Ajker Patrika

কর্মচারী সংকটে ক্যাফেটেরিয়ায় রাতের খাবার বন্ধ, ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা 

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২৩: ৩১
কর্মচারী সংকটে ক্যাফেটেরিয়ায় রাতের খাবার বন্ধ, ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা 

কর্মচারী সংকটে এক বছর ধরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার রাতের খাবার বন্ধ রয়েছে। এদিকে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরীণ খাবারের দোকানগুলো উচ্ছেদের কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাস থেকে হলে ফেরার আগেই ডাইনিংয়ে খাবার শেষ হওয়ায় দুর্ভোগের পাশাপাশি অতিরিক্ত খরচ গুনতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। ক্যাফেটেরিয়া প্রশাসক বলছেন, নতুন কর্মচারী নিয়োগ হলেই রাতের খাবার চালু করা হবে। 

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় প্রতিদিন সহস্রাধিক শিক্ষার্থী খেতে আসেন। এখানে একজন ম্যানেজার ও পাঁচজন রাঁধুনিসহ মোট ১৮ জন কর্মচারী রয়েছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। ২০২০ সালের মার্চে করোনার কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়ার আগে সকাল, দুপুর ও রাতের খাবারের পাশাপাশি বিকেলেও চা-নাশতার ব্যবস্থা ছিল। রাত ১০টা পর্যন্ত ক্যাফেটেরিয়া চালু থাকত। রাতের মেন্যু হিসেবে বিভিন্ন প্রকার ভর্তা ও ভাজিসহ ২০ টাকার একটি খাবার প্যাকেজ পরিবেশন করা হতো। কিন্তু গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর ক্যাফেটেরিয়া পুনরায় চালুর পর রাতের প্যাকেজটি বন্ধ করা হয়। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা আড্ডা দেয়। ফলে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরীণ দোকান ও কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় তাঁরা রাতের খাবার খেতেন। কিন্তু দীর্ঘদিন বন্ধ রয়েছে ক্যাফেটেরিয়ার রাতের খাবার। এদিকে গত মাসে ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে অভ্যন্তরীণ খাবারের দোকানগুলো উচ্ছেদ করে প্রশাসন। এতে করে চরম দুর্ভোগে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। 
 
শিক্ষার্থীরা বলছে, ক্যাম্পাস থেকে হলে ফিরতে একটু দেরি হলেই ডাইনিংয়ে খাবার পাওয়া যায় না। ফলে তাদেরকে ক্যাম্পাসের বাইরের হোটেলগুলোতে চড়া দামে খাবার খেতে হয়। এ ছাড়া খাবার শুরু হওয়ার স্বল্প সময়ের মধ্যে শেষ হয়ে যায় দুপুরের ২৮ টাকা মূল্যের সাধারণ মিল। ফলে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে স্পেশাল খাবার খেতে হয়। এতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হচ্ছে বলে জানান শিক্ষার্থীরা। 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী অরুণ কুমার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আগে যখন ক্যাফেটেরিয়ায় রাতের খাবার চালু ছিল তখন নির্দ্বিধায় ক্যাম্পাসে আড্ডা দিতে পারতাম। কারণ তখন খাবার নিয়ে কোনো চিন্তা ছিল না। কিন্তু এখন বন্ধুদের সঙ্গে অল্প কিছুক্ষণ আড্ডা দেওয়ার পরেই মনে হয়, হলে তো খাবার পাব না।’ 
 
বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী ও সাংস্কৃতিক কর্মী সুমন ইসলাম বলেন, ‘আগে আমাদের রিহার্সাল শেষ করতে যখন রাত হয়ে যেত তখন সবাই মিলে ক্যাফেটেরিয়ায় একসঙ্গে খেতাম। কিন্তু করোনার পর রাতের খাবারটি বন্ধ হওয়ায় আমরা আর দীর্ঘ সময় গান-বাজনা করতে পারি না। সন্ধ্যার পরপরেই সবাই বলতে শুরু করে ভাই, হলে যেতে হবে। নইলে খাবার পাব না। এতে ক্যাম্পাসে সাংস্কৃতিক চর্চা ব্যাহত হচ্ছে।’ 

ক্যাফেটেরিয়ার প্রশাসক একেএম আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ইদানীং দেখতে পাচ্ছি ক্যাফেটেরিয়ায় আগের তুলনায় অনেক বেশি শিক্ষার্থী খেতে আসছেন। কিন্তু সেই অনুপাতে আমাদের কর্মচারী নেই। মূলত এই সংকটের কারণে আমরা রাতের খাবার বন্ধ রেখেছি। আর বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ থাকার কারণে চাইলেও লোকবল বাড়াতে পারছি না। আমরা লোকবল নিয়োগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তাঁরা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। নতুন কর্মচারী নিয়োগ দিলে আমরা ফের রাতের খাবার চালু করব।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত