Ajker Patrika

ছিনতাইকারীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করে গেল প্রাণ, দুই থানার ঠেলাঠেলি 

নুরুল আমিন হাসান, উত্তরা (ঢাকা) 
আপডেট : ০৭ জুলাই ২০২২, ১৯: ৩২
ছিনতাইকারীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করে গেল প্রাণ, দুই থানার ঠেলাঠেলি 

টঙ্গী ব্রিজ দিয়ে হেঁটে পার হচ্ছিলেন মো. সাহেদ হোসেন (২২)। ব্রিজের মাঝামাঝি ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন। ছিনতাইকারীরা মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। একপর্যায়ে ধারালো ছুরির আঘাতে রক্তাক্ত হয়ে পড়ে যান সাহেদ। ছিনতাইকারীরা মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই মারা যান সাহেদ। 

ময়মনসিংহ-ঢাকা মহাসড়কের আব্দুল্লাহপুর সংলগ্ন টঙ্গী ব্রিজের ওপর গতকাল বুধবার দিবাগত রাত ১টা ৪০ মিনিটের দিকে এ ঘটনা ঘটে। 

ওই যুবক রাজশাহীর বাঘা উপজেলার ফতিয়ার দাউড় গ্রামের মো. বাবু আলী ও মেরিনা বেগম দম্পতির ছেলে। 

এদিকে এ ছিনতাইয়ের ঘটনাস্থল নিয়ে ঠেলাঠেলি শুরু করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উত্তরা পূর্ব ও গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) টঙ্গী পূর্ব থানা পুলিশ। উত্তরা পূর্ব থানা পুলিশ বলছে, ঘটনাস্থল টঙ্গী পূর্ব থানা এলাকায়। আবার টঙ্গী পূর্ব থানা পুলিশ বলছে, এটি উত্তরা পূর্ব থানা এলাকায়। 

ঘটনা জানার পরপরই ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ওই যুবকের নিথর দেহ টঙ্গী ব্রিজের আব্দুল্লাহপুর সংলগ্ন এলাকায় পড়ে রয়েছে। আর রক্তে ভেসে গেছে ব্রিজের হাঁটার অংশ। যুবকের কাঁধে রয়েছে ব্যাগ। পরনে চেক শার্ট, জিনসের প্যান্ট। রক্তে শার্টও ভিজে একাকার। 

খবর পেয়ে উত্তরা পূর্ব থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিথর দেহ উদ্ধার করে টঙ্গীর শহীদ আহসানুল্লাহ মাস্টার হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করে। তাঁর সঙ্গে থাকা ব্যাগ তল্লাশি করে পাওয়া জাতীয় পরিচয়পত্র দেখে তাঁর পরিচয় শনাক্ত করে পুলিশ। 

ছিনতাইকালে ওই পথ দিয়েই যাচ্ছিলেন উত্তরায় বসবাসরত চাকরিজীবী আদনান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওই যুবক টঙ্গী থেকে হেঁটে উত্তরায় প্রবেশ করছিলেন। তাঁর কিছু দূরই আমি ছিলাম। ব্রিজের মাঝখানে আসা মাত্র পাঁচ-ছয় জন ছিনতাইকারী তাঁর গতিরোধ করে টাকা পয়সা, মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। তখন ওই যুবক ছিনতাইকারীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু করেন। এ সময় বাস র‍্যাপিড ট্রানজিটের (বিআরটি) শ্রমিকেরা ব্রিজের ওপর থেকে দেখতে পেয়ে চিৎকার শুরু করে। আমিও পেছন থেকে চিৎকার করি। কিন্তু কিছুই হলো না। ছিনতাইকারীরা তাঁর শরীরের বিভিন্ন জায়গা আঘাত করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তখন ছিনতাইকারীরা তাঁর মানিব্যাগ ও মোবাইল ফোন নিয়ে আব্দুল্লাহপুর ব্রিজের নিচের ওয়াকওয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়।’ 

ঘটনাস্থলের পাশের স’মিলের নৈশপ্রহরী আব্দুল করিম  আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এই ব্রিজে প্রায়ই ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। মাঝে মাঝে রাতে পুলিশ থাকে, আবার থাকে না।’ 

ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন উত্তরা পূর্ব থানার এসআই সজল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে টঙ্গী ব্রিজের ওপর একজন অচেতন অবস্থায় পরে থাকতে দেখে তাঁকে উদ্ধার করে টঙ্গী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।’ তিনি বলেন, ‘ঘটনাটি টঙ্গী থানা এলাকায় পড়েছে। এ বিষয়ে টঙ্গী থানা পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।’ 

অপরদিকে জিএমপির টঙ্গী পূর্ব থানার এএসআই পারভেজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি উত্তরা পূর্ব থানায় এলাকার মধ্যে। এটি আমাদের থানায় সীমানার মধ্যে নয়। আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানাইছি। তাঁরা ব্যবস্থা নেবেন।’ 

সর্বশেষ আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে উত্তরা পূর্ব থানার ডিউটি অফিসার এসআই সামছুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আব্দুল্লাহপুরে ছিনতাইকারীদের হাতে নিহতের ঘটনা টঙ্গী থানা এলাকায়। সবকিছু টঙ্গী থানায়।’ 

তবে টঙ্গী পূর্ব থানার ডিউটি অফিসার এসআই মিজান বলছেন, ‘ছিনতাইকারীদের হাতে নিহতের ঘটনা ডিএমপির উত্তরা পূর্ব থানা এলাকায়। মনে হয় তাঁরা আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়েছেন। আমাদের থানায় এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাবুই পাখির কান্না কেউ শুনল না, কেটে ফেলা হলো তালগাছটি

অপারেশন সিঁদুরে নেতৃত্ব দেওয়া অফিসার হচ্ছেন ভারতের র-এর প্রধান

পিআর পদ্ধতিতে ভোটাররা জানবেন না কে তাঁর এমপি, এটি বাংলাদেশের জন্য অনুপযুক্ত: সালাহউদ্দিন

নীলফামারীতে 'আটক' কুমিল্লার দুই সাংবাদিক

ডেঙ্গুতে পাথরঘাটা উপজেলা পরিষদের কর্মকর্তার মৃত্যু

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত