Ajker Patrika
  • রুটি ও বিস্কুটে ৭.৫% ভ্যাট দরিদ্রদের ওপর চাপ বাড়িয়েছে।
  • ৮৮% নিম্ন আয়ের মানুষ প্রতিদিন রুটি বা বিস্কুট খেয়ে থাকেন।

সকালের খাবার বাদ দেয় ৬০% নিম্ন আয়ের মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ইআরএফ ও ইয়ুথ পলিসি নেটওয়ার্কের সেমিনারে বক্তব্য দেন এনবিআরের চেয়ারম্যান। ছবি: আজকের পত্রিকা
ইআরএফ ও ইয়ুথ পলিসি নেটওয়ার্কের সেমিনারে বক্তব্য দেন এনবিআরের চেয়ারম্যান। ছবি: আজকের পত্রিকা

নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যে অতিরিক্ত ভ্যাট আরোপের ফলে দেশে ৬০ শতাংশ নিম্ন আয়ের মানুষ সকালের খাবার বাদ দিতে বাধ্য হচ্ছে। গবেষণায় উঠে এসেছে, রুটি ও বিস্কুটের মতো সস্তা ও সহজলভ্য খাদ্যপণ্যে ভ্যাট ৭.৫ শতাংশ হওয়ায় তা এখন আর ‘নাশতার খাবার’ নয়—বরং দরিদ্র মানুষের এক বেলার প্রধান খাদ্য হয়ে উঠেছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) ও ইয়ুথ পলিসি নেটওয়ার্ক (ওয়াইপিএন) আয়োজিত ‘প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর খাদ্যনিরাপত্তা ও ভ্যাট’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এই বৈষম্যমূলক করনীতি নিন্দা করে ভ্যাট পুনর্বিবেচনার দাবি জানান। এ ধরনের করনীতি দরিদ্র মানুষের খাদ্য ও পুষ্টিনিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে উল্লেখ করা হয়। ইআরএফ সভাপতি দৌলত আকতার মালার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান।

মূল প্রবন্ধে ইয়ুথ পলিসি নেটওয়ার্কের হেড অব রিসার্চ কে এম ইমরুল হাসান বলেন, দেশে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের বেশি, যুব বেকারত্ব এবং আয়বৈষম্য বিরাজমান। বাজেটে বিস্কুট ও পাউরুটির ওপর ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে ৭.৫ শতাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা দরিদ্রদের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। গবেষণার ফলাফল তুলে ধরে তিনি বলেন, নিম্ন আয়ের (১০ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা মাসিক আয়) মানুষের মধ্যে ৬০ শতাংশ সকালের খাবার বাদ দেন এবং ৩.৫ শতাংশ দুপুর বা বিকেলের খাবারও বাদ দিতে বাধ্য হন। ৮৮ শতাংশ নিম্ন আয়ের মানুষ প্রতিদিন কোনো না কোনোভাবে রুটি-বিস্কুট গ্রহণ করেন, যা তাঁদের জন্য ভাতের সস্তা বিকল্প।

গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের ১৫ শতাংশ মনে করেন, এই ভ্যাট হার অনেক অতিরিক্ত। তিনি আরও উল্লেখ করেন, ভ্যাটের কারণে হয় বিস্কুট ও পাউরুটির আকার ছোট হয়ে যাচ্ছে, অথবা দাম বেড়ে যাচ্ছে, যা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলছে। ৭০ শতাংশ মানুষের প্রত্যাশা ছিল আসন্ন বাজেটে তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে ইতিবাচক কিছু থাকবে, কিন্তু এই ভ্যাট আরোপে তাদের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি।

বাংলাদেশ ব্রেড অ্যান্ড বিস্কুট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শফিকুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, রুটি-বিস্কুটকে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য হিসেবে বিবেচনা করে শূন্য ভ্যাট দেওয়া উচিত। সম্ভব না হলে সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ রাখা যেতে পারে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর ভ্যাট আরোপ করা উচিত কি না, তা নিয়ে একটি মৌলিক বিতর্ক সব সময়ই থাকবে। তবে রাজস্ব সংগ্রহ ও ঋণনির্ভরতা কমানোর জন্য করের প্রয়োজন রয়েছে। তবে রুটি-বিস্কুটের ওপর ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৭.৫ শতাংশ রাখা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত