রোকন উদ্দীন, ঢাকা
প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে পুনরায় বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি আয়ের কাছাকাছি পৌঁছেছে দেশের কৃষি খাত। সদ্য সমাপ্ত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে কৃষিপণ্য রপ্তানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৮ কোটি ৮৬ লাখ ডলারে, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ২ দশমিক ৫২ শতাংশ বেশি।
এ নিয়ে এক দশকে তৃতীয়বারের মতো বিলিয়ন ডলারের দোরগোড়ায় পৌঁছাল কৃষিপণ্য রপ্তানি। এর আগে ২০২০-২১ ও ২০২১-২২ অর্থবছরে রপ্তানি আয় ছিল যথাক্রমে ১০২ কোটি ৮০ লাখ এবং ১১৬ কোটি ২০ লাখ ডলার। তবে ২০২২-২৩ এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরে পতনের কারণে আয় কমে আসে যথাক্রমে ৮৩ কোটি ৮০ লাখ এবং ৯৬ কোটি ৪৩ লাখ ডলারে। যার থেকে আবার ঘুরে দাঁড়ানোর আপ্রাণ চেষ্টায় খাতটি।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, সাম্প্রতিক প্রবৃদ্ধির প্রধান নিয়ামক ছিল ফল রপ্তানিতে নজিরবিহীন প্রবাহ, বিশেষত আমে ১৩০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি। বিপরীতে, ভারতের হঠাৎ স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞা, মানসনদের সংকট এবং পরিবহন জটিলতায় ধাক্কা খেয়েছে শুকনা খাদ্য ও মসলার চালান, যা কৃষি রপ্তানির সার্বিক গতিতে অনেকটাই প্রভাব ফেলেছে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে সবচেয়ে বেশি আয় এসেছে তামাক পণ্য রপ্তানি থেকে। এ খাতে আয় হয়েছে ২৫ কোটি ১৯ লাখ ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ৩৮ শতাংশ বেশি। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে শুকনা খাবার রপ্তানি, যা কমে হয়েছে ১৮ কোটি ৬৬ লাখ ডলার। আগের বছর এই আয় ছিল ২১ কোটি ৭১ লাখ ডলার। মসলা রপ্তানি দাঁড়িয়েছে ৫ কোটি ৬৩ লাখ ডলারে, যা এক অর্থবছরে কমেছে ৩৫ লাখ ডলার।
এই দুটি খাতেই বড় একটি অংশ রপ্তানি হতো ভারতের বাজারে; বিশেষ করে স্থলবন্দর হয়ে। কিন্তু গত ১৭ মে ভারত হঠাৎ বাংলাদেশ থেকে স্থলবন্দর হয়ে বিভিন্ন প্রক্রিয়াজাত খাবার ও জুসজাতীয় পণ্য রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়, যার প্রভাব পড়েছে শুকনা খাদ্য ও মসলা রপ্তানিতে।
প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার তৌহিদুজ্জামান বলেন, ‘স্থলবন্দরে নিষেধাজ্ঞার ফলে রপ্তানি ৩০ শতাংশ কমে গেছে। আগে এক দিনে পণ্য পৌঁছাত, এখন সময় লাগে ৭ থেকে ১০ দিন। খরচও বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ।’
ফল রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হলেও সবজি রপ্তানি এক অর্থবছরে কমেছে প্রায় ২৮ শতাংশ। সবজি রপ্তানি আয় ছিল ৮ কোটি ১১ লাখ ডলার, যা আগের বছরে ছিল ১১ কোটি ২৪ লাখ। বাংলাদেশ ফ্রুটস অ্যান্ড ভেজিটেবলস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘সরকার আম রপ্তানিতে বিশেষ জোর দিয়েছে বলেই ফল রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে। কিন্তু পচনশীল পণ্যের পরিবহনসংকট এখনো পুরোনো জায়গাতেই রয়ে গেছে।’
প্রাণিজ ও উদ্ভিজ্জ চর্বি রপ্তানিতে বছরজুড়ে ২৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। এ খাতে আয় হয়েছে ১১ কোটি ৮০ লাখ ডলার। চা রপ্তানি বেড়েছে ১৬ শতাংশ, ভিনেগার ও বেভারেজ পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ১ দশমিক ৫২ শতাংশ। তবে পান রপ্তানি কমেছে ৩৪ শতাংশ, তেলবীজ ১৮ শতাংশ এবং চিনিজাত পণ্য রপ্তানি কমেছে ১৭ শতাংশ।
এ নিয়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. জাহাঙ্গীর আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিদেশি মূলধারার বাজারে প্রবেশের ক্ষেত্রে আমাদের অন্যতম প্রধান বাধা হলো গ্যাপ (গুড অ্যাগ্রিকালচারাল প্র্যাকটিসেস) না মানা। পোশাক খাতে যেভাবে কমপ্লায়েন্স মানতে হয়, কৃষি খাতেও একই মান বজায় রাখতে হবে। আমাদের কৃষিপণ্য এখনো মূলত প্রবাসী বাংলাদেশিদের ঘিরে আবর্তিত, কিন্তু বৈশ্বিক ভোক্তা ধরে রাখতে হলে মানসনদ, সাপ্লাই চেইন ও পরিবহন কাঠামোয় বড় পরিবর্তন জরুরি।’
ইপিবি বলছে, অর্থবছরের শেষ মাস জুনে রপ্তানিতে সামান্য ধীরগতি দেখা গেছে। এ মাসে রপ্তানি আয় হয়েছে ৬ কোটি ১০ লাখ ডলার, যেখানে মে মাসে ছিল ৬ কোটি ৫২ লাখ ডলার।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ভারতে স্থলবন্দর সংকট না থাকলে এবং কৃষিপণ্য মানোন্নয়নে কাঠামোগত সংস্কার ত্বরান্বিত হলে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি পুনরায় নিশ্চিত করা সম্ভব।
আরো খবর পড়ুন:
প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে পুনরায় বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি আয়ের কাছাকাছি পৌঁছেছে দেশের কৃষি খাত। সদ্য সমাপ্ত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে কৃষিপণ্য রপ্তানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৮ কোটি ৮৬ লাখ ডলারে, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ২ দশমিক ৫২ শতাংশ বেশি।
এ নিয়ে এক দশকে তৃতীয়বারের মতো বিলিয়ন ডলারের দোরগোড়ায় পৌঁছাল কৃষিপণ্য রপ্তানি। এর আগে ২০২০-২১ ও ২০২১-২২ অর্থবছরে রপ্তানি আয় ছিল যথাক্রমে ১০২ কোটি ৮০ লাখ এবং ১১৬ কোটি ২০ লাখ ডলার। তবে ২০২২-২৩ এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরে পতনের কারণে আয় কমে আসে যথাক্রমে ৮৩ কোটি ৮০ লাখ এবং ৯৬ কোটি ৪৩ লাখ ডলারে। যার থেকে আবার ঘুরে দাঁড়ানোর আপ্রাণ চেষ্টায় খাতটি।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, সাম্প্রতিক প্রবৃদ্ধির প্রধান নিয়ামক ছিল ফল রপ্তানিতে নজিরবিহীন প্রবাহ, বিশেষত আমে ১৩০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি। বিপরীতে, ভারতের হঠাৎ স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞা, মানসনদের সংকট এবং পরিবহন জটিলতায় ধাক্কা খেয়েছে শুকনা খাদ্য ও মসলার চালান, যা কৃষি রপ্তানির সার্বিক গতিতে অনেকটাই প্রভাব ফেলেছে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে সবচেয়ে বেশি আয় এসেছে তামাক পণ্য রপ্তানি থেকে। এ খাতে আয় হয়েছে ২৫ কোটি ১৯ লাখ ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ৩৮ শতাংশ বেশি। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে শুকনা খাবার রপ্তানি, যা কমে হয়েছে ১৮ কোটি ৬৬ লাখ ডলার। আগের বছর এই আয় ছিল ২১ কোটি ৭১ লাখ ডলার। মসলা রপ্তানি দাঁড়িয়েছে ৫ কোটি ৬৩ লাখ ডলারে, যা এক অর্থবছরে কমেছে ৩৫ লাখ ডলার।
এই দুটি খাতেই বড় একটি অংশ রপ্তানি হতো ভারতের বাজারে; বিশেষ করে স্থলবন্দর হয়ে। কিন্তু গত ১৭ মে ভারত হঠাৎ বাংলাদেশ থেকে স্থলবন্দর হয়ে বিভিন্ন প্রক্রিয়াজাত খাবার ও জুসজাতীয় পণ্য রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়, যার প্রভাব পড়েছে শুকনা খাদ্য ও মসলা রপ্তানিতে।
প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার তৌহিদুজ্জামান বলেন, ‘স্থলবন্দরে নিষেধাজ্ঞার ফলে রপ্তানি ৩০ শতাংশ কমে গেছে। আগে এক দিনে পণ্য পৌঁছাত, এখন সময় লাগে ৭ থেকে ১০ দিন। খরচও বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ।’
ফল রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হলেও সবজি রপ্তানি এক অর্থবছরে কমেছে প্রায় ২৮ শতাংশ। সবজি রপ্তানি আয় ছিল ৮ কোটি ১১ লাখ ডলার, যা আগের বছরে ছিল ১১ কোটি ২৪ লাখ। বাংলাদেশ ফ্রুটস অ্যান্ড ভেজিটেবলস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘সরকার আম রপ্তানিতে বিশেষ জোর দিয়েছে বলেই ফল রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে। কিন্তু পচনশীল পণ্যের পরিবহনসংকট এখনো পুরোনো জায়গাতেই রয়ে গেছে।’
প্রাণিজ ও উদ্ভিজ্জ চর্বি রপ্তানিতে বছরজুড়ে ২৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। এ খাতে আয় হয়েছে ১১ কোটি ৮০ লাখ ডলার। চা রপ্তানি বেড়েছে ১৬ শতাংশ, ভিনেগার ও বেভারেজ পণ্য রপ্তানি বেড়েছে ১ দশমিক ৫২ শতাংশ। তবে পান রপ্তানি কমেছে ৩৪ শতাংশ, তেলবীজ ১৮ শতাংশ এবং চিনিজাত পণ্য রপ্তানি কমেছে ১৭ শতাংশ।
এ নিয়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. জাহাঙ্গীর আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিদেশি মূলধারার বাজারে প্রবেশের ক্ষেত্রে আমাদের অন্যতম প্রধান বাধা হলো গ্যাপ (গুড অ্যাগ্রিকালচারাল প্র্যাকটিসেস) না মানা। পোশাক খাতে যেভাবে কমপ্লায়েন্স মানতে হয়, কৃষি খাতেও একই মান বজায় রাখতে হবে। আমাদের কৃষিপণ্য এখনো মূলত প্রবাসী বাংলাদেশিদের ঘিরে আবর্তিত, কিন্তু বৈশ্বিক ভোক্তা ধরে রাখতে হলে মানসনদ, সাপ্লাই চেইন ও পরিবহন কাঠামোয় বড় পরিবর্তন জরুরি।’
ইপিবি বলছে, অর্থবছরের শেষ মাস জুনে রপ্তানিতে সামান্য ধীরগতি দেখা গেছে। এ মাসে রপ্তানি আয় হয়েছে ৬ কোটি ১০ লাখ ডলার, যেখানে মে মাসে ছিল ৬ কোটি ৫২ লাখ ডলার।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ভারতে স্থলবন্দর সংকট না থাকলে এবং কৃষিপণ্য মানোন্নয়নে কাঠামোগত সংস্কার ত্বরান্বিত হলে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি পুনরায় নিশ্চিত করা সম্ভব।
আরো খবর পড়ুন:
বেসরকারি খাতে নতুন বিনিয়োগ না বাড়ায় এবং ঋণের চাহিদা কমে যাওয়ায় ব্যাংকগুলোয় অলস টাকার পরিমাণ দ্রুত বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২৫ সালের জুন শেষে দেশের ৬১টি তফসিলি ব্যাংকে উদ্বৃত্ত টাকার পরিমাণ বেড়ে হয়েছে ২ লাখ ৮৩ হাজার ৬৩৯ কোটি টাকা। এই সময়ে ব্যাংক খাতে মোট তারল্য...
১ ঘণ্টা আগেদেশের শীর্ষস্থানীয় নিত্যব্যবহার্য ও ভোগ্যপণ্য (এফএমসিজি) উৎপাদন ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেডের (ইউবিএল) নতুন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে রুহুল কুদ্দুস খানকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তিনি আগামী ১ নভেম্বর থেকে এই দায়িত্ব নেবেন।
২ ঘণ্টা আগেরাজধানীর ঢাকায় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) প্রধান কার্যালয়ের সেমিনার হলে ‘কমিউনিটি সিড ব্যাংক অ্যান্ড অ্যাডাপটিভ রিসার্চ’-এর ওপর একটি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিএডিসির পার্টনার প্রকল্পের অর্থায়নে ও গবেষণা সেলের উদ্যোগে আয়োজিত বুধবারের (২৪ সেপ্টেম্বর) এই কর্মশালায় গাজীপুর কৃষি...
২ ঘণ্টা আগেসাউথ এশিয়ান ট্রাভেল অ্যাওয়ার্ড (সাটা)-২০২৫ এ সেরা হিসেবে দুটি মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার অর্জন করেছে বাংলাদেশের কক্সবাজারে অবস্থিত হোটেল বে ওয়াচ। সম্প্রতি শ্রীলঙ্কার কলম্বোতে অনুষ্ঠিত এই অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে বে ওয়াচ ‘সাউথ এশিয়ান লিডিং বিচ হোটেল’ এবং ‘সাউথ এশিয়ান বেস্ট নিউ বিচ হোটেল’ ক্যাটাগরিতে...
৯ ঘণ্টা আগে