Ajker Patrika

বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে ৫ হাজার কোটি টাকার তহবিল

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

অর্থনীতির ভিত মজবুত করে প্রবৃদ্ধির গতি বাড়াতে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তাই আগামী ২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) তহবিল গঠন করা হয়েছে। এই তহবিলে ৫ হাজার ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। পাশাপাশি, প্রান্তিক পর্যায়ের কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগে বা সিএমএসএমই খাতের ১০ হাজার উদ্যোক্তাকে ১ হাজার কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে প্রস্তাবিত বাজেটে।

আজ সোমবার অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বাজেট বক্তব্য বলেন, ‘দেশে বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য উপযুক্ত পরিবেশ জরুরি, তাই বিনিয়োগের পথে বিদ্যমান অন্তরায়গুলো চিহ্নিত করে তা দ্রুততম সময়ে দূর করার বিষয়ে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।’

তিনি বলেন, ‘বিনিয়োগকারীদের দ্রুত ও সহজে সেবা প্রদানের লক্ষ্যে ওয়ান স্টপ সার্ভিস (ওএসএস) পোর্টাল থেকে বর্তমানে ৪৩টি সংস্থার ১৩৪টি সেবা দেওয়া হচ্ছে। ব্যবসার পরিবেশ উন্নয়নে একটি সিঙ্গেল প্ল্যাটফর্মে আবেদন, প্রক্রিয়াকরণ ও সেবা প্রদানের উদ্দেশ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আওতায় বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ডো খোলা হয়েছে।’

অর্থ উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য বিনিয়োগকারীদের একটি পাইপলাইন তৈরি করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতিকে ট্র্যাকিংয়ে মাধ্যমে প্রকৃত বিনিয়োগে রূপান্তর করা হবে। এ ছাড়া, দেশের সম্ভাবনাময় ক্ষেত্রগুলোতে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের মাধ্যমে বিনিয়োগ প্রকল্প বাস্তবায়ন উৎসাহিত করার দিকেও আমরা বিশেষ নজর দিচ্ছি। এ লক্ষ্যে পিপিপি তহবিল হিসেবে আগামী অর্থবছরে ৫ হাজার ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করছি।’

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকারি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কম গুরুত্বপূর্ণ ও রাজনৈতিক বিবেচনায় গৃহীত বেশ কিছু প্রকল্প বাদ দেওয়া হয়েছে। বিনিয়োগ প্রকল্প গ্রহণের ফলে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমানো–বাড়ানো অর্থাৎ, পরিবেশ-প্রতিবেশের ওপর প্রভাব নিরূপণে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট দুর্যোগের প্রভাব মোকাবিলায় বিবেচ্য প্রকল্প কতটুকু সহনশীল তা প্রকল্প প্রক্রিয়াকরণের সময় যাচাই ও মূল্যায়ন করা হচ্ছে।’

সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ২০২৬ সালের নভেম্বর মাসে স্বাভাবিক নিয়মে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা হতে আনুষ্ঠানিক উত্তরণের। উত্তরণ পরবর্তী সময়ে চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় ভবিষ্যতের কর্মপরিকল্পনাগুলো চিহ্নিত করে ইতিমধ্যে স্মুথ ট্রানজিশন স্ট্র্যাটেজি (এসটিএস) প্রণয়ন করা হয়েছে। বাণিজ্যিক খাতের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে লজিস্টিকস খাতের উন্নয়নসহ স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে এবং বাণিজ্য সম্ভাবনাময় বিভিন্ন দেশ ও আঞ্চলিক অর্থনৈতিক জোটের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ বাস্তবায়নের কাজ চলমান রয়েছে।’

ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উন্নয়ন বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রাক্কলন অনুযায়ী বাংলাদেশের জিডিপিতে কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের অবদান প্রায় ১১ দশমিক ৮৯ শতাংশ। সম্ভাবনাময় এ খাতের বিকাশে সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং ব্যবসার পরিবেশ উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম চলমান।’

সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আগামী ৩ বছরের মধ্যে এ খাতের বিকাশে ১৫ হাজার নতুন উদ্যোক্তা তৈরি, ২৫ হাজার উদ্যোক্তাকে দক্ষতামূলক ও কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রদান, বিভাগীয় শহরে এসএমই প্রোডাক্ট ডিসপ্লে ও সেলস সেন্টার স্থাপন, জেলা শহরে আঞ্চলিক এসএমই পণ্য মেলা আয়োজন, সিএমএসএমই উদ্যোক্তাদের কেন্দ্রীয় ডেটাবেইস প্রতিষ্ঠা, নারী উদ্যোক্তাসহ প্রান্তিক পর্যায়ের সিএমএসএমই খাতের ১০ হাজার উদ্যোক্তাকে ১ হাজার কোটি টাকা ঋণ বিতরণ, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম এর মাধ্যমে ৩ হাজার নারী উদ্যোক্তার সঙ্গে করপোরেট ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের সংযোগ স্থাপন ইত্যাদি কার্যক্রম বাস্তবায়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত