Ajker Patrika

লোকচক্ষুর আড়ালে সিলেটের এক সমৃদ্ধ জাদুঘর

শাকিলা আক্তার
লোকচক্ষুর আড়ালে সিলেটের এক সমৃদ্ধ জাদুঘর

সদর(সিলেট): সিলেটের জকিগঞ্জে ১৮৩৬ সালে মানুষ বেচা–কেনা হতো। এ কোনো কল্পকাহিনি নয়। বিক্রির দলিল পর্যন্ত আছে। আর এই দলিলটি সংরক্ষিত আছে সিলেটের ভাষাসৈনিক মতিন উদ্দীন আহমদ জাদুঘরে। সিলেটের দরগা গেটে কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের পঞ্চম তলায় অবস্থিত এ জাদুঘরে রয়েছে এমন আরও অনেক মূল্যবান দলিল, স্মারক ও নিদর্শন। রয়েছে লাখো বছরের পুরোনো গাছের জীবাশ্ম (পাথর), সোনার জরি খচিত মসলিন শাড়ি, দুই মণ ওজনের হাতির দাঁত, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের মহান সৈনিক সূর্য কুমার সেনকে (মাস্টার দা) ধরিয়ে দিতে ঘোষিত পুরস্কারের বিজ্ঞাপনসহ অনেক কিছু।

ছবি: শাকিলা আক্তারসিলেট নগরীর ভেতরেই এমন একটি সমৃদ্ধ জাদুঘর রয়েছে, যার তথ্য অনেকের কাছেই অজানা। জাদুঘরটিতে রয়েছে তেরো শতকের কালো পাথরের তৈরি তৈজসপত্র, শিলালিপি, তাম্রলিপি, ১৮৮৩ সালের হস্তচালিত ছাপার মেশিন, ফারসি কাবিন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্যবহৃত রকেট লঞ্চারের ক্যাপসুলসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম, জুলিয়াস সিজারের সময়ের মুদ্রাসহ বহু মূল্যবান নিদর্শন। অজস্র মূল্যবান নিদর্শন থাকলেও জাদুঘরটি অনেকটাই লোকচক্ষুর আড়ালে রয়ে গেছে। এ নিয়ে জাদুঘর কর্তৃপক্ষের তরফ থেকেও নেই কোনো প্রচার কার্যক্রম।

ভাষাসৈনিক মতিন উদ্দীন আহমদ জাদুঘরের অভ্যন্তরে বিভিন্ন নিদর্শন। ছবি: শাকিলা আক্তারকোনো একটি অঞ্চল বা জাতির ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির বিভিন্ন নিদর্শন সংরক্ষণ ও তা পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার এক অবিকল্প মাধ্যম জাদুঘর। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে জ্ঞানের বিস্তারের ক্ষেত্রেও জাদুঘরের ভূমিকা অপরিসীম। পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে জাদুঘরের যাত্রা হয়েছিল খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতকে। নামটিও সবার জানা—আলেক্সান্দ্রিয়া। ব্যক্তি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত সেই জাদুঘর নিয়ে গল্প–গাথাও কম নেই। রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে জাদুঘর প্রতিষ্ঠার সময়টি আরও অনেক পরের। এখনো বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ব্যক্তি উদ্যোগে বহু জাদুঘর প্রতিষ্ঠিত হয়। সিলেটের এই ভাষাসৈনিক মতিন উদ্দীন আহমদ জাদুঘরও অনুরূপ।

ভাষাসৈনিক মতিন উদ্দীন আহমদ জাদুঘরের অভ্যন্তরে বিভিন্ন নিদর্শন। ছবি: শাকিলা আক্তারভাষাসৈনিক মতিন উদ্দীন আহমদের পুরোনো স্মারক ও নিদর্শন সংগ্রহের প্রতি ঝোঁক ছিল। তাঁর নামে প্রতিষ্ঠিত সিলেটের এই জাদুঘরে ঠাঁই পাওয়া নিদর্শনের ২০ শতাংশ সংগ্রহই তাঁর। বাকি ৮০ শতাংশ সংগ্রহ তাঁর নাতি ও বর্তমানে এই জাদুঘরের পরিচালক মোস্তাফা শাহ জামান চৌধুরীর। ১৯৮০ সালে ভাষাসৈনিক মতিন উদ্দীন আহমদ মারা যান। মৃত্যুর পর তাঁর কাছে থাকা সংগ্রহ নাতি মোস্তাফা শাহ জামান চৌধুরীকে ওসিয়ত করে যান। সেই সব সংগ্রহ এবং নিজের করা কিছু সংগ্রহ নিয়ে ২০০৪ যাত্রা করে জাদুঘরটি। বর্তমানে এটি পরিচালনার দায়িত্ব পালন করছেন মোস্তাফা শাহ জামান চৌধুরী। ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত এই জাদুঘর এখনো কোনো সরকারি আনুকূল্য পায়নি। অবশ্য সে চেষ্টাও এখন পর্যন্ত হয়নি।

ব্যক্তিগত উদ্যোগে জাদুঘর অবশ্য নতুন কিছু নয়। বরং ব্যক্তির উদ্যোগেই যাত্রা করেছিল পৃথিবীর ইতিহাসের প্রথম জাদুঘর—আলেক্সান্দ্রিয়া। সরকারি বা রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে জাদুঘরের ধারণা এসেছে অনেক পরে। দেশে দেশে ব্যক্তিগত উদ্যোগে বহু জাদুঘর রয়েছে। নতুন করে হচ্ছেও অনেক। এই সব জাদুঘর আবার এক রকম নয়। কোনো কোনোটি বিশেষ বিশেষ বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে গড়ে ওঠে। বাংলাদেশের লোকশিল্প জাদুঘরই এর বড় প্রমাণ। ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে ওঠা জাদুঘরের গুরুত্ব বিবেচনায় রাষ্ট্র বা সরকার কখনো কখনো এগুলোর পরিচালনার দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়ে নেয়। লক্ষ্য থাকে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে জ্ঞানের বিস্তার। সাধারণ মানুষের মধ্যে জাদুঘর নিয়ে সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে ঘটা করে পালন করা বিশ্ব জাদুঘর দিবসও। আজ সেই বিশ্ব জাদুঘর দিবস, যার যাত্রা হয়েছিল ১৯৭৮ সালের ১৮ মে। বাংলাদেশেও আজ দিবসটি পালিত হচ্ছে। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে ডিজিটাল পরিসরেই এবারের আয়োজন সীমাবদ্ধ।

ছবি: শাকিলা আক্তারঅবশ্য প্রতি বছরই বাংলাদেশে যে বিশ্ব জাদুঘর দিবস পালন হয়, তা অনেকটাই আনুষ্ঠানিকতা বলা যায়। তা না হলে, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা জাদুঘরগুলোয় সংরক্ষিত নিদর্শনগুলো যত্নের অভাবে নষ্ট হয়ে যাওয়ার খবর প্রায়ই পত্রিকার পাতায় উঠে আসত না। থাকত না অবহেলা ও খামখেয়ালিপনার অভিযোগ। এর গুরুত্ব পুরোপুরি অনুধাবন করলে ব্যক্তি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত জাদুঘরগুলো দেখভালের জন্যও আলাদা রাষ্ট্রীয় উদ্যোগের দেখা মিলত। কিন্তু এমন কোনো কিছুর দেখা আজও বাংলাদেশের মানুষ দেখেনি। তেমনটি হলে ভাষাসৈনিক মতিন উদ্দীন আহমদ জাদুঘরটির কথা অন্তত মানুষ জানত। কিন্তু সে ধরনের কোনো উদ্যোগ প্রশাসনের কোনো স্তর থেকেই নেই।

ভাষাসৈনিক মতিন উদ্দীন আহমদ জাদুঘরের অভ্যন্তরে বিভিন্ন নিদর্শন। ছবি: শাকিলা আক্তার২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠার পর ২০১৫ সালে জাদুঘরটি সিলেটের দরগা গেটের কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের পঞ্চম তলার বর্তমান স্থানে স্থানান্তরিত করা হয়। পারিবারিকভাবেই জাদুঘরটি পরিচালিত হচ্ছে বলে এ নিয়ে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে তেমন কোনো প্রচার নেই। অবশ্য আগ্রহীরা ঠিকই খুঁজে নেন জাদুঘরটিকে। কারণ এতে থাকা সংগ্রহের বৈচিত্র্য। সরেজমিনে দেখা যায়, এই জাদুঘরে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের মাথার খুলি, বিভিন্ন শতাব্দীর বন্দুক, পিস্তল, এক হাজার বছর আগের রাজা চন্দ্র দেবের আমলের নাগরি ভাষায় লেখা তাম্রলিপি, ত্রিপুরার মহারাজা ও মহারানির বিভিন্ন দলিলসহ বিভিন্ন সময়ের ঐতিহাসিক দলিলপত্র। এখানে রয়েছে নবাব আলিবর্দী খাঁর আমলের হাতির দাঁতের হাত পাখা, বিভিন্ন দেশের প্রাচীন ব্যাংক নোট, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ব্যাংক নোট, শতাধিক বছরের পুরোনো দেয়াল ঘড়ি, হাত ঘড়ি, ১৮৬৬ সালে জকিগঞ্জ উপজেলার উত্তরকুলের জমিদার পত্নী বেগম মুসিম রাজা চৌধুরীর ব্যবহৃত মিনি ড্রেসিং টেবিল, ১ হাজার ৩০০ বছরের পুরোনো কালো পাথরের তৈরি তৈজসপত্র, বিভিন্ন সময়ে ব্যবহৃত ক্যামেরা, ২ হাজার বছর আগের জুলিয়াস সিজারের সময়ের মুদ্রা, ১৮৫৩ সালের ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি আমলের মুদ্রা ও ১৭১৯ সালে জৈন্তাপুর থেকে প্রাপ্ত বাংলা হরফে এবং সাংস্কৃতিক উচ্চারণে লেখা শিলালিপি ও প্রতিলিপি। রয়েছে সিলেটের জকিগঞ্জের ঐতিহাসিক গয়বী দিঘি থেকে প্রাপ্ত শিলালিপি, যার একপাশে আরবি লিপি এবং অন্য পাশে গৌতম বুদ্ধের মূর্তি খোদাই করা। শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকের ব্যবহৃত পানদান, হাতির দাঁতের তৈরি খুঁটির খড়ম, হাতির দাঁতের তৈরি চীনা খেলা মাহজং–এর দান, নেপালের রাজা বিক্রম শাহদেব কর্তৃক মতিন উদ্দীন আহমদকে উপহার দেওয়া হাতির দাঁতের তৈরি দাবা খেলার গুটি থেকে শুরু করে গরুর গাড়ি পর্যন্ত এমন অজস্র নিদর্শন এখানে রয়েছে, যা এই প্রজন্মের সঙ্গে পরিচয় ঘটিয়ে দিতে পারে অতীত সময়ের। ইতিহাসের গলি–ঘুপচিতে চলার সাহস ও উৎসাহ জোগানোর এক অনায়াস ক্ষমতা রয়েছে জাদুঘরটির। কিন্তু সেই ক্ষমতার খুব কমই প্রয়োগ হচ্ছে শুধু এ সম্পর্কিত তথ্যের যথাযথ প্রচারের অভাবে।

ছবি: শাকিলা আক্তারএ বিষয়ে জাদুঘরটির পরিচালক মোস্তাফা শাহ জামান চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার নানার ইচ্ছা পূরণ করতেই এই জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করেছি। এখানে স্থানীয় দর্শনার্থীরা খুব একটা না এলেও বিদেশি অনেক দর্শনার্থী আসেন। বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরাও আসেন। তবে এখন করোনা মহামারির কারণে জাদুঘরটি নিয়মিত খোলা রাখা হয় না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দিনদুপুরে ন্যাশনাল মেডিকেলের সামনে গুলিতে ব্যবসায়ীর মৃত্যু

ঢামেক প্রতিবেদক
আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০২৫, ১২: ৫৯
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

পুরান ঢাকার সূত্রাপুরে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে দুর্বৃত্তদের গুলিতে তারিক সাইফ মামুন (৫৫) নামে এক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন।

আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। মুমূর্ষু অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহতের জাতীয় পরিচয়পত্র থেকে জানা যায়, মামুনের বাবার নাম এস এম ইকবাল। তাঁর বাড়ি লক্ষ্মীপুরের সদর উপজেলার মোবারক কলোনি এলাকায়।

ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার মহিবুল্লাহ জানান, আনুমানিক বেলা ১১টার দিকে তাঁদের হাসপাতালের সামনে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। গুলির শব্দ শুনে হাসপাতালের মেইন গেটের সামনের এসে এক ব্যক্তিকে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখেন তাঁরা। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভেতরে আনা হয়। অবস্থার অবনতি দেখে সেখান থেকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. ফারুক মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে।

ঢাকা মেডিকেলে নিহতের পূর্বপরিচিত ফাইজুল হক অপু জানান, সকালে তারিক সাইফ মামুনের ফোন নম্বর থেকে তাঁকে কল করে ঘটনাটি জানানো হয়। এরপর তিনি ঢাকা মেডিকেলে এসে নিহতের পরিচয় শনাক্ত করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঘুমন্ত বাবাকে কুপিয়ে হত্যা, ছেলে আটক

শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

মাদারীপুরের শিবচরে পারিবারিক বিরোধের জেরে ঘুমন্ত বাবাকে কোদাল দিয়ে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে ছেলের বিরুদ্ধে। গতকাল রোববার (৯ নভেম্বর) দিবাগত রাত ১২টার দিকে উপজেলার বাঁশকান্দি ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের পঞ্চগ্রাম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তির নাম মতি মিয়া (৬৬)। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলারহাট উপজেলার বড়হাটি গ্রামের বাসিন্দা। ঘটনার পর অভিযুক্ত ছেলে ফারুক মিয়াকে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকেই আটক করেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মতি মিয়া ও তাঁর ছেলে ফারুক মিয়া দুজনেই শিবচরের বাঁশকান্দি এলাকায় থাকতেন এবং মতি মিয়া ওই এলাকায় শ্রমিক হিসেবে কৃষিকাজ করতেন। ফারুক মিয়া সাধারণত ঢাকায় কাজ করলেও গত বুধবার (৫ নভেম্বর) শিবচরে তাঁর বাবার কাছে আসেন এবং বাবার সঙ্গে থাকা শুরু করেন। গতকাল রোববার বিকেলে পারিবারিক বিষয় নিয়ে বাবা মতি মিয়ার সঙ্গে ছেলে ফারুক মিয়ার বাগ্‌বিতণ্ডা হয়।

এই বিরোধের জেরে রাত ১২টার দিকে বাবা মতি মিয়া ঘুমিয়ে থাকলে ছেলে ফারুক মিয়া তাঁকে কোদাল (মাটি খননযন্ত্র) দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। হত্যার পর ছেলে ফারুক মিয়া লাশের পাশেই বসে ছিলেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্ত ফারুক মিয়াকে আটক করে।

স্থানীয়দের ধারণা, ফারুক মিয়া নেশাগ্রস্ত অবস্থায় এ ঘটনা ঘটিয়েছে।

শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাকিবুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করা হয় এবং অভিযুক্ত ছেলেকে আটক করা হয়।’ তিনি আরও জানান, ঘটনাস্থল থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত কোদাল জব্দ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে পারিবারিক বিরোধের জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।

নিহত মতি মিয়ার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত প্রক্রিয়া চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
মোহাম্মদপুরে ফরহাদ মজহারের প্রতিষ্ঠান প্রবর্তনা। ছবি: সংগৃহীত
মোহাম্মদপুরে ফরহাদ মজহারের প্রতিষ্ঠান প্রবর্তনা। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের স্যার সৈয়দ রোডে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ‘প্রবর্তনা’র সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। তবে এতে কেউ আহত হয়নি। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সকালে একটি মোটরসাইকেলে দুই ব্যক্তি এসে প্রবর্তনার সামনে রাস্তার ওপর দুটি ককটেল নিক্ষেপ করে। দুটি ককটেলই বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়। হঠাৎ বিস্ফোরণের শব্দে কেয়ারটেকার ও আশপাশের বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং আশপাশের এলাকায় টহল জোরদার করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী রফিক আহমেদ বলেন, দুষ্কৃতকারীরা ব্যবসায়ী ওই প্রতিষ্ঠানটি লক্ষ্য করে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। কারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তা চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে। তবে ঘটনার কারণ বা উদ্দেশ্য সম্পর্কে এখনো কিছু জানাতে পারেনি পুলিশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মানিকগঞ্জে দুর্বৃত্তের আগুনে পুড়ল স্কুলবাস

ঘিওর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি  
ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার উথুলী এলাকায় মুন্নু ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। রোববার (৮ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের উথুলী সংযোগ মোড়ে সারমানো সিএনজি অ্যান্ড ফিলিং স্টেশনের পাশে পার্কিং করে রাখা অবস্থায় দুর্বৃত্তরা বাসটিতে আগুন দেয়।

খবর পেয়ে শিবালয় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা স্থানীয়দের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি, তবে বাসটির আংশিক অংশ পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিন সকাল ৬টার দিকে উথুলী মোড় থেকে গিলন্ড পর্যন্ত ওই বাসে মুন্নু ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের আনা-নেওয়া করা হয়। প্রতিদিনের মতো রোববারও বাসটি উথুলী মোড়ে পার্কিং করে রাখা ছিল। সন্ধ্যার পর কে বা কারা বাসটিতে আগুন দেয়, তা কেউ নিশ্চিতভাবে বলতে পারেননি।

শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমান উল্লাহ বলেন, ‘ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করেছে। আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। কে বা কারা এ অগ্নিসংযোগের সঙ্গে জড়িত, তা উদ্‌ঘাটনের চেষ্টা চলছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত