Ajker Patrika

তিস্তায় আকস্মিক পানি বৃদ্ধি, অর্ধশত বসতবাড়ি নদীগর্ভে

সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২১, ১৪: ২৪
তিস্তায় আকস্মিক পানি বৃদ্ধি, অর্ধশত বসতবাড়ি নদীগর্ভে

উজানের ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে তিস্তা নদীতে আকস্মিক বেড়ে যায় পানি। অস্বাভাবিক হারে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীতীরবর্তী ছয় ইউনিয়নে প্রায় অর্ধশত বসতবাড়ি বিলীন হয়েছে নদীগর্ভে। পানির নিচে তলিয়ে গেছে প্রায় ৫০ হেক্টর জমির ফসল। ঝুঁকির মুখে পড়েছে কমিউনিটি ক্লিনিক, সড়কসহ বিভিন্ন স্থাপনা। ফলে আতঙ্ক আর উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে নদীতীরবর্তী এলাকাবাসীর। তাঁদের দাবি, তাঁদের বেঁচে থাকার অবলম্বন রক্ষার্থে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হোক। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলায় নদীবিধৌত ইউনিয়ন হচ্ছে ছয়টি—হরিপুর, বেলকা, শ্রীপুর, কাপাসিয়া, তাঁরাপুর ও চণ্ডীপুর। অস্বাভাবিক হারে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তিস্তা নদীর তীরবর্তী কয়েকটি গ্রামে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে হরিপুর ইউনিয়নের চর মাদারীপাড়া, কারেন্ট বাজার, মাঝের চর ও গেঞ্জিহাটি গ্রামে। এতে নদীতে বিলীন হয়েছে প্রায় অর্ধশত পরিবারের বসতবাড়ি ও বিভিন্ন স্থাপনা। তারা গবাদিপশুসহ আশ্রয় নিয়েছে বিভিন্ন বাঁধ ও স্বজনদের বাড়িতে। তলিয়ে গেছে ধান, মরিচসহ বিভিন্ন ফসলি জমি। ঝুঁকিতে আছে চর মাদারীপাড়া কমিউনিটি ক্লিনিক ও বাঁধের সড়কসহ বিভিন্ন স্থাপনা। স্থানীয়দের দাবি, দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে রাক্ষুসে তিস্তা ভয়াবহ রূপ নেবে। 

ভাঙনের কবলে পড়া হরিপুর ইউনিয়নের কাইম মাদারীপাড়া গ্রামের এরশাদ মিয়া জানান, গত বুধবার সন্ধ্যায়ও তাঁর বসতবাড়ির প্রায় ৫০০ ফুট দূরে নদী ছিল। রাত পোহালেই বাড়ি সরিয়ে নেবেন তিনি। কিন্তু রাত ৩টার দিকে হঠাৎ ভাঙনের শব্দ। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগে নদীতে ডুবে যায় তার আধা পাকা বাড়িটি। পানিতে ভেসে যায় তাঁর দুই গরু, এক ছাগল ও শতাধিক হাঁস-মুরগি। ছেলেমেয়ে ও স্ত্রী ছাড়া কিছুই বাঁচাতে পারেননি তিনি।

হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এসব এলাকা পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনের পর ইউপি চেয়ারম্যান নাফিউল ইসলাম জিমি বলেন, হঠাৎ তিস্তায় অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধি। ক্ষতির পরিমাণটা অনেক হবে। উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে এ নিয়ে কথা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা দিতে তালিকা করা হচ্ছে। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ-আল-মারুফ বলেন, `সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানদের তালিকা করতে বলা হয়েছে। পেলেই শুকনো খাবার ও চাল বিতরণ করা হবে। নদীগর্ভে যাদের বসতবাড়ি বিলীন হয়েছে, তাদের আলাদা একটি তালিকা চেয়েছি। ডি ফরম পূরণ করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সেগুলো পাঠানো হবে।'

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু রায়হানের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান পানির গতি ও উচ্চতার কথা। তিনি বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার তিস্তা নদীর সুন্দরগঞ্জ পয়েন্টে ১৫০ সেন্টিমিটার বেড়ে ২৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে। তবে এখন পানি কমতে শুরু করেছে। 

আবু রায়হান আরও বলেন, `হরিপুরে আমাদের লোক আছে। কোথাও ভাঙন দেখা দিলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়।' তবে আপাতত বন্যার কোনো আশঙ্কা নেই বলেও জানান এই কর্মকর্তা।  

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত