Ajker Patrika

ভারতের বৃহত্তম তেল শোধনাগারের ওপর ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
নায়ারা এনার্জি লিমিটেডের মালিকানার বড় একটি অংশ রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান রসনেফটের। ছবি: সংগৃহীত
নায়ারা এনার্জি লিমিটেডের মালিকানার বড় একটি অংশ রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান রসনেফটের। ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়ার জ্বালানি খাতকে লক্ষ্য করে ঘোষিত নতুন নিষেধাজ্ঞার অংশ হিসেবে ভারতের বৃহত্তম তেল শোধনাগারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এই তেল শোধনাগারটি পরিচালনা করে নায়ারা এনার্জি লিমিটেড, যার মালিকানার বড় একটি অংশ রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান রসনেফটের।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইইউর এই ঘোষণা এমন এক সময়ে এসেছে, যখন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস রাশিয়ার তেল ক্রেতাদের ওপর আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক করছে। মার্কিন আইনপ্রণেতারা এরই মধ্যে ভারত, চীন ও ব্রাজিলের নাম উল্লেখ করেছেন—যারা রাশিয়ার জ্বালানি কেনার জন্য শাস্তির মুখে পড়তে পারে।

ইইউর ঘোষিত নতুন নিষেধাজ্ঞার প্যাকেজে রাশিয়ার তেল পরিবহনে ব্যবহৃত জি-৭ দেশগুলোর (উন্নত অর্থনীতির সাত দেশের জোট) জাহাজ ও বিমাব্যবস্থাকে ব্যবহার করে রাশিয়ার তেল কেনার ক্ষেত্রে দামের সর্বোচ্চ সীমা ৬০ ডলার থেকে কমিয়ে ৪৭ দশমিক ৬ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। এই নতুন তেলের মূল্যসীমা রাশিয়ান তেলের গড় বাজারমূল্যের ১৫ শতাংশ কমে নির্ধারিত হয়েছে। যদিও জি-৭-এর সব দেশ এই সীমা নেয়নি, তবে যুক্তরাজ্য এই সীমা নিয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর।

এ ছাড়া রাশিয়ান তেল দিয়ে প্রস্তুত যেসব পরিশোধিত পেট্রোলিয়াম পণ্য রয়েছে, সেগুলোর ওপর ইইউজুড়ে আমদানি নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি জার্মানির সঙ্গে রাশিয়াকে সংযুক্ত করা নর্ড স্ট্রিম ১ ও ২ গ্যাস পাইপলাইনের ওপর পুরোপুরি লেনদেন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

ইইউর শীর্ষ কূটনীতিক কায়া কাল্লাস এক্সে দেওয়া বিবৃতিতে বলেন, ‘এই প্রথমবারের মতো আমরা একটি পতাকাবাহী নিবন্ধন সংস্থা ও ভারতের সবচেয়ে বড় রসনেফট সম্পৃক্ত তেল শোধনাগারকে নিষিদ্ধ করেছি।’

নায়ারা এনার্জির মালিকানার ৪৯ দশমিক ১৩ শতাংশ রয়েছে রাশিয়ার রসনেফটের হাতে। অন্য মালিকানা রয়েছে কেসানি এন্টারপ্রাইজেস কোম্পানি লিমিটেড এবং কিছু স্থানীয় বিনিয়োগকারীর হাতে। গুজরাটের ভাদিনারে অবস্থিত নায়ারার শোধনাগারটি ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল শোধনাগার, যা প্রতিদিন ৪ লাখ ব্যারেল তেল প্রক্রিয়াজাত করে এবং সারা দেশে ৬ হাজার ৩০০টির বেশি পেট্রলপাম্প পরিচালনা করে।

ভারতের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, নিষেধাজ্ঞার পর রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের সঙ্গে তাদের অংশীদারত্ব বিক্রি নিয়ে আলোচনা চলছে।

ইইউর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নায়ারা রিফাইনারির ওপর পূর্ণাঙ্গ নিষেধাজ্ঞা (যেমন—ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা, সম্পদ জব্দ, আর্থিক লেনদেন নিষেধ) কার্যকর হবে।

১৮তম এই প্যাকেজে ১৪ ব্যক্তি ও ৪১টি সংস্থাকেও নতুন করে নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে, ফলে ইইউর নিষিদ্ধ তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২ হাজার ৫০০ ছাড়িয়েছে। এবার নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসেছে রাশিয়ার তথাকথিত ‘ছায়া জাহাজবহর’ (শ্যাডো ফ্লিট)–এর অনেক জাহাজ, যেগুলো নিষিদ্ধ পণ্য পরিবহন করছে বা নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করছে। নতুন করে ১০৫টি জাহাজকে ইইউ বন্দরে প্রবেশ ও নৌসেবা নেওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, যার ফলে মোট নিষিদ্ধ জাহাজের সংখ্যা দাঁড়াল ৪৪৪-এ।

একটি ছায়া বহরের জাহাজের ক্যাপ্টেন ও একটি অজ্ঞাতনামা পতাকা নিবন্ধন সংস্থার অপারেটরকেও নিষিদ্ধ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যাংক খাতের নিষেধাজ্ঞা আরও বিস্তৃত করা হচ্ছে। মোট ৪৫টি রুশ ব্যাংকের ওপর পুরোপুরি লেনদেন নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে ২৬টি নতুন সংস্থাকে নিষিদ্ধ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যারা রাশিয়াকে দ্বৈত ব্যবহারের (সামরিক ও বেসামরিক) পণ্য সরবরাহ করছে। একই সঙ্গে রাশিয়া ও বেলারুশের সামরিকশিল্প খাতে পণ্য সরবরাহে জড়িত আরও কয়েকটি সংস্থাকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে।

একই দিনে রাশিয়ার সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা জিআরইউর তিনটি ইউনিট ও ১৮ জন গোয়েন্দা কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাজ্য। যুক্তরাজ্যের মতে, এসব ইউনিট বছরের পর বছর ধরে সাইবার হামলার মাধ্যমে ইউরোপে অস্থিতিশীলতা তৈরি করছে।

ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি বলেন, জিআরইউ গুপ্তচরেরা ইউরোপকে অস্থিতিশীল করতে, ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন করতে ও ব্রিটিশ নাগরিকদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে ফেলতে অপারেশন চালাচ্ছে।

যুক্তরাজ্য জানিয়েছে, এই ইউনিটগুলো ২০২২ সালে মারিউপোল শহরে রাশিয়ার বিমান হামলায়, বিশেষ করে, মারিউপোল থিয়েটারে হামলায় সহযোগিতা করেছিল, যেখানে শিশুসহ শত শত মানুষ নিহত হয়েছিল।

এ ছাড়া সাবেক রুশ ডাবল এজেন্ট সের্গেই স্ক্রিপাল ও তাঁর মেয়ে ইউলিয়ার ওপর সাইবার হামলায় জড়িত ব্যক্তিদেরও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে ব্রিটেনের সালিসবারিতে ‘নভিচক’ নার্ভ গ্যাস দিয়ে তাঁদের হত্যাচেষ্টা করা হয়েছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কাস্টমস কর্মকর্তা শহিদুজ্জামান সাময়িক বরখাস্ত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় কার্যালয় রাজস্ব ভবন। ছবি: আজকে পত্রিকা
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় কার্যালয় রাজস্ব ভবন। ছবি: আজকে পত্রিকা

কাস্টমস ও আবগারি বিভাগের উপকমিশনার মো. শহিদুজ্জামান সরকারকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। গতকাল রোববার (২ নভেম্বর) অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের (আইআরডি) শুল্ক-১ শাখা থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

এতে সই করেন আইআরডি সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, মো. শহিদুজ্জামান সরকারের বিরুদ্ধে ‘অসদাচরণ’ ও ‘পলায়ন’-এর অভিযোগে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮-এর ৩ (খ) ও ৩ (গ) অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা গৃহীত হয়েছে। তাঁকে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮-এর বিধি ১২ (১) অনুযায়ী চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, সাময়িক বরখাস্তকালীন সময়ে তিনি বিধি অনুযায়ী খোরপোষ ভাতা প্রাপ্য হবেন। জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাজুসের নেতৃত্বে ফের এনামুল হক ও রণজিৎ ঘোষ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বাজুস এনামুল রণজিৎ
বাজুস এনামুল রণজিৎ

বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) আবারও সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন ডায়মন্ড অ্যান্ড ডিভাসের এনামুল হক খান। তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংগঠনটির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। সিনিয়র সহসভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন সানন্দা জুয়েলার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রণজিৎ ঘোষ।

আজ সোমবার বাজুসের নতুন পরিচালনা কমিটি ঘোষণা করে বাজুস নির্বাচন বোর্ড। এর পর রাজধানীর মগবাজারে বাজুসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ২০২৫-২৬ এবং ২০২৬-২৭ মেয়াদের নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হয়। বাজুস নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান নাসরিন ফাতেমা আউয়াল ফলাফল ঘোষণা করেন।

এনামুল হক এর আগে গত ২০১৯ সালে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। এর আগে তিনি সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। তবে ২০২৩ সালে (১১ এপ্রিল) তাঁকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।

সভাপতি ও একজন সিনিয়র সহসভাপতি ছাড়াও তিনজন সহসভাপতি, একজন কোষাধ্যক্ষ এবং ২৯ জন পরিচালকসহ ৩৫ জনের এই কমিটি ঘোষণা করা হয়। এঁদের সবাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক গঠনতন্ত্র থেকে বাদ দেওয়ায় এখন থেকে এই পদে আর কেউ থাকবেন না। ফলে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব সিনিয়র সহসভাপতিই পালন করবেন। বাজুস প্রতিষ্ঠার পর এই প্রথম সাধারণ সম্পাদক পদ বিলুপ্ত করা হলো।

সহসভাপতি পদে আপন ডায়মন্ড হাউজের আজাদ আহমেদ, জড়োয়া হাউজ (প্রা.) লিমিটেডের অভি রায় এবং জেসিএক্স গোল্ড এন্ড ডায়মন্ডের ইকবাল হোসেন চৌধুরী নির্বাচিত হয়েছেন। কোষাধ্যক্ষ পদে নির্বাচিত হয়েছেন নিউ ফেন্সী জুয়েলার্সের অমিত ঘোষ।

পরিচালক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন—মো. মিলন মিয়া, পবন কুমার আগরওয়ালা, তানভীর রহমান, মো. লিটন হাওলাদার, বাবুল দত্ত, গণেশ দেবনাথ, আশিস কুমার মণ্ডল, মিনাজুর রহমান, বিকাশ ঘোষ, সুমন চন্দ্র দে, মোস্তাফা কামাল, ধনঞ্জয় সাহা (বিপুল), শ্রীবাস রায়, মো. আলী হোসেন, মো. রুবেল, মো. নয়ন চৌধুরী, মো. ছালাম, ফাহাদ কামাল লিংকন, গৌতম ঘোষ, মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম, মো. তারেকুল ইসলাম চৌধুরী, আবু নাসের মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, মো. রফিকুল ইসলাম, সৌমেন সাহা, আককাছ আলী, মোহাম্মদ মোরশেদ আলম, শাওন আহাম্মদ চৌধুরী, মো. নাজমুল হুদা লতিফ এবং পলাশ কুমার সাহা।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বৈধ প্রার্থীদের মধ্য থেকে কোনো প্রার্থী তাঁদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার না করায় বাণিজ্য সংগঠনের বিধিমালা-২০২৫ এর ২৪ (১) ধারা মোতাবেক বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা নির্বাচনযোগ্য পদের সমান হওয়ায় ৩৫ জন প্রার্থীকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে।

বাজুসের নতুন নির্বাচিত সভাপতি এনামুল হক খান বলেন, “আমাদের সোনা আমদানির প্রক্রিয়া সহজ করতে হবে। সোনা আমদানির ব্যবস্থা আছে, কিন্তু এত কঠিন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সোনা আমদানি করতে গেলে যেই দাম দাঁড়ায়, সেই দাম দিয়ে কেউ সোনা কিনতে আগ্রহী না। ”

তিনি বলেন, “মানুষকে বোঝাতে হবে ব্যবসায়ীরা কিন্তু চোরাকারবারি না। যারা চোরাকারবার করে তারা কোনো দিন সোনা ব্যবসায় আসবে না। আর যারা সোনা ব্যবসা করে তারা কোনো দিন চোরাকারবারে জড়াবে না। যত দিন সোনা আমদানি সহজ না হয়, তত দিন পর্যন্ত ব্যাগেজ রুলের মাধ্যমে সোনা যে সহজে আসত, সেটা চালু করার জন্য আমরা উদ্যোগ গ্রহণ করব। ”

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অর্থ পাচার: অনিল আম্বানির ৩,০৮৪ কোটির সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৮: ৪০
অনিল আম্বানি। ফাইল ছবি
অনিল আম্বানি। ফাইল ছবি

অনিল আম্বানির রিলায়েন্স গ্রুপের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং তদন্তের অংশ হিসেবে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) প্রায় ৩ হাজার ৮৪ কোটি মূল্যের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে। প্রিভেনশন অব মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট-এর অধীনে গত ৩১ অক্টোবর এই বাজেয়াপ্তের নির্দেশ জারি করা হয়।

বাজেয়াপ্ত করা সম্পত্তিগুলোর মধ্যে রয়েছে মুম্বাইয়ের পালি হিলের বিলাসবহুল পারিবারিক আবাসন, দিল্লির রিলায়েন্স সেন্টার এবং দেশের অন্তত আটটি শহরের রিয়েল এস্টেট সম্পত্তি। দিল্লি, নয়ডা, গাজিয়াবাদ, মুম্বাই, পুণে, থানে, হায়দরাবাদ, চেন্নাই এবং অন্ধ্রপ্রদেশের পূর্ব গোদাবরী জুড়ে এই সম্পত্তিগুলো বিস্তৃত। এগুলোর মধ্যে রয়েছে অফিস, আবাসিক ইউনিট এবং জমির প্লট।

কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডির অভিযোগ, রিলায়েন্স হোম ফাইন্যান্স লিমিটেড (আরএইচএফএল) এবং রিলায়েন্স কমার্শিয়াল ফাইন্যান্স লিমিটেড (আরসিএফএল)-এর সংগৃহীত জনগণের টাকা বেআইনিভাবে অন্যত্র সরিয়ে ফেলা এবং পাচার করার অভিযোগ তদন্তের অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ইডি জানিয়েছে, ২০১৭ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ইয়েস ব্যাংক আরএইচএফএল-এ ২ হাজর ৯৬৫ কোটি এবং আরসিএফএল-এ ২ হাজার ৪৫ কোটি বিনিয়োগ করেছিল। কিন্তু ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এই বিনিয়োগগুলো খেলাপি সম্পত্তিতে পরিণত হয়।

তদন্তে আরও উঠে আসে, সেবি (এসইবিআই)-এর বিধিনিষেধ এড়ানোর জন্য এই তহবিলগুলো ঘুরপথে ব্যবহার করা হয়েছিল। সংঘাতের স্বার্থ সংক্রান্ত নিয়মের কারণে রিলায়েন্স নিপ্পন মিউচুয়াল ফান্ডের পক্ষে সরাসরি অনিল আম্বানির আর্থিক সংস্থাগুলোতে বিনিয়োগ করা নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু অভিযোগ, সাধারণ মানুষের মিউচুয়াল ফান্ড থেকে সংগৃহীত অর্থ ইয়েস ব্যাংকের মাধ্যমে ঘুরপথে আরএইচএফএল এবং আরসিএফএল-এ নেওয়া হয়েছিল, যা শেষ পর্যন্ত অনিল আম্বানির কোম্পানিগুলোর কাছে যায়।

ইডি আরও দাবি করেছে, অর্থপাচারের তদন্তে তারা দেখতে পেয়েছে, এই ঋণ দেওয়া ও লেনদেনের ক্ষেত্রে অনিয়ম ছিল। কোনো রকম যাচাই ছাড়াই ঋণ বিতরণ করা হয়েছিল, বহু ক্ষেত্রে আবেদন জমা দেওয়ার আগেই অথবা একই দিনে মঞ্জুরি ও বিতরণ করা হয়। কিছু ঋণের নথিতে নিরাপত্তা সংক্রান্ত নথি ফাঁকা বা তারিখবিহীন ছিল বলেও অভিযোগ।

এ ছাড়া, রিলায়েন্স কমিউনিকেশনস লিমিটেড (আরকম)-এর সঙ্গে যুক্ত ঋণ জালিয়াতি মামলাতেও তদন্ত জোরদার করেছে ইডি। প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রায় ১৩ হাজার ৬০০ কোটি রুপির বেশি অর্থ ‘লোন এভারগ্রিনিং’ (মূল পরিশোধের বাধ্যবাধকতা মওকুফ) প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সরিয়ে ফেলা হয়েছিল।

কেন্দ্রীয় সংস্থাটি জানিয়েছে, অপরাধের মাধ্যমে অর্জিত এই সম্পত্তিগুলোর সন্ধান ও বাজেয়াপ্তের কাজ তারা চালিয়ে যাবে। তাদের দাবি, এই পদক্ষেপের উদ্দেশ্য হলো জনসাধারণের স্বার্থ এবং বিনিয়োগকারীদের অর্থ সুরক্ষিত করা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৬১ হাজার টন গম নিয়ে মার্কিন জাহাজ ভিড়ল চট্টগ্রাম বন্দরে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৮: ৪৭
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম নিয়ে এমভি স্পার এরিস (MV SPAR ARIES) জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছেছে। ছবি: সংগৃহীত
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম নিয়ে এমভি স্পার এরিস (MV SPAR ARIES) জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছেছে। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রায় ৬১ হাজার টন গম একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছেছে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা ইমদাদ ইসলাম এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানিয়েছেন।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের আলোকে নগদ ক্রয় চুক্তির আওতায় ৬০ হাজার ৮০২ মেট্রিক টন গম নিয়ে এমভি স্পার এরিস (MV SPAR ARIES) জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছেছে।

এতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ ইতিমধ্যে সরকার—টু—সরকার (জি টু জি) ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানি কার্যক্রম শুরু করছে। এই চুক্তির আওতায় মোট ৪ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন গম আমদানি করা হবে, যার প্রথম চালান হিসেবে ৫৬ হাজার ৯৫৯ মেট্রিক টন গম গত ২৫ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে দেশে পৌঁছেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত