Ajker Patrika

মরদেহ রেখে পালালেন স্বামী, পুলিশে খবর দিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৪ এপ্রিল ২০২৩, ২০: ১০
মরদেহ রেখে পালালেন স্বামী, পুলিশে খবর দিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ

হাসপাতালে স্ত্রীর লাশ রেখে স্বামীর পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই নারীর বাবার অভিযোগ, তাঁর মেয়েকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। এই ভয়েই জামাতা পালিয়ে গেছেন।

মৃত গৃহবধূ শাহিদা বেগম (২৮) দুই সন্তানের মা। তাঁর মরদেহ আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রেখে পালিয়ে গেছেন স্বামী হারুন অর রশিদ চৌকিদার। শাহিদার বাবা আব্দুল কাদের চৌকিদারের অভিযোগ, তাঁর মেয়েকে হত্যা করে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে চালিয়ে দেওয়ার নাটক করা হচ্ছে।

ঘটনা ঘটেছে আমতলী উপজেলার চলাভাঙ্গা গ্রামে গতকাল সোমবার রাতে। আজ মঙ্গলবার বিকেলে বাবার কাছে শাহিদার মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।

জানা গেছে, ১৫ বছর আগে আমতলী উপজেলার শাহজাহান চৌকিদারের ছেলে হারুন অর রশিদ চৌকিদারের সঙ্গে কুমিল্লা জেলার লাকসাম উপজেলার বাটিয়াভিটা গ্রামের আব্দুল কাদের চৌকিদারের কন্যা শাহিদার বিয়ে হয়। এই দম্পতির দুটি কন্যাসন্তান রয়েছে। গত জানুয়ারিতে হারুন আমতলী উপজেলার নীলগঞ্জ গ্রামের শানু মিয়ার মেয়ে নার্গিসকে বিয়ে করেন। এ নিয়ে প্রথম স্ত্রী শাহিদার সঙ্গে প্রায়ই ঝগড়া হয়। হারুন তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রীকে মেনে নিতে চাপ দিতে থাকেন। কিন্তু শাহিদা রাজি হননি।

এ নিয়ে হারুন বেশ কয়েকবার শাহিদাকে মারধর করেছেন বলে জানান স্থানীয়রা। গত ২০ মার্চ হারুন দ্বিতীয় স্ত্রীকে বাড়িতে আনেন। এরপর প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর ঝগড়াবিবাদ আরও তীব্র হয়।

সোমবার রাতে ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় শাহিদাকে দেখতে পান হারুন। তাঁকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন তিনি। মরদেহ রেখেই পালিয়ে যান। মরদেহটি হাসপাতালের মেঝেতে দীর্ঘ সময় পড়ে থাকে। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা মর্গে পাঠায়।

আজ বিকেলে বাবা আব্দুল কাদের চৌকিদারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। শাহিদার বাবার অভিযোগ, জামাতা হারুন ও তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী নার্গিস পরিকল্পিতভাবে তাঁর মেয়েকে হত্যা করেছেন। এখন গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। হারুন অর রশিদ তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী নার্গিস বেগমসহ পরিবারের লোকজন পালাতক।

এ বিষয়ে হারুন অর রশিদের ব্যবহৃত দুটি ফোন নম্বরে কল করা হলে নম্বর দুটি বন্ধ পাওয়া যায়।

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মেহেরিন আশ্রাফ বলেন, ‘স্বজনেরা শাহিদা নামের এক গৃহবধূর মরদেহ হাসপাতালে রেখে পালিয়ে গেছেন। পরে পুলিশে খবর দিয়ে মরদেহ তাঁদের কাছে হস্তান্তর করেছি।’

আমতলী থানার ওসি এ কে এম মিজানুর রহমান বলেন, ‘মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা মর্গে পাঠিয়েছি। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ বাবার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত