Ajker Patrika

ফাইলপ্রতি টাকা দাবি ও হয়রানির অভিযোগ রাজস্ব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে

পাটগ্রাম (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

লালমনিরহাটের পাটগ্রামের বুড়িমারী স্থল শুল্কস্টেশনের একাধিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ঘোষিত আমদানিপণ্যের প্রতি ফাইলের ঋণপত্র (এলসি)/বিল অব এন্ট্রি অনুযায়ী টাকা ব্যাংকে যথানিয়মে পরিশোধ করা হয়। এরপর কাস্টমস কর্মকর্তাদের কাছে প্রয়োজনীয় প্রমাণপত্রসহ (ডকুমেন্ট) ফাইল নিয়ে গেলে গাড়িতে আনা পণ্যের টনপ্রতি অতিরিক্ত টাকা দাবি করা হয়।

অভিযোগ উঠেছে, ওই শুল্কস্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা জহির রায়হান সিদ্দিক ও রফিকুল ইসলাম এবং সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা এস এম রুহিনুল ইসলাম এ ধরনের অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। আর্থিক লেনদেনের এ ধরনের কথা প্রকাশ না করার প্রচ্ছন্ন হুমকিও দেন বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান একাধিক সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ও আমদানিকারক। তাঁদের সঙ্গে কোনো ব্যবসায়ী বা ব্যবসায়ীর প্রতিনিধি দ্বিমত করলে ওই ব্যবসায়ীর ব্যবসাসংক্রান্ত কাজকর্মে নানান প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করা হয়। এ ছাড়া আমদানিপণ্য ও গাড়ি যাচাই ও পরীক্ষার নামে করা হয় হয়রানি।

সংশ্লিষ্ট একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে, এ ধরনের কর্মকর্তারা টাকার লোভে অসাধু কিছু ব্যবসায়ীর সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন। এতে ইতিপূর্বে মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানি ও পাচারের ঘটনা ঘটেছে।

একাধিক সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ২১ জুন ফাইলপ্রতি টাকা দাবির ঘটনা নিয়ে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট প্রতিনিধির সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়ান জহির রায়হান সিদ্দিক ও রফিকুল ইসলাম। এ সময় ফাইল ছুড়ে মারেন তাঁরা। প্রায় সময় এ রাজস্ব কর্মকর্তারা ব্যবসায়ী ও তাঁদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে উগ্র আচরণ করেন। কর্মকর্তাদের এমন কার্যকলাপে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের সুষ্ঠু পরিবেশে বিঘ্ন ঘটছে। এতে ব্যবসায়ীরা এ স্থলবন্দর দিয়ে ব্যবসা করার মনোবল হারাচ্ছেন।

বুড়িমারী স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, নানা কারণে এ শুল্কস্টেশন দিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য কমে গেছে। ভারত ও ভুটান থেকে ডলোমাইড পাউডার, জিপসাম, লাইমস্টোন পাথর ও পাউডার আমদানি করা হয়। আগের তুলনায় আমদানির পরিমাণ ও গাড়ি প্রবেশের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যবসায়ী ও কর্মচারী বলেন, ‘ওই শুল্ক রাজস্ব কর্মকর্তা ও সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। ঘুষ না দিলে সরকারি বিধিবিধান দেখিয়ে ফাইল আটক ও হয়রানি করেন। এতে সরকারের ভাবমূর্তি ও দেশের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হচ্ছে।’

এ ব্যাপারে রাজস্ব কর্মকর্তা (আরও) জহির রায়হান সিদ্দিক বলেন, ‘আমি আমদানিপণ্যের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চাই। এটা অনেকের পছন্দ না। এ কারণে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ ছড়ানো হয়েছে। কাউকে কোনো ধরনের হয়রানি বা অনিয়ম করা হয় না। কে বলেছে, নাম বলেন।’

রাজস্ব কর্মকর্তা (আরও) রফিকুল ইসলাম জানান, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট বা তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কোনো প্রকার বিতর্কের ঘটনা ঘটেনি। এটা মিথ্যা।

বুড়িমারী স্থল শুল্কস্টেশনের সহকারী কমিশনার (এসি) রাহাত হোসেন প্রথমে রাজস্ব কর্মকর্তাদের বিতর্কিত বিষয়গুলো এড়িয়ে যান। পরে বলেন, ‘আপনাদের মাধ্যমে জানলাম। এ ব্যাপারে খোঁজখবর নেব। জড়িত থাকার প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত