Ajker Patrika

শ্বশুরবাড়িতে যুবকের ঝুলন্ত লাশ: হত্যা মামলার স্ত্রী ও শাশুড়ি গ্রেপ্তার

রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি
শ্বশুরবাড়িতে যুবকের ঝুলন্ত লাশ: হত্যা মামলার স্ত্রী ও শাশুড়ি গ্রেপ্তার

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে যুবককে শ্বশুরবাড়ি থেকে হারুনুর রশিদ (৩২) নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে নিহতের স্ত্রীসহ শ্বশুরবাড়ির তিনজনের নাম উল্লেখ করে এবং ৩-৪ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

আজ বুধবার দুপুরে রায়পুর থানায় মামলাটি দায়ের করেন নিহতের বোন জ্যোৎস্না আক্তার (২৮)। এ ঘটনায় আটক থাকা স্ত্রী ও শাশুড়িকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বুধবার দুপুরে লক্ষ্মীপুর আদালতে পাঠায় পুলিশ। 

মামলার আসামিরা হলেন, নিহতের স্ত্রী আমেনা আক্তার বৈশাখী (১৯), স্ত্রীর বড় বোনের স্বামী মো. জুয়েল (৩০) ও শাশুড়ি খুকি বেগম (৪৮)। এ ছাড়া অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। 

গতকাল মঙ্গলবার সকালে রায়পুর উপজেলার দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের হাজীমারা মুনছুর দরবেশের বাড়ি থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এটি নিহত হারুনের শ্বশুর বাড়ি। তিনি সদর উপজেলার চর রুহিতা ইউনিয়নের চররুহিতা গ্রামের গোড়া হামিদের বাড়ির আব্দুল মান্নানের ছেলে। 

মামলার এজাহারে সূত্রে জানা যায়, বিয়ের পর থেকেই পারিবারিক বিভিন্ন বিষয়ে হারুন ও বৈশাখীর মধ্যে দাম্পত্য কলহ চলছিল। ঘটনার দিন বিকেলে হারুন শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে যান। রাতে তাঁরা স্বামী-স্ত্রী একঘরে ঘুমান। রাত পৌনে ৪টার সময় তাঁর শাশুড়ি খুকি বেগম হারুনের বাবার মোবাইলে কল করে হারুনের মৃত্যুর খবর দেন। ঘটনাস্থলে এসে তাঁরা হারুনকে ঘরের খাটের ওপর মৃত অবস্থায় দেখতে পান। এ সময় তাঁর গলায় ও কপালে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। হারুনকে আঘাত ও শ্বাসরোধে হত্যা শেষে লাশ সুপারি গাছে ঝুলিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচারণা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। 

হারুনুর রশিদের মা কহিনুর বেগম জানান, পাঁচ মাস আগে হারুনুর রশিদ সঙ্গে বিয়ে হয় আমেনা আক্তার বৈশাখীর। গত সোমবার রাতে হারুন তাঁর ছোট শ্যালিকা জন্মদিনের অনুষ্ঠানে যান। সেখানে তাঁর স্ত্রীর বড় বোনের জামাই জুয়েলসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। পরে রাত ৩টার দিকে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের কাছ থেকে হারুনের মৃত্যুর খবর পান। 

হারুনের মায়ের অভিযোগ, তাঁর ছেলেকে শ্যালিকার মেয়ের জন্মদিনে দাওয়াত খেতে ডেকে নিয়ে হত্যা করে মরদেহ ঝুলিয়ে রাখা হয়। 

হাজীমারা পুলিশ ফাঁড়িতে আটক থাকা অবস্থায় নিহতের স্ত্রী আমেনা বেগম বৈশাখী বলেন, ‘কথা-কাটাকাটির জের ধরে অভিমানে আমার স্বামী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। কিন্তু আমাদেরকে হয়রানির জন্য শ্বশুর পরিবারের লোকজন মামলা দিয়ে আসামি বানিয়েছেন। বিভিন্ন রটনা ছড়িয়ে সামাজিকভাবেও আমাদেরকে হেয় করা হচ্ছে।’ 

রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিপন বড়ুয়া মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আটক থাকা আমেনা আক্তার বৈশাখী ও খুকি বেগমকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত