Ajker Patrika

বেরোবিতে শিক্ষার্থী-বহিরাগত সংঘর্ষে তছনছ হালিমার জীবিকার সম্বল

রংপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১০: ০৪
বেরোবিতে শিক্ষার্থী-বহিরাগত সংঘর্ষে তছনছ হালিমার জীবিকার সম্বল

রংপুর নগরীর মিলনপাড়া গ্রামের মোশাররফ হোসেন রন্টু মিয়া দিনমজুরি করে সংসার চালাতেন। তিনি ফাইলেরিয়া রোগে আক্রান্ত হওয়ায় তিন বছর ধরে কাজ করতে পারেন না। তখন সংসারের ভার পড়ে স্ত্রী হালিমা খাতুনের ওপর। সংসার চালাতে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সামনে একটি চা-বিস্কুটের দোকান দেন তিনি।

কিন্তু আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বেরোবির শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘর্ষ হলে হালিমার দোকানে থাকা চেয়ার, টেবিল, খাবারের বোয়াম, ফ্রিজ ভাঙচুর করে। ভাঙচুরের ঘটনায় পুলিশ আসার পর স্থানীয়রা চলে যায়। শিক্ষার্থীরাও ফিরে যায় ক্যাম্পাসে। কিন্তু হামলার ঘটনায় ক্ষতির শিকার হন হালিমা।

দোকানের সামনে ভাঙা চেয়ার টেবিল কুড়াতে কুড়াতে হালিমা বেগম বলেন, ‘কিস্তির টাকা নিয়ে কিছুদিন আগে একটি ফ্রিজ কিনেছি। কিন্তু হামলাকারীরা মারামারি সময় আমার দোকানের চেয়ার, টেবিল, ফ্রিজ ভাঙচুর করল। দোকানের সামনে থাকা মোটরসাইকেলও ভাঙল। এখন কাল কী দিয়ে দোকান করব বুঝতে পারছি না।’

কান্নাজড়িত কণ্ঠে হালিমা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দোকানের কামাই দিয়ে দুই সন্তানের লেখাপড়া খরচ, বৃদ্ধ শাশুড়ি ও অসুস্থ স্বামীর ওষুধ কিনে ভালোই যাচ্ছিল দিন। কিন্তু দোকান ভেঙে দেওয়ায় এখন আমি নিরুপায়। এখন আমি কীভাবে কী করব? এই লোকসান আমি কীভাবে পূরণ করব? আমি ক্ষতিপূরণ চাই।’ 

শুধু হালিমা নন, তাঁর মতো আশপাশের ১০টি দোকান হামলার শিকার হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে পার্কের মোড় দোকান সমিতির সভাপতি আব্দুস সালাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুই পক্ষে সংঘর্ষের সময় পার্কের মোড়ের ১০টি দোকানে হামলা হয়। এ সময় দোকানে থাকা আসবাবপত্রসহ মালামাল ও দোকানে ভাঙচুর হয়। গন্ডগোলের কারণে অনেক ক্রেতা দোকানের বিল না দিয়েই চলে যান। দোকানিদের কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে সকাল হলে তা জানা যাবে।’ 

হালিমার দোকানের পাশের দোকানি মা-বাবা টি-স্টোরের মালিক আক্তারুজ্জামান বিপুল বলেন, ‘এখানে প্রায়ই শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে ঝামেলা বাধে। আর ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয় আমাদের। আজ মারামারি সময় দোকানের সবকিছু ভাঙচুর করেছে। বিল না দিয়েই সব কাস্টমার চলে গেছে। বড় একটা ক্ষতির শিকার হলাম।’ 

স্থানীয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পিঠা উৎসবে বান্ধবীকে উত্ত্যক্ত করা নিয়ে স্থানীয় যুবকদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর কথা-কাটাকাটি হয়, যার রেশ ধরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে স্থানীয়রা আটক করে মারার হুমকি দেয়। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ওই শিক্ষার্থীকে ছাড়িয়ে আনতে গেলে একপর্যায়ে ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। দুই পক্ষের মধ্যে ইট পাটকেল নিক্ষেপ হয়। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের চারজন শিক্ষার্থী আহত হন বলে জানিয়েছেন বেরোবির প্রক্টর গোলাম রব্বানী।

উপপুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) আবু মারুফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক। তার পরেও আমরা কঠোর নজরদারি রাখছি। এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ না করার প্রস্তাব

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

‘ঘুষের জন্য’ ৯১টি ফাইল আটকে রাখেন মাউশির ডিডি: দুদক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত