Ajker Patrika

ডলার-সংকটে ভারতীয় বিদ্যুতের ১০০ কোটির বকেয়া পরিশোধে হিমশিম বাংলাদেশ

আপডেট : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৯: ৫৭
ডলার-সংকটে ভারতীয় বিদ্যুতের ১০০ কোটির বকেয়া পরিশোধে হিমশিম বাংলাদেশ

ডলার-সংকটের কারণে ভারতীয় বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলোর ১০০ কোটি ডলারের বেশি বকেয়া পরিশোধে হিমশিম খাচ্ছে বাংলাদেশ। প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রার জোগান না থাকায় বকেয়া পরিশোধের নানামুখী প্রচেষ্টা সফল হচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট সূত্র ও নথির বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর দিয়েছে। 

২০২২ সালে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর জ্বালানি ও পণ্য আমদানি ব্যয়বহুল হয়ে পড়ায় বকেয়া মেটাতে সংকটে আছে বাংলাদেশ। নজিরবিহী বিক্ষোভে গত আগস্টে শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর সংকট আরও বেড়েছে। 

ক্রমহ্রাসমান বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়াতে আন্তর্জাতিক ঋণদাতা সংস্থাগুলোর কাছে জরুরি ভিত্তিতে ৫০০ কোটি ডলারের আর্থিক সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ। ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নীতি সুদের হারও বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সংকট থেকে উত্তরণে গত বছর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের কাছে ৪৭০ কোটি ডলার চেয়েছিল বাংলাদেশ।

ভারতীয় বিদ্যুতের বকেয়া পরিশোধের বিষয়ে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) এক কর্মকর্তা গতকাল শুক্রবার রয়টার্সকে বলেন, ‘আমরা বকেয়া পরিশোধের চেষ্টা করছি। কিন্তু ডলার-সংকট এই প্রচেষ্টাকে খুবই জটিল করে তুলছে।’

বাংলাদেশের কাছে বিদ্যুতের দাম বাবদ ১০০ কোটি ডলারেরও বেশি পাওনা ভারতের বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলোর। এর মধ্যে প্রায় ৮০ কোটি ডলার আদানি পাওয়ারের কাছে বকেয়া আছে বলে যোগ করেন তিনি। এই বিষয়ে আদানি পাওয়ারের কাছ থেকে মন্তব্য চাইলেও জবাব মেলেনি।

নথির বরাত দিয়ে রয়টার্স বলেছে, আরও দুটি ভারতীয় কোম্পানি পিটিসি ইন্ডিয়া ও এসইআইএল বিদ্যুতের দাম বাবদ যথাক্রমে ৮ কোটি ও ১৯ কোটি ডলারের পাওনা পরিশোধের জন্য পিডিবিকে চিঠি দিয়েছে।

পিটিসি ইন্ডিয়ার এক মুখপাত্র বলেন, বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্ষেত্রে ২০১৩ সাল থেকে পিডিবির সঙ্গে পিটিসির দীর্ঘমেয়াদি ব্যবসায়িক সম্পর্ক আছে। আর বর্তমান চুক্তির অধীনে ২০২২ সাল থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে।

এসইআইএলের একজন মুখপাত্র বলেন, এই বকেয়া যে ‘নাজুক পরিস্থিতি’ সৃষ্টি করেছে, তা তাঁরা বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।

বাংলাদেশের বিদ্যুতের মোট চাহিদার প্রায় ২০ শতাংশ প্রতিবেশী ভারত থেকে আমদানি করে মেটানো হয়। সূত্রের বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে, গত আট-নয় মাস ধরে বাংলাদেশ বিদ্যুতের অর্থ পরিশোধ করেনি। 

বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য ২০১৮ সালে পিডিবির সঙ্গে মোট ১৫ বছর মেয়াদি চুক্তি করে এসইআইএল। কোম্পানিটি এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘যদিও আমরা বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখব। কিন্তু, একই সঙ্গে আমরা আশা করি, বিদ্যুৎ সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখতে কর্তৃপক্ষ চুক্তির শর্তাবলি বহাল রাখবে এবং বকেয়া পরিশোধ ত্বরান্বিত করবে।’

নথি অনুযায়ী, বাংলাদেশের সঙ্গে বিদ্যুৎ চুক্তিসম্পর্কিত এসইআইএল ও পিটিসি ইন্ডিয়ার যথাক্রমে ৩ কোটি ৪১ লাখ ডলার ও ৩ কোটি ৭ লাখ ডলারের ব্যাংক গ্যারান্টি রয়েছে।  

এই কারণে বাংলাদেশের রূপালী ব্যাংক প্রায় ২৭ কোটি ডলারের বকেয়া নিষ্পত্তির জন্য ডলার জোগাড়ের চেষ্টায় আছে। তাতে সফল না হলে ভারতীয় কোম্পানিগুলো গ্যারান্টির অর্থ তুলে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। 

নথিতে বলা হয়েছে, ‘বিদেশি মুদ্রায় বিদ্যুৎ আমদানির দায় মেটানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রয়োজনীয় ডলার সংগ্রহে রূপালী ব্যাংক ও পিডিবি একসঙ্গে কাজ করছে, যা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।’

চুক্তির শর্তাবলি নিয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে পিটিসি ইন্ডিয়া মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। আর সপ্তাহান্তে ছুটির কারণে রূপালী ব্যাংকের মন্তব্যও জানতে পারেনি রয়টার্স।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

নতুন মেট্রো নয়, রুট বাড়ানোর চিন্তা

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত