Ajker Patrika

সিরাজগঞ্জ-৫: নির্বাচনে হেরে দুকূল হারালেন সাবেক মন্ত্রী লতিফ বিশ্বাস

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ০৮ জানুয়ারি ২০২৪, ১৯: ১৫
সিরাজগঞ্জ-৫: নির্বাচনে হেরে দুকূল হারালেন সাবেক মন্ত্রী লতিফ বিশ্বাস

দুকূল হারালেন সাবেক মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস। এমপি হওয়ার আশায় সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সিরাজগঞ্জ-৫ (বেলকুচি-চৌহালী) আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন সাবেক এই মন্ত্রী। তবে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আব্দুল মমিন মণ্ডলের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে পরাজিত হয়ে দুকুল হারালেন আব্দুল লতিফ বিশ্বাস।

এতে হতাশায় ভুগছেন আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের কর্মী-সমর্থকেরা। তাঁর পরাজিত হওয়ার কারণে এই এলাকায় আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের রাজনীতির পতন দেখছেন অনেকে। দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে আব্দুল লতিফ বিশ্বাস স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন তিনি।

সিরাজগঞ্জ-৫ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত আব্দুল মমিন মণ্ডল পেয়েছেন ৭৭ হাজার ৪২২ ভোট। আর সাবেক মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রী আব্দুল বিশ্বাস ঈগল প্রতীকে পেয়েছেন ৭৩ হাজার ১৮৩ ভোট।

এই আসনে আব্দুল বিশ্বাসের ঈগল প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া গিয়েছিল আগে থেকেই। কে হচ্ছেন এই আসনের সংসদ সদস্য তা নিয়ে চলছে আলোচনা। সাবেক এই মন্ত্রী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় ভোটের সকল হিসাব-নিকাশ পাল্টে যায়। কে বিজয়ী হবেন তা কেউ বলতে পারছিলেন না।

দলীয় নেতা–কর্মীরা দুভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। নির্বাচন শেষে ভোট গণনার সময় উভয় সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা যায়। পক্ষে বিপক্ষে চলে ফেসবুকে নানান পোস্ট। জয় পরাজয় ভর করে উভয় পক্ষেই। অবশেষে বিজয়ের হাসি হাসেন আব্দুল মমিন মণ্ডল।

সিরাজগঞ্জ-৫ আসন এক সময়ে দখলে ছিল সাবেক মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রী আব্দুল বিশ্বাসের। তিনি এই আসন থেকে ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর আব্দুল লতিফ বিশ্বাস মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি একক নেতৃত্ব দেন এই আসনে। মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেও ২০১৪ সালে দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত হন আব্দুল লতিফ বিশ্বাস। দলীয় মনোনয়ন পান শিল্পপতি আব্দুল মজিদ মণ্ডল। এরপর থেকে এই আসন নিয়ন্ত্রণ চলে যায় আব্দুল মজিদ মণ্ডলের পরিবারের হাতে।

এখান থেকে বিরোধ শুরু হয় লতিফ বিশ্বাস ও আব্দুল মজিদ মণ্ডলের পরিবারের। ২০১৮ সালে এই আসনের মনোনয়ন পান আব্দুল মজিদ মণ্ডলের ছেলে আব্দুল মমিন মণ্ডল। পরে আব্দুল লতিফ বিশ্বাসকে বানানো হয় সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। বিভক্ত হয়ে পড়ে দলের নেতা–কর্মীরা। ২০২০ সালের ২২ নভেম্বর আব্দুল লতিফ বিশ্বাসকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি দেয় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ।

২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য এই আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন পত্র উত্তোলন করেন বর্তমান সংসদ সদস্য আব্দুল মমিন মণ্ডল ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস। দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয় আব্দুল মমিন মণ্ডলকে। আর মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন আব্দুল লতিফ বিশ্বাস। নির্বাচনে পরাজিত হয়ে দুকুল হারালেন আব্দুল লতিফ বিশ্বাস।

আর আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল হাকিম বলেছেন দলের ঊর্ধ্বে কেউ না তা আবারও প্রমাণিত হলো। নির্বাচনে পরাজিত হয়ে এই অঞ্চলে আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের রাজনীতি পতন হয়েছে।

তবে আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের স্ত্রী ও বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশানুর বিশ্বাস বলেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আব্দুল লতিফ বিশ্বাস হারলেও সাধারণ মানুষের মনের মাঝে রয়েছে তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত