Ajker Patrika

আজ মহারাজা স্কুলের মাইন ট্র্যাজেডি দিবস

দিনাজপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ জানুয়ারি ২০২২, ১০: ৪৭
আজ মহারাজা স্কুলের মাইন ট্র্যাজেডি দিবস

আজ ৬ জানুয়ারি, দিনাজপুর জেলার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এক শোকাবহ দিন। ১৯৭২ সালের এই দিনে দিনাজপুরের মহারাজা গিরিজানাথ হাইস্কুলের ট্রানজিট ক্যাম্পে ভয়াবহ মাইন বিস্ফোরণে পাঁচ শতাধিক বীর মুক্তিযোদ্ধা নিহত হন। মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তীকালে এত বড় ট্র্যাজেডির ঘটনা দেশে আর কোথাও ঘটেনি। 

দিবসটি পালন উপলক্ষে আজ স্মৃতি পরিষদ, দিনাজপুরের উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। 

জানা যায়, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে দেশ স্বাধীনের পর দিনাজপুর শহরের উত্তর বালুবাড়ীর মহারাজা হাইস্কুলে স্থাপন করা হয় মুক্তিযোদ্ধা ট্রানজিট ক্যাম্প। মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি সেনাদের পুঁতে রাখা এবং ফেলে দেওয়া মাইন ও গোলাবারুদ অপসারণের কাজে নেমে পড়েন। এ জন্য দিনাজপুর শহরের মহারাজা স্কুলে সমবেত হন দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়সহ আশপাশের কয়েকটি জেলার আট শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা। তাঁদের মধ্য থেকে কয়েকটি গ্রুপ সকালে বেরিয়ে পড়তেন পাকিস্তানি সেনাদের পুঁতে রাখা ও পড়ে থাকা মাইন, অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদের সন্ধানে। সন্ধ্যার দিকে উদ্ধারকৃত মাইন ও অস্ত্রশস্ত্র এনে জমা করা হতো মহারাজা স্কুলের মাঠের পশ্চিম দিকে মসজিদের পাশে খনন করা খালে। 

ধারণা করা হয়, ১৯৭২ সালের ৬ জানুয়ারি সন্ধ্যায় উদ্ধারকৃত অস্ত্র বাংকারে নামানোর সময় একজন মুক্তিযোদ্ধার হাত থেকে একটি মাইন পড়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে বাংকারের পুরো অস্ত্রভান্ডার বিস্ফোরিত হয়। ভয়ানকভাবে কেঁপে ওঠে দিনাজপুরের মাটি। আগুনের লেলিহান শিখায় আলোকিত হয়ে ওঠে গোটা শহর। এতে পাঁচ শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা শহীদ এবং বহুসংখ্যক মুক্তিযোদ্ধা আহত হন। 
 
দিনাজপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র ও স্মৃতি পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সফিকুল হক ছুটু বলেন, ঘটনার সময় আমি টেকনিক্যাল মোড়ে অবস্থান করছিলাম। সেখান থেকে আমি প্রথমে আকাশের দিকে একটি আগুনের গোলা দেখতে পাই। সঙ্গে সঙ্গেই ভয়ানকভাবে কেঁপে ওঠে পায়ের নিচের মাটি। দুর্ঘটনার পর শহরের সকল স্তরের মানুষ ঘটনাস্থলে গিয়ে জীবিত ও মৃতদের উদ্ধারে ঝাঁপিয়ে পড়েন। যাঁরা আহত ছিলেন তাঁদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। ওই সময় অনেকে মাঠে অবস্থান করছিলেন। অনেকে বিল্ডিংয়ের ভেতরে ছিলেন। যাঁরা ভেতরে ছিলেন তাঁদের অধিকাংশই মৃত্যুবরণ করেন। 

সফিকুল হক ছুটু আরও বলেন, ওই দিন মাইন বিস্ফোরণে শুধু মুক্তিযোদ্ধা নন, উত্তর বালুবাড়ী কুমারপাড়া মহল্লায় আরও ১৫ জন অধিবাসী মৃত্যুবরণ করেন। 

ভয়াবহ এই দিন পালন উপলক্ষে স্মৃতি পরিষদ প্রতিবছরের মতো এবারও বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে—সকালে চেহেলগাজী মাজারে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের গণসমাধি ও মহারাজা স্কুলের শহীদ স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ, বাদ আসর মহারাজা স্কুল জামে মসজিদে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় মিলাদ ও দোয়া মাহফিল, সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমিতে আলোচনা সভা ও মুক্তিযুদ্ধের গান। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সাপুড়ের রক্তে তৈরি হলো বিশ্বের সবচেয়ে কার্যকর অ্যান্টিভেনম

সাধারণ যাত্রীদের ভোগান্তি এড়াতে বিমানের নিয়মিত ফ্লাইটে দেশে ফিরবেন খালেদা জিয়া

আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের দেখলেই পুলিশে সোপর্দ করবেন: সামান্তা

কুষ্টিয়ায় দুই পুলিশকে আসামির হাতুড়িপেটা

১৭ বছর পর শাশুড়ির সঙ্গে দেশে ফিরছেন জোবাইদা রহমান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত