Ajker Patrika

২০২৭ পর্যন্ত আইওএসএ সনদ পেল এয়ার এ্যাস্ট্রা

নিজস্ব প্রতিবেদক
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দেশের সর্বকনিষ্ঠ এয়ারলাইন হিসেবে ২০২৪ সালে আইএটিএ অপারেশনাল সেফটি অডিট (আইওএসএ) সনদ পায় বেসরকারি এয়ারলাইন এয়ার এ্যাস্ট্রা। ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইএটিএ) প্রণোদিত আইএটিএ অপারেশনাল সেফটি অডিট (আইওএসএ) একটি বিশ্বমানের মানদণ্ড নিরূপণী অডিট যা এয়ারলাইনসের নিরাপদ পরিচালনা নিশ্চিত করে।

এক বছর পর ২০২৫ সালের জুন মাসে এয়ারলাইনটি পুনরায় আইএটিএ অপারেশনাল সেফটি অডিট (আইওএসএ) সম্পন্ন করে ২০২৭ সালের ২৪ আগস্ট পর্যন্ত আইওএসএ রেজিস্টার্ড এয়ারলাইন হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।

এয়ার এ্যাস্ট্রার সিইও ইমরান আসিফ এ বিষয়ে বলেন, ‘এয়ার এ্যাস্ট্রার ফ্লাইট অপারেশন শুরু হওয়ার আগে থেকেই আমরা যাত্রীদের একটি নিরাপদ এবং সুরক্ষিত ফ্লাইট অভিজ্ঞতা উপহার দেওয়ার লক্ষে আইএটিএ অপারেশনাল সেফটি অডিট (আইওএসএ)-এর পরিকল্পনা শুরু করি। যার অংশ হিসেবে ২০২৪ সালে আইওএসস সনদ প্রাপ্তি এবং তারই ধারাবাহিকতায় এ বছর আমরা পুনরায় এই অডিটটি সম্পন্ন করি। এয়ার এ্যাস্ট্রা যাত্রীদের নিরাপদ এবং নিশ্চিন্তে ভ্রমণ করার জন্য সব সময় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইএটিএ)-এর কঠোর মানদণ্ড অনুযায়ী তাঁদের নিরীক্ষকের মাধ্যমে চলতি বছরের জুন মাসে এয়ার এ্যাস্ট্রার অডিট সম্পন্ন হয়। গত এক দশকে, আইওএসএ (আইওএসএ) নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এয়ারলাইনসের অপারেশনাল ম্যানেজমেন্ট এবং কন্ট্রোল সিস্টেমের মূল্যায়ন করার জন্য সবচেয়ে স্বীকৃত সিস্টেমে পরিণত হয়েছে।

এয়ার এ্যাস্ট্রা বর্তমানে ঢাকা-কক্সবাজার-ঢাকা, ঢাকা-চট্টগ্রাম-ঢাকা, ঢাকা-সিলেট-ঢাকা এবং ঢাকা-সৈয়দপুর-ঢাকা রুটে প্রতিদিন ১৪টি ফ্লাইট পরিচালনা করছে। এয়ার এ্যাস্ট্রার বহরে বর্তমানে চারটি এটিআর ৭২-৬০০ এয়ারক্রাফট রয়েছে, যা ফ্রান্সে নির্মিত সর্বাধুনিক প্রযুক্তির নিরাপদ টার্বোপ্রপ এয়ারক্রাফট।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঋণের টাকায় বিদেশে পড়াশোনা: রূপালী ব্যাংকের সাবেক এমডিসহ ৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ। ছবি: সংগৃহীত
ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ। ছবি: সংগৃহীত

রূপালী ব্যাংক পিএলসির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদের পরিবারের পাঁচজনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। অন্যদিকে অ্যালায়েন্ট এনার্জি সল্যুশন (বিডি) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী হাসান শরীফেরও দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।

আজ বুধবার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ গজ আদালতের বিচারক মো. সাব্বির ফয়েজ নিষেধাজ্ঞা জারির এই আদেশ দেন।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পৃথক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত নিষেধাজ্ঞা জারি করেন বলে জানান দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম।

রূপালী ব্যাংকের সাবেক এমডি ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদের পরিবারের অন্য যেসব সদস্যের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে তাঁরা হলে—ওবায়েদ উল্লাহর স্ত্রী মর্জিনা বেগম ওরফে মুনমুন মাসুদ, ছেলে জুনায়েদ জুলকার নায়েন ভিয়ান ও জুলুন সাফওয়ান এবং মেয়ে তাসমিয়া তারাল্গুন নাওমী।

দুদকের সহকারী পরিচালক মো. নাজমুল ইসলাম তাঁদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন।

আবেদনে বলা হয়, ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক থাকাকালে ঋণের অর্থ ব্যক্তিগত প্রয়োজনে, বিশেষ করে ছেলের বিদেশে শিক্ষার খরচে ব্যবহার করেছেন। ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ ও তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসাবগুলোতে তৃতীয় পক্ষের কাছ থেকে নগদ অর্থ জমা, ক্লিয়ারিংয়ের মাধ্যমে অজানা উৎস থেকে অর্থ গ্রহণ এবং ব্যবসায়িক কার্যক্রমহীন প্রতিষ্ঠানে অর্থ স্থানান্তর করেন, যা অর্থপাচার ও মানিলন্ডারিংয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত। যেহেতু তাঁর দুই সন্তান দেশত্যাগ করেছেন, তাই তিনিসহ তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যরাও দেশত্যাগ করতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিদেশ গমন রহিত করা আবশ্যক।

দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আশিকুর রহমান অ্যালায়েন্ট এনার্জি সল্যুশন (বিডি) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী হাসান শরীফের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন।

আবেদনে বলা হয়, অভিযুক্ত কাজী হাসানের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করার অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে। তিনি যে কোনো সময় দেশ ত্যাগ করতে পারেন বলে অনুসন্ধানকালে জানা গেছে। অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাঁর বিদেশ গমন রহিত করা প্রয়োজন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নিলামে বিক্রি হয়নি, সাবেক এমপিদের ৩১টি বিলাসবহুল গাড়ি পাবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১২ নভেম্বর ২০২৫, ১২: ৩৩
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

বিলুপ্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ সদস্যদের (এমপি) বিদেশ থেকে আমদানি করা ৩১টি বিলাসবহুল গাড়ি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অধীন সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরে হস্তান্তরের নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এ জন্য নির্দেশনা দিয়ে আজ বুধবার একটি বিশেষ আদেশ জারি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

বিজ্ঞপ্তিতে এনবিআর জানায়, বিলুপ্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদের কিছু সদস্যের বিশেষ শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা গাড়ির ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রযোজ্য হবে কি না জানতে চেয়ে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস নির্দেশনা চায়। এর জবাবে গাড়িগুলো খালাসের ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রযোজ্য হবে না এবং আমদানিকারকেরা স্বাভাবিক হারে শুল্ক-কর পরিশোধ করে গাড়িগুলো খালাস করতে পারবেন বলে গত বছরের ৮ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসকে নির্দেশনা প্রদান করে এনবিআর।

শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা ওই ৩১টি গাড়ির মোট প্রদেয় শুল্ক-করের পরিমাণ ২৬৯ কোটি ৬১ লাখ ৮৯ হাজার ৬০০ টাকা। উচ্চ মূল্যের এ সকল গাড়ির একক প্রতি প্রদেয় শুল্ক-করের সর্বোচ্চ পরিমাণ ৯ কোটি ৪৪ লাখ ৮৩ হাজার ৩০০ টাকা এবং একক প্রতি প্রদেয় সর্বনিম্ন শুল্ক-করের পরিমাণ ৮ কোটি ৬২ লাখ ৬৭ হাজার ৪০০ টাকা।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্দেশনা অনুসারে সব শুল্ক-কর পরিশোধ করে ওই ৩১টি গাড়ি আমদানিকারকেরা খালাস করেননি। বিধায় কাস্টমস আইন, ২০২৩ এর ধারা ৯৪(৩) অনুযায়ী গাড়িগুলো নিলামে তোলা হয়। ওই নিলামে কোনো নিলামকারী গাড়িগুলোর যৌক্তিক মূল্য বিড না করায় গাড়িগুলো নিলামে বিক্রি করা হয়নি। পরবর্তীতে জনস্বার্থে যথাযথ ব্যবহারের বিষয়ে আন্তমন্ত্রণালয় সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে অতি মূল্যবান গাড়িগুলো জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে হস্তান্তরের জন্য এই বিশেষ আদেশ জারি করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট গাড়ির আমদানিকারক ভবিষ্যতে প্রযোজ্য সমুদয় শুল্ক ও কর পরিশোধ করে গাড়িগুলো আইনানুগ পদ্ধতিতে খালাস করতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস শুল্কায়নযোগ্য মূল্য নির্ধারণ এবং শুল্কায়ন সংক্রান্ত আইন, বিধি ও আদেশ যথাযথভাবে পরিপালন করে তা আমদানিকারকের অনুকূলে খালাস করতে পারবে।

প্রযোজ্য শুল্ক-কর আদায়পূর্বক গাড়িগুলো ভবিষ্যতে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস আমদানিকারকের অনুকূলে খালাসের ব্যবস্থা গ্রহণ করলে ওই গাড়িগুলো সরকারি যানবাহন অধিদপ্তর কাস্টমস কর্তৃপক্ষের নিকট ফেরত প্রদান করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দুবাইয়ে সোনার দাম আরও বাড়ল, প্রতি গ্রাম ৫০০ দিরহাম

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
দুবাইয়ে সোনার দাম আরও বাড়ল, প্রতি গ্রাম ৫০০ দিরহাম

দুবাইয়ের বাজারে আজ বুধবার সোনার দাম আরও বেড়েছে। প্রতি গ্রাম ২৪ ক্যারেট সোনা এখন ৪৯৫ দশমিক ৫০ দিরহাম বা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৬ হাজার ৪৭০ টাকা দরে লেনদেন হচ্ছে। গত সপ্তাহেই এই ক্যাটাগরির এক গ্রাম সোনার গড় মূল্য ছিল ৪৭৫ দিরহাম। আরব আমিরাতের সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। একই দিনে, ২২ ক্যারেটের দাম প্রতি গ্রামে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪৫৮ দশমিক ৭৫ দিরহাম।

আরব আমিরাতের স্থানীয় সোনার বাজারে দামের এই বৃদ্ধি বাজারের শক্তিশালী পুনরুদ্ধারের ইঙ্গিত। বিশ্বে সোনার অবস্থান শক্তিশালী হওয়ার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভের নীতি শিথিল হওয়ার সম্ভাবনা দামের এই বৃদ্ধির পেছনের অন্যতম কারণ। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, দাম বাড়লেও ক্রেতাদের আগ্রহ এখনো আছে। তারা এখনো বিনিয়োগের মাধ্যম হিসেবে সোনাকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন।

এদিকে, আরব আমিরাতের বাজারে সোনার দাম বাড়লেও আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দাম টান তিন দিন বাড়ার পর কিছুটা স্থিতিশীল হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য সুদহার কমানোর পরিকল্পনা এবং সরকারের শাটডাউন শেষ হওয়ার সম্ভাবনা বাজার স্থিতিশীল হওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার শেষ প্রহরে প্রাথমিক লেনদেনে সোনা এক সময় আউন্স প্রতি ৪ হাজার ১৪৫ ডলার পর্যন্ত উঠে গিয়েছিল। তবে পরে কিছুটা হ্রাস পায়।

এদিকে, একটি বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠানের তথ্য বলছে—২৫ অক্টোবর পর্যন্ত আগের চার সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলো গড়ে প্রতি সপ্তাহে ১১ হাজার ২৫০ পদ কমিয়েছে। এটি শ্রমবাজারের স্থিতিশীল দুর্বলতার ইঙ্গিত দেয়। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই দুর্বলতা আরও নীতি শিথিলতার জন্য প্ররোচিত করতে পারে, যা সোনার জন্য সহায়ক, কারণ এতে কোনো সুদ আসে না।

বিনিয়োগকারীরা মার্কিন সরকার পুনরায় চালু হওয়ার পর প্রকাশিত সরকারি তথ্যের দিকে তাকিয়ে আছেন। তথ্য পুনরায় প্রকাশিত হলে অর্থনীতির পরিষ্কার ছবি মিলবে এবং ফেডের ডিসেম্বরে সুদের হার নির্ধারণে প্রভাব পড়বে।

সেঞ্চুরি ফিন্যান্সিয়ালের প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা বিজয় ভ্যালেচা বলেছেন, সোনার দীর্ঘমেয়াদি দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচক। তিনি বলেন, ‘সোনার ভবিষ্যৎ বাজার গঠনমূলক। সরকারের পুনরায় খোলার ফলে ফেড মূল অর্থনৈতিক তথ্য পাবে, যা ডিসেম্বরে নীতি নির্ধারণে প্রভাব ফেলতে পারে।’ ভ্যালেচা আরও জানান, ‘যদি তথ্য প্রকাশে বিলম্ব হয় বা সুদহারের সময় নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকে, তাহলে স্বল্পমেয়াদে দামের ওঠা-নামা বাড়তে পারে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঘাটতি বাণিজ্যে অর্থ পাচারের গন্ধ

জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা 
গ্রাফিক্স: আজকের পত্রিকা
গ্রাফিক্স: আজকের পত্রিকা

দেশ থেকে হঠাৎ বেশি পরিমাণে ডলার বাইরে চলে যাচ্ছে। এতে নতুন অর্থবছরের শুরুতেই বৈদেশিক বাণিজ্যে চাপ তৈরি হয়েছে। রপ্তানি আয় বাড়লেও তার চেয়ে দ্রুত হারে আমদানি ব্যয় বেড়েছে, ফলে ভারসাম্য নষ্ট হয়ে দেশ আবারও ঘাটতি বাণিজ্যের মুখে পড়ছে।

বাণিজ্য বিশ্লেষক ও অর্থনীতিবিদদের মতে, রেমিট্যান্স ও রপ্তানি প্রবাহ ইতিবাচক থাকলেও অপ্রয়োজনীয় ব্যয় ও ডলারের অতিরিক্ত বহির্মুখী প্রবাহ আবার বাণিজ্য ঘাটতিকে ঊর্ধ্বমুখী করে তুলেছে, যা অর্থনীতির স্থিতিশীলতার সামনে নতুন এক সতর্কবার্তা। এই প্রবণতার পেছনে অর্থ পাচারের কোনো গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখা জরুরি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) বাণিজ্য ঘাটতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৭১ কোটি ডলারে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১০৭ কোটি ডলার বেশি। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে রমজানকে ঘিরে বাড়তি আমদানি, বিদেশ ভ্রমণ ও চিকিৎসা ব্যয়; ফলে দীর্ঘ সময় পর চলতি হিসাবও ঋণাত্মক হয়েছে, ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৪৮ কোটি ডলার।

এই সময়ে দেশে মোট রপ্তানি আয় হয়েছে ১ হাজার ১০৮ কোটি ৭০ লাখ ডলার, বিপরীতে আমদানি ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৬৮০ কোটি ডলারে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের একই সময়ে বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ৪৬৪ কোটি ডলার। অর্থাৎ এক বছরে ঘাটতি বেড়েছে প্রায় ২৫ শতাংশ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর আমদানি ও রপ্তানিতে কিছুটা স্থিতি ফিরেছিল। তবে বিদেশে চিকিৎসা, শিক্ষা ও ভ্রমণ ব্যয় বাড়ায় আবারও ডলারের ওপর চাপ তৈরি হয়েছে। রমজানকে সামনে রেখে খাদ্য, তেল, চিনি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি বাড়ানোয় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। ফলে বৈদেশিক মুদ্রার আয় বাড়লেও ব্যয়ের হার তার চেয়ে বেশি হওয়ায় চলতি হিসাব আবারও ঘাটতিতে পড়েছে।

তবে একই সময়ে সামগ্রিক লেনদেন ভারসাম্যে কিছুটা ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। আগের বছর জুলাই-সেপ্টেম্বরে যেখানে এই সূচকে ঘাটতি ছিল ১৪৮ কোটি ডলার, চলতি অর্থবছরে তা ঘুরে দাঁড়িয়ে ৮৫ কোটি ডলার উদ্বৃত্ত হয়েছে।

বিশ্বব্যাংকের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন মনে করেন, রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বাড়লেও ডলারের অস্বাভাবিক বহির্মুখী প্রবাহ উদ্বেগজনক। তাঁর ভাষায়, দেশ থেকে এত বেশি ডলার কোথায় যাচ্ছে, তা স্পষ্ট নয়। এর মধ্যে অর্থ পাচারের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। আমদানির কড়াকড়ি কিছুটা শিথিল করায় অনেকে সুযোগ নিচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে প্রবাসীরা ৭ দশমিক ৫৯ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ১৬ শতাংশ বেশি। পাশাপাশি প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগও বেড়ে ৩১ কোটি ৮০ লাখ ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৩ গুণ। তবে শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগের চিত্র উল্টো; গত বছর যেখানে নিট বিনিয়োগ ছিল ৫০ লাখ ডলার, এবার তা ঋণাত্মক ৪ কোটি ২০ লাখ ডলার।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ডলার-সংকট মোকাবিলায় আমরা কিছু নীতি শিথিল করেছি, যাতে আমদানিতে প্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত থাকে। তবে এর ফলে ব্যয় বেড়ে গেছে, বিশেষ করে রমজানকেন্দ্রিক আমদানিতে। মূলত এ কারণেই বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত