Ajker Patrika

‘চাকরি খুঁজতে গিয়ে’ দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার নারী, গ্রেপ্তার ৩

গাজীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৮: ০৩
‘চাকরি খুঁজতে গিয়ে’ দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার নারী, গ্রেপ্তার ৩

মায়ের অসুস্থতার খবর পেয়ে গ্রামের বাড়িতে ছুটে গিয়েছিলেন তৈরি পোশাককর্মী (৪১)। ফিরে এসে দেখেন তাঁর চাকরি নেই। তাই চাকরি খুঁজতে গিয়েছিলেন গাজীপুরের একটি তৈরি পোশাক কারখানায়। ফেরার পথে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন তিনি। অভিযুক্তরা ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে তা ছড়িয়ে দেওয়ার ও প্রাণনাশ করার হুমকি দিয়ে ছেড়ে দেন ভুক্তভোগী ওই নারীকে।

গত শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) গাজীপুর মহানগরীর সদর থানার গজারিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মামলার পর গতকাল সোমবার রাতে তিন যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার দুপুরে তাঁদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। 

গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন—গাজীপুর সদর থানার গাজারিয়া এলাকার কবির হোসেনের ছেলে মোসাদ্দেক হোসেন ওরফে অপু (৩২), ময়মনসিংহের ফুলপুর থানার ডিউর গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে হৃদয় মিয়া (২০) এবং একই জেলার ত্রিশাল উপজেলার বিয়ারা গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে নাঈম ইসলাম (১৮)। 

মামলার এজাহার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গাজীপুর মহানগরীর সিটপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় থেকে একটি পোশাক তৈরি কারখানায় নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে চাকরি করতেন ওই নারী। দুই মাস আগে তাঁর মা অসুস্থ হলে তিনি ঠাকুরগাঁও জেলার রাণীশংকৈল গ্রামের বাড়িতে মায়ের কাছে যান। পরে তাঁর মা সুস্থ হলে কর্মস্থলে ফিরে এসে জানতে পারেন তাঁর চাকরি চলে গেছে। 

৪ ফেব্রুয়ারি সকালে ওই নারী চাকরির সন্ধানে গাজীপুর মহানগরীর সদর থানাধীন বাংলাবাজার এলাকার একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে চাকরির বিষয়ে কথা বলতে যান। সেখান থেকে ফেরার পথে তিনি ক্ষুধার্ত বোধ করলে খাবারের জন্য আশপাশে হোটেল খুঁজতে থাকেন। এ সময় অজ্ঞাত পরিচয় এক যুবক (মোসাদ্দেক হোসেন ওরফে অপু) এসে তাঁর সঙ্গে কথা বলেন। 

ওই যুবককে ক্ষুধার কথা জানান ওই নারী। তখন ওই যুবক তাঁকে সদর থানার একটি গজারি বনের ভেতরের মার্কেটে একটি খাবারের হোটেল আছে বলে জানান। হোটেলে খাবার খেয়ে সকাল ১০টার দিকে তিনি গজারি বনের ভেতর দিয়ে বাসায় ফিরতে থাকেন। এ সময় পথে আশপাশে কোনো লোকজন না থাকায় ওই যুবক (মোসাদ্দেক হোসেন ওরফে অপু) পেছন থেকে ওই নারীর মুখ চেপে ধরেন এবং গলায় ছুরি ধরে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে গজারি বনের আরও গভীরে নিয়ে যান। সেখানে ওই যুবক তাঁকে ধর্ষণ করেন। 

ধর্ষণ শেষে অপু মোবাইল কল দিয়ে আরও অজ্ঞাত দুজন যুবককে ঘটনাস্থলে ডেকে নিয়ে আসেন। তাঁরা এসে বেলা আনুমানিক সোয়া ১১টা পর্যন্ত ওই তিন যুবক পালাক্রমে ধর্ষণ করেন। এ সময় তাঁদের মধ্যে হৃদয় নামে একজন মোবাইলে ভিডিও ধারণ করেন। পরে আসামিরা ঘটনাটি কাউকে জানালে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে চলে যান। 

গাজীপুর মহানগর পুলিশের সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিয়াউল ইসলাম বলেন, ‘ভুক্তভোগী নারী বাদী (নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (সংশোধনী/ ২০০৩) এর ৯ (৩) তৎসহ পর্ণোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১২ এর ৮ (১) ধারায়) হয়ে একটি মামলা করেছেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে অভিযান চালিয়ে গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে হৃদয় মিয়ার মোবাইলে ধর্ষণের ভিডিও পাওয়া গেছে। আসামিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। নারীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত