১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’

অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।

সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত