Ajker Patrika

লন্ডনে বসে সিলেটে হাজিরা দেন দুদকের মামলার আসামি

ইয়াহ্ইয়া মারুফ, সিলেট
আপডেট : ১০ জুলাই ২০২৪, ১৫: ০৯
লন্ডনে বসে সিলেটে হাজিরা দেন দুদকের মামলার আসামি

জাল-জালিয়াতির একটি মামলার আসামি যুক্তরাজ্যপ্রবাসী মো. রফিক মিয়া (৬৯)। জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে গত বছরের ১৬ আগস্ট তাঁকে কারাগারে পাঠান সিলেটের একটি আদালত। ২১ দিন পর ৫ সেপ্টেম্বর তিনি জামিন পান। 

কিন্তু জামিনে মুক্তির পর বাদীপক্ষের অভিযোগ, ওই ব্যক্তি আসল রফিক মিয়া নন। অর্থাৎ ‘আয়নাবাজি’ করেছেন রফিক মিয়া। ইমিগ্রেশন বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই মামলায় আদালতে যাঁর যুক্তরাজ্যের পাসপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে, তিনি ১৬ আগস্টের আগে বিমানবন্দর দিয়ে দেশে আসেননি। অনুসন্ধানে জানা গেছে, রফিক মিয়ার পরিবর্তে আদালতে ও কারাগারে যাওয়া ব্যক্তি মো. আমিন উদ্দিন (৫৭) পেশায় ট্রাকচালক। কারাগারে থাকা ছবিটিও তাঁর। বিষয়টি তিনি স্বীকারও করেছেন। তবে রফিক মিয়ার আইনজীবীর দাবি, ওই ব্যক্তি রফিক মিয়া।

সিলেট নগরের কাজীটুলায় একটি গোয়েন্দা সংস্থার কার্যালয়ের জন্য অধিগ্রহণ করা জমির কাগজপত্র জাল-জালিয়াতি করে ১১ কোটি ৭৯ লাখ ২ হাজার ১৬৯ টাকা তুলে আত্মসাতের চেষ্টার অভিযোগে করা মামলার ২ নম্বর আসামি রফিক মিয়ার ক্ষেত্রে আসল-নকলের এই প্রশ্ন উঠেছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) করা এই মামলায় মোট আসামি আটজন। 

রফিক মিয়া সিলেটের ওসমানী নগরের দশহাল গ্রামের মৃত আব্দুর রশিদের ছেলে। আদালত ও অন্যান্য সূত্রে জানা গেছে, ওই মামলার আসামি যুক্তরাজ্যপ্রবাসী রফিক মিয়া গত বছরের ১৬ আগস্ট সিলেট বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন চান। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠান। পরে তৃতীয় দফায় ৫ সেপ্টেম্বর জামিন মঞ্জুর হলে তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পান। তাঁর আইনজীবী ছিলেন মো. হুমায়ুন কবির (আইডি নং-১৬৬২)। জামিনদার হন আইনজীবীর সহকারী মো. জাকারিয়া।

দুর্নীতি দমন কমিশন সম্পর্কিত সকল খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন

এদিকে ৯ সেপ্টেম্বর মামলার ধার্য তারিখে বাদীপক্ষের আইনজীবী শহীদুজ্জামান চৌধুরী আদালতে এক আবেদনে বলেন, জামিন পাওয়া ব্যক্তি এই মামলার আসামি রফিক মিয়া নন। ২৯ আগস্ট আদালতে কথিত রফিক মিয়ার সঙ্গে দেখা হওয়া ৭ নম্বর আসামি শেখ আজাদ বিষয়টি ভালো বলতে পারবেন। আইনজীবী রফিকের ২০ বছরের পাসপোর্টের মূল কপি ও কারাগারে সংগৃহীত ছবি তলব করে আসামি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার আবেদন জানান। সেদিন রফিক ও তাঁর আইনজীবী আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। আদালত আবেদন আমলে নিয়ে ৩১ অক্টোবর সর্বশেষ পাসপোর্টসহ আসামিকে আদালতে হাজির করতে তাঁর আইনজীবী ও জামিনদারকে নির্দেশ দেন। 

৩১ অক্টোবর আইনজীবী হুমায়ুন কবির আদালতে জানান, রফিক অসুস্থ থাকায় আগের তারিখে হাজির হতে পারেননি। তিনি সুচিকিৎসার জন্য ১৩ সেপ্টেম্বর লন্ডন গেছেন। সুস্থ হলে দেশে ফিরে আদালতে হাজির হবেন। জামিনদারও ওই দিন আদালতে লিখিত ব্যাখ্যা দেন। অনুমতি ছাড়া বিদেশ যাওয়ায় আদালত রফিকের জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। তাঁর হাজতি পরোয়ানার কপি ৭ জানুয়ারির মধ্যে আদালতে পাঠাতে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপারকে নির্দেশ দেন আদালত। ওই তারিখে অভিযোগ গঠন করা হয়। ১৬ মে রফিকের বিষয়ে আদেশের দিন ধার্য থাকলেও বাদীপক্ষের সাক্ষী না আসায় ১১ জুলাই (আগামীকাল) পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন আদালত।

অভিযোগের বিষয়ে খোঁজ নিতে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে যোগাযোগ করে ‘রফিক মিয়ার’ ছবি এবং আদালতে দাখিল করা পাসপোর্টের ব্যক্তির ছবি সংগ্রহ করে শনাক্তের জন্য এই প্রতিবেদক যান ওসমানী নগরের দশহাল গ্রামে রফিকের বাড়িতে। সেখানে রফিকের বড় ভাই হারিছ মিয়াকে কারাগারে যাওয়া ব্যক্তির ছবি দেখানো হলে তিনি বলেন, ওই ব্যক্তি তাঁর ভাই রফিক নন। তবে পাসপোর্টের ব্যক্তির ছবি দেখানো হলে তাঁকে রফিক বলে শনাক্ত করেন। তিনি বলেন, রফিক দীর্ঘদিন দেশে আসেননি। তাঁর ছবিও নেই। তিনি বিষয়টি নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি না করার অনুরোধ করেন। তাঁর (হারিছ) ছেলে রুয়েদ ওরফে রুনু মিয়াও লন্ডনে থাকেন।

ওই মামলার ৭ নম্বর আসামি রফিকের চাচাশ্বশুর বিশ্বনাথের রশিদপুরের (ধর্মদা) শেখ আজাদকে কারাগারে যাওয়া ব্যক্তির ছবি দেখিয়ে তিনি রফিক কি না জানতে চাইলে তিনি সরাসরি জবাব দেননি। বলেন, আদালতে ওই ব্যক্তির চোখে কালো চশমা, মুখে বড় মাস্ক ছিল। তাই কে ছিল, বলতে পারবেন না। 

তাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অরুনোদয় পাল ঝলক বলেন, রফিকের পরিবর্তে অন্যজন কারাগারে গেছেন বলে শুনেছেন। 
যোগাযোগ করা হলে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মো. সাখাওয়াত হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, বন্দী রফিক মিয়া আদালত থেকে কারাগারে আসার পর নিবন্ধন করে ছবি তোলা হয়। অনেক সময় সার্ভারের জটিলতা বা জ্যামের কারণে শতভাগ জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দেখা যায় না। সে ক্ষেত্রে বন্দীর মৌখিক দেওয়া তথ্য ইনপুট করা হয়।

কারা কর্তৃপক্ষের দাবি, বন্দীর যথার্থতা নির্ধারণের দায়িত্ব প্রাথমিকভাবে পুলিশের ও পরে আদালতের। সরবরাহ করা তথ্য ও ছবির বন্দীই রফিক মিয়া হিসেবে হাজতের পরোয়ানামূলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে এসেছেন।

কারাগারে থাকা ছবির ব্যক্তির খোঁজ পাওয়া যায় জেলার বিয়ানীবাজার উপজেলার শেওলা ইউনিয়নের দিগলবাক (দিগলবাদ) গ্রামে। শেওলা ইউপির চেয়ারম্যান মো. জহুর উদ্দিন ও সদস্য মাহমুদুল হাসান এরশাদকে ওই ছবি দেখানো হলে তাঁরা জানান, ছবিটি ট্রাকচালক আমিন উদ্দিনের। তিনি মো. মঈন উদ্দিনের ছেলে। এরশাদ এই প্রতিবেদককে নিয়ে যান আমিন উদ্দিনের বাড়িতে। বাড়ির লোক ছবিটি রাহেলা বেগমের স্বামী ও আমিনা বেগমের বাবা আমিন উদ্দিনের। এরশাদের সহযোগিতায় মোবাইলে যোগাযোগ করলে আমিন উদ্দিন ২১ দিন কারাগারে থাকার বিষয়টি স্বীকার করে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রফিকের ভাতিজা রুনুর ট্রিপ দিতাম। ঘটনার দিন কোর্টের সামনে তিনি বলেন, তাঁর একজন আসামি আসেননি। বদলা হাজিরা দিতে হবে। আমি রাজি হই। কিন্তু কোর্ট আমাকে কারাগারে পাঠান।

রুনু পরিবারকে ১০-১৫ হাজার টাকা দেন। আমাকে কারাগার থেকে বের করেন। কারাগারে ঢোকার সময় নিজের নাম আমিন উদ্দিন বললেও তারা বলে, আমি রফিক মিয়া।’ 

রফিক মিয়া ও তাঁর ভাতিজা রুনু মিয়া যুক্তরাজ্যে থাকায় এ বিষয়ে তাঁদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। রফিকের ভাই হারিছ মিয়াও যোগাযোগ করিয়ে দিতে পারেননি।

জানতে চাইলে রফিকের জামিনদার মো. জাকারিয়া আজকের পত্রিকা’কে বলেন, ‘জামিন হলে স্যার (আইনজীবী হুমায়ুন) আসামির ভাতিজা রুনু ভাইকে ফোন দিতে বলেছিলেন। ফোন করে জামিনদার নিয়ে আসতে বললেও তিনি আসতে পারছেন না জানিয়ে আমাকে জামিনদার হতে অনুরোধ করেন। রুনু ও আসামিকে চিনতাম না।’ 

তবে আইনজীবী মো. হুমায়ুন কবির বলেন, কারাগারে যাওয়া ব্যক্তিই প্রকৃত রফিক মিয়া। কারাগার থেকেও আদালতে এমন প্রতিবেদন এসেছে। তিনি বলেন, ‘আসামিকে আইনজীবীর চেনার কথা নয়। যাঁরা হাজির করেন, তাঁরা চেনেন। জামিনদার বলতে পারবেন। জামিনদার আমার সঙ্গে কাজ করেন না।’ 

সিলেটের বিশিষ্ট আইনজীবী এমাদুল্লাহ শহিদুল ইসলাম শাহিন বলেন, যদি কোনো ব্যক্তিকে আদালতে কোনো আইনজীবী শনাক্ত করেন, তার দায়দায়িত্ব ওই আইনজীবীর। তবে সেই ব্যক্তির পরিচয় নিয়ে যখন প্রশ্ন উঠবে, তখন অনুসন্ধানের মাধ্যমে পরিচয় উদ্‌ঘাটনের দায়দায়িত্ব আদালতের।

আরও খবর পড়ুন:  

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সিএইচসিপি কারাগারে: ৫ দিন ধরে কমিউনিটি ক্লিনিক তালাবদ্ধ, স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত এলাকাবাসী

২০২৬ বিশ্বকাপের ভেন্যুর তালিকা চূড়ান্ত করল আইসিসি, পাকিস্তান খেলবে কোথায়

পোড়া কার্গো ভিলেজ থেকে মোবাইল ফোন চুরি, আনসার সদস্য বরখাস্ত

সবচেয়ে বেশি বেতন-ভাতা পাওয়া সিইও এখন মাস্ক, পরিমাণ ১ ট্রিলিয়ন ডলার

সুদান যুদ্ধে আমিরাতের বিপরীতে মিসর-তুরস্কের বিরল ঐক্য, ঢুকছে অস্ত্র ও ড্রোনচালক

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চট্টগ্রামে বিএনপি প্রার্থীর গণসংযোগে গুলিতে বাবলা নিহতের ঘটনায় দুজন গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ১৫: ৩২
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামী এলাকায় বিএনপি প্রার্থীর গণসংযোগ চলাকালে সরোয়ার হোসেন বাবলা গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহতের ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। গ্রেপ্তার দুজন হলেন মো. আলাউদ্দীন ও মো. হেলাল। শুক্রবার (৭ নভেম্বর) সকালে নগরের চান্দগাঁও ক্যাম্পে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান র‍্যাব-৭ চট্টগ্রামের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাফিজুর রহমান।

এর আগে নিহত সরোয়ার হোসেন বাবলার বাবা আব্দুল কাদের বাদী হয়ে শুক্রবার সকালে বায়েজিদ বোস্তামী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

বোস্তামী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন জানান, মামলায় সাতজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১৫-১৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার দুজনই এই মামলার এজাহারনামীয় আসামি।

গত বুধবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানার চালিতাতলী খোন্দকীয়া পাড়ায় চট্টগ্রাম-৮ আসনে ঘোষিত বিএনপি প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর নির্বাচনী প্রচারণার সময় এলোপাতাড়ি গুলিতে সরোয়ার হোসেন বাবলা নিহত হন। নিহত সরোয়ার হোসেন বাবলা ছিলেন পুলিশের তালিকাভুক্ত ‘সন্ত্রাসী’।

এই হামলায় প্রার্থী এরশাদ উল্লাহসহ আরও চারজন আহত হন।

র‍্যাবের সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, একই এলাকায় মো. ইদ্রিস নামের এক রিকশাচালক গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় পৃথক অভিযানে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সিএইচসিপি কারাগারে: ৫ দিন ধরে কমিউনিটি ক্লিনিক তালাবদ্ধ, স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত এলাকাবাসী

২০২৬ বিশ্বকাপের ভেন্যুর তালিকা চূড়ান্ত করল আইসিসি, পাকিস্তান খেলবে কোথায়

পোড়া কার্গো ভিলেজ থেকে মোবাইল ফোন চুরি, আনসার সদস্য বরখাস্ত

সবচেয়ে বেশি বেতন-ভাতা পাওয়া সিইও এখন মাস্ক, পরিমাণ ১ ট্রিলিয়ন ডলার

সুদান যুদ্ধে আমিরাতের বিপরীতে মিসর-তুরস্কের বিরল ঐক্য, ঢুকছে অস্ত্র ও ড্রোনচালক

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পরকীয়ার জেরে চিতলমারীতে যুবকের পুরুষাঙ্গ কর্তন, স্ত্রী পলাতক

চিতলমারী (বাগেরহাট) প্রতিনিধি 
আপডেট : ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ১৫: ৪৮
পরকীয়ার জেরে চিতলমারীতে যুবকের পুরুষাঙ্গ কর্তন, স্ত্রী পলাতক

বাগেরহাটের চিতলমারীতে পরকীয়ার জেরে লিটন শেখ ওরফে লিটু (৩৭) নামের এক যুবকের পুরুষাঙ্গ কর্তনের অভিযোগ উঠেছে তাঁর স্ত্রী হাসনা বেগমের বিরুদ্ধে। শুক্রবার (৭ নভেম্বর) ভোরে উপজেলার মহিলা কলেজ রোডের একটি ভাড়া বাসায় এই ঘটনা ঘটে। আহত লিটন বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার ঝালডাঙ্গা গ্রামের মো. নজরুল শেখের ছেলে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, পেশায় আইসক্রিম বিক্রেতা লিটন শেখ স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে মহিলা কলেজ রোডের ওই বাড়িতে বসবাস করতেন। ঘটনার পর থেকে গৃহবধূ হাসনা বেগম পলাতক রয়েছেন।

প্রতিবেশী ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যে জানা গেছে, লিটন শেখ অন্য এক মহিলার সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। স্ত্রী হাসনা বেগম এই পরকীয়া সহ্য করতে না পেরে ধারালো ব্লেড দিয়ে ঘুমন্ত স্বামীর পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলেন। ঘটনার পর হাসনা বেগম তাঁর দুই সন্তান ও ঘরের মূল্যবান মালপত্র নিয়ে পালিয়ে যান। পরে আশপাশের লোকজন গুরুতর আহত অবস্থায় লিটনকে উদ্ধার করে চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।

চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা মো. মুক্তি বিশ্বাস জানান, গুরুতর আহত অবস্থায় লিটন শেখকে ভর্তি করা হয়েছিল। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সিএইচসিপি কারাগারে: ৫ দিন ধরে কমিউনিটি ক্লিনিক তালাবদ্ধ, স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত এলাকাবাসী

২০২৬ বিশ্বকাপের ভেন্যুর তালিকা চূড়ান্ত করল আইসিসি, পাকিস্তান খেলবে কোথায়

পোড়া কার্গো ভিলেজ থেকে মোবাইল ফোন চুরি, আনসার সদস্য বরখাস্ত

সবচেয়ে বেশি বেতন-ভাতা পাওয়া সিইও এখন মাস্ক, পরিমাণ ১ ট্রিলিয়ন ডলার

সুদান যুদ্ধে আমিরাতের বিপরীতে মিসর-তুরস্কের বিরল ঐক্য, ঢুকছে অস্ত্র ও ড্রোনচালক

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নাশকতার প্রস্তুতির অভিযোগ: আগ্নেয়াস্ত্রসহ আওয়ামী লীগের ৩১ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার

সাভার(ঢাকা) প্রতিনিধি
আগ্নেয়াস্ত্রসহ গ্রেপ্তার রাব্বী সরদার। ছবি: আজকের পত্রিকা
আগ্নেয়াস্ত্রসহ গ্রেপ্তার রাব্বী সরদার। ছবি: আজকের পত্রিকা

নাশকতামূলক কার্যকলাপ এবং অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির প্রস্তুতির অভিযোগে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের ৩১ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা জেলা পুলিশ। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদ, নারায়ণগঞ্জ সদর থানা কমিটির সহসম্পাদক মো. রাব্বী সরদারের (২৫) কাছ থেকে একটি সচল রিভলবার উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার (৭ নভেম্বর) সকালে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আনিসুজ্জামান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গতকাল সন্ধ্যা থেকে রাত ১টা পর্যন্ত এই অভিযান চলে। ঢাকা জেলার সকল থানা, অর্থাৎ সাভার, আশুলিয়া, ধামরাই, কেরানীগঞ্জ মডেল, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, নবাবগঞ্জ ও দোহার থানায় এই অভিযান চালানো হয়।

পুলিশের বিশেষ অভিযানে সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর গ্রেপ্তারটি হলো মো. রাব্বী সরদার (২৫)। গতকাল দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাধীন উত্তর পানগাঁও এলাকার দোকানবাড়ি মোড় থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তল্লাশির পর তাঁর হেফাজত থেকে একটি দেশীয় তৈরি রিভলবার (সচল) জব্দ করে পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তার রাব্বী সরদার কয়েক মাস ধরে ঢাকা মেট্রোপলিটনের (ডিএমপি) বিভিন্ন থানা এলাকার মিছিলের অগ্রভাগে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছিলেন। তিনি বিভিন্ন সময়ে শেখ হাসিনার পক্ষে ডিএমপিসহ বিভিন্ন জেলায় পোস্টার লাগানোর নেতৃত্ব দেন। পুলিশের তদন্তে আরও উঠে এসেছে, তাঁর মোবাইল ফোনে দেশ এবং বিদেশে অবস্থানরত ফ্যাসিস্টদের সঙ্গে যোগাযোগের তথ্য পাওয়া গেছে।

অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া ৩১ জনের মধ্যে বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ এবং আওয়ামী লীগের সক্রিয় সদস্য ও বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে সাভার থানায় চারজন, আশুলিয়া থানায় তিনজন, ধামরাই থানায় একজন, কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় ছয়জন, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় আটজন, নবাবগঞ্জ থানায় সাতজন ও দোহার থানায় দুজন।

তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন সাভার উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি তানজিরুল রহমান, বিরুলিয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন, ধামসোনা ইউনিয়ন যুবলীগের তথ্য সম্পাদক মো. ওবায়দুল ভূঁইয়া, ঢাকা জেলা উত্তর ছাত্রলীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক উপসম্পাদক মো. পারভেজ কবীর ওরফে শাকিব, কেরানীগঞ্জ মডেল থানা শ্রমিক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. আবু তাহের মন্টু, কালিন্দী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সালাম, রুহিতপুর ১ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মো. সালমান, শুভাঢ্যা ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি মো. আমিনুল ইসলাম জুয়েল, নবাবগঞ্জ থানাধীন চূড়াইন ইউনিয়নের স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক শাফায়েত হোসেন শিপু, নবাবগঞ্জ থানাধীন কৈলাইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আছিফ চাকলাদার, ঢাকা জেলা তাঁতী লীগের সভাপতি রমজান আলী, দোহার থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আজাদ হোসেন খান।

ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আনিসুজ্জামান জানান, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা সবাই সক্রিয় কর্মী, মিছিল ও মিটিংয়ে অংশগ্রহণকারী। যেকোনো ধরনের নাশকতামূলক কার্যকলাপ কঠোরভাবে দমন করা হবে এবং এই চক্রের সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সিএইচসিপি কারাগারে: ৫ দিন ধরে কমিউনিটি ক্লিনিক তালাবদ্ধ, স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত এলাকাবাসী

২০২৬ বিশ্বকাপের ভেন্যুর তালিকা চূড়ান্ত করল আইসিসি, পাকিস্তান খেলবে কোথায়

পোড়া কার্গো ভিলেজ থেকে মোবাইল ফোন চুরি, আনসার সদস্য বরখাস্ত

সবচেয়ে বেশি বেতন-ভাতা পাওয়া সিইও এখন মাস্ক, পরিমাণ ১ ট্রিলিয়ন ডলার

সুদান যুদ্ধে আমিরাতের বিপরীতে মিসর-তুরস্কের বিরল ঐক্য, ঢুকছে অস্ত্র ও ড্রোনচালক

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বগুড়ায় স্ত্রী ও ছেলের লাঠির আঘাতে স্বামী নিহত

বগুড়া প্রতিনিধি
নিহত মিলন রহমান ওরফে টাইগার মিলন। ছবি: সংগৃহীত
নিহত মিলন রহমান ওরফে টাইগার মিলন। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ার কাহালুতে স্ত্রী ও ছেলের লাঠির আঘাতে স্বামী মিলন রহমান ওরফে টাইগার মিলন (৪৫) নিহত হয়েছেন। তিনি এক সপ্তাহ আগে কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত হয়েছেন। ঘটনার পরপরই পুলিশ স্ত্রী মেঘনা বেগম ও তাঁর ছেলে শামিমকে গ্রেপ্তার করেছে। বৃহস্পতিবার রাতে কাহালু উপজেলার পালপাড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

কাহালু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিতাই চন্দ্র সরকার এই তথ্য নিশ্চিত করে জানান, তিন বছর আগে মিলন ও মেঘনা বিয়ের মাধ্যমে উভয়েই তৃতীয়বারের মতো সংসার শুরু করেন। বিয়ের পর থেকেই নানা বিষয় নিয়ে তাঁদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ চলছিল। মিলন পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা, মাদকসহ প্রায় ১০টি মামলা রয়েছে। সম্প্রতি মারামারির এক মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে তিনি এক সপ্তাহ আগে জামিনে মুক্তি পান।

বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে মিলন ও মেঘনার মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। খবর পেয়ে মেঘনার প্রথম পক্ষের ছেলে শামিম সেখানে গিয়ে মা মেঘনার পক্ষ নিয়ে লাঠি দিয়ে মিলনের মাথায় একাধিক আঘাত করেন। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে উদ্ধার করে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়। ঘটনার পরপরই পুলিশ মেঘনা ও তাঁর ছেলে শামিমকে গ্রেপ্তার করে।

কাহালু থানার ওসি নিতাই চন্দ্র সরকার বলেন, এই ঘটনায় নিহত ব্যক্তির মা মর্জিনা বেগম বাদী হয়ে মেঘনা ও তাঁর ছেলে শামিমের নামে মামলা করেছেন। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদেরকে শুক্রবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সিএইচসিপি কারাগারে: ৫ দিন ধরে কমিউনিটি ক্লিনিক তালাবদ্ধ, স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত এলাকাবাসী

২০২৬ বিশ্বকাপের ভেন্যুর তালিকা চূড়ান্ত করল আইসিসি, পাকিস্তান খেলবে কোথায়

পোড়া কার্গো ভিলেজ থেকে মোবাইল ফোন চুরি, আনসার সদস্য বরখাস্ত

সবচেয়ে বেশি বেতন-ভাতা পাওয়া সিইও এখন মাস্ক, পরিমাণ ১ ট্রিলিয়ন ডলার

সুদান যুদ্ধে আমিরাতের বিপরীতে মিসর-তুরস্কের বিরল ঐক্য, ঢুকছে অস্ত্র ও ড্রোনচালক

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত