Ajker Patrika

১১ এনজিও থেকে ঋণ নেওয়া কৃষকের আত্মহত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলায় ঋণের ফাঁদে জর্জরিত এক কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। তিনি ১১টি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) ও স্থানীয় সুদ কারবারিদের কাছ থেকে ঋণ নিয়েছিলেন। এই কৃষকের নাম আকবর শাহ (৫০)। তিনি খাড়ইল গ্রামের লোকমান হোসেনের ছেলে।

আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে খাড়ইল গ্রামের পানের বরজ থেকে তাঁর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। পরিবার জানায়, আকবর ও তাঁর স্ত্রী সেলিনা বিবি প্রায় ৬ থেকে ৭ লাখ টাকা ঋণ করেছিলেন। এর মধ্যে শুধু এনজিও থেকেই তাঁরা ৪ লাখ টাকার বেশি ঋণ নেন। কিন্তু এবার পান চাষে লোকসান হওয়ায় আকবর শাহ কিস্তি শোধ করতে পারছিলেন না।

নিহতের ছেলে সুজন শাহ বলেন, ‘আমাদের এক বিঘা জমির পান বরজের আয়েই সংসার চলত। এবার পান বিক্রি করে কোনো লাভ হয়নি। প্রতি সপ্তাহে ৫ হাজার টাকা কিস্তি দিতে হতো। কিন্তু এনজিওর লোকজন প্রতিদিন এসে চাপ দিতেন। ঋণের চাপে পড়ে বাবা আত্মহত্যা করেছেন।’

পরিবারের তথ্য অনুযায়ী, আকবর ব্র্যাক, আশা, প্রশিকা, ভিলেজ এডুকেশন রিসোর্স সেন্টার (ভার্ক), ডাম ফাউন্ডেশন ফর ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট (ডিএফইডি), শাপলা গ্রাম উন্নয়ন সংস্থা, রিসোর্স ইন্টিগ্রেশন সেন্টার (রিক), ইকো সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ইএসডিও), গ্রামীণ প্রচেষ্টা, পল্লিমঙ্গল কর্মসূচি (পিএমকে) এবং গ্রামীণ উন্নয়নকেন্দ্র (গাক) থেকে ঋণ নিয়েছিলেন। এসব এনজিওর পাসবই আছে বাড়িতে। তবে কোনটিতে কত ঋণ, সবই বর্তমানে চালু আছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে মোহনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, আকবর শাহ কৃষিজীবী মানুষ ছিলেন। এ বছর পান বরজে লোকসান হওয়ায় তিনি ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হন। তা নিয়ে হতাশা ছিল। এই হতাশা থেকে রোববার দিবাগত রাতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।

ওসি আরও বলেন, ‘আকবরের ৬-৭টি এনজিওতে ঋণ চলছিল বলে শুনেছি। সপ্তাহে ৫ হাজার টাকা কিস্তি লাগত। তাঁর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।’

প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার সকালে রাজশাহীর পবা উপজেলার বামনশিকড় গ্রামে একই পরিবারের চারজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। ঋণের চাপে ও খাবারের অভাবে মিনারুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি তাঁর স্ত্রী, ছেলে ও শিশুকন্যাকে হত্যার পর আত্মহত্যা করেন বলে চিরকুটে লিখে যান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত