Ajker Patrika

৪ বছরেই অকেজো সিসি ক্যামেরা

মাইনউদ্দিন শাহেদ, কক্সবাজার
আপডেট : ২২ এপ্রিল ২০২২, ০৯: ০৭
৪ বছরেই অকেজো সিসি ক্যামেরা

অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পর্যটন শহর কক্সবাজারকে ২০১৮ সালে ক্লোজসার্কিট ক্যামেরার (সিসিটিভি) আওতায় আনা হয়েছিল। তখন শহরের প্রধান সড়ক ও অলিগলির ৪০টি স্থানে ৫২টি সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়। কিন্তু এসব ক্যামেরা এখন আর সচল নেই। কেবল শহরের বাজারঘাটা এলাকায় তিন থেকে চারটি ক্যামেরা সচল রয়েছে বলে জানা গেছে। এদিকে সম্প্রতি এই শহরে ছিনতাই, চুরি, খুন-খারাবি ও কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত বেড়ে যাওয়ায় এখন উদ্বেগ বেড়েছে সবার মধ্যে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে রোহিঙ্গারা কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে আশ্রয় নেয়। প্রায় সাড়ে আট লাখ রোহিঙ্গার সেবার জন্য আন্তর্জাতিক দাতা ও এনজিও সংস্থার কয়েক হাজার দেশি-বিদেশি নাগরিক শহরে বসবাস করে আসছেন। সেই সময় কয়েকটি ছিনতাইয়ের ঘটনার পর সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়।

জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর) শহরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ৬০ লাখ টাকা খরচ করে সিসিটিভি ক্যামেরার মনিটরিং সিস্টেম স্থাপন করে দিয়েছিল। এ সময় সিদ্ধান্ত ছিল, পুরো শহরের অলিগলি সিসি টিভি ক্যামেরার আওতায় আনা হবে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, কক্সবাজার শহরের হলিডে মোড় থেকে বাসটার্মিনাল-লারপাড়া ও লিংক রোড় থেকে হলিডে মোড় এবং শহরের ২৯টি সড়ক-উপসড়কের উন্নয়নকাজ চলছে। এসব কাজ করতে গিয়ে সড়কের খুঁটি নড়াচড়া করতে হচ্ছে। এতে সিসি টিভি ক্যামেরাগুলো কোথাও ভেঙে গেছে বা অচল হয়ে পড়েছে।

এদিকে ২০১৮ সাল থেকে চলতি বছর পর্যন্ত কক্সবাজার শহরের অপরাধ পর্যালোচনায় দেখা গেছে, এখানে অপরাধের মাত্রা ও ধরন পাল্টাচ্ছে দিন দিন। মাদক সেবন ও পাচারকে কেন্দ্র করে কিশোর ও যুবকেরা নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। এর মধ্যে শহরে ছিনতাই বেড়েছে ৭ গুণ।

১৩ এপ্রিল রাতে শহরের বাসটার্মিনাল এলাকায় ছিনতাইকারীর করলে পড়ে ছুরিকাঘাতে প্রাণ হারিয়েছিলেন আবুল কালাম (৪৫) নামের এক ব্যবসায়ী। এ মাসে শহর ও আশপাশে পাঁচজন খুন হয়েছেন। বেশ কয়েকটি ছিনতাইয়ের ঘটনাও ঘটেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শহরের বাসটার্মিনাল, জেলগেট এলাকা, আলীর জাহাল, বৌদ্ধমন্দির সড়ক, সার্কিট হাউস রোড়, গোলদিঘি, রুমালিয়াছড়া, কোর্ট বিল্ডিং এলাকাসহ অন্তত ১১টি স্থানে প্রায়ই ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। এ ছাড়া পর্যটন জোনের কলাতলী, সুগন্ধা, লাবণী, ডায়াবেটিক পয়েন্ট এলাকায়ও পর্যটক ও পথচারীরা ছিনতাইয়ের শিকার হচ্ছে।

পুলিশের হিসাবমতে, কক্সবাজার শহরে ২০১৯ সালে ছিনতাইয়ের ঘটনায় মামলা রেকর্ড হয়েছে ৮টি। ২০২০ সালে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ২৯টিতে। আর ২০২১ সালের ৩৩টিতে।

কক্সবাজার দোকান মালিক সমিতির নেতারা আসন্ন ঈদ সামনে রেখে পুলিশের টহল বাড়ানো ও নিরাপত্তা জোরদারের দাবি জানিয়ে আসছে।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার (পরিদর্শক) মো. সেলিম উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে জানান, শহরে তালিকাভুক্ত ছিনতাইকারীর সংখ্যা ১১৭। এর মধ্যে গত এক মাসে সন্ত্রাসী মুন্না বাহিনীর প্রধানসহ ৬০ জনের মতো ধরা পড়েছে। তাদের কাছ থেকে ৩৫-৪০টি ছোরা ও অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান বলেন, ছিনতাই ও কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি শহরের সব শ্রেণিপেশার মানুষের এগিয়ে আসা দরকার। তাহলেই একটি শান্ত শহর গড়ে তোলা সম্ভব হবে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘শহরের অপরাধ দমনে পুলিশের কয়েকটি বিশেষ টিম কাজ করছে। মাদক পাচার রোধ ও কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাতসহ নানা ধরনের অপরাধ বন্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার বিকল্প নেই।

তিনি বলেন, শহরে চলমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কারণে অধিকাংশ সিসিটিভি ক্যামেরা অচল হয়ে পড়েছে। এতে অপরাধীদের চিহ্নিত করতে বেগ পেতে হচ্ছে। তবে শহরের বাজারঘাটা এলাকার ৩-৪টি ক্যামেরা এখনো সচল রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আন্দালিব রহমান পার্থর স্ত্রীকে বিদেশ যেতে বাধা

‘মেয়েরা যেন আমার মরা মুখ না দেখে’, চিরকুট লিখে ঠিকাদারের ‘আত্মহত্যা’

ফরিদপুরে পালিয়ে যাওয়া আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার, থানার ওসিকে বদলি

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করায় ভারতের উদ্বেগ

সৌদি আরবের সঙ্গে ১৪২ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির চুক্তি করে নিজের রেকর্ড ভাঙল যুক্তরাষ্ট্র

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত