Ajker Patrika

খানসামায় মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তাকে ৪ ঘণ্টা অবরুদ্ধ রাখেন চেয়ারম্যান-মেম্বারেরা

খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ১১ জানুয়ারি ২০২৩, ১০: ৪৭
খানসামায় মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তাকে ৪ ঘণ্টা অবরুদ্ধ রাখেন চেয়ারম্যান-মেম্বারেরা

ইউনিয়ন পরিষদের মতামত ছাড়াই দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় ভিডব্লিউবি কর্মসূচির ২ হাজার ৬৫৯ জনের তালিকা তৈরির অভিযোগে উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তাকে অবরুদ্ধ করে অবস্থান নেন ছয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যেরা। পরে খানসামা থানার পুলিশের হস্তক্ষেপে অবস্থান কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন তাঁরা।

তালিকা পরিবর্তনের দাবিতে আজ মঙ্গলবার দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত তাঁকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। পরে উপজেলা প্রশাসন ও ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে আগামী রোববার (১৫ জানুয়ারি) বৈঠকের দিন নির্ধারণ করে ঘোষণা দিয়ে কর্মসূচি স্থগিত করেন তাঁরা। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, খানসামা উপজেলার ছয় ইউনিয়ন পরিষদের ৫৪ ওয়ার্ডে ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত দুস্থ ভিজিডি কার্যক্রমের আওতায় ২ হাজার ৬৫৯ জন দুস্থ নারী সুবিধা পাবেন। তাঁদের তালিকা ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন ভিডব্লিউবি কমিটির মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে উপজেলা কমিটিতে পাঠাবে। সেটি পরবর্তী সময়ে উপজেলা কমিটি যাচাই-বাছাই করে অনুমোদন দেবে। কিন্তু এই নিয়ম না মেনেই উপজেলা ভিডব্লিউবি যাচাই-বাছাই কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাশিদা আক্তার এবং উপজেলা ভিডব্লিউবি যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্যসচিব উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা নিরঞ্জন কুমার অটোমেশনের কথা বলে তালিকা অনুমোদন দিয়েছেন। 

এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান ফোরাম কমিটির সদস্য ও ভাবকী ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল আলম তুহিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ভিডব্লিউবি কার্যক্রমের তালিকা তৈরি না হওয়া পর্যন্ত আমরা উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা প্রশাসনের কার্যক্রম বয়কট করলাম। সেই সঙ্গে উপজেলা পরিষদের জানুয়ারি মাসের মাসিক সমন্বয়সভা বর্জন করলাম।’ 

খানসামা উপজেলা ইউপি চেয়ারম্যান ফোরাম কমিটির সভাপতি ও আঙ্গারপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তফা শাহ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যাচাই-বাছাই করে সঠিক দুস্থ ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি করার জন্য উপজেলা থেকে নির্দেশনা দেওয়া হলেও সেটি বাদ দিয়ে তাদের পছন্দমতো তালিকা প্রস্তুত করে অনুমোদন দেন ইউএনও ও উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা। এটি সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাচারিতা ও নিয়মবহির্ভূত। তাই এই তালিকা সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসনের কার্যক্রম আমরা বর্জন ঘোষণা করলাম।’ 

এ বিষয়ে মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা নিরঞ্জন কুমারের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি  রাজি হননি। তবে ইউএনওর চাপে তাঁরা এই তালিকা অনুমোদন দিয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন বলে দাবি ইউপি চেয়ারম্যানদের। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাশিদা আক্তার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এই তালিকা অনলাইনের মাধ্যমে বাছাই হয়েছে। পরবর্তী সময়ে সংশোধনের জন্য ইউপি চেয়ারম্যানদের বলা হলেও তাঁরা সঠিক সময়ে দিতে পারেননি। তাই নিয়ম অনুযায়ী চূড়ান্ত তালিকায় স্বাক্ষর দিয়েছি। তবে ইউপি চেয়ারম্যানদের কোনো আপত্তি থাকলে সেটি দুই পক্ষ বসে আলাপ-আলোচনা করা হবে।’ 

খানসামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চিত্তরঞ্জন রায় আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘খবর পেয়ে মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের বুঝিয়ে কর্মসূচি প্রত্যাহারের অনুরোধ করলে তাঁরা সেই কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন। পরে তাঁদের এই পরিস্থিতি নিরসনের জন্য ছয় ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য এবং মোবাইল ফোনে উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনওর সঙ্গে কথা বলে দুই পক্ষের বৈঠকের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ১৫ জানুয়ারি।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত