জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা
দেশের অধিকাংশ মানুষের জীবিকা এখনো কৃষিনির্ভর। কৃষিক্ষেত্রে নতুন উদ্যোগের পাশাপাশি প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জলবায়ুর সংকটে টিকে থাকতে কৃষকদের ঋণের চাহিদা বেড়েই চলেছে। অথচ বাস্তবতা হলো, চাহিদা থাকলেও কৃষি খাতে অর্থায়ন নিয়ে উদাসীন অবস্থান নিয়েছে ব্যাংকগুলো। সাম্প্রতিক তথ্য বলছে, একটি অর্থবছরের ব্যবধানে কৃষিঋণ বিতরণ কমেছে ১ হাজার ৮৫ কোটি টাকা, যেখানে একই সময়ে আদায় বেড়েছে ১ হাজার ৫১৫ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মে মাস পর্যন্ত কৃষি খাতে বিতরণ করা হয়েছে ৩২ হাজার ২১১ কোটি টাকা। অথচ এক বছর আগের একই সময়ে বিতরণ হয়েছিল ৩৩ হাজার ২৯৬ কোটি টাকা। এদিকে, একই সময়ে আদায় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ৮৯০ কোটি টাকা, যা আগের বছরের তুলনায় ১ হাজার ৫১৫ কোটি টাকা বেশি।
অর্থাৎ, কৃষকেরা ঋণ পরিশোধে আগ্রহী ও সক্ষমতা দেখালেও, নতুন ঋণ পেতে তাঁদের ভোগান্তি বাড়ছে। কৃষিঋণ সাধারণত বীজ, সার, কীটনাশক কেনা, সেচব্যবস্থা স্থাপন এবং অন্যান্য কৃষিবিষয়ক সরঞ্জাম কেনার জন্য ব্যবহৃত হয়। কিন্তু ব্যাংক নানা অজুহাতে কৃষকদের ঋণ বিতরণে অনাগ্রহ দেখাচ্ছে, যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে কৃষি খাতের সার্বিক ঋণ বিতরণের কার্যক্রমে।
কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. জাহাঙ্গীর আলম এ প্রবণতাকে ‘সতর্কসংকেত’ বলে উল্লেখ করে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বন্যা-খরায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য এখন বেশি ঋণ দরকার। ব্যাংকগুলো যদি কৃষিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ না হয়, তাহলে খাদ্য উৎপাদন কমবে, পণ্যের সরবরাহ সংকুচিত হবে, আর মূল্যস্ফীতির চাপ সাধারণ মানুষের জীবনে আরও চেপে বসবে।’
অথচ বাংলাদেশ ব্যাংক কৃষি খাতে এ বছর ৩৮ হাজার কোটি টাকার ঋণ বিতরণের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এর মধ্যে বেসরকারি ও বিদেশি ব্যাংকের জন্য লক্ষ্য ছিল ২৫ হাজার ৩৮৫ কোটি টাকা, আর রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর জন্য ১২ হাজার ৬১৫ কোটি টাকা। বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, সরকারি মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কৃষিঋণ বিতরণ কমেছে ১৬ শতাংশের বেশি, আর বেসরকারি ব্যাংকগুলোর গড় বিতরণ হার ৩১ শতাংশের নিচে।
রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের সাবেক এমডি মো. জাহিদুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, ‘অনেক ব্যাংকেরই গ্রামীণ নেটওয়ার্ক নেই। তারা তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে ঋণ বিতরণ করে, যা ব্যয়বহুল এবং ঝুঁকিপূর্ণ। কৃষিঋণ বিতরণের সক্ষমতা নিয়ে এখনই সরকারের গভীর দৃষ্টি প্রয়োজন।’
বেসরকারি ব্যাংকগুলোর পক্ষ থেকেও দায় স্বীকারের সুর শোনা গেছে। মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বছরের শুরুতে কিছু ব্যাংক কাঠামোগত সমস্যায় ছিল। জুলাই-আগস্টে মানুষও মাঠে নামতে পারেনি। এতে কৃষিঋণ বিতরণে প্রভাব পড়েছে। তবে লক্ষ্য অর্জনে বিতরণ বাড়াতে হবে, আর আমরা সেটাই করব।’
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, শুধু বিতরণ নয়, ঋণপ্রক্রিয়ায় মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্যও নিরুৎসাহিত করছে প্রকৃত কৃষকদের। ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, দালাল চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়েছে। কারও সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারণ কৃষিঋণ উৎপাদন, প্রবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
সরকার যেখানে কৃষিকে কৌশলগত খাত হিসেবে ঘোষণা করেছে, সেখানে কৃষকের ঋণপ্রাপ্তি বাধাগ্রস্ত হওয়া শুধু আর্থিক ব্যর্থতা নয়, এটি খাদ্যনিরাপত্তা ও সামাজিক স্থিতিশীলতার জন্যও হুমকিস্বরূপ।
আরও খবর পড়ুন:
দেশের অধিকাংশ মানুষের জীবিকা এখনো কৃষিনির্ভর। কৃষিক্ষেত্রে নতুন উদ্যোগের পাশাপাশি প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জলবায়ুর সংকটে টিকে থাকতে কৃষকদের ঋণের চাহিদা বেড়েই চলেছে। অথচ বাস্তবতা হলো, চাহিদা থাকলেও কৃষি খাতে অর্থায়ন নিয়ে উদাসীন অবস্থান নিয়েছে ব্যাংকগুলো। সাম্প্রতিক তথ্য বলছে, একটি অর্থবছরের ব্যবধানে কৃষিঋণ বিতরণ কমেছে ১ হাজার ৮৫ কোটি টাকা, যেখানে একই সময়ে আদায় বেড়েছে ১ হাজার ৫১৫ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মে মাস পর্যন্ত কৃষি খাতে বিতরণ করা হয়েছে ৩২ হাজার ২১১ কোটি টাকা। অথচ এক বছর আগের একই সময়ে বিতরণ হয়েছিল ৩৩ হাজার ২৯৬ কোটি টাকা। এদিকে, একই সময়ে আদায় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ৮৯০ কোটি টাকা, যা আগের বছরের তুলনায় ১ হাজার ৫১৫ কোটি টাকা বেশি।
অর্থাৎ, কৃষকেরা ঋণ পরিশোধে আগ্রহী ও সক্ষমতা দেখালেও, নতুন ঋণ পেতে তাঁদের ভোগান্তি বাড়ছে। কৃষিঋণ সাধারণত বীজ, সার, কীটনাশক কেনা, সেচব্যবস্থা স্থাপন এবং অন্যান্য কৃষিবিষয়ক সরঞ্জাম কেনার জন্য ব্যবহৃত হয়। কিন্তু ব্যাংক নানা অজুহাতে কৃষকদের ঋণ বিতরণে অনাগ্রহ দেখাচ্ছে, যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে কৃষি খাতের সার্বিক ঋণ বিতরণের কার্যক্রমে।
কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. জাহাঙ্গীর আলম এ প্রবণতাকে ‘সতর্কসংকেত’ বলে উল্লেখ করে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বন্যা-খরায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য এখন বেশি ঋণ দরকার। ব্যাংকগুলো যদি কৃষিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ না হয়, তাহলে খাদ্য উৎপাদন কমবে, পণ্যের সরবরাহ সংকুচিত হবে, আর মূল্যস্ফীতির চাপ সাধারণ মানুষের জীবনে আরও চেপে বসবে।’
অথচ বাংলাদেশ ব্যাংক কৃষি খাতে এ বছর ৩৮ হাজার কোটি টাকার ঋণ বিতরণের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এর মধ্যে বেসরকারি ও বিদেশি ব্যাংকের জন্য লক্ষ্য ছিল ২৫ হাজার ৩৮৫ কোটি টাকা, আর রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর জন্য ১২ হাজার ৬১৫ কোটি টাকা। বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, সরকারি মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কৃষিঋণ বিতরণ কমেছে ১৬ শতাংশের বেশি, আর বেসরকারি ব্যাংকগুলোর গড় বিতরণ হার ৩১ শতাংশের নিচে।
রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের সাবেক এমডি মো. জাহিদুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, ‘অনেক ব্যাংকেরই গ্রামীণ নেটওয়ার্ক নেই। তারা তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে ঋণ বিতরণ করে, যা ব্যয়বহুল এবং ঝুঁকিপূর্ণ। কৃষিঋণ বিতরণের সক্ষমতা নিয়ে এখনই সরকারের গভীর দৃষ্টি প্রয়োজন।’
বেসরকারি ব্যাংকগুলোর পক্ষ থেকেও দায় স্বীকারের সুর শোনা গেছে। মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বছরের শুরুতে কিছু ব্যাংক কাঠামোগত সমস্যায় ছিল। জুলাই-আগস্টে মানুষও মাঠে নামতে পারেনি। এতে কৃষিঋণ বিতরণে প্রভাব পড়েছে। তবে লক্ষ্য অর্জনে বিতরণ বাড়াতে হবে, আর আমরা সেটাই করব।’
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, শুধু বিতরণ নয়, ঋণপ্রক্রিয়ায় মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্যও নিরুৎসাহিত করছে প্রকৃত কৃষকদের। ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, দালাল চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়েছে। কারও সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারণ কৃষিঋণ উৎপাদন, প্রবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
সরকার যেখানে কৃষিকে কৌশলগত খাত হিসেবে ঘোষণা করেছে, সেখানে কৃষকের ঋণপ্রাপ্তি বাধাগ্রস্ত হওয়া শুধু আর্থিক ব্যর্থতা নয়, এটি খাদ্যনিরাপত্তা ও সামাজিক স্থিতিশীলতার জন্যও হুমকিস্বরূপ।
আরও খবর পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক আরোপের হুমকি বাংলাদেশকে এমন এক বাস্তবতার মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছিল, যা ছিল অর্থনীতির জন্য ভয়াবহ এক সতর্কসংকেত। শেষ পর্যন্ত যদি এই শুল্কহার ১৫ শতাংশ কমিয়ে ২০ শতাংশে নির্ধারণ না করা হতো, বরং তা প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় আরও বেশি হতো। তবে এর অভিঘাত হতো বহুমাত্রিক ও ব্যাপক।
৮ ঘণ্টা আগেযুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশি পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক ৩৫ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে নামিয়ে আনায় দেশের পুঁজিবাজারে নতুন করে প্রাণ ফিরে এসেছে। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে গতকাল রোববার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের পাশাপাশি লেনদেনেও বড় উত্থান হয়েছে। লেনদেন হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে প্রায় এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ হয়
৮ ঘণ্টা আগেবিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে চলমান ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ২ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন (২৪৭ কোটি ৭৯ লাখ) ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন বিভিন্ন দেশে বসবাসরত প্রবাসীরা। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ৩০ হাজার ২৩৯ কোটি টাকা (প্রতি ডলা
৮ ঘণ্টা আগেব্যাংকিং খাতকে ঝুঁকিনির্ভর তদারকির আওতায় আনতে এবং আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে ‘সুপারভাইজরি পলিসি অ্যান্ড কো-অর্ডিনেশন ডিপার্টমেন্ট’ (এসপিসিডি) নামে একটি নতুন বিভাগ চালু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
১১ ঘণ্টা আগে