Ajker Patrika

হাসপাতালের টয়লেটের দরজায় বঙ্গবন্ধুর ছবি, ফেসবুকে দিয়ে উল্টো কারাগারে যুবক

দিনাজপুর প্রতিনিধি
হাসপাতালের টয়লেটের দরজায় বঙ্গবন্ধুর ছবি, ফেসবুকে দিয়ে উল্টো কারাগারে যুবক

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি বাঁধাই করা সাদাকালো একটি ছবি ঝুলে আছে টয়লেটের দরজার নিচের অংশে। কাঠের দরজাটিও বহু পুরোনো, খসে পড়ার অবস্থা। এটি দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের টয়লেট বলে দাবি করে ফেসবুকে পোস্ট করেন এক যুবক।

বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে ওই যুবকের বিরুদ্ধেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সেই মামলায় গতকাল সোমবার দিবাগত রাত ২টায় ওই যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার তাঁকে আদালতে তোলা হলে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন।

গ্রেপ্তার মশিয়র রহমান (২২) দিনাজপুর আদর্শ কলেজে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তিনি ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দোগাছি গ্রামের আজগর আলীর ছেলে। দিনাজপুর শহরে লেবুরন মোড়ে থেকে পড়াশোনার পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সেভ দ্য ফিউচার ফাউন্ডেশন ঠাকুরগাঁও জেলা শাখার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচির সঙ্গেও সক্রিয়ভাবে জড়িত বলে জানা গেছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত রোববার বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে মশিয়র রহমান ওই ছবি ফেসবুক পোস্ট করেন। পোস্টটি ছড়িয়ে পড়লে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। পরে প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার ফারুক উল আলম বাদী হয়ে সোমবার সন্ধ্যায় কোতোয়ালি থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন।

এজাহারে উল্লেখ করা হয়, মশিয়র রহমান উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে পরিত্যক্ত টয়লেটের দরজায় জাতির জনকের ছবিটি রেখেছেন। বর্তমান সরকার ও জাতির পিতার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অসৎ উদ্দেশ্যে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছাড়ানোর জন্যই তিনি এই ধরনের কর্মকাণ্ড করেছেন।

এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দিনাজপুর জেলা সম্মিলিত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের এক সদস্য বলেন, ‘রোববার বিকেলে মশিয়র রহমান তাঁর এক বন্ধুর আত্মীয়কে রক্তদানের জন্য মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান। রক্তদান শেষে ফেরার পথে টয়লেটের দরজায় জাতির জনকের ছবিটি দেখতে পেয়ে ফেসবুকে আপলোড করেন। ক্যাপশনে লেখেন, “এটি দুঃখজনক”। আমরা বিশ্বাস করি, তাঁর কোনো অসৎ উদ্দেশ্য ছিল না।’

মশিয়রের বাবা একজন সাধারণ কৃষক। ছেলে গ্রেপ্তারের ঘটনায় মশিয়রের মা-বাবা হতবিহ্বল হয়ে পড়েছেন। মা নাসরিন বেগম বলেন, ‘আমার ছেলে কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না। পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন রোগীকে রক্ত জোগার করে দেওয়ার কাজ করে। কোনো দিন কারও সঙ্গে তার ঝগড়া বিবাদ পর্যন্ত হয় নাই। রোগীর জন্য রক্ত দরকার জানিয়ে রাতে পুলিশ ফোন করে মশিয়রকে। পরে তার এক বন্ধুর মাধ্যমে জানতে পারি, মশিয়রকে পুলিশ আটক করছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. কাজী শামীম হোসাইন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর অবমাননা করলে তো আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতেই হবে। সে কোথা থেকে বঙ্গবন্ধুর ছবি নিয়ে এসে অসৎ উদ্দেশ্যে সেখানে ছবিটি রেখেছে এবং ফেসবুকে দিয়েছে আমরা জানি না। যে জায়গায় ছবিটি রাখা হয়েছে ওই করিডর দিয়ে সব সময় মানুষ যাতায়াত করে। জাতির জনকের ছবিটি ওই জায়গায় থাকলে কারও চোখে পড়ত। বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর। বিষয়টি নিয়ে মামলা করা হয়েছে। ওই যুবক কেন সেখানে ছবিটি রেখেছে তদন্তকারী সংস্থা তা বের করবে।’

কোতোয়ালি থানার তদন্ত কর্মকর্তা গোলাম মওলা বলেন, ‘মামলার এজাহারের ভিত্তিতে আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত