Ajker Patrika

ওপরের আর ওপারের পানিতে ডুবছে জনপদ

সিলেট ও সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ১৮ জুন ২০২২, ১১: ৩৭
ওপরের আর ওপারের পানিতে ডুবছে জনপদ

সিলেট বিভাগে বৃষ্টি হচ্ছে কয়েক দিন ধরে। তার চেয়েও বেশি বৃষ্টি হচ্ছে বাংলাদেশ ভূখণ্ডের মাথার ওপর ভারতীয় অংশে। রেকর্ড ভাঙা সেই বৃষ্টির পানি ঢল হয়ে বিপুল বেগে ঢুকছে দেশের মধ্যে। বৃষ্টির পানি আর ওপারের পাহাড়ি ঢল একাকার হয়ে ভাসিয়ে দিচ্ছে সিলেট-সুনামগঞ্জ। দেখা দিয়েছে ভয়াবহ বন্যা। এক মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বারের এ বন্যায় বিপর্যস্ত এই দুই জেলা। একই পানিতে উত্তরের তিস্তা-যমুনা অববাহিকার পাঁচ-সাতটি জেলায় এরই মধ্যে বন্যা শুরু হয়েছে।

সিলেট বিভাগের ৮০ শতাংশ এলাকা এখন পানির নিচে। এর মধ্যে সুনামগঞ্জের ৯০ শতাংশ এলাকা ডুবে গেছে। বাকি তিন জেলার শহরের কিছু উঁচু স্থান, পাহাড়ি এলাকা এবং ভবন ছাড়া সবখানে এখন পানি। আগামী দুই দিনে এই পানি আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। 
সিলেট-সুনামগঞ্জে এরই মধ্যে পানি-বন্দী হয়ে পড়েছে বেশির ভাগ এলাকা। বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে সড়ক যোগাযোগ। বিমানবন্দরে পানি ওঠায় সিলেটের সঙ্গে আকাশপথেও যোগাযোগবিচ্ছিন্ন। বিদ্যুৎকেন্দ্রে পানি ওঠায় বন্ধ হয়ে গেছে দুই জেলার একটি বড় অংশের বিদ্যুৎ সরবরাহ।

পরিস্থিতি মোকাবিলায় ও উদ্ধার তৎপরতায় সহায়তার জন্য সিলেট-সুনামগঞ্জে নামানো হয়েছে সেনা ও নৌবাহিনী। বন্যার কারণে সারা দেশে আগামীকাল রোববার শুরু হতে যাওয়া এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। 

 

চেরাপুঞ্জিতে রেকর্ড বৃষ্টি বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয় ভারতের মেঘালয় রাজ্যের চেরাপুঞ্জিতে। সেটা সিলেটের ঠিক মাথার ওপর। ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, বৃহস্পতি ও শুক্রবার ২৪ ঘণ্টায় চেরাপুঞ্জিতে ৯৭২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। জুন মাসে ১২২ বছরের মধ্যে এত বৃষ্টি সেখানে হয়নি। আর গত তিন দিনে সেখানে বৃষ্টি হয়েছে প্রায় আড়াই হাজার মিলিমিটার। এটাও রেকর্ড। ২৭ বছরের মধ্যে তিন দিনে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি এটা। এই পানির প্রায় পুরোটা নামবে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে।

ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর গতকাল আরও জানিয়েছে, চেরাপুঞ্জিতে আগামী ২৪ ঘণ্টায় আরও ৫৫০ মিলিমিটার বৃষ্টি হতে পারে। আর আসামের গুয়াহাটিতে এই সময়ে বৃষ্টি হতে পারে ৩০০ মিলিমিটার। এই পানিও নামবে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে। এ ছাড়া সিলেট, সুনামগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় আগামী দুই-তিন দিন বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর। সব মিলিয়ে দেশে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। 

মাথার ওপর বৃষ্টি পড়ছে। অন্যদিকে সীমান্তের ওপার থেকে আসছে পাহাড়ি ঢল। দেখতে দেখতে ডুবে যাচ্ছে রাস্তাঘাট, তলিয়ে যাচ্ছে জনপদ। মানুষ তাই সহায়-সম্বল নিয়ে ছুটছে আশ্রয়ের খোঁজে। গতকাল দুপুরে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার সালুটিকর এলাকায়

বিমানবন্দর তিন দিন বন্ধ ঘোষণা বন্যার পানি ইতিমধ্যে সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ের কাছাকাছি চলে এসেছে। এতে গতকাল দুপুরের পর থেকে বন্ধ হয়ে যায় ফ্লাইট ওঠানামা। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বিমানবন্দরের কার্যক্রম তিন দিন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

ওসমানী বিমানবন্দরের ম্যানেজার হাফিজ আহমদ গতকাল বিকেলে বলেন, ‘সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আমাদের ফ্লাইটগুলো অবতরণ ও উড্ডয়ন করেছে। তবে রানওয়ের কাছাকাছি বন্যার পানি চলে আসায় আর সেটা সম্ভব হচ্ছে না। তাই বিমানবন্দরের কার্যক্রম তিন দিন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।’ 

মাঠে নেমেছে সেনা ও নৌবাহিনী সিলেট জেলার সদর, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ এবং সুনামগঞ্জ জেলার সদর, দিরাই, ছাতক, দোয়ারাবাজার ও জামালগঞ্জে বন্যার্তদের সহযোগিতায় সেনাবাহিনী কাজ করছে। গতকাল সকাল ১০টা থেকে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট উপজেলায় ৪ প্লাটুন, সুনামগঞ্জে ৬ প্লাটুন সেনাসদস্য মোতায়েন করা হয়। এ ছাড়া যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় ৬ প্লাটুন সেনাবাহিনী প্রস্তুত রয়েছে। সিলেট সেনানিবাসের জিওসি মেজর জেনারেল হামিদুল হক গণমাধ্যমকে জানান, সেনাবাহিনী নিজস্ব নৌকা দিয়ে পানিবন্দি মানুষকে উদ্ধার করছে। ঢাকা ও কুমিল্লা থেকে আরও ‘রেসকিউ বোট’ আনা হচ্ছে। মূলত পাঁচটি কাজে তৎপরতা শুরু করেছেন সেনাসদস্যরা। এগুলো হচ্ছে পানিবন্দি মানুষকে উদ্ধার করা, বেসামরিক প্রশাসনের সহায়তায় আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে পানিবন্দি মানুষের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা, বন্যা আক্রান্তদের চিকিৎসা সহায়তা প্রদান, স্পর্শকাতর স্থাপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং সীমিত পরিসরে খাদ্যসামগ্রী ও বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা করা।

সিলেটের সব উপজেলাই বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে জানিয়ে জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অনেক এলাকায় বাহনের অভাবে পানিবন্দি লোকজন আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে পারছে না। তাদের উদ্ধারে সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনী মাঠে নেমেছে। তারা কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট উপজেলায় বন্যাদুর্গতদের উদ্ধারে কাজ করছে।’ 

স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে সিলেট
সিলেটে বুধবার থেকে সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। বৃহস্পতিবার তা ভয়াবহ রূপ নেয়। এদিন বিকেল থেকে দ্রুত বাড়তে শুরু করে পানি। এতে সিলেট নগরীর বেশির ভাগ এলাকাই তলিয়ে গেছে। বন্যায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে জেলার কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট উপজেলা। এই দুই উপজেলার প্রায় পুরোটাই পানিতে তলিয়ে গেছে। তলিয়ে গেছে এই দুই উপজেলার প্রায় সব সড়ক। সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কও পানির নিচে। কোম্পানীগঞ্জ-গোয়াইনঘাট ছাড়াও জেলার সদর, দক্ষিণ সুরমা, কানাইঘাট, জৈন্তাপুর, জকিগঞ্জ, বিশ্বনাথ উপজেলার বেশির ভাগ এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া সিলেট নগরীর অন্তত ৩০টি এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক উপচে পানি তীব্র বেগে প্রবাহিত হচ্ছে।

বন্যার কারণে ভয়াবহ দুর্ভোগে পড়েছে জেলার মানুষ। জেলা প্রশাসনের হিসাবে এরই মধ্যে প্রায় ১০ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানিতে উপকেন্দ্র ও সঞ্চালন লাইন তলিয়ে যাওয়ায় জেলার বেশির ভাগ এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। নগরীর অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। এ ছাড়া ইন্টারনেট ও মোবাইল নেটওয়ার্কও পাওয়া যাচ্ছে না অনেক এলাকায়।

সিলেটের দক্ষিণ সুরমার কুচাই এলাকার ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘দক্ষিণ সুরমা সাবস্টেশন পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার রাত থেকে আমাদের এলাকায়ও বিদ্যুৎ নেই। মোবাইল নেটওয়ার্ক এবং ইন্টারনেটও নেই। একে তো পানিবন্দি অবস্থায় আছি; তার ওপর সব ধরনের যোগাযোগ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ফলে দুর্ভোগ আরও বেড়েছে।’

আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে রাস্তার পাশে কোমরপানিতে অপেক্ষায় নারী-পুরুষ ও শিশুরা। সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নে।

সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘পানি যেভাবে বাড়ছে, তাতে কুমারগাঁও সাবস্টেশন তলিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি দেখা দিয়েছে। এটি তলিয়ে গেলে পুরো সিলেট বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়বে। এতে যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। তাই আমরা এই কেন্দ্রটি চালু রাখতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছি, যাতে অন্তত নগরের বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক থাকে।’

ঘরে পানি উঠে যাওয়ায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সিলেট নগরীর মির্জাজাঙ্গাল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন নাসির উদ্দিন। তিনি এই প্রতিষ্ঠানেরই গার্ড। গতকাল দুপুরে তিনি বলেন, ‘গেল বন্যায় ৮ দিন স্ত্রী-সন্তান নিয়ে এখানে ছিলাম, এবার যে কত দিন থাকতে হবে জানি না। বাসার আসবাবপত্র সব আগেই নষ্ট হয়ে গেছে। সামান্য গার্ডের চাকরি করি, খেয়ে বাঁচাই দায়। অনেক দিনে না খেয়ে কষ্টের টাকা জমিয়ে যা করেছিলাম, সব শেষ। গরিবদের কপাল এমনই।’

চার দিন ধরে পরিবার নিয়ে পানিবন্দি কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ এলাকার কবির আহমদ। বাড়ির টিউবওয়েলও পানিতে ডুবে গেছে। তবু আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে পারছেন না তিনি। কবির বলেন, ‘চারদিকে পানি, পরিবার নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য কোনো নৌকাও পাচ্ছি না। এ অবস্থায় ঘরে পানির মধ্যেই থাকতে হচ্ছে।’

সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান বলেন, ‘আমাদের কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই এখন ফাঁকা নেই। বেশির ভাগই তলিয়ে গেছে। বাকিগুলো আশ্রয়কেন্দ্র করা হয়েছে। ফলে নগরীর বাইরের প্রায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে। বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।’ 

বড় বিপদে ভাটির মানুষ
সুনামগঞ্জে ২৪ ঘণ্টায় ১৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির পানি ও পাহাড়ি ঢলের পানির উচ্চতা সুনামগঞ্জ শহরের সবচেয়ে উঁচু স্থানকে ডুবিয়েছে। গত ২০ বছরে এমন ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি দেখেনি সুনামগঞ্জের মানুষ। সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।

সুনামগঞ্জ পৌর এলাকার নবীনগর, ষোলঘর, উকিলপাড়া, জেলরোড, জগন্নাথবাড়ি, মধ্যবাজার ও পশ্চিমবাজার এলাকার বাড়িঘর ও দোকানপাটে হাঁটু থেকে কোমরসমান পানি। শহরের পূর্ব-পশ্চিম নতুনপাড়া, বড়পাড়া, তেঘরিয়া, বাঁধনপাড়া, শান্তিবাগ, আরপিননগর, কালীপুরসহ বর্ধিত এলাকার প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি।

সুনামগঞ্জের ১২ উপজেলার প্রায় ১৫ লোখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এক মাসের মধ্যে দুবার বন্যার মধ্যে পড়ায় দেখা দিয়েছে তীব্র খাবার সংকট। জেলার কোথাও শুকনো জায়গা নেই বললেই চলে। এই অবস্থায় মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে যে যার মতো করে সরে যাচ্ছে। বন্যার কারণে বৃহস্পতিবার থেকে সুনামগঞ্জ সারা দেশ থেকে যোগাযোগবিচ্ছিন্ন। বিদ্যুৎহীন অবস্থায় অসহায়ভাবে পানিবন্দী অবস্থায় আছে মানুষ। সুনামগঞ্জ, ছাতক, দোয়ারাবাজার, বিশ্বম্ভরপুর, জামালগঞ্জ, তাহিরপুরসহ সাতটি উপজেলা শহর ডুবে গেছে। সব রাস্তাঘাট পানির নিচে। এই অবস্থায় পানিবন্দী মানুষ নারী, শিশু, বৃদ্ধ ও রোগীদের নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছে।

সুনামগঞ্জ পৌর শহরের বাসিন্দা সৃজন আহমদ বলেন, ‘একটা রুমে ৩০-৪০ জন অসহায়ের মতো তাকিয়ে আছে, কেউই বুঝতেছে না কখন কী ঘটবে। অপেক্ষায় থাকে কখন সামান্য একটু খাবার তাদের কাছে পৌঁছাবে।’

কিছুদিন আগে একমাত্র ফসল বোরো ধান হারিয়ে এমনিতেই ভাটির মানুষ দিশেহারা। এরপর প্রথম দফা বন্যা, এবার দ্বিতীয় দফার বন্যা অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করে সহায়-সম্পদহারা মানুষকে বড় বিপদে ফেলে দিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাকা দিয়ে নারীর চাবুকের ঘা খাচ্ছিলেন পুরুষ, দুজন গ্রেপ্তার

ভারতের সঙ্গে সংঘাতে পাকিস্তানের ভাগ্যনিয়ন্তা সেনাপ্রধান জেনারেল মুনির

প্রবাসীর রেমিট্যান্সের অর্থ আত্মসাৎ, নারী ব্যাংক কর্মকর্তা কারাগারে

পাকিস্তানে কীভাবে হামলা চালাতে পারে ভারত, ইতিহাস যা বলছে

আইপিএলে চাহালের রেকর্ড হ্যাটট্রিকের রাতে রহস্যময় পোস্ট এই নারীর

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত