Ajker Patrika

এমএলএম ব্যবসার নামে প্রতারণা, পরিচালকসহ গ্রেপ্তার ১৭

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
এমএলএম ব্যবসার নামে প্রতারণা, পরিচালকসহ গ্রেপ্তার ১৭

ই-কমার্স ও এমএলএম ব্যবসার নামে প্রতারণার মাধ্যমে কোটি টাকার অধিক হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে সুইসড্রাম কোম্পানির পরিচালক কাজী আল-আমিনসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-৪। মঙ্গলবার রাত থেকে আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত রাজধানীর পল্টন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। 

গ্রেপ্তার ১৭ জন হলেন, কাজী আলামিন, সালাউদ্দিন, শেখ মো. আব্দুল্লাহ, মনিরা ইয়াসমিন, জাহিদ হাসান, স্বপন মিয়া, শাহজাহান, মিজানুর রহমান, বাদশা অরফে সুলাইমান, ইমাম হোসাইন, আব্দুর রাজ্জাক ওরফে আনারুল ইসলাম, মিজানুর রহমান, ফারুক উদ্দিন, আঞ্জুমান আরা বেগম, শেখ রবিন, ইমাম হোসাইন ও মোছা. আছমা বেগম। 

অভিযানে তাঁদের কাছ থেকে প্রতারণায় ব্যবহৃত ২টি ল্যাপটপ,১টি প্রজেক্টর, কোম্পানির ব্যবহৃত ২টি সিল, কোম্পানির ২টি ব্যানার, বিভিন্ন ধরনের ৪টি ডায়েরি ও খাতা,১টি রেজিস্টার, কোম্পানির ১২৫টি লিফলেট, প্রতারণায় ব্যবহৃত সুইসড্রাম কোম্পানির ভুয়া ওষুধ-প্রসাধনী সামগ্রী, সুইসড্রাম কোম্পানির ২৫ সেট ডিসট্রিবিউটর ওয়ার্কিং ফাইল, ২৩টি মোবাইল ফোন এবং নগদ ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৫ টাকা জব্দ করা হয়। 

র‍্যাবের অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হক জানান, সম্প্রতি মাল্টিলেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) ও ই-কমার্স ব্যবসার মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে দেশ জুড়ে সমালোচিত হয়েছে ই-কমার্স ব্যবসা। তেমনি একটি প্রতিষ্ঠান সুইসড্রাম কোম্পানি। তিনি বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টা থেকে আজ বুধবার সকাল সাড়ে দশটা পর্যন্ত রাজধানীর পল্টন এলাকায় অভিযান চালিয়ে সুইসড্রাম কোম্পানির অন্যতম পরিচালক কাজী আল-আমিনসহ (৩৪) মোট ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।’ 

র‍্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, বেকার ও অসচ্ছল যুবক-যুবতী এমনকি শিক্ষিত লোকজনকে স্বল্প সময়ে অধিক মুনাফা লাভের প্রলোভন দেখিয়ে প্লাটিনাম, গোল্ড, সিলভার ও সাধারণ সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে। তিনি বলেন, ‘কথাবার্তায় পটু, আর্থিকভাবে মোটামুটি স্বচ্ছলদেরকে সদস্য সংগ্রহের জন্য চাপ প্রয়োগ করা হয়। তাঁদের মোটা অঙ্কের টাকা প্রদানে বাধ্য করে এবং নতুন সদস্য অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে ব্যাপক অর্থ আত্মসাৎ করে।’ 

এ ছাড়াও গ্রাহক সংগ্রহের জন্য নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা বোনাস এবং অধিক মুনাফা লাভের কথা বলে তিনি সদস্যদের সঙ্গে প্রতারণা করতেন বলে জানান এই র‍্যাব কর্মকর্তা। 

আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মোটিভেশনাল বক্তব্য প্রদান ও মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে সদস্য হিসেবে সুইসড্রাম অ্যাপস-এ অ্যাকাউন্ট খোলার মাধ্যমে প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে কোম্পানিটি। কোম্পানিতে নতুন সদস্যদের পাঁচটি ক্যাটাগরির মাধ্যমে অন্তর্ভুক্ত করা হতো। এক ও দ্বিতীয় ক্যাটাগরিতে ৪ হাজার ২০০ থেকে ৬ হাজার ২০০ টাকার বিনিময়ে এক প্যাকেট ওষুধ ও তৃতীয়-চতুর্থ ক্যাটাগরিতে ২৬ হাজার ২০০ থেকে ৫৮ হাজার টাকার বিনিময়ে ৬ থেকে ১৪ প্যাকেট ওষুধ এবং পঞ্চম ক্যাটাগরিতে ১ লাখ ১৭ হাজার টাকার বিনিময়ে ২৮ প্যাকেট ভুয়া ওষুধ দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি প্রতারণা করে আসছে। প্রতিষ্ঠানটি তাঁদের নির্দিষ্ট কোন সাইনবোর্ড ও ঠিকানা ব্যবহার করত না। 

র‍্যাব জানায়, কোম্পানিটির সকল কার্যক্রম প্রতারণামূলক। পণ্যসমূহ বিএসটিআই এবং ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর অনুমোদিত নয়। পণ্য আমদানির কোন বৈধ কাগজপত্রও তাঁদের নেই। কোম্পানিটির ভ্যাট বা ট্যাক্স প্রদান করার কোন রেকর্ড নেই। কোম্পানিটির ওষুধ ও সৌন্দর্যবর্ধনকারী প্রসাধনী সামগ্রী শরীর ও ত্বকে ব্যবহার অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ও ক্ষতিকর। এমনকি এতে ক্যানসার ও অন্যান্য জটিল রোগের সৃষ্টি হতে পারে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছে র‍্যাবের এই কর্মকর্তা। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত