Ajker Patrika

অক্টোবরের মধ্যে শ্রম আইন সংশোধন পাস হবে—আশা কূটনৈতিক ও উন্নয়ন সহযোগীদের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের (বিইএফ) নবনির্বাচিত কমিটির মতবিনিময় সভা। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের (বিইএফ) নবনির্বাচিত কমিটির মতবিনিময় সভা। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ শ্রম আইনের (বিএলএ) সংশোধনের উদ্যোগকে স্বাগত ও সমর্থন জানিয়েছে দেশে অবস্থিত বিদেশি কূটনৈতিক মিশন ও উন্নয়ন সহযোগীরা। একই সঙ্গে আগামী অক্টোবরের মধ্যে অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক শ্রমমানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে শ্রম আইন সংশোধন পাস করা হবে বলেও আশা প্রকাশ করেছে তারা।

বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের (বিইএফ) নবনির্বাচিত কমিটির সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তারা এই আশা প্রকাশ করে। এ সময় তারা বলে, শ্রম অধিকারের অগ্রগতি বাংলাদেশের প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা বাড়াবে এবং কোম্পানিগুলোর সুনামহানির ঝুঁকি কমাবে। তবে ফেডারেশনের নেতারা মনে করেন, এসব মন্তব্য দেশীয় বাস্তবতার পূর্ণ প্রতিফলন নয়, বরং বাইরের প্রত্যাশার ভিত্তিতে গঠিত।

আজ সোমবার গুলশানে বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের (বিইএফ) নিজ কার্যালয়ে বিদেশি কূটনৈতিক, উন্নয়ন সহযোগী ও প্রধান রপ্তানি বাজারের (ইইউ) প্রতিনিধিদের সঙ্গে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার মূল উদ্দেশ্য ছিল বিইএফের নবনির্বাচিত নেতৃত্বকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মতবিনিময়।

জাতীয় নিয়োগকর্তা সংগঠন ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) ত্রিপক্ষীয় কাঠামোর অংশ হিসেবে বিইএফ আন্তর্জাতিক শ্রমমান ও কর্মক্ষেত্রে মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে। অনুষ্ঠানে শ্রমবাজার স্থিতিশীলতা, সুশাসন ও কর্মক্ষেত্রের উন্নয়ন নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হয়।

বিইএফ সভাপতি ফজলে শামীম এহসান তাঁর স্বাগত বক্তব্যে প্রতিশ্রুতি পূরণের গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং একই সঙ্গে দ্রুত পরিবর্তনশীল শ্রমবাজার ও জটিল ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতিতে মালিক ও বিনিয়োগকারীদের সামনে উদ্ভূত চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরেন।

সংস্থার মহাসচিব ও সিইও ফারুক আহমেদ চলমান কার্যক্রমের সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন, যেখানে শ্রম আইন সংস্কার, দক্ষতা উন্নয়ন এবং সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা বৃদ্ধির বিষয়গুলো বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়।

পরে একটি উন্মুক্ত আলোচনার মাধ্যমে কূটনৈতিক প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের সামাজিক-অর্থনৈতিক রূপান্তরে প্রদত্ত সহায়তার অগ্রাধিকার, প্রত্যাশা ও অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। আলোচনায় গত ২৬ আগস্ট অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (বিএলএ)-এর ত্রিপক্ষীয় পর্যালোচনা ও সংশোধন নিয়ে আলোচনা হয়, যা ইউরোপীয় ইউনিয়নের জাতীয় কর্মপরিকল্পনা ও আইএলওর গভর্নিং বডির রোডম্যাপের অধীনে সরকারের গৃহীত সংস্কারের মূল ভিত্তি।

কূটনৈতিক মিশনসমূহ সরকারের প্রতিশ্রুতিকে স্বাগত জানায়। এই উদ্যোগের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করে তারা বলে, ‘আমরা আশা করছি, আগামী অক্টোবরের মধ্যে অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক শ্রমমানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বিএলএর সংশোধন পাস করা হবে।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রধান মাইকেল মিলার, ব্রিটিশ হাইকমিশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান জেমস গোল্ডম্যান, কানাডার চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ডেবরা বয়েস, আইএলও প্রতিনিধি, নেদারল্যান্ডস, ডেনমার্ক, সুইডেনের প্রতিনিধিরা। এ ছাড়া প্রধান শিল্প সংগঠনের নেতারা, যেমন বিকেএমইএ সভাপতি, বিজিএমইএ প্রতিনিধি, বাংলাদেশ চা সমিতির চেয়ারম্যানসহ বিইএফ কমিটির সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন। তাঁরা মতবিনিময়ে সরকারকে সামাজিক অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনা করে ঐকমত্যভিত্তিক সমাধানে পৌঁছানোর আহ্বান জানান।

অংশগ্রহণকারীরা গঠনমূলক সংলাপকে স্বাগত জানিয়ে ভবিষ্যতেও এমন আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। ডিসেন্ট ওয়ার্ক, ব্যবসার স্থিতিশীলতা ও দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত