Ajker Patrika

সরকারি নিয়ম কি সবাই মানে? দুপুরের আগেই বিদ্যালয় ছুটি দিয়ে বললেন প্রধান শিক্ষক

শিপুল ইসলাম, রংপুর
নির্দিষ্ট সময়ের আগেই বিদ্যালয়ে তালা লাগিয়ে সবাই বাড়িতে চলে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
নির্দিষ্ট সময়ের আগেই বিদ্যালয়ে তালা লাগিয়ে সবাই বাড়িতে চলে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নিয়ম অনুযায়ী সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত খোলা রাখতে হবে। কিন্তু সরকারি এ নিয়মের তোয়াক্কা করেন না রংপুর সদরের মমিনপুর ইউনিয়নের হাজরাহাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হৃদয় কুমার। স্থানীয়দের অভিযোগ, তিনি নিজের খেয়ালখুশিমতো বিদ্যালয় ছুটি দেন।

বুধবার (২৭ আগস্ট) দুপুর ২টায় বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, ‘প্রধান ফটকে তালা ঝুলছে। সব কক্ষ বন্ধ। মাঠের ভেতরে কয়েকজন স্থানীয় শিশু খেলাধুলা করছে। তারা জানে না বিদ্যালয় কখন ছুটি হয়েছে।’

বেলা পৌনে ২টার দিকে ফোন করে কেমন আছেন জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক হৃদয় কুমার সরকার বলেন, ‘ভালো নাই, সর্দি-জ্বর। বাড়িতে আছি।’

দুপুরের আগেই বিদ্যালয় ছুটির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘স্কুল বন্ধ করে দিয়েছি। সরকারি নিয়ম তো আছে, কিন্তু সরকারি নিয়ম কি সবাই মানে?’

হাজরাহাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি বাবুরহাট বাজারের পাশে অবস্থিত। ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টিতে ছয়জন শিক্ষক ও ১৩১ জন শিক্ষার্থী রয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষকের নিজের ইচ্ছেমতো বিদ্যালয় পরিচালনা করেন। সরকারি নিয়মনীতির কোনো তোয়াক্কা করেন না। ইচ্ছেমতো বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করেন। বিদ্যালয়ের অবস্থান নিভৃত পল্লিতে হওয়ায় কর্তৃপক্ষও তেমন নজরদারি করে না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই এলাকার এক যুবক বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক যেটা করে, স্কুলে সেটাই হয়। উনি কোনো দিন বেলা ১টা, কোনো দিন ২টা কোনো দিন ৩টার সময় বিদ্যালয় ছুটি দেন। ঠিক সময়ে বিদ্যালয়ে আসেন না। স্কুলটার হিজিবিজি অবস্থা। এগুলো আমরা বললে ঝগড়া লাগে। একই এলাকার লোক, কিছু বলতে পারি না।’

বিদ্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে কথা হয় বাবুরহাট এলাকার বাসিন্দা প্রতাব মহন্তের সঙ্গে। প্রতাব মহন্ত বলেন, ‘কী কারণে সরকারি সময়ের আগে বিদ্যালয় ছুটি দিল, এটা খতিয়ে দেখা উচিত, যাতে ভবিষ্যতে আর এমন ঘটনা না ঘটে। বিদ্যালয়টি নিয়মিত সময় অনুযায়ী চালু থাকলে শিশু শিক্ষার্থীরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে না।’

সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আতিকুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কোনোভাবেই ৪টার আগে স্কুল ছুটি দেওয়ার সুযোগ নেই। কেন তিনি দুপুরের আগেই বিদ্যালয় বন্ধ করলেন, তা আমার জানা নেই। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত