Ajker Patrika

শেরপুরে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, আহত ১৫ 

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি
শেরপুরে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, আহত ১৫ 

বগুড়া শেরপুরে কোটা সংস্কারের আন্দোলনের সঙ্গে পুলিশের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার পুলিশসহ কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছেন। আজ বুধবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত এ সংঘর্ষ চলে। এতে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। 
 
শিক্ষার্থীরা জানান, সারা দেশে চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংহতি জানাতে গতকাল মঙ্গলবার রাত থেকেই ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপ থেকে আজকের কর্মসূচির কথা জানানো হয়। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বুধবার সকাল ১১টা থেকে শেরপুর শহীদি আলিয়া মাদ্রাসার সামনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সমবেত হতে থাকে। তাঁরা মিছিল শুরু করতে চাইলে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। 

বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংখ্যাও বাড়তে থাকে। তাঁরা মিছিল নিয়ে ধুনট মোড়ে থেকে বাসস্ট্যান্ডের দিকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করলে আবারও পুলিশ তাঁদের বাধা দেয়। মুহূর্তের মধ্যেই আন্দোলনকারীদের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে যায়। তাদের প্রতিবাদের মুখে পুলিশ পিছু হাটে। শিক্ষার্থীদের মিছিল মহাসড়ক অবরোধ করে বাসস্ট্যান্ড হয়ে উপজেলা পরিষদের সামনে ঘুরে আবারও শেরুয়া বটতলার দিকে যায়। প্রচণ্ড গরমে প্রায় ৫ কিলোমিটার মিছিল করে আন্দোলনকারীরা ক্লান্ত হয়ে যায়। এ সময় পুলিশ ধুনট মোড়ে অবস্থান নেয়। প্রায় আধা ঘণ্টা পরে শিক্ষার্থীরা আবারও ধুনট মোড়ে এসে মহাসড়ক অবরোধ করে। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। 
 
শিক্ষার্থীদের স্লোগানে চারিদিক মুখরিত হয়। এ সময় শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমন জিহাদী, বগুড়ার শেরপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সজীব শাহরিন, শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম সহ পুলিশ সতর্ক অবস্থা নেয়। তারা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক থেকে সরে যেতে বলে। শিক্ষার্থীরা তাঁদের অবস্থানে অনড় থাকলে পুলিশ লাঠি চার্জ শুরু করলে সংঘর্ষ শুরু হয়। 
 
সংঘর্ষ শুরু হলে আন্দোলনকারীরা পুলিশের দিকে ঢিল ছুড়তে শুরু করে। এ সময় ওসি রেজাউল করিম আহত হলে তাঁকে শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশও পাল্টা রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাস ও শটগানের গুলি ছোড়ে। এতে প্রায় ১০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়। এ ছাড়াও রুহুল আমিন নামে একজন সাংবাদিক, তিনজন পুলিশ সদস্য ও বেশ কিছু পথচারী ঢিলের আঘাতে আহত হয়। আহত আন্দোলনকারীদের মধ্যে মারুফ, জিম, রুহুল আমিন, নজরুল ইসলাম, সুজন, জীবন, নাছির উদ্দিন ও বাবুর নাম জানা গেছে। 

পুলিশের গুলিতে আহত অবস্থায় নাছির উদ্দিন ও বাবুকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বগুড়ার শহিদ জিউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে শেরপুর থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে। এ ছাড়াও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ছোড়া ঢিলে আব্দুস সামাদ নামের এক পথচারী এবং রহমত আলী ও নজরুল ইসলাম নামে দুই দোকানি আহত হয়েছেন। 

একপর্যায়ে আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পুলিশ ধুনট মোড়ে অবস্থান নিলে শিক্ষার্থীরা আবারও বাসস্ট্যান্ডে মহাসড়ক অবরোধ করে। পুলিশ আবারও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এরপরে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়। 
 
শিক্ষার্থীদের সড়কে মিছিল। ছবি: আজকের পত্রিকানাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী জানান, মঙ্গলবার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার কারণে আজ ভোরে তাঁদের তিনজনকে পুলিশ উঠিয়ে নিয়ে যায়। পরে মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আজকে মতো তাদের কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। তবে তাঁদের এই বিক্ষোভ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

এ বিষয়ে ইউএনও সুমন জিহাদী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শেরপুর থানার পাশাপাশি বগুড়া থেকে এক প্লাটুন পুলিশ ও এক প্লাটুন র‍্যাব মাঠে আছে। জানগণের জানমালের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাস ও শটগানের গুলি ব্যবহার করেছে। সবকিছু প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে আছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ফোন-ইন্টারনেট ভাতা পাচ্ছেন মাঠ প্রশাসনের সব কর্মচারী

ভাড়া বাড়িতে চলা ১৬ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিসহ সব শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ

জোবাইদার নিরাপত্তার নামে প্রতিবেশীদের বিরক্ত না করার নির্দেশ তারেক রহমানের

শান্ত যে কারণে টি-টোয়েন্টি দলে, মিরাজ কেন নেই

মানিকগঞ্জে সালিসে বিএনপি নেতার নির্দেশে পাঁচ ভাইকে জুতাপেটা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত