Ajker Patrika

শুরু হলো রাশিয়া-চীন ফোরাম, অর্থনৈতিক অংশীদারত্বে নতুন দিগন্তের সূচনা

অনলাইন ডেস্ক
রাশিয়া-চীন ফোরামের উদ্বোধনের আগে চীনের ভাইস প্রেসিডেন্ট হান ঝেং এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: ক্রেমলিন
রাশিয়া-চীন ফোরামের উদ্বোধনের আগে চীনের ভাইস প্রেসিডেন্ট হান ঝেং এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: ক্রেমলিন

রাশিয়ায় শুরু হলো দুই পরাশক্তি চীন ও রাশিয়ার বহুল প্রতীক্ষিত দুই দিনব্যাপী ফোরাম। গতকাল সোমবার রাশিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় শহর খাবারোভস্কে শুরু হয়েছে বিশেষ এই ফোরাম, যেখানে অংশ নিচ্ছেন উভয় দেশের তিন হাজারেরও বেশি উদ্যোক্তা, সরকারি কর্মকর্তা, শিল্প বিশেষজ্ঞ ও গবেষক।

চীনা রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুই দিনব্যাপী এই আয়োজনের মূল লক্ষ্য, রাশিয়া ও চীনের মধ্যে অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক এবং প্রযুক্তিগত সহযোগিতা আরও বেগবান করা। উদ্বোধনী বক্তব্যে খাবারোভস্ক অঞ্চলের গভর্নর দিমিত্রি দেমেশিন বলেন, ‘খাবারোভস্ক ও চীনের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক প্রতিবছর দৃঢ়তর হচ্ছে। শিল্প, জ্বালানি এবং পরিবহন খাতে বহু যুগান্তকারী প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে এবং তা ধারাবাহিকভাবে এগিয়ে চলছে। আমরা কেবল অবকাঠামোগত উন্নয়ন নয়, বরং বিশ্বাস, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সমৃদ্ধির এক নতুন অধ্যায় রচনা করছি।’

খাবারোভস্কে নিযুক্ত চীনের কনসাল জিয়াং শাওয়াং জানান, রুশ দূরপ্রাচ্যের অন্যতম প্রধান শিল্প ও প্রযুক্তি কেন্দ্র হিসেবে খাবারোভস্কের গুরুত্ব দিন দিন বাড়ছে। তিনি বলেন, ‘চীনের সঙ্গে এই অঞ্চলের সহযোগিতা রাশিয়া-চীন কৌশলগত অংশীদারত্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হয়ে উঠছে।’

ফোরামের অধিবেশনগুলোতে ৩০টিরও বেশি আলোচনা ও পূর্ণাঙ্গ সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এসব বৈঠকে আলোচনা হবে, বোলশয় উসসুরিয়স্কি দ্বীপের যৌথ উন্নয়ন, আঞ্চলিক শিল্প ও অবকাঠামোগত প্রকল্পে বিনিয়োগ, জ্বালানি ও পরিবহন খাতে প্রযুক্তি স্থানান্তর ও সহযোগিতা, পর্যটন ও সংস্কৃতি বিনিময় এবং দুই দেশের উদ্যোক্তাদের মধ্যে সরাসরি সংলাপের সুযোগ তৈরি নিয়ে।

স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো বলছে, ফোরামের অংশ হিসেবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে একাধিক বিনিয়োগ প্রচার অনুষ্ঠান, চীন-রাশিয়া যৌথ ব্যবসায়িক বৈঠক এবং অংশীদারত্ব চুক্তি স্বাক্ষরের প্রক্রিয়া, যা দু’দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক আস্থার সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, খাবারোভস্ক অঞ্চল ইতিমধ্যেই চীনা বিনিয়োগকারীদের জন্য আকর্ষণীয় গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। রুশ দূরপ্রাচ্যে অবস্থিত এই অঞ্চলটি চীনের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’-এর সঙ্গে রাশিয়ার ইউরেশিয়ান ইকোনমিক ইউনিয়নের সংযোগস্থল হিসেবেও অবদান রাখছে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই ফোরাম শুধু রাশিয়া ও চীনের মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারত্বের নতুন দিগন্তই উন্মোচন করছে না, বরং ইউরেশীয় অঞ্চলের ভৌগোলিক ও কৌশলগত কাঠামোতেও দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলবে। বিশেষ করে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার মুখে রাশিয়া যখন এশিয়ামুখী কৌশল নিচ্ছে, তখন চীনকেও দেখা যাচ্ছে ইউরোপীয় বিকল্প বাজার ও সংযোগমুখী রুট গঠনে আগ্রহী। তাই রাশিয়া-চীন ফোরাম বর্তমানে দুই দেশের কৌশলগত ও অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষার ক্ষেত্রে একটি নির্ভরযোগ্য ও ফলপ্রসূ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত