Ajker Patrika

চীনা অ্যাপের ফাঁদ: ই-মুভির রাজশাহী এজেন্টের বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
চীনা অ্যাপের ফাঁদ: ই-মুভির রাজশাহী এজেন্টের বিরুদ্ধে মামলা

বাংলাদেশ থেকে কোটি কোটি টাকা লুটে নেওয়া চীনা অ্যাপ ই-মুভি প্ল্যানের রাজশাহীর এজেন্ট আজমল হুদা মানিকের (৩৬) বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। প্রতারিত একজন গ্রাহক আজ রোববার দুপুরে রাজশাহী মহানগরীর চন্দ্রিমা থানায় বাদী হয়ে মামলাটি করেন। 

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা এ মামলায় আজমল হুদা মানিক ছাড়াও আরও দুজনকে আসামি করা হয়েছে। তাঁরা হলেন—মো. সিয়াম (৩৫) ও এনামুল হক (৪২)। মামলার প্রধান আসামি আজমল হুদা মানিকের বাড়ি নওগাঁর মান্দা উপজেলার বিলউথরায় গ্রামে। 

চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মাসুদ পারভেজ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

ওসি জানান, মামলার বাদী জুয়েল রানা টিটু (২৭)। তাঁর বাড়ি শহরের পবা নতুনপাড়া মহল্লায়। তাঁর অভিযোগ, ই–মুভি প্ল্যান অ্যাপের এজেন্ট আজমল হুদা মানিক ও তাঁর দুই সহযোগী তাঁকে—অ্যাপটিতে বিনিয়োগ করে সিনেমার টিকিট কিনলেই প্রতিদিন লাভ আসতে থাকবে—এই প্রলোভন দেন। স্বল্প সময়ে বিনিয়োগ উঠে আসবে বলেও জানান তাঁরা। 

মানিকের কথামতো দেড় লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন। তিনি কিছুদিন লাভের টাকাও পেয়েছেন। তবে গত ১২ ফেব্রুয়ারি অ্যাপটি বন্ধ হয়ে গেছে। এতে তিনি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাঁর পরিচিত অনেক বেকার যুবক লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ই–মুভি প্ল্যান তাদের টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে। তাই তিনি এ মামলা করছেন। 

ওসি জানান, মামলার একজন তদন্ত কর্মকর্তা নিযুক্ত করা হয়েছে। পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিটের সহায়তা নিয়ে মামলার তদন্ত এগিয়ে নেওয়া হবে। আসামিদেরও গ্রেপ্তার করা হবে। 

গত বছরের সেপ্টেম্বরের দিকে গুগল প্লে স্টোরে চীন থেকে অবমুক্ত করা হয় ই–মুভি প্ল্যান অ্যাপ। এই অ্যাপে সর্বনিম্ন ২ হাজার টাকায় একটি হিসাব খুলে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা দিলেই তা ব্যবহারকারীর হিসাবে মার্কিন ডলারে দেখাত। সেই ডলার দিয়ে অ্যাপে বিভিন্ন দেশের সিনেমার টিকিট কিনলেই লভ্যাংশ দেওয়া হতো। বিনিয়োগ করা টাকা উঠে যেত এক মাসেই। 

একসঙ্গে ৩ হাজার ডলার বিনিয়োগে এক মাসে লাভ দেখানো হতো ৩৬০ গুণ বেশি। কম সময়ে ধনী হওয়ার এই ফাঁদে পড়ে রাজশাহীসহ দেশের কয়েক হাজার মানুষ টাকা হারিয়েছেন। গ্রাহকেরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই ১২ ফেব্রুয়ারি ই-মুভি প্ল্যান বন্ধ হয়ে যায়। এই অ্যাপের সঙ্গে জড়িত কয়েকজন চীনা নাগরিক। গত ৭ জানুয়ারি তাঁরা ঢাকায় এসেছিলেন। 

ই-মুভি প্ল্যান বন্ধ হওয়ার পর এর মালিক পরিচয় দিয়ে এলিস নামের এক নারী টেলিগ্রাম গ্রুপে গ্রাহকদের উদ্দেশে লেখেন, ‘টাকা কেলেঙ্কারির জন্য আমরা কমই দুঃখিত! নতুন কোম্পানি করে আবার ফিরব। দয়া করে পরেরবার এত বড় অঙ্কের বিনিয়োগ করবেন না। আমরা ৫০০ কোটি টাকা পর্যন্ত কেলেঙ্কারি করি। সবাইকে বিদায়।’ এই বার্তা দেখে গ্রাহকেরা বুঝেছেন যে, তারা এক টাকাও ফেরত পাচ্ছেন না। তাই তাঁরা খুঁজছেন এজেন্টদের। গ্রাহকদের অভিযোগ, ই-মুভির প্রতারক চক্রের সঙ্গে স্থানীয় এজেন্টদেরও যোগসূত্র আছে। 

সারা দেশেই জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ই-মুভি প্ল্যানের এজেন্ট ছিল। রাজশাহীর এজেন্ট আজমল হুদা মানিক রাজশাহী নগরীর শিরোইল কলোনির সাড়ে ৩ নম্বর গলির এক ভাড়া বাড়িতে অফিস খুলেছিলেন। ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে এ অফিসে তালা ঝুলছে। তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরও বন্ধ। রাজশাহীর অনেক গ্রাহক মানিকের গ্রামের বাড়ি গিয়ে তাঁর খোঁজ পাননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

নির্দেশনা মানেননি পাইলট, মদিনা-ঢাকা ফ্লাইটকে নামতে হলো সিলেটে

ভারত–বাংলাদেশ বাণিজ্য বিধিনিষেধের মূল্য গুনছেন ব্যবসায়ীরা

গায়ে কেরোসিন ঢেলে কলেজছাত্রীর আত্মহনন, পলাতক ইমাম গ্রেপ্তার

সরকারি মাধ্যমিকের সহকারী শিক্ষকেরা পাচ্ছেন গেজেটেড মর্যাদা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত