Ajker Patrika

ভোট না দেওয়ায় হত্যা, ১১ জনের যাবজ্জীবন

বগুড়া প্রতিনিধি
ভোট না দেওয়ায় হত্যা, ১১ জনের যাবজ্জীবন

নির্বাচন-পরবর্তী হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বগুড়া সদরের শেখেরকোলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রশিদুল ইসলাম মৃধাসহ ১১ জনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। গতকাল সোমবার দুপুরে অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতের বিচারক হাবিবা মণ্ডল এ রায় ঘোষণা করেন।

২০০৩ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি সদরের দক্ষিণভাগ গ্রামের শাহজাহান আলী হত্যা মামলার ১৯ বছর পর এ রায় ঘোষণা করা হলো। 
যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত বাকি আসামিরা হলেন বিপ্লব মিয়া, রাসেল, জুয়েল প্রামাণিক, সবুজ আকন্দ, উজ্জ্বল আকন্দ, আব্দুল মান্নান, পিলু খন্দকার, মোকলেছার রহমান মুকুল, আব্দুল হামিদ খোকা এবং জাহেদুর রহমান।

ইউপি চেয়ারম্যান রশিদুল মৃধা সদরের মহিষবাথান গ্রামের বাসিন্দা। বাকি ১০ জন সদরের দক্ষিণভাগ গ্রামের বাসিন্দা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এপিপি নাছিমুল করিম হলি।

রায় ঘোষণার সময় ইউপি চেয়ারম্যান রশিদুল মৃধাসহ আটজন উপস্থিত ছিলেন। পলাতক ছিলেন বিপ্লব, রাসেল ও জুয়েল প্রামাণিক। মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০০৩ সালের শেখেরকোলা ইউপি নির্বাচনে আব্দুস সাত্তার খান এবং রশিদুল ইসলাম মৃধা চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনে শাহজাহান আলী আব্দুস সাত্তারের প্রচার চালান। ৯ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফলাফলে জয়ী হন রশিদুল মৃধা। ১১ ফেব্রুয়ারি তিনি তাঁর সমর্থকদের নিয়ে এলাকায় মহরা দেন। একপর্যায়ে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে শাহজাহান আলীর সঙ্গে দেখা হয় রশিদুল মৃধা এবং তাঁর সহযোগীদের। শাহজাহান আলী রশিদুল মৃধাকে ভোট দেননি অভিযোগ করে শাহজাহানকে আক্রমণ করার নির্দেশ দেন সহযোগীদের। তাঁরা লাঠিসোটা নিয়ে এলোপাতাড়ি মারতে থাকেন শাহজাহানকে। এ সময় শাহজাহান আলীর মাথায় এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করা হয়।

তাঁকে উদ্ধার করতে স্বজন ও স্থানীয়রা এগিয়ে এলে তাঁদেরও মারার হুমকি দিয়ে প্রকাশ্য ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন হামলাকারীরা। গুরুতর আহত অবস্থায় শাহজাহান আলীকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে একদিন চিকিৎসাধীন থেকে ১৩ ফেব্রুয়ারি মৃত্যু হয় তাঁর।

এ ঘটনায় চেয়ারম্যান রশিদুল মৃধাসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ করে ওইদিনই সদর থানায় হত্যা মামলা করেন নিহতের ভাই মাহমুদুর রহমান।

মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘রশিদুল মৃধাকে ভোট না দেওয়ায় আমার ভাইকে পিটিয়ে মেরেছেন তাঁর সহযোগীরা। তিনি তাঁদের হামলা করার নির্দেশ দিয়েছেন।’

অ্যাডভোকেট নাছিমুল করিম হলি বলেন, মামলার সাক্ষ্য-প্রমাণ বিশ্লেষণ করে ১১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় আটজন উপস্থিত ছিলেন। কোর্ট ইন্সপেক্টর সুব্রত ব্যানার্জি জানান, রায় ঘোষণার পরপরই আসামিদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত