Ajker Patrika

টিকা নিতে এসে বখাটে ছাত্রদের উৎপাত!

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
টিকা নিতে এসে বখাটে ছাত্রদের উৎপাত!

টিকা না নিলে ক্লাসে যাওয়া যাবে না, সরকারের এমন নির্দেশনার পর টিকার বুথগুলোতে স্কুল শিক্ষার্থীদের ভিড় বাড়ছে। শীত উপেক্ষা করে বিভিন্ন উপজেলা থেকে জেলা সদরে আসছে। সকাল থেকে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে টিকা নিচ্ছে তারা। 

এতসব ভোগান্তির মধ্যে ছাত্রীদের জন্য বাড়তি বিড়ম্বনা হয়ে যুক্ত হয়েছে বখাটে ছাত্ররা। একাধিক ছাত্রী অভিযোগ করেছে, দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে পা ব্যথা হয়ে যাচ্ছে তাদের। এর মধ্যে কিছু ছেলে তাদের নানাভাবে হয়রানি করছে। আপত্তিকর ইশারা ইঙ্গিত করছে। নানা কথা বলছে, শীর্ষ দিচ্ছে। 

বৃহস্পতিবার কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের টিকা বুথে গেলে অনেক ছাত্রীই এ প্রতিবেদকের কাছে এসব অভিযোগ করে। 

কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে অবস্থিত টিকা কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, ছেলে ও মেয়েদের জন্য আলাদা আলাদা বুথ। তবে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির তুলনায় বুথের সংখ্যা কম হওয়ায় দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। মেয়েদের লাইনে শৃঙ্খলা থাকলেও ছেলেদের অনেকে লাইন ছেড়ে ইতস্তত ঘুরছে। কেউবা মেয়েদের বুথের সামনে, কেউ মেয়েদের লাইনের আশপাশে অযথা ঘোরাফেরা করছে, মেয়েদের বিরক্ত করছে। হাসপাতালের প্রবেশপথেও কয়েকটি ছেলেকে দলবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে মেয়েদের উদ্দেশ করে কটূক্তি করতে দেখা গেছে। কয়েকজন আবার প্ল্যাকার্ড নিয়ে, শিষ বাজিয়ে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করছে। 

টিকা নিতে আসা কুড়িগ্রাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির এক ছাত্রী বলে, ‘আমরা বান্ধবীরা টিকা নেওয়ার জন্য অনেকক্ষণ ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। ছেলেরা আমাদের সরাসরি প্রোপোজ করছে। এখানে দেখার কেউ নেই। এটা খুবই বিরক্তিকর।’ 

৭ম শ্রেণির এক ছাত্রী জানায়, সে টিকা নিয়ে বাড়ি যাচ্ছিল। হাসপাতালের গেটের সামনে কয়েকজন ছেলে তাকে ঘিরে ধরে ‘গার্লফ্রেন্ড’ হবে কি না জিজ্ঞাসা করছিল। ওই শিক্ষার্থী বলে, ‘আমি বিষয়টাতে অপ্রস্তুত হয়ে পড়ি। কিছুটা ভয়ও পেয়ে গেছি।’ 

ছেলেদের এমন কাণ্ডে অনেকে টিকা না নিয়েই বাড়ি ফিরে গেছে বলেও জানা গেছে। 

কুড়িগ্রাম মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বলে, ‘সকাল ১০টার সময় এসেছি টিকা নিতে, দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকায় খারাপ লাগছে, এর ওপর ছেলেরা বাজে বাজে কথা বলছে। তাই টিকা না নিয়ে বাসায় চলে যাচ্ছি।’ 

বিষয়টি নিয়ে কয়েকজন ছাত্রের সঙ্গে কথা বলতে গেলে সাংবাদিক দেখেই তারা দ্রুত স্থান ত্যাগ করে। 

এ বিষয়ে জানালে হাসপাতালে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশের এএসআই আনোয়ারুল করীম বলেন, ‘আমরা হাসপাতালের পুলিশ বক্সের দায়িত্বে রয়েছি। টিকার কেন্দ্রে আমাদের দায়িত্ব নেই। তারপরও বিষয়টি দেখছি।’ 

জেলার সিভিল সার্জন ডা. মো. মনজুর এ-মুর্শেদকে বিষয়টি জানালে তিনি বলেন, ‘এটি সমাধানে সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলোর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে শিক্ষা বিভাগকে বলা হয়েছে। এ ছাড়া সদর থানার ওসি সাহেবকে পুলিশি টহল বাড়ানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষকেরা উপস্থিত থাকলে এ ধরনের ইভটিজিংয়ের ঘটনা ঘটবে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত