Ajker Patrika

প্রেমিকের খোঁজে গিয়ে ধর্ষণের শিকার, অভিমানে কিশোরীর আত্মহত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ১০ জুন ২০২২, ১৯: ৩৮
প্রেমিকের খোঁজে গিয়ে ধর্ষণের শিকার, অভিমানে কিশোরীর আত্মহত্যা

চট্টগ্রামে ১৪ বছরের এক কিশোরী বাড়ি থেকে পালিয়ে প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে তাঁকে না পেয়ে উল্টো ধর্ষণের শিকার হয়ে ফিরেছিল। পরে মানসিক আঘাত ও অভিমানে নিজ বাড়িতে এসে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। আজ শুক্রবার মামলাটির তদারককারী কর্মকর্তা সিআইডি চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিদর্শক মুহাম্মদ শরীফ আজকের পত্রিকাকে এসব তথ্য জানান।

গত ৩ জুন নগরীর বায়েজিদনগর আবাসিকের একটি বাসায় সামিহা আফরীন মৌ নামে এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনার তদন্তে উঠে আসা এসব তথ্য জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। 

এ ঘটনায় গত বুধবার সেই প্রেমিক জিসানুল ইসলাম (২০) ও মো. রুবেল (১৯) নামে এক টমটমচালককে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম মেহনাজ রহমানের আদালতে এই দুজন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। মামলাটি তদন্ত করছেন সিআইডি চট্টগ্রামের উপপরিদর্শক স্বরজিৎ কুমার দে। 

নিহত শিক্ষার্থী শেরশাহ কলোনির ডা. মাযহারুল হক উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণিতে পড়ত। 

মামলাটির তদারককারী কর্মকর্তা সিআইডি চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিদর্শক মুহাম্মদ শরীফ আজ শুক্রবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গত ৩১ মে কোচিংয়ে যাওয়ার কথা বলে মেয়েটি তার এক বান্ধবীকে নিয়ে প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করতে কক্সবাজারে যায়। কিন্তু সেখানে গিয়ে প্রেমিকাকে খুঁজে পাইনি। কোনো কারণে ওই প্রেমিক তার সঙ্গে দেখা করেনি। পরে সেখানে টমটমচালক রুবেল মেয়েটির দেখা পায়। ওই চালক প্রেমিককে খুঁজে দেওয়ার কথা বলে কিশোরীকে ফুসলিয়ে রাখেন। এর আগে তার বান্ধবীকে গাড়িতে তুলে শহরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পরে মেয়েটিকে এদিক-সেদিক ঘুরিয়ে রাতে একটি হোটেলে রেখে ধর্ষণ করেন অভিযুক্ত রুবেল। ওই ঘটনার পর মেয়েটি তার বাসায় ফিরে আসে। 

সিআইডি এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘৩ জুন ভোরে নিজ বাসায় গলায় ফাঁস দিয়ে ওই কিশোরী আত্মহত্যা করে। বায়েজিদ থানায় প্রথমে ঘটনাটি একটি অপমৃত্যুর মামলা হিসেবে নেওয়ার কথা ছিল। তবে সিআইডি সদর দপ্তরের নির্দেশে ঘটনাটি নিয়ে প্রাথমিক তদন্ত চালানো হয়। সেখানে ওই কিশোরীকে ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়। পরদিন ৪ জুন এ ঘটনায় নিহতের বোন সালমা আক্তার সাথী বাদী হয়ে বায়েজিদ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে ধর্ষণ ও আত্মহত্যার প্ররোচনার পৃথক দুটি ধারায় মামলা করেন। মামলায় আসামি করা হয় জিসানুল ইসলাম ও টমটমচালক রুবেলকে।’ 

ফেসবুকে পরিচয়ের সূত্র ধরে জিসানুলের সঙ্গে মেয়েটির প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। জিসানুল আগে চট্টগ্রামের ফুলকলিতে চাকরি করতেন। পরে সেখান থেকে চাকরি ছেড়ে কক্সবাজারে চলে যান। মূলত প্রেমিকের দেখা না পাওয়া এবং ধর্ষিতা হওয়ার অভিমানে ওই কিশোরী আত্মহত্যা করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে বলে জানান সিআইডি কর্মকর্তা। 

মুহাম্মদ শরীফ বলেন, রুবেল বিবাহিত। তাঁর একটি সন্তান রয়েছে। এদিকে মেয়েটির আত্মহত্যার জন্য পারিবারিক অসচেতনতাও প্রধান কারণ। ওই কিশোরীর বয়স কম। একটি মেয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে কোথায় চলে যাচ্ছে, কী করছে তার খবর পরিবারের সদস্যরা রাখেনি!

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত