Ajker Patrika

অর্থাভাবে খুঁটি দাঁড়িয়ে চার বছর, হেঁটে নদী পারাপার

  • ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ২০২১ সালে ৫০ ভাগ নির্মাণকাজ শেষ করে।
  • স্থানীয় লোকজন পানিতে বালুর বস্তা ফেলে নদী পার হন।
মিজানুর রহমান, কাউনিয়া (রংপুর) 
কাউনিয়ার মোস্তারপাড় এলাকায় নির্মাণাধীন সেতুর খুঁটি। হেঁটে নদী পার হচ্ছে স্থানীয় লোকজন। 	ছবি: আজকের পত্রিকা
কাউনিয়ার মোস্তারপাড় এলাকায় নির্মাণাধীন সেতুর খুঁটি। হেঁটে নদী পার হচ্ছে স্থানীয় লোকজন। ছবি: আজকের পত্রিকা

রংপুরের কাউনিয়ায় মরা তিস্তা নদীর ওপর সেতু নির্মাণ নিয়ে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। খুঁটি নির্মাণের পর চার বছর পেরিয়ে গেলেও অর্থাভাবে সেতুর বাকি নির্মাণকাজে হাত দেওয়া হয়নি। এতে চরাঞ্চলের ছয় গ্রামের মানুষের উপজেলা সদর ও হারাগাছ পৌর এলাকায় যাতায়াতে দুর্ভোগ দূর হচ্ছে না।

হারাগাছ পৌর প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন জনপদ চর চতুরা, মায়ারচর, চর চারমাথা, চর পল্লীমারী, চর একতা ও চর নাজিরদহের বাসিন্দাদের জন্য বাংলাবাজার দক্ষিণ ঠাকুরদাস গ্রামের মোস্তারপাড় এলাকায় ৭৬ মিটার দীর্ঘ সেতুটি নির্মাণের পরিকল্পনা করে পৌর কর্তৃপক্ষ। উন্নয়ন তহবিলের অর্থায়নে কয়েক ধাপে সেতুটি নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়। ২০১৯ সালে প্রথম দরপত্রে প্রায় ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতুটির একাংশ নির্মাণের জন্য কার্যাদেশ পায় মেসার্স মামুন কনস্ট্রাকশন। প্রতিষ্ঠানটি ২০২০ সালে ৮০ ভাগ কাজ করে আর শেষ করেনি। এরপর ২০২০ সালের নভেম্বরে দ্বিতীয় দরপত্রে প্রায় ২৯ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতুর স্ল্যাব, বিম ও রেলিং নির্মাণের কাজ পায় নুর ইসলাম এন্টারপ্রাইজ। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি ২০২১ সালে ৫০ ভাগ নির্মাণকাজ শেষ করে। পৌর কর্তৃপক্ষ অর্থ বরাদ্দ দিতে না পারায় চার বছরেও দরপত্রের বাকি নির্মাণকাজ শুরু করেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

নুর ইসলাম এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী নুর আলম লাভলু বলেন, ‘নির্মাণাধীন সেতুটির কোনো ডিজাইন নেই এবং কাজের প্রাক্কলন (এস্টিমেট) অনুযায়ী বরাদ্দ করা অর্থের মিলও ছিল না। এ ছাড়া বিশেষ করে ওই সময় পৌর কর্তৃপক্ষ অর্থ পরিশোধে খুবই ঝামেলা করত। এ কারণে আমরা (ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান) দরপত্রের অর্ধেক কাজ করে আর শেষ করিনি।’

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, মরা তিস্তা নদীতে সেতুর খুঁটিগুলো দাঁড়িয়ে আছে। লোকজন নদীর মধ্য দিয়ে হেঁটে পার হচ্ছে।

বাংলাবাজার এলাকার বাসিন্দা নয়ন মনি বলেন, ‘সেতুটি নির্মাণের কাজ শুরুর পর দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। স্থানীয় লোকজন সেতুর পাশে পানিতে বালুর বস্তা ফেলে নদী পারাপার করছে।’

স্থানীয় বাসিন্দা সোলায়মান আলী বলেন, সেতু না থাকায় কৃষিপণ্য সহজে বাজারজাত করা যাচ্ছে না। চরাঞ্চলের কৃষকেরা উৎপাদিত পণ্য কম দামে পাইকারদের কাছে বিক্রি করে দেন।

চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী সুমাইয়া বলে, ‘নদীর পানি পার হয়ে স্কুলে যেতে পা পিছলে অনেক সময় বই-খাতা ভিজে যায়। বর্ষাকালে পানি বেড়ে গেলে অনেক পথ ঘুরে স্কুলে যেতে কষ্ট হয় আমাদের।’

হারাগাছ পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মো. হামিদুর রহমান বলেন, সরকারি উন্নয়ন তহবিলের অর্থায়নে কয়েকটি ধাপে মরা তিস্তা নদীর ওপর সেতুটি নির্মাণ করা হচ্ছে। বর্তমানে পৌর অর্থায়নে সেতুটির বাকি নির্মাণকাজ শেষ করা সম্ভব নয়। সেতুটির নির্মাণকাজ সমাপ্ত করতে ১০টি স্ল্যাব, রেলিং ও দুই পাড়ে প্রায় ১২০ মিটার অ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণে প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ টাকা প্রয়োজন।

পৌরসভার প্রকৌশলী মো. হামিদুর রহমান বলেন, সেতুর নির্মাণকাজ শেষ করতে যে অর্থের প্রয়োজন, সেই পরিমাণ অর্থ পৌরসভার নাই। তাই সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু করা যাচ্ছে না। জনস্বার্থে সেতুটির নির্মাণকাজ সমাপ্ত করতে সরকারিভাবে অর্থ বরাদ্দ চেয়ে ঢাকায় যোগাযোগ করা হচ্ছে।

বরাদ্দ পেলে টেন্ডারের মাধ্যমে সেতু ও অ্যাপ্রোচ সড়কের নির্মাণকাজ শেষ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে গেছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ

‘ফের ধর্ষণচেষ্টার ক্ষোভে’ বাবাকে খুন, ৯৯৯-এ কল দিয়ে আটকের অনুরোধ মেয়ের

আ. লীগের ক্লিন ইমেজের ব্যক্তিদের বিএনপির সদস্য হতে বাধা নেই: রিজভী

১৫ স্থাপনায় পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, আকাশেই ধ্বংসের দাবি ভারতের

আদালতের বিচারকাজে বাধা দেওয়ায় আইনজীবীর দণ্ড, ক্ষমা চেয়ে পার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত