Ajker Patrika

সোমালিয়ায় সংসদ সদস্য হলেন হাবিপ্রবির সাবেক শিক্ষার্থী সাকারিয়া

মো. আনিসুল হক জুয়েল
আপডেট : ২৮ এপ্রিল ২০২১, ১৫: ১৬
সোমালিয়ায় সংসদ সদস্য হলেন হাবিপ্রবির সাবেক শিক্ষার্থী সাকারিয়া

দিনাজপুর: পূর্ব আফ্রিকার দেশ সোমালিয়ার হিরশাবিল অঙ্গরাজ্যে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) সাবেক শিক্ষার্থী সাকারিয়া সোলাইমান। তিনি হাবিপ্রবির কৃষি অনুষদের জেনেটিক্স অ্যান্ড প্লান্ট ব্রিডিং বিভাগ থেকে ২০১৮-১৯ সেশনে মাস্টার্স ডিগ্রি সম্পন্ন করেছেন।

হাবিপ্রবি থেকে স্নাতকোত্তর শেষে করে দেশে ফিরেই সোমালিয়ার কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে হিরশাবিল অঙ্গরাজ্যের এমপি নির্বাচনে অংশ নেন সাকারিয়া। এমপি নির্বাচনে অনেক প্রতিদ্বন্দ্বী থাকলেও তারুণ্যের প্রতীক সাকারিয়া শিক্ষাগত যোগ্যতা, কর্মদক্ষতা এবং জনসম্পৃক্ততার জোরে গোষ্ঠী নেতাদের ৯৫ শতাংশ ভোট পেয়ে এমপি নির্বাচিত হন।

সাকারিয়া জন্ম সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিসুতে। অনেক ছোট বয়সেই সাকারিয়া বাবাকে হারান। বাবা মারা যাওয়ায় ছোটবেলাতেই তাঁকে জীবনযুদ্ধে নামতে হয়। অভাবের সংসারে নানা টানাপোড়েনের মধ্যে কৃতিত্বের সাথে স্কুল ও কলেজের গণ্ডি পেরোনোর পর সাকারিয়া ভর্তি হন সোমালিয়ার বেনাদির কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখান থেকে স্নাতক শেষ করে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করার জন্য সাকারিয়া বৃত্তি নিয়ে ভর্তি হন বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গের স্বনামধন্য বিদ্যাপীঠ হাবিপ্রবিতে। হাবিপ্রবির জেনেটিক্স অ্যান্ড প্লান্ট ব্রিডিং বিভাগ থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি সম্পন্ন করেই দেশে ফিরেন তিনি।

ছোট থেকেই দেশের জন্য কিছু করার সুপ্ত বাসনা ছিল সাকারিয়ার। সেই বাসনা থেকেই রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন সাকারিয়া। সোমালিয়ার ২০২০-২১ পার্লামেন্ট নির্বাচনে অংশ নেন। মাত্র ২৪ বছর বয়সেই জাতীয় জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হন এই তরুণ। অনুভূতি জানতে চাইলে সাকারিয়া বলেন, সত্যি কথা বলতে সোমালিয়ার হিরশাবিল অঙ্গরাজ্যের এমপি নির্বাচিত হওয়া আমার জন্য অবিশ্বাস্য এবং বিস্ময়কর ছিল। আমি জীবনের সকল যু্দ্ধেই বিজয়ী হওয়ার স্বপ্ন দেখেছি এবং অবশেষে আমি সেটাই হয়েছি। আমি সবার উদ্দেশে একটি কথাই বলতে চাই, ধন্যবাদ পাওয়ার আশা ছাড়াই ভালো কাজ করো, তাহলেই তুমি মহান এবং সফল হবে।

সাকারিয়া সোলাইমান। ছবি: আজকের পত্রিকাএসময় সাকারিয়া তার সাবেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হাবিপ্রবি নিয়েও স্মৃতিচারণ করেন। তিনি বলেন, হাবিপ্রবি সব সময় আমার মনের মাঝে রয়েছে। আমি সব সময় আমার প্রিয় শিক্ষক, আমার সুপারভাইজার এবং সহপাঠী বন্ধুদের জন্য প্রার্থনা করি। তারা আমাকে অনেক সহযোগিতা করেছেন। হাবিপ্রবির জিয়া হলে আমার বেশ ভালো সময় কেটেছে। ইনশাআল্লাহ, আশা করছি, খুব দ্রুতই সবার সাথে আবার দেখা হবে। ততদিন তারা সবাই সুস্থ থাকুক, ভালো থাকুক এমনটাই প্রত্যাশ্যা করি।

এদিকে সাকারিয়ার এমন সাফল্যে উচ্ছ্বসিত তার সহপাঠী শুভাকাঙ্ক্ষীরাও। হাবিপ্রবির ১৭ ব্যাচের ফুড অ্যান্ড প্রসেস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী মো. সোয়ায়েব হোসেন বলেন, আমরা নিজেরাও জানি না যে আমাদের আশেপাশে এমন কিছু মানুষ আছে, যারা সত্যিই অসাধারণ! আমরা তখনি তাদের বুঝতে পারি যখন তারা তাদের যোগ্যতার আসনে আসীন হোন। যেমন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের ছাত্র ছিলেন। ঠিক তেমনি বড় ভাই সাকারিয়াও। তিনি খুব মজার ও হাস্যোজ্জ্বল একজন মানুষ। এই কৌতুক প্রিয় মানুষটি খুব ভালো ফুটবল খেলতেও জানতেন। এছাড়া সাকারিয়া ভাইয়ের মাঝে নেতৃত্বসুলভ গুণও ছিল। এজন্য আমি মনে করি সাকারিয়া শুধু সোমালীয়দের গর্ব না, হাবিপ্রবিরও গর্ব।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রুটিন উপাচার্য অধ্যাপক ড. বিধান চন্দ্র হালদার বলেন, সাকারিয়ার এমন সাফল্যে আমরা গর্বিত। সে ভবিষ্যতে আরও ভালো কিছু করবে এমনটাই প্রত্যাশা করি।

উল্লেখ্য, হাবিপ্রবিতে বৃত্তি নিয়ে সোমালিয়া, ভারত, নেপাল, ভুটান, নাইজেরিয়াসহ ছয়টি দেশের শিক্ষার্থী পড়াশোনা করতে আসেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে মোট বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৩৮ জন। ইউজিসির সর্বশেষ (৪৬তম) বার্ষিক প্রতিবেদন বলছে, বিদেশি শিক্ষার্থী অধ্যয়নের দিক থেকে হাবিপ্রবির অবস্থান দ্বিতীয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ না করার প্রস্তাব

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

‘ঘুষের জন্য’ ৯১টি ফাইল আটকে রাখেন মাউশির ডিডি: দুদক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত