Ajker Patrika

ডলারের উত্তাপ কমছে 

আপডেট : ১৯ মে ২০২২, ২১: ০৯
ডলারের উত্তাপ কমছে 

দ্রুত উত্তাপ ছড়ানো ডলারের দাম খোলাবাজারে কমতে শুরু করেছে। আজ বুধবার মানি এক্সচেঞ্জগুলোতে খুচরা ডলার ৯৭ টাকা থেকে ৯৮ টাকায় বিক্রি হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। যা দুই দিন আগেও ১০২ থেকে ১০৪ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। 

বিলাসী পণ্যসহ আমদানিতে সরকারের কড়াকড়ি, সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা এবং বৈদেশিক মুদ্রার সংশ্লেষ আছে কম দরকারি এমন প্রকল্প আপাতত স্থগিতে সরকারের নেওয়া নানান পদক্ষেপের ফলেই ডলারের বাজার আপাত কিছুটা সহনীয় হচ্ছে বলে মনে করছেন খাত সংশ্লিষ্টরা। অর্থ মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের কয়েকটি নির্দেশনার ফলে ক্রমেই ডলারের চাহিদা কমছে বলে তারা জানান। 

জানা যায়, খোলা বাজারে তিন দিনের ব্যবধানে ডলারের দাম কমেছে ৪ থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত কমেছে। তবে ব্যাংকগুলো যেহেতু বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত দাম অনুসরণ করে, তাই ব্যাংকে এখনো দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বুধবার রাজধানীর ব্যাংকপাড়া বলে পরিচিত মতিঝিলের বিভিন্ন স্থানে মানি এক্সচেঞ্জের কর্মকর্তাদের কাছে খোঁজ নিয়ে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। 

গত সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের দাম বেঁধে দিয়েছিল ৮৭ টাকা ৫০ পয়সা। কিন্তু বেঁধে দেওয়া এ দাম বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো মানছে না। এখন ব্যাংকে এলসি করতে গেলে ডলারের বিপরীতে নেওয়া হচ্ছে ৯২ থেকে ৯৩ টাকা। আবার কোনো কোনো ব্যাংক এর চেয়ে বেশি টাকা নিচ্ছে বলেও শোনা যাচ্ছে। 

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ মানি চেঞ্জারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি একেএম ইসমাইল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ডলারের চাহিদা বৃদ্ধির কারণে গত কয়েক দিনের ডলার ১০৩ টাকা পর্যন্ত বিক্রয় হয়েছে। কিন্তু বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে ডলারের দাম কমতে শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ১ ডলার ৯৭ থেকে ৯৮ টাকায় বিক্রি হয়। এভাবে ডলারের দাম কমাতে থাকায় আমরা অনেকে লোকসানের মুখে পড়েছি। কারণ দাম বাড়ার প্রবণতায় আমরা ৯৯ টাকায় পর্যন্ত ডলার কিনেছি। সেটা এখন কমদামে বিক্রি করতে হচ্ছে। ডলারের দাম ওঠা-নামার প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করে তা নিরসনে সরকারের বিশেষ নজরদারি করা দরকার।’ 

রাজধানীর পল্টনে অবস্থিত ইসমাইল মানি এক্সচেঞ্জারের স্বত্বাধিকারী মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ডলারের দাম কয়েক দিন ধরে ঊর্ধ্বমুখী থাকায় আমরা ভালো মুনাফা করেছি। কিন্তু বুধবার সন্ধ্যা থেকে ডলারের দাম কমে যায়। বৃহস্পতিবার বিকেলে আমরা ৯৭ টাকায় ডলার কিনে তা ৯৯ টাকায় বিক্রয় করেছি। সামনের দিনে আরও দাম কমতে পারে বলে শুনেছি।’ 

খোলাবাজারে ডলারের দামের বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ডলার নিয়ে অস্থিরতা আছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিষয়টি গভীর ভাবে পর্যবেক্ষণ রেখেছে। চাহিদা ও মজুতে বিষয় মাথায় রেখে সম্প্রতি ৫ বার ডলারের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। আর খোলা বাজারে যে পরিমাণ ডলার ক্রয়-বিক্রয় হয় তার পরিমাণ খুব একটা বেশি নয়। তবে ব্যাংকগুলোর ক্রয়-বিক্রয়ের প্রতি আমাদের নজর রয়েছে। এ জন্য ব্যাংক রেট কিছুটা বেশি হলেও খোলাবাজারের মতো খুব চড়া নয়।’ 

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, সম্প্রতি বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে দেশে আমদানি বিল বাবদ বেশি হারে ডলার খরচ হচ্ছে। এতে ডলারের রিজার্ভে চাপ পড়েছে। একসময় ৪৮ বিলিয়নে পৌঁছানো রিজার্ভ নেমে ৪৪ বিলিয়নে এসে ঠেকেছে। এখন আর দফায় দফায় ডলারের রেকর্ড হতে দেখা যাচ্ছে না। যেহেতু মেগা প্রকল্পের বৈদেশিক কেনাকাটা, অপরিহার্য নিত্যপণ্য, শিল্পের কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি আমদানি করতেই হবে এবং এসব আমদানির বিপরীতে ডলারে বিল পরিশোধ করতে হবে। তাই সামনে যাতে ডলারের সংকট প্রকট না হয়, সে জন্য সরকার এরই মধ্যে সতর্ক হয়ে ডলারের ব্যবহার কমানোর পদক্ষেপ নিয়েছে। যে কারণে দ্রুত চড়তে থাকা ডলারের দাম গত কয়েক দিন ধরে আবার কমছে। সামনে আরও সহনীয় হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাকা দিয়ে নারীর চাবুকের ঘা খাচ্ছিলেন পুরুষ, দুজন গ্রেপ্তার

মানবিক করিডর না ভূরাজনৈতিক কৌশল? সীমান্তে যুক্তরাষ্ট্রের তৎপরতায় উদ্বেগ

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

নির্দেশনা মানেননি পাইলট, মদিনা–ঢাকা ফ্লাইটকে নামতে হলো সিলেটে

ভারত–বাংলাদেশ বাণিজ্য বিধিনিষেধের মূল্য গুনছেন ব্যবসায়ীরা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত