Ajker Patrika

মামলা থেকে আ. লীগ কর্মীর নাম কাটতে টাকা চাওয়ার অভিযোগ, ছাত্রদল নেতাকে অব্যাহতি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী    
আপডেট : ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৪: ৪৩
অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা সাইমন রেজা। ছবি: সংগৃহীত
অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা সাইমন রেজা। ছবি: সংগৃহীত

টাকার বিনিময়ে মামলার অভিযোগপত্র থেকে নাম বাদ দেওয়া হবে—আসামির সঙ্গে এমন ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পর রাজশাহীর এক ছাত্রদল নেতাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। অব্যাহতি পাওয়া এই নেতার নাম সাইমন রেজা। তিনি নগরের বোয়ালিয়া (পূর্ব) থানা ছাত্রদলের সদস্য ছিলেন।

গতকাল শুক্রবার রাতে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সাইমনকে অব্যাহতির কথা জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হলো। ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছেন।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার নগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মাকসুদুর রহমান সৌরভ ফেসবুকে কয়েকটি অডিও ফাঁস করেন, যেখানে সাইমন রেজার মতো হুবহু কণ্ঠের একজনকে আসামির কাছ থেকে টাকা চাইতে শোনা যায়।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় ছাত্র–জনতার ওপর হামলার ঘটনায় সাইমন রেজা গত ২৭ অক্টোবর বোয়ালিয়া থানায় মামলা করেন। এ মামলায় পায়েল নামের এক আসামি আছেন, তিনি আওয়ামী লীগ কর্মী ও পুলিশের সোর্স হিসেবে পরিচিত। দাবি করা হচ্ছে, এই পায়েলের কাছেই টাকা চেয়েছেন সাইমন।

ছাত্রদল নেতা সৌরভ সাতটি অডিও প্রকাশ করেন ফেসবুকে। অডিওতে শোনা যাচ্ছে, সাইমন রেজার মোবাইল নম্বরে কল করা হচ্ছে। কথোপকথনে শোনা যায়, একজন বলছেন, ‘আমি ১০ হাজার টাকার মতো রেডি করে ফেলেছি। আর ১৫ হাজার টাকা, আরও তো দুই দিন টাইম নেওয়া আছে। আমি যেদিন টাকা দিব, সেদিনই কোর্ট থেকে নামটা তুলে দিবেন না ভাইয়া?’ অপরজন তখন বলেন, ‘আপনার কোনো সমস্যা হবে না। আপনি দোকানে বসবেন। আপনার কোনো সমস্যা হলে আমি আছি।’

আরেক অডিওতে একজন বলছেন, ‘আপনাকে একটা নাম্বার দিচ্ছি, ওখানে আপনি ১০ মেরে দিয়েন। আপনি দোকান করবেন। যদি কোনো সমস্যা হয়, আমার নাম্বার তো থাকলই। সমস্যা হলে আমাকে কল দিবেন। আপনার নাম অটোমেটিক কাটা হয়ে যাবে। আপনি দেখবেন। কাটা হয়ে গেলে আপনাকে ছবি তুলে দিয়ে দিব।’ অপর প্রান্তের ব্যক্তি বলছেন, ‘তাহলে আমি পরশুদিন ফুল পেমেন্ট দিয়ে দিব।’ তখন অপরজন বলছেন, ‘আজ ১০ হলে ভালো হয়, আমার একটু লাগত।’

আরেকটি অডিওতে জেলে যাওয়া ঠেকানোর আশ্বাস দিয়ে বলা হচ্ছে, ‘আপনার যদি দুদিনের লাইগাও ভিতরে থাকতে হয়, আপনার স্যান্ডেল খুইলে আমার গালে মাইরেন, যান।’

অপর অডিওতে ওই ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়, ‘তুমি একা না। আরও দু–তিনজনকে বের করা লাগবে। তোমাকে যেটুকু হেল্প করছি, সেটা আমি ব্যক্তিগতভাবে রিস্কের মধ্যেই করছি।’

এ ব্যাপারে নগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মাকসুদুর রহমান সৌরভ বলেন, ‘পায়েল পুলিশের সোর্স ছিল। তার বিরুদ্ধে মামলা করা যেতেই পারে। কিন্তু কেউ টাকা আদায় করতে পারেন না। সাইমন কয়েকজনকে নিয়ে একটা সিন্ডিকেট করে এভাবে টাকা আদায় করছিলেন। এতে দলের বদনাম হচ্ছিল। এ জন্য কেন্দ্রকে অবহিত করে আমি অডিও ফাঁস করি। এরপর কেন্দ্র ব্যবস্থা নিয়েছে।’

অব্যাহতি পাওয়া ছাত্রদল নেতা সাইমন রেজা বলেন, ‘কেন্দ্র আমার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে আমার মন খারাপ না। কারণ আমি পদ–পদবির জন্য রাজনীতি করি না। পদে না থাকলেও আমি ছাত্রদলের কর্মী হয়ে থাকব।’

সাইমন দাবি করেন, ওই অডিওগুলো ভুয়া। তাঁর নাম ও ছবি ব্যবহার করে হোয়াটসঅ্যাপ খুলে কেউ এই কাজটা করেছেন। এ ব্যাপারে তিনি থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

মানিকগঞ্জে রাতের আঁধারে স্থানান্তর করা বিদ্যালয় ভবন পরিদর্শনে কর্মকর্তারা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত