Ajker Patrika

১৬ হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের পরও রেকর্ড বৃদ্ধি নেসলের শেয়ারদরে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বের বৃহত্তম প্যাকেটজাত খাদ্য প্রস্তুতকারী কোম্পানি নেসলের শেয়ারের দাম গতকাল বৃহস্পতিবার অনেক বেড়ে যায়। এর কারণ দুটি। প্রথমত, তাদের বিক্রি বিশ্লেষকদের প্রত্যাশার চেয়েও ভালো হয়েছে। দ্বিতীয়ত, কোম্পানিটি হাজার হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের মাধ্যমে খরচ কমানোর বড় পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। এর ফলে নেসলের শেয়ারের দাম ২০০৮ সালের পর গতকাল এক দিনে সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পায়।

মার্কেটওয়াচ জানিয়েছে, নেসপ্রেসো ও কিটক্যাটের মতো জনপ্রিয় ব্র্যান্ডগুলোর মালিক এই কোম্পানির নতুন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ফিলিপ নাভরাতিলের নেতৃত্বে সম্প্রতি ব্যাপক ব্যয় সংকোচন কর্মসূচি শুরু হয়েছে।

নাভরাতিল এক বিবৃতিতে বলেন, বিশ্ব বদলে যাচ্ছে। নেসলেকেও আরও দ্রুত বদলাতে হবে। এই প্রক্রিয়ায় কঠিন কিন্তু প্রয়োজনীয় কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হবে, যার মধ্যে আগামী দুই বছরে কর্মীর সংখ্যা কমানো হবে।

সুইজারল্যান্ডের ভেভেতে অবস্থিত নেসলে তৃতীয় প্রান্তিকে ৪ দশমিক ৩ শতাংশ অর্গানিক সেলস গ্রোথ (জৈব বিক্রয় বৃদ্ধি) রিপোর্ট করেছে, যা কোম্পানি সংকলিত ৩ দশমিক ৭ শতাংশ পূর্বাভাসের চেয়ে বেশি।

ইউবিএসের বিশ্লেষক গুইলাউম ডেলমাস বলেন, গুরুত্বপূর্ণভাবে এই প্রত্যাশা ছাড়িয়ে যাওয়া সম্পূর্ণরূপে আরআইজির কারণে হয়েছে।

নাভরাতিল গত ১ সেপ্টেম্বর দায়িত্ব নেন, তাঁর পূর্বসূরি এক কর্মীর সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্কের ঘটনায় বরখাস্ত হওয়ার পর।

দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই নাটকীয়ভাবে কৌশল পরিবর্তনের ঘোষণা দেন নাভরাতিল। তিনি আগের ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন ফ্রাঁ ব্যয় সংকোচনের লক্ষ্য বাড়িয়ে ২০২৭ সালের মধ্যে ৩ বিলিয়ন ফ্রাঁ করার পরিকল্পনা করেন।

এর অংশ হিসেবে কোম্পানিটি মোট কর্মীর ৬ শতাংশ, অর্থাৎ প্রায় ১৬ হাজার পদ বাতিল করবে, যার দুই-তৃতীয়াংশ অফিসভিত্তিক কর্মী।

নাভরাতিল বলেন, প্রতিষ্ঠানটি আরও দ্রুতগতিতে প্রবৃদ্ধির গতি বাড়াতে চায়। আর এর জন্য পারফরম্যান্সভিত্তিক মানসিকতা তৈরি করা জরুরি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ট্রাম্পকে ‘ম্যানেজ’ করতে মার্কিন কোম্পানির ৪০ লাখ ব্যারেল তেল কিনল ভারত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ২৩: ০৪
গায়ানার রাজধানী জর্জটাউন অবস্থিত মার্কিন জ্বালানি কোম্পানি এক্সন মবিলের ভবন। ছবি: সংগৃহীত
গায়ানার রাজধানী জর্জটাউন অবস্থিত মার্কিন জ্বালানি কোম্পানি এক্সন মবিলের ভবন। ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়ার জ্বালানি তেল আমদানি কমাতে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের বাড়তি চাপের মুখে অপরিশোধিত তেলের নতুন উৎস খুঁজছে ভারত। এই পরিস্থিতিতে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ গায়ানায় অবস্থিত মার্কিন কোম্পানির কাছ থেকে তেল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির শীর্ষ পরিশোধনাগারগুলো।

বাণিজ্যিক সূত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, আজ শুক্রবার ভারতের দুটি পরিশোধনাগার মার্কিন জ্বালানি কোম্পানি এক্সন মবিলের কাছ থেকে ৪০ লাখ ব্যারেল গায়ানিজ অপরিশোধিত তেল কিনেছে। ২০২৫ সালের শেষ বা ২০২৬ সালের শুরুতে এসব তেল সরবরাহ করা হবে।

ভারতের সবচেয়ে বড় রিফাইনারি ইন্ডিয়ান অয়েল করপোরেশন (আইওসি) এই প্রথম ২০ লাখ ব্যারেল ‘গোল্ডেন অ্যারোহেড’ গ্রেডের তেল কিনল। একইভাবে হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (এইচপিসিএল) ২০ লাখ ব্যারেল লাইজা ও ইউনিটি গোল্ড গ্রেডের তেল কিনেছে।

এই পদক্ষেপকে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছে, কারণ যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য রাশিয়ার তেল বিক্রির ওপর কড়াকড়ি আরোপ করেছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত বুধবার ঘোষণা দিয়েছেন, ভারত রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করবে, যদিও দিল্লি তা আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেনি। ভারতের কর্মকর্তারা বর্তমানে ওয়াশিংটনে শুল্ক হ্রাস নিয়ে বাণিজ্য আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রের শর্তগুলোর মধ্যে রাশিয়ার তেল আমদানি কমানো এই আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি ভারতের পণ্যে শুল্ক দ্বিগুণ করেছে এবং রাশিয়ান তেল আমদানি বন্ধকে বাণিজ্য চুক্তির কেন্দ্রীয় শর্ত হিসেবে তুলে ধরেছে।

ভারত ও চীন বর্তমানে রাশিয়ার তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর ইউরোপের বাজার হারিয়ে মস্কো কম দামে ভারত ও চীনের কাছে তেল বিক্রি করে আসছে। বর্তমানে ভারতের মোট তেল আমদানির ৩৬ শতাংশ রাশিয়া থেকে আসে, দৈনিক প্রায় ১৭ দশমিক ৫ লাখ ব্যারেল। তবে ডিসেম্বর থেকে ক্রয়ে বড় ধরনের হ্রাস আসতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও নীতিনির্ধারকেরা।

এই অবস্থায় গায়ানার মতো নতুন সরবরাহ উৎসে ঝুঁকে রাশিয়ার ওপর নির্ভরতা কমাতে চায় দিল্লি। এক্সন মবিল নেতৃত্বাধীন কনসোর্টিয়ামের উৎপাদন বাড়ার ফলে গায়ানা দ্রুত বৈশ্বিক তেল রপ্তানিকারক হিসেবে গুরুত্ব পাচ্ছে। বর্তমানে দেশটির দৈনিক উৎপাদন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৭০ হাজার ব্যারেলে। জুলাইয়ে নতুন ‘গোল্ডেন অ্যারোহেড’ গ্রেড চালুর পর অক্টোবর মাসে গায়ানার তেল রপ্তানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে দৈনিক ৯ লাখ ৩৮ হাজার ব্যারেল, যা দেশটির ইতিহাসে সর্বোচ্চ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৩ মাসে ইতিহাসে রেকর্ড রাজস্ব আদায়

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রধান কার্যালয়, আগারগাঁও, ঢাকা। ফাইল ছবি
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রধান কার্যালয়, আগারগাঁও, ঢাকা। ফাইল ছবি

২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) রাজস্ব আদায় করেছে ৯০ হাজার ৮২৫ কোটি টাকা, যা এযাবৎকালের যেকোনো অর্থবছরের প্রথম ৩ মাসের তুলনায় সর্বোচ্চ রাজস্ব আদায়। আজ শুক্রবার এনবিআর এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

বিগত ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে রাজস্ব আদায়ের মোট পরিমাণ ছিল ৭৫ হাজার ৫৫৪ কোটি টাকা। সে হিসাবে চলতি অর্থবছরে প্রথম তিন মাসে ১৫ হাজার ২৭০ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। প্রবৃদ্ধি হার ২০ দশমিক ২১ শতাংশ।

এর আগে, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে রাজস্ব আদায়ের মোট পরিমাণ ছিল ৭৬ হাজার ৬৮ কোটি টাকা এবং ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রথম ৩ মাসে রাজস্ব আদায়ের মোট পরিমাণ ছিল ৬৮ হাজার ৬৩৫ কোটি টাকা।

এনবিআর জানিয়েছে, ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে আয়কর ও ভ্রমণ কর, স্থানীয় পর্যায়ের মূসক খাত এবং আমদানি ও রপ্তানি খাতের প্রত্যেকটিতে রাজস্ব আদায়ে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। এনবিআরের তথ্য বলছে, স্থানীয় পর্যায়ের মূসক খাত থেকে ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে সবচেয়ে বেশি ৩৪ হাজার ৮১৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। ২০২৪-২০২৫, ২০২৩-২০২৪ এবং ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে এই খাতে আদায়ের পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ২৬ হাজার ৮৩৮, ২৮ হাজার ৪৪৫ এবং ২৪ হাজার ৫৪৬ কোটি টাকা। বিগত অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের তুলনায় এ বছর স্থানীয় পর্যায়ের মূসক আদায়ের প্রবৃদ্ধি হার ২৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ।

এনবিআর বলছে, ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে আয়কর ও ভ্রমণ কর খাতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ২৮ হাজার ৪৭৮ কোটি টাকা, ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের আদায় ২৪ হাজার ৮০ কোটি টাকা, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের আদায় ২৩ হাজার ৭৫১ কোটি টাকা এবং ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের আদায় ২১ হাজার ১৬ কোটি টাকার চাইতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বেশি। আয়কর ও ভ্রমণ করের ক্ষেত্রে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় এ বছরের আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ১৮ দশমিক ২৬ শতাংশ।

আমদানি ও রপ্তানি খাতে ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে রাজস্ব আদায় হয়েছে ২৭ হাজার ৫২৮ কোটি টাকা, যা গত তিন অর্থবছরের একই সময়ে আদায়ের তুলনায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বেশি। বিগত ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে এই খাতে আদায় ছিল ২৪ হাজার ৬২৫ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে এই খাতে রাজস্ব আদায় বেশি হয়েছে ২ হাজার ৮৯২ কোটি টাকা। আমদানি ও রপ্তানি খাতে রাজস্ব আদায়ে ১১ দশমিক ৭৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে।

এনবিআর বলছে, করের আওতা বৃদ্ধি, কর পরিপালন নিশ্চিতকরণ, কর ফাঁকি প্রতিরোধ এবং ফাঁকি দেওয়া রাজস্ব পুনরুদ্ধার করে সরকারি কোষাগারে জমাদানের কাজে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মেধাবী এবং পরিশ্রমী কর্মীগণ তাদের নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধির এ ধারাকে আরও বেগবান করতে অঙ্গীকারবদ্ধ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন: আগের গতিতে ফিরছে আমদানি

জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা 
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন: আগের গতিতে ফিরছে আমদানি

দেশে এখন আর ডলারের সংকট নেই। ফলে আমদানির ওপর কড়াকড়িও অনেকটা কমে গেছে। এর প্রভাব পড়েছে বাজারে। ভোগ্যপণ্য, শিল্পের কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি আমদানি বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই ও আগস্ট দুই মাসে আমদানির জন্য ১১ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন ডলারের এলসি খোলা হয়েছে। আগের বছর একই সময়ে এই পরিমাণ ছিল ১০ দশমিক ৬০ বিলিয়ন ডলার। একই সময়ে নিষ্পত্তি হয়েছে ১১ দশমিক ১৩ বিলিয়ন ডলার, যা গত বছর ছিল ১০ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন। অর্থাৎ এলসি খোলা বেড়েছে ৮ দশমিক ২৫ শতাংশ, নিষ্পত্তি বেড়েছে ৪ দশমিক ২৫ শতাংশ।

ইউক্রেন যুদ্ধের পর যখন বিশ্ববাজারে ডলারের ঘাটতি দেখা দিয়েছিল, তখন বাংলাদেশেও নানা নিয়ন্ত্রণ জারি হয়। বিলাসপণ্য, বিদেশগমন ও অপ্রয়োজনীয় খাতে এলসি খোলায় কড়াকড়ি ছিল। এর ফলে আমদানি অনেক কমে গিয়েছিল। কিন্তু এখন পরিস্থিতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। রিজার্ভ বেড়েছে, ব্যাংকগুলোতে ডলারের মজুতও ভালো। তাই ধীরে ধীরে আমদানিও ফিরে আসছে স্বাভাবিক ছন্দে।

ডলারের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় ব্যাংকগুলোতে এখন পর্যাপ্ত ডলার আছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ড. মো. এজাজুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ডলারের বাজার এখন অনেকটা স্থিতিশীল। ব্যাংকগুলোতে মজুত ভালো থাকায় এলসি খোলায় আগের মতো বাংলাদেশ ব্যাংকের কড়াকড়ি নেই। ফলে ভোগ্যপণ্য, কাঁচামাল ও সারসহ সামগ্রিক আমদানিতে গতি এসেছে।’

তথ্য বলছে, ভোগ্যপণ্যে এলসি খোলা হয়েছে ৯৯ কোটি ডলারের, যা গত বছর ছিল ৯০ কোটি ৭০ লাখ ডলার। নিষ্পত্তিও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯২ কোটি ডলারে, আগের বছর ছিল ৮৫ কোটি ৩০ লাখ ডলার। এক বছরে এই খাতে এলসি খোলা বেড়েছে ৯ দশমিক ১৪ শতাংশ, নিষ্পত্তি বেড়েছে ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ।

মূলধনি যন্ত্রপাতির আমদানিতেও সামান্য বৃদ্ধি দেখা গেছে। চলতি সময়ে এলসি খোলা হয়েছে ২৬ কোটি ৪০ লাখ ডলারের, আগের বছর ছিল ২৬ কোটি ২০ লাখ। কিন্তু নিষ্পত্তি কমে ৩০ কোটি ৯০ লাখ ডলারে নেমেছে, যেখানে গত বছর ছিল ৩৫ কোটি ১০ লাখ ডলার। অর্থাৎ খোলায় সামান্য বৃদ্ধি হলেও নিষ্পত্তি কমেছে ১১ দশমিক ৮৭ শতাংশ।

অন্যদিকে শিল্পের কাঁচামাল আমদানি অবশ্য কমেছে। এ খাতে এলসি খোলা হয়েছে ৬৬ কোটি ৬০ লাখ ডলারের, যা গত বছর ছিল ৭৫ কোটি ৩০ লাখ। এক বছরে আমদানি কমেছে ১১ দশমিক ৬২ শতাংশ। নিষ্পত্তিও কমেছে ৯ দশমিক ৭২ শতাংশ।

পেট্রোলিয়াম পণ্য আমদানিতে এলসি খোলা বেড়ে হয়েছে ১৪৩ কোটি ৭০ লাখ ডলার, আগের বছর ছিল ১৩৯ কোটি ৪০ লাখ। তবে নিষ্পত্তি কিছুটা কমে দাঁড়িয়েছে ১৪৪ কোটি ২০ লাখ ডলারে।

শিল্পের কাঁচামাল এবং পেট্রোলিয়াম পণ্য আমদানি ও নিষ্পত্তির গতি কিছুটা কম হলেও এই সময় বেড়েছে বিবিধ পণ্যের আমদানির প্রবণতা। এ খাতে আগের তুলনায় এলসি খোলার হার ১৯ দশমিক ৭৮ শতাংশ এবং নিষ্পত্তিতে ১০ দশমিক ৭৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ঘটেছে।

মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সভাপতি কামরান টি রহমান মনে করেন, ‘আমদানি বেড়ে যাওয়া শিল্প খাতের জন্য ভালো খবর। পর্যাপ্ত ডলার থাকায় ব্যবসায়ীরা এখন আগের মতো আত্মবিশ্বাসীভাবে পণ্য আনছেন। এতে উৎপাদন ও কর্মসংস্থান দুটোই বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হিসাব বলছে, গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশে মোট ৬ হাজার ৮৩৫ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছর ছিল ৬ হাজার ৬৭২ কোটি ডলার; এক বছরে বেড়েছে ২ দশমিক ৪৪ শতাংশ।

সবচেয়ে বড় পরিবর্তন এসেছে রিজার্ভে। ৩১ মাস পর দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ৩২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে; যা চলতি অর্থবছরের জুলাই শেষে ছিল ৩০.১৩ বিলিয়ন ডলার এবং আগস্টে ৩১ দশমিক ০৮ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ ধারাবাহিক রিজার্ভ বাড়ছে। এভাবে ব্যাংকগুলোর হাতে ডলার বাড়ায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিজেই এখন বাজার থেকে ৩ কোটি ৮০ লাখ ডলার কিনেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাশিয়ার তেল আমদানি কমাতে ভারত ও চীনের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে রাশিয়ার তেল বিক্রির ওপর পশ্চিমা বিশ্বের চাপ আরও কঠোর হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, ভারত রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করতে যাচ্ছে এবং ব্রিটেন রাশিয়ার শীর্ষ তেল কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি আগামীকাল শুক্রবার ওয়াশিংটনে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এতে তিনি সামরিক ও জ্বালানি সহায়তা বাড়ানোর আহ্বান জানাবেন। ইউক্রেন ও রাশিয়া পরস্পরের জ্বালানি অবকাঠামোয় ব্যাপক হামলাযজ্ঞ চালিয়ে যাওয়ার সময় এই দুই নেতা বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন।

একই সময়ে বাণিজ্য আলোচনার জন্য ভারতীয় কর্মকর্তারাও ওয়াশিংটনে অবস্থান করছেন। যুক্তরাষ্ট্র ভারতের পণ্যে দ্বিগুণ শুল্ক আরোপ করে রেখেছে অনেক আগেই। আলোচকদের মতে, এই অবস্থায় রাশিয়া থেকে তেল আমদানি কমানোর বিষয়টিই হবে দুই পক্ষের মধ্যে বড় বাণিজ্য চুক্তির চাবিকাঠি।

তিনটি সূত্র জানিয়েছে, ভারতীয় শোধনাগারগুলো ডিসেম্বর থেকে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি কমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে, যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে তেল কেনা বন্ধের কোনো নির্দেশ এখনো দেওয়া হয়নি। ২০২২ সালে ইউরোপীয় বাজার হারানোর পর ভারত ও চীনের কাছে ছাড়ে তেল বিক্রি করছে রাশিয়া। দেশ দুটি বর্তমানে রাশিয়ার সবচেয়ে বড় অপরিশোধিত তেল ক্রেতা।

গতকাল বুধবার ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘রাশিয়ার থেকে ভারতের তেল কেনা নিয়ে আমি নাখোশ ছিলাম। আজ মোদি আমাকে আশ্বাস দিয়েছেন, তাঁরা রাশিয়া থেকে তেল কিনবে না। এটা বড় পদক্ষেপ। এবার আমরা চাই চীনও একই কাজ করুক।’

তবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আজ বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জ্বালানি সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করছে, কিন্তু ট্রাম্প ও মোদির মধ্যে আগের দিন কোনো ফোনালাপের বিষয়ে তারা কিছু জানে না বলে জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার তেলের দাম স্থিতিশীল ছিল। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারত রাশিয়া থেকে তেল আমদানি কমাতে সময় নেবে। বর্তমানে ভারতের মোট তেল আমদানির ৩৬ শতাংশই আসে রাশিয়া থেকে, দৈনিক প্রায় ১৭ দশমিক ৫ লাখ ব্যারেল। ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলায় রাশিয়ার শোধনাগার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর অক্টোবর মাসে রাশিয়া তেল রপ্তানি আরও বাড়িয়েছে।

রাশিয়া–চীনের ওপর যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞা

বুধবার যুক্তরাজ্য রাশিয়ার শীর্ষ দুই তেল কোম্পানি লুকওইল ও রসনেফটের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাজ্য। এ ছাড়া চীনের শানডং ইয়ুলং পেট্রোকেমিক্যালসহ চারটি বন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানের ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে দেশটি।

নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছে সাতটি এলএনজি ট্যাংকারসহ ৫১টি জাহাজ এবং চীনের বেইহাই এলএনজি টার্মিনাল। এ ছাড়া ভারতের মুম্বাইয়ে রাশিয়ান মালিকানাধীন নয়ারা শোধনাগারকেও নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে। রসনেফটের নিয়ন্ত্রণাধীন নয়ারা আগেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছে।

চীনের সর্বশেষ ও বৃহত্তম শোধনাগার ইয়ুলং পেট্রোকেমিক্যাল প্রতিদিন ৪ লাখ ব্যারেল তেল প্রক্রিয়াজাত করার সক্ষম এবং রাশিয়ার বড় ক্রেতা।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদন ছাড়া একতরফা নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করে এবং যুক্তরাজ্যের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিবাদ জানিয়েছে।

রাশিয়ার আত্মবিশ্বাস অটুট

লন্ডনে অবস্থিত রাশিয়ার দূতাবাস বলেছে, এই নিষেধাজ্ঞা বাজারকে অস্থিতিশীল করবে ও ব্রিটিশ ভোক্তাদের খরচ বাড়াবে কিন্তু রাশিয়ার পররাষ্ট্রনীতিতে কোনো প্রভাব ফেলবে না।

গত আগস্টে ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠকে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে কোনো অগ্রগতি না হওয়ার পর থেকে ইউক্রেন রাশিয়ার তেল শোধনাগারগুলোকে টার্গেট করে ড্রোন হামলা করছে। অন্যদিকে রাশিয়ার হামলায় ইউক্রেনজুড়ে বড় ধরনের বিদ্যুৎ-বিভ্রাট ঘটছে।

এক জ্বালানি সম্মেলনে পুতিন বলেন, চলতি বছর রাশিয়ার তেল উৎপাদন সামান্যই কমবে। রাশিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার নোভাক বলেছেন, রাশিয়া ও ভারতের জ্বালানি সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত