Ajker Patrika

সংযোগ সড়ক কেটে বালু উত্তোলন, হুমকিতে স্পার

 সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি
সংযোগ সড়ক কেটে বালু উত্তোলন, হুমকিতে স্পার

বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে যমুনা নদীর ভাঙন নিয়ন্ত্রণের জন্য নির্মিত বন্যা নিয়ন্ত্রণ স্পারের খুব কাছ থেকে অবৈধভাবে বালু তোলা হচ্ছে। এতে ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে স্পারটি। এ ছাড়া স্পারের সংযোগ সড়ক কেটে তৈরি করা হয়েছে উত্তোলন করা বালু পরিবহনের জন্য রাস্তা। এতে ওই সড়কে সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য গর্ত।

তা ছাড়া বালু পরিবহনের কারণে স্পারের সংযোগ সড়কে বন্ধ রয়েছে যান চলাচল। এলাকার প্রভাবশালীরা অবৈধভাবে এখান থেকে বালু উত্তোলন করছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। আর প্রশাসন বলছে, শিগগিরই সেখানে অভিযান পরিচালনা করে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নদীভাঙন থেকে জানমাল রক্ষার্থে ২০০২ সালে উপজেলার হাটশেরপুর ইউনিয়নের নিজবলাইল বাজারের সামনে ৫৫৮ মিটার দৈর্ঘ্যের এই স্পার নির্মাণ করা হয়। প্রায় ১০ দিন ধরে সেই স্পার থেকে মাত্র ১৫০ মিটার দূরে অবৈধভাবে বালু তোলা হচ্ছে। স্পারের সংযোগ সড়ক কেটে তৈরি করা হয়েছে উত্তোলন করা বালু পরিবহনের জন্য রাস্তা। এসব বালু প্রতিদিন ১০ থেকে ১২টি ট্রলিতে করে অন্যত্র নেওয়া হচ্ছে। ট্রলি দিয়ে বালু পরিবহনের কারণে স্পারের সঙ্গে সড়কের সংযোগস্থলে প্রায় পাঁচ ফুট দেবে গেছে।একই সঙ্গে বৃষ্টির দিনে হাঁটুকাদার সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া স্পারের সংযোগ সড়কের প্রায় ১০০ মিটার অংশে অসংখ্য গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। তাই এই সড়কে এখন কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারে না।

এত কাছ থেকে বালু তোলার কারণে ভাঙনঝুঁকিতে রয়েছে স্পারটি। অন্যদিকে যেসব জমি থেকে বালু তোলা হচ্ছে সেসব জমিতে তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। এসব জমিতে বছরে দুটি ফসল ফলানো যেত।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্পার এলাকা থেকে স্থানীয় প্রভাবশালীরা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছেন। তাই নিরীহ কৃষকেরা প্রতিবাদ করার সাহস পান না।

স্থানীয় মুরব্বি মন্ত্রী মিয়া বলেন, ‘এখানে বালু উত্তোলনের জন্য আমরা খুবই সমস্যায় আছি। একদিকে রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, অপরদিকে ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে স্পারটি।’

স্পারের কাছ থেকে বালুবোঝাই করা ট্রলির চালক হেলাল মিয়া বলেন, ‘এই পয়েন্টটিতে বালু উত্তোলনের নেতৃত্বে রয়েছেন হাটশেরপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান মধু, তাঁর ছেলে তহিদুল ইসলাম, হাটশেরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এফাজ উদ্দিন, স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য তিতাস মিয়া, হাটশেরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল ওয়াকি শিলু ও বাদল মিয়া।’

মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে সাবেক ইউপি সদস্য তিতাস বলেন, ‘আমি সেখানে বালু উত্তোলন করি না। মোবাইলে এ নিয়ে আমি কথা বলতে রাজি নই।’

কথা হয় হাটশেরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এফাজ উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমি বালু উত্তোলন করছি না। সেখানে বালু উত্তোলন বন্ধ হোক, এটা আমিও চাই।’

এ বিষয়ে জানতে মতিয়ার রহমান মধু ও তাঁর ছেলে তহিদুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলে তাঁরা ধরেননি। স্থানীয় হাটশেরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নূর মো. মেহেদী হাসান আলো বলেন, ‘আমি কয়েকদিন এলাকায় ছিলাম না। খোঁজখবর নিয়ে যারা এর সঙ্গে জড়িত তাঁদের বালু তুলতে নিষেধ করব।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, শিগগিরই সেখানে অভিযান পরিচালনা করে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সারিয়াকান্দি-সোনাতলা আসনের সংসদ সদস্য সাহাদারা মান্নান বলেন, ‘বালু উত্তোলন বন্ধে আমি প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...