Ajker Patrika

কাউন্সিলর শাহুর বিরুদ্ধে অবৈধ টাকার পাহাড় গড়ার অভিযোগ, মামলা করল দুদক

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ০১ জানুয়ারি ২০২৪, ১৬: ৩৭
কাউন্সিলর শাহুর বিরুদ্ধে অবৈধ টাকার পাহাড় গড়ার অভিযোগ, মামলা করল দুদক

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শাহাদত আলী শাহুর বিরুদ্ধে অবৈধ টাকার পাহাড় গড়ে তোলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। একই অভিযোগ তাঁর স্ত্রী নাজমা আলীর বিরুদ্ধেও। তাঁদের বিষয়ে অনুসন্ধান শেষে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলা করেছে। গতকাল রোববার দুদকের সমন্বিত রাজশাহী জেলা কার্যালয়ে দুজনের বিরুদ্ধে আলাদা দুটি মামলা করা হয়।

দুদকের রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা দুটি করেছেন। মামলা দুটির আসামি শাহাদত আলী শাহু ও নাজমা আলী নগরীর উত্তর নওদাপাড়া এলাকার বাসিন্দা। ওই এলাকায় দুজনের নামেই বেশ কয়েকটি বহুতল আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন রয়েছে। রাসিকের সবচেয়ে ধনী কাউন্সিলর এই শাহাদত আলী শাহু।

গত বছরের জুনে অনুষ্ঠিত সিটি নির্বাচনে শাহু তাঁর হলফনামায় নিজের নামে দুটি তিনতলা আবাসিক ভবন, একটি পাঁচতলা বাণিজ্যিক ভবন, একটি পাঁচতলা আবাসিক ভবন এবং দুটি দোতলা আবাসিক ভবন দেখান। এ ছাড়া স্ত্রীর নামে একটি ১০ তলা বাণিজ্যিক ভবন, একটি ছয়তলা আবাসিক ভবন এবং একটি পাঁচতলা নির্মাণাধীন ভবন দেখান। নিজের নামে ২১ বিঘা ও স্ত্রীর নামে সাড়ে ৬ বিঘা জমিও দেখান তিনি।

ওই সময় শাহুর হাতেই নগদ ৫ কোটি ৬০ লাখ ৩৭ হাজার ৫১২ টাকা এবং ব্যাংকে ৩ কোটি টাকা জমা দেখান। স্ত্রীর কাছে নগদ দেখান ৩ লাখ ৮৮ হাজার ৯০০ টাকা। শাহু কৃষিখাত থেকে বছরে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা, ভাড়া থেকে ১৪ লাখ ৪৭ হাজার ২৫৮ টাকা, ব্যবসা থেকে ৮৯ লাখ ৬৬ হাজার ৪০০ টাকা, শেয়ার থেকে ৩৪ হাজার ৫৫৬ টাকা এবং বিলবোর্ড ভাড়া থেকে সাড়ে ৪ লাখ টাকা আয় দেখান। শাহু তাঁর স্ত্রীর নামে বার্ষিক আয় দেখান আরও প্রায় ৮ লাখ টাকা।

কয়েক মাস আগে শাহুর সম্পদের খোঁজে নামে দুদক। গত বছরের ১৪ আগস্ট শাহুর কার্যালয় ও বাড়িতে অভিযান চালান দুদক কর্মকর্তারা। সেদিন গণপূর্ত বিভাগের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে দুদক শাহুর বাড়ি ও মার্কেটের আয়তন পরিমাপ করে নির্মাণ ব্যয় বের করে।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, অবৈধ সম্পদ অর্জনের তথ্য পেয়ে কাউন্সিলর শাহু ও তাঁর স্ত্রী নাজমা আলীর বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। একপর্যায়ে দুজনকে তাঁদের সম্পদ বিবরণী দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়। তাতে কাউন্সিলর শাহু তাঁর নামে ৯ কোটি ৬৮ লাখ ৫৩ হাজার ৫০৪ টাকার এবং নাজমা তাঁর নামে ১ কোটি ৯৬ লাখ ৫৪ হাজার ৩৭৬ টাকার সম্পদ দেখান।

তবে অনুসন্ধানে দুদক দেখে, শাহুর নামেই ১১ কোটি ৯৩ লাখ ১৫ হাজার ৫০৪ টাকার এবং তাঁর স্ত্রী নাজমা আলীর নামে ২ কোটি ৩৬ লাখ ৩৪ হাজার ৬২৬ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ আছে। এ ক্ষেত্রে শাহু ২ কোটি ২৪ লাখ ৬২ হাজার এবং তাঁর স্ত্রী নাজমা ৩৯ লাখ ৮০ হাজার ২৪৯ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেন। তথ্য গোপন করে তাঁরা শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

দুদক আরও জানায়, মোট সম্পদের মধ্যে কাউন্সিলর শাহুর ৭ কোটি ২৮ লাখ ৫১ হাজার ৫০৩ টাকার সম্পদই আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ। আর তাঁর স্ত্রীর আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ সম্পদ আছে ১ কোটি ৬ লাখ ৬ হাজার ৯২৬ টাকার। অর্থাৎ মোট সম্পদের বড় অংশই তাঁরা অবৈধ পন্থায় অর্জন করেছেন। তাতে তাঁরা দুদক আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। দুটি মামলাতেই দুজনের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং দুদকের কাছে তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

দুদকের এই মামলার বিষয়ে কথা বলতে কাউন্সিলর শাহুর মোবাইলে ফোন করা হয়। তাঁর অফিসের কর্মচারী মো. রিপন ফোন ধরে জানান, কাউন্সিলর এখন অফিসে নেই। কথা বলা যাবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গভর্নর আমাকে বাধ্যতামূলক ছুটি দেওয়ার কে: বিএফআইইউর প্রধান শাহীনুল

সেই রুহুল আমিনের বসুন্ধরা, বনানী ও উত্তরার জমিসহ ৫০০ কোটি টাকার সম্পত্তি ক্রোক

ঠাকুরগাঁওয়ের ৩টি আসনেই জয়ী হবে জামায়াত: মাওলানা হালিম

৬১৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ: এক্সিম ব্যাংকের নজরুল ইসলাম মজুমদারসহ ৩০ জনের নামে মামলা

আক্কেলপুরে ‘একঘরে’ করে রাখা দিনমজুরকে মারধর, থানায় মামলা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত