Ajker Patrika

দেশেই তৈরি হবে ইভির বড় বাজার

আপডেট : ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১১: ৩৫
দেশেই তৈরি হবে ইভির বড় বাজার

ইঞ্জিন ও তেলচালিত গাড়ির পরিবর্তে বিশ্বখ্যাত চীনের বিওয়াইডির বৈদ্যুতিক যন্ত্রের গাড়ি বা ইলেকট্রিক ভেহিকল (ইভি) দেশে এনেছে অটোমোবাইল খাতের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান রানার। পেয়েছে জনপ্রিয়তাও। এখন ইভির বাজার সম্প্রসারণ ও ইন্ডাস্ট্রি হিসেবে খাতটি কীভাবে দাঁড় করানো সম্ভব, এ নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন রানার গ্রুপের পরিচালক মার্কেটিং আমিদ সাকিফ খান। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাণিজ্য সম্পাদক শাহ আলম খান। 

আজকের পত্রিকা: বাংলাদেশের বাজারে ইভি ইন্ডাস্ট্রি বিকাশের সুযোগ কীভাবে গ্রহণ করা যায়? 
আমিদ সাকিফ খান: বাংলাদেশের বাজারে ইভি ইন্ডাস্ট্রি বিকাশের ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। এর জন্য সরকারের নীতিনির্ধারকদের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন এবং সেখানে বেসরকারি খাতের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ প্রয়োজন হবে। বিশেষ করে আমরা যদি ফুল কমার্শিয়াল ফ্লিট, যেমন বাস-ট্রাক—এগুলো ধীরে ধীরে ইভিতে পরিবর্তন করতে পারি, অথবা প্লাগ-ইন হাইব্রিড বা পিএইচইভি করতে পারি, তা হলেও দেশে অনেক বড় একটি ইভির বাজার সৃষ্টি হবে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, তখন জ্বালানি খরচ অনেক কমে আসবে। বর্তমানে বিপুল পরিমাণে ডিজেল বা ক্রুড অয়েল আমদানি করতে হয়, যার পেছনে বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ হয়। তাই ইভির বাজার দেশে যত বড় হবে, জ্বালানির খরচে তত বড় প্রভাব দেখা যাবে। তখন এত জ্বালানি আমাদের আমদানি করতে হবে না। এর সুফল যেমন আমরা পরিবেশ সংরক্ষণে দেখতে পাব, তেমনি আমাদের অর্থনীতিতেও দেখতে পাব। তখন জ্বালানি আমদানির যে পরিমাণ অর্থ কম খরচ হবে, তা আমরা অন্যান্য খাতে ব্যয় করতে পারব।

আজকের পত্রিকা: ইভি কীভাবে জলবায়ু অবনতি ঠেকাতে কাজ করে, একটু ব্যাখ্যা করে বলবেন কি? 
আমিদ সাকিফ খান: অবশ্যই। ধরুন, একটি সাধারণ গাড়ি যখন চলে, তখন কার্বন নির্গমন হয়, যা পরিবেশ নষ্ট করে। এখন খুব সহজেই বায়ুর গুণগতমান পরিমাপ করা যায় ও জানা যায় বায়ুদূষণ কোন পর্যায়ে রয়েছে। এ ক্ষেত্রে পরিবেশবান্ধব হওয়ায় ইভি চলার সময় কোনো ধরনের কার্বনই নির্গমন করে না, তাই ইভিকে বলা হয় জিরো অ্যামিশন ভেহিকল। তা ছাড়া ইভির ব্যাটারিও এখন বেশ উন্নত মানের। সাধারণত, অনবায়নযোগ্য জ্বালানিনির্ভর গাড়িতে যে ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়, তা লেড এসিড ব্যাটারি। সেখানে বৈদ্যুতিক গাড়িতে ব্যবহৃত হয় লিথিয়াম আয়রন ফসফেট ব্যাটারি, যার উৎপাদন থেকে শুরু করে নিষ্পত্তি করা পর্যন্ত গোটা জীবনচক্র লেড এসিড ব্যাটারি থেকে অনেক বেশি পরিবেশবান্ধব। তাই, একটি গাড়ির সম্পূর্ণ জীবনচক্র বিবেচনা করলে দেখা যায়, দেশে জলবায়ু বিপর্যয় ঠেকাতে ইভির ব্যবহার বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই।

আজকের পত্রিকা: দেশের বাজারে ইভি সরবরাহ করছে বিওয়াইডি। যার স্থানীয় পরিবেশক হিসেবে রয়েছে রানার গ্রুপ। বিওয়াইডির ইভিতে কী ধরনের সুবিধা রয়েছে গ্রাহকদের জন্য? 
আমিদ সাকিফ খান: আমরা আমাদের গাড়িতে দিচ্ছি ৮ বছরের ওয়ারেন্টি। ফলে ৮ বছরের জন্য গাড়ির ব্যাটারি নিয়ে ইভি ব্যবহারকারীকে কোনো দুশ্চিন্তাই করতে হবে না। তার চেয়ে বড় বিষয় হলো, আমরা বাংলাদেশের গ্রাহকের সক্ষমতাও বিবেচনায় রাখছি। তাই প্রায় কোটি টাকার গাড়ির পাশাপাশি মধ্যবিত্তের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে ৫৫ লাখ টাকার মধ্যেও সর্বাধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন লেটেস্ট মডেলের ইভি রয়েছে বিওয়াইডির শোরুমে।

আজকের পত্রিকা: বিশ্বব্যাপী শীর্ষস্থানীয় নিউ এনার্জি ভেহিকল (এনইভি) প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশ নিয়ে বিওয়াইডির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী? 
আমিদ সাকিফ খান: বিওয়াইডি বিশ্বব্যাপী শীর্ষস্থানীয় নিউ এনার্জি ভেহিকল প্রতিষ্ঠান। বিশ্বের তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি কমানোর লক্ষ্য নিয়ে বিওয়াইডি কাজ করে যাচ্ছে। এই অগ্রযাত্রায় অনেক পরিকল্পনা রয়েছে বাংলাদেশকে নিয়ে। বিশেষ করে ঢাকার বায়ুর গুণগতমান খুবই খারাপ অবস্থায় রয়েছে। দিন দিন এ দূষণের তীব্রতা বাড়ছে। এ বায়ুদূষণের তীব্রতা কমাতে আমরা বিশেষ অবদান রাখতে চাই। তাই আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে, আরও অনেক ইভি নিয়ে আসার, ইভিশিল্পকে উন্নত করার এবং সব স্টেকহোল্ডারকে নিয়ে একত্রে কাজ করার।

আজকের পত্রিকা: দেশে ইভির ব্যবহার বাড়াতে বাধাগুলো কোথায়? 
আমিদ সাকিফ খান: বাধা আসলে খুব বেশি কিছু নেই, যা আছে প্রক্রিয়াগত। যেহেতু ইভি বাংলাদেশে এখনো নতুন। এ কারণে পর্যাপ্ত ইভি চার্জিং ইনফ্রাস্ট্রাকচার এখনো সম্পূর্ণরূপে গড়ে ওঠেনি। অন্যদিকে প্রচার-প্রচারণার অভাব ও জানার সীমাবদ্ধতাও কিছুটা আছে। এ কারণে সবার মধ্যে এখনো ‘চার্জিং অ্যাংজাইটি’ বা চার্জিং নিয়ে ভয় কাজ করছে। আমি বিশ্বাস করি, সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে যখন দেশে এ নিয়ে পুরোদমে কাজ শুরু হবে, তখন এ ভয় কেটে যাবে। আশার খবর হচ্ছে, দেশে ইতিমধ্যে বেশ কিছু চার্জিং স্টেশন স্থাপনের কাজ হচ্ছে, ইতিমধ্যে কয়েকটির কাজ শেষ হয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা হলো, বাসায় বসেও ইভিতে চার্জ দেওয়ার সুবিধা রয়েছে; তাই চার্জিং নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই।

আজকের পত্রিকা: ইন্ডাস্ট্রি হিসেবে দেশে ইভির বিকাশে উৎপাদক এবং গ্রাহকদের জন্য প্রয়োজনীয় নীতি কতটা সহায়ক? 
আমিদ সাকিফ খান: নীতি-সহায়তার ইস্যুটি বিচেনায় নিলে বলব, বাংলাদেশ এখনো বেশ পিছিয়ে। কারণ, দেশে ইভি এবং প্লাগ-ইন হাইব্রিড বা পিএইচইভির ওপর ৮৯ শতাংশ করভার রয়েছে। প্রতিবেশী দেশ ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কায় সেই করভার মাত্র ১০-২০ শতাংশের মধ্যে। নরওয়ে এবং কিছু উন্নত দেশে তো ইভির ওপর কোনো করভারই নেই। বিভিন্ন দেশে সরকার জনগণকে ইভি ব্যাবহারে উদ্বুদ্ধ করতে নানা সুবিধা দিচ্ছে। এর মূল কারণ হচ্ছে, ইভি পরিবেশবান্ধব ও অনেক কম এনার্জি খরচেই চলে। আমরা বলছি না ইভির করভার সম্পূর্ণ তুলে দেওয়া হোক, কিন্তু আমরা বিদ্যমান করহার অবশ্যই কমানোর আশা করছি। এ ছাড়া সম্প্রতি এনবিআর একাধিক গাড়ির মালিকদের জন্য পরিবেশগত সারচার্জ বা কার্বন ট্যাক্স চালু করেছে, যা তেলচালিত গাড়ি ও ইভি উভয়ের জন্য বাধ্যতামূলক করেছে। আমি মনে করি, ইভির ক্ষেত্রে এ ট্যাক্স রাখা উচিত নয়। কেননা, ইভি কার্বন নির্গমন করে না। উল্টো পরিবেশের সুরক্ষা দেয়।

তাই গ্রাহকপর্যায়ে যদি ইভি ব্যবহারের সুবিধা দেওয়া হয়, তাহলে দেশে ইভিশিল্প অনেক অগ্রসর হবে। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, দেশে এ মুহূর্তে ইভি উৎপাদনের কোনো নীতিমালা নেই। এ ক্ষেত্রে আমরা সরকার ও যথাযথ কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জাতীয় নির্বাচনের প্রার্থীদের ই-রিটার্ন দাখিলে এনবিআরের হেল্প ডেস্ক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন পথচারীরা। ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন পথচারীরা। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণেচ্ছুক প্রার্থীদের সুবিধার্থে ছুটির দিনে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর। আজ বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে এনবিআর।

এনবিআর জানায়, নির্বাচনে অংশগ্রহণেচ্ছুক প্রার্থীদের অনলাইনে রিটার্ন দাখিল সহজীকরণে এনবিআরের উদ্যোগে ই-ট্যাক্স ম্যানেজমেন্ট ইউনিটের সহযোগিতায় ই-ট্যাক্স ম্যানেজমেন্ট ইউনিটস্থ কার্যালয়ে ‘হেল্পডেস্ক’ চালু করা হয়েছে।

রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি)-এ ই-ট্যাক্স ম্যানেজমেন্ট ইউনিটের হেল্পডেস্ক থেকে আগামী শুক্রবার দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা ও শনিবার সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত অনলাইনে রিটার্ন দাখিল সংক্রান্ত সেবা প্রদান করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আকাশপথে পণ্য পরিবহনে অফডক চান ব্যবসায়ীরা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১: ১০
গ্রাফিকস: আজকের পত্রিকা
গ্রাফিকস: আজকের পত্রিকা

আকাশপথে আমদানি-রপ্তানি ব্যবস্থার দুর্বলতা নতুন করে সামনে এনেছে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ড। ওই ঘটনায় কয়েক দিনের জন্য কার্গো কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ায় ব্যবসায়ীরা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েন। এই প্রেক্ষাপটে আকাশপথে পণ্য পরিবহনকে নিরবচ্ছিন্ন, দ্রুত ও সংকটসহনীয় করতে বিমানবন্দরের বাইরে অফডকভিত্তিক এয়ার কার্গো ব্যবস্থা চালুর দাবি জোরালো হয়েছে। সেই সঙ্গে দ্রুত এয়ার কার্গো অপারেটরস স্টেশন (এসিওএস) নীতিমালা চূড়ান্ত ও বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ী ও রপ্তানিকারকেরা। তাঁরা বলছেন, অফডকভিত্তিক এয়ার কার্গো অপারেশন চালু না হলে যেকোনো সংকটে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়।

অফডক হলো বন্দর বা বিমানবন্দরের মূল এলাকার বাইরে অবস্থিত এমন নির্ধারিত স্থাপনা, যেখানে আমদানি-রপ্তানি পণ্যের খালাস, সংরক্ষণ, পরীক্ষা ও হ্যান্ডলিং করা হয়। সহজভাবে বলা যায়, বন্দরের ভেতরে সব কাজ না করে বন্দরের বাইরে আলাদা জায়গায় কার্গোর কাজ করা, এটাই অফডক।

চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের মতো আকাশপথেও অফডক ব্যবস্থা চালু করা যায় বলে মনে করেন নিট পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, বর্তমানে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কার্গো হ্যান্ডলিং সেবা মূলত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস দিয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে তাদের সক্ষমতা খুবই সীমিত। অনেক সময় পণ্য খালাসে অতিরিক্ত দুই থেকে তিন দিন সময় লেগে যায়। এতে রপ্তানি ও আমদানি উভয় ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা সমস্যায় পড়েন।

অফডক চালু হলে এ ধরনের জটিলতা থাকবে না জানিয়ে মোহাম্মদ হাতেম বলেন, এতে পণ্য খালাস দ্রুত হবে এবং সামগ্রিকভাবে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য আরও সহজ ও গতিশীল হবে।

অফডক দরকার কেন

সংশ্লিষ্টরা জানান, অফডক ব্যবস্থা চালু হলে বেসরকারি উদ্যোগে একাধিক অপারেটর থাকবে। ফলে কার্গো আমদানি-রপ্তানি পরিবহনে টার্মিনাল হ্যান্ডলিং, কার্গো হ্যান্ডলিং, স্ক্যানিং চার্জসহ অন্যান্য ফি নির্ধারণের ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতামূলক বাজারব্যবস্থা সৃষ্টি হবে। একই সঙ্গে সেবার মানও বাড়বে।

তথ্যমতে, বর্তমানে আকাশপথে প্রতি কেজি পণ্য রপ্তানিতে প্রায় ২৬ টাকা সার্ভিস চার্জ নেয় বিমান বাংলাদেশ ও সিভিল এভিয়েশন। একই সেবা পেতে ব্যাংককে প্রতি কেজিতে ৬.৪২ টাকা, কলকাতায় ৪.৮৮ টাকা এবং দিল্লিতে ৬.১০ টাকা দিতে হয়। এতে করে আকাশপথে পণ্য পরিবহন খরচ কয়েক গুণ বেড়ে যাচ্ছে।

ব্যবসায়ীরা মনে করেন, দেশে এয়ার কার্গো অপারেশনে অফডক পদ্ধতি চালু হলে অধিকতর কার্গো নিরাপত্তার সঙ্গে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত হবে। ইলেকট্রনিক কার্গো ট্র্যাকিং সিস্টেম (ইসিটিএস) চালু হবে। ফলে সহজে কার্গোর অবস্থান জানা যাবে। দ্রুত পণ্য খালাসে সুবিধা পাবে এবং জট কমবে। ওষুধের কাঁচামাল, জরুরি গার্মেন্টস পণ্যের নমুনাসহ আনুষঙ্গিক পণ্য সহজে পরিবহন করা যাবে। এতে দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য ত্বরান্বিত হবে।

ই-কমার্স ব্যবসায়ীরা এর সুফল ভোগ করতে পারবেন। বিশ্বের অনেক দেশে অফডক ব্যবস্থা চালু আছে। যেমন সিঙ্গাপুর, দুবাই, নেদারল্যান্ডস, জার্মানি, জাপান, ভারত, হংকং, ইউএসএ। সেখানে এই ব্যবস্থার ফলে কার্গো পরিবহনে সময়ের সাশ্রয় ও পণ্য খালাসে জটিলতা নেই বললেই চলে।

ব্যবসায়ীরা জানান, চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে দীর্ঘদিন ধরে অফডক ব্যবস্থা চালু আছে এবং তা সফলভাবে পরিচালিত হচ্ছে। একই ধরনের ব্যবস্থা ঢাকার বিমানবন্দর ও আশপাশের এলাকায় চালু করা গেলে আকাশপথে পণ্য পরিবহন আরও সহজ হবে।

এদিকে এয়ার কার্গো অপারেটরস স্টেশন (এসিওএস) নীতিমালা চূড়ান্ত ও বাস্তবায়ন চেয়ে ২৩ ডিসেম্বর প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে চিঠি দিয়েছে তৈরি পোশাক খাতের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ। সংগঠনটি বলছে, ঢাকা বিমানবন্দর এবং এর আশপাশে অফডক সুবিধা চালু হলে আমদানি প্রক্রিয়া সহজ হবে এবং রপ্তানির গতি বাড়বে। তবে অফডকের জন্য লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে কম খরচে ভালো সেবা নিশ্চিত করতে স্পষ্ট শর্ত থাকা প্রয়োজন।

বিজিএমইএ আরও জানিয়েছে, বর্তমানে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস বিমানবন্দরের কার্গো হ্যান্ডলিং এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে। তাই অফডক ব্যবস্থায় বিমানের সঙ্গে সমন্বয় ও চুক্তির বিষয়টি নীতিমালায় স্পষ্ট থাকা জরুরি।

জানতে চাইলে বিজিএমইএর পরিচালক ফয়সাল সামাদ বলেন, অফডক চালু হলে ডিএইচএল বা ফেডেক্সের মতো কুরিয়ার কোম্পানিগুলো বন্ড লাইসেন্স নিয়ে এয়ারপোর্টে ল্যান্ড করার পরে ক্লিয়ারেন্স নিয়ে সরাসরি ডেলিভারি করতে পারবে। তখন আর বিমানের ওপর নির্ভর করতে হবে না। ফলে সময় ও অর্থ সাশ্রয় হবে।

১০ ডিসেম্বর প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে ‘এয়ার এক্সপ্রেস সার্ভিস ডেলিভারি’ বিষয়ক একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ—বিডা, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, কাস্টমস এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনসহ আমদানি-রপ্তানির সঙ্গে জড়িত দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, ইতিমধ্যে এয়ার কার্গো কার্যক্রমকে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর আওতায় আনতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের (আইআরডি) কাস্টমস ও মূল্য সংযোজন কর বিভাগ থেকে ‘এয়ার কার্গো অপারেটরস স্টেশন (এসিওএস) স্থাপন, ব্যবস্থাপনা, পরিচালনা, তদারকি ও কাস্টমস নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা, ২০২৫ ’-এর খসড়াও প্রণয়ন করা হয়েছে।

এয়ার কার্গো অপারেটর’স স্টেশন নীতিমালা চূড়ান্ত ও বাস্তবায়নের বিষয়ে জানতে চাইলে আইআরডি সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেন, ‘অংশীজনদের মতামতের ভিত্তিতে যত দ্রুত সম্ভব বিধিমালা চূড়ান্ত করে তা বাস্তবায়ন করতে চাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আইএফআইসি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের জন্য মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসি তাদের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের জন্য অ্যান্টি মানি লন্ডারিং (এএমএল) ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ (সিএফটি) সংক্রান্ত এক সচেতনতামূলক কর্মশালার আয়োজন করেছে। গত ২১ ডিসেম্বর ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে এই কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়।

ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. মেহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে পরিচালনা পর্ষদের সকল সদস্য এই কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন।

এএমএল ও সিএফটি কমপ্লায়েন্স নিশ্চিতকরণে পরিচালনা পর্ষদের ভূমিকা এবং প্রাসঙ্গিক নিয়ন্ত্রক নির্দেশনা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিই ছিল এই আয়োজনের মূল লক্ষ্য। কর্মশালায় আলোচিত প্রধান বিষয় ছিল—ব্যাংকিং খাতে সুশাসন নিশ্চিত করতে এবং মানি লন্ডারিং তদারকিতে পরিচালনা পর্ষদের সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) কর্তৃক বিভিন্ন সময় সিস্টেম চেক পরিদর্শন থেকে প্রাপ্ত পর্যবেক্ষণসমূহ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা। দেশের সাম্প্রতিক মানি লন্ডারিং পরিস্থিতি এবং রিপোর্টিং সংস্থা হিসেবে ব্যাংকের করণীয়।

কর্মশালায় রিসোর্স পারসন হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএফআইইউর অতিরিক্ত পরিচালক রেজওয়ানুর রহমান ও যুগ্ম পরিচালক জুয়াইরিয়া হক।

এ ছাড়া ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য মো. এবতাদুল ইসলাম, কাজী মো. মাহবুব কাশেম এফসিএ, মো. গোলাম মোস্তফা ও মুহাম্মদ মনজুরুল হক উপস্থিত ছিলেন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মনসুর মোস্তফা, উপব্যবস্থাপনা পরিচালকেরা ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও এই সচেতনতামূলক সেশনে অংশ নেন।

আইএফআইসি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানায়, ব্যাংকিং কার্যক্রমে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে এ ধরনের কর্মশালা নিয়মিত আয়োজন করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিএসআরএম স্টিলসের ২৩তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ০৩
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দেশের শীর্ষস্থানীয় ইস্পাত উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বিএসআরএম স্টিলস লিমিটেডের ২৩তম বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্দেশিকা অনুযায়ী ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় শেয়ারহোল্ডাররা ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ঘোষিত ৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ (ক্যাশ ডিভিডেন্ড) সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদন করেছেন। কোম্পানির চেয়ারম্যান আলী হোসেন আকবরআলী এফসিএ সভায় সভাপতিত্ব করেন।

সভায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের নিরীক্ষিত হিসাব বিবরণী এবং পরিচালকমণ্ডলীর প্রতিবেদন অনুমোদিত হয়। শেয়ারহোল্ডাররা ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য কোম্পানির পরিচালক পুনর্নিয়োগ এবং নিরীক্ষক নিয়োগের প্রস্তাব অনুমোদন করেন।

কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমীর আলীহোসেন পরিচালকমণ্ডলীর বিবরণী উপস্থাপন করেন এবং কোম্পানির ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে শেয়ারহোল্ডারদের অবহিত করেন।

বিপুলসংখ্যক শেয়ারহোল্ডার নিজ নিজ বিও (BO) আইডি ব্যবহার করে ওয়েব লিংকের মাধ্যমে এই ভার্চুয়াল সভায় সরাসরি অংশ নেন। নিরীক্ষিত হিসাব বিবরণীসহ বিভিন্ন বিষয়ে শেয়ারহোল্ডারদের প্রশ্নের উত্তর দেন কোম্পানি সচিব।

শেয়ারহোল্ডাররা তাঁদের মন্তব্যে কোম্পানির বর্তমান ব্যবস্থাপনা ও পরিচালকমণ্ডলীর প্রতি গভীর আস্থা ও নির্ভরতার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।

সভায় কোম্পানির পরিচালকবৃন্দ, কোম্পানি সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে কোম্পানির ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখার অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত