নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় হাতে টান পড়লেই হিন্দুপাড়ার বাসিন্দাদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করতেন স্থানীয় এক তাঁতী দল নেতা। ধরে নিয়ে যেতেন পুকুরের মাছ, হাঁস, গাছের কলার কাঁদি। কেউ বাধা দিতে গেলেই হাঁসুয়া নিয়ে তেড়ে যেতেন। বের করতেন ছোরা। সবশেষ চাঁদা দিতে না চাইলে একজনকে মারধরের পর হিন্দুপাড়ার বাসিন্দারা থানা ঘেরাও করেন।
এরপর পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে। আজ বুধবার তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাঁর নাম নবাব হোসেন ওরফে বাচ্চু (৩০)। তিনি উপজেলার গোবিন্দপাড়া ইউনিয়ন তাঁতী দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। আজ তাঁতী দলের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ ও সদস্যসচিব হাজি মজিবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে নবাব হোসেনকে দলীয় পদ থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কারের কথা জানানো হয়েছে।
নবাব হোসেনের বাড়ি চাঁইসাড়া গ্রামে। এ গ্রামের একপাশে প্রায় ১০০টি হিন্দু পরিবারের বাস। এলাকাটি হিন্দুপাড়া নামে পরিচিত। বছর দু-এক আগে হিন্দুপাড়ার পাশে ৩ শতক জায়গা কিনে বাড়ি করেন নবাব। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর নবাব এ পাড়ার বাসিন্দাদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় শুরু করেছিলেন। তা না হলে পাড়ায় থাকতে দেবেন না বলে হুমকি দিতেন। বাধ্য হয়ে সবাই নবাবকে চাঁদা দিয়ে আসছিলেন।
পাড়ার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সপ্তাহখানেক আগে নারায়ণ ভবানী (৬০) নামের এক ব্যক্তির কাছে পাঁচ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন নবাব। নবাব হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, গ্রামে থাকতে হলে তাঁকে টাকা দিতে হবে। তা না হলে সমস্যায় পড়তে হবে। তবে নারায়ণ ভবানী টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণ ভবানীকে দেখতে পেয়ে নবাব তাঁর পথরোধ করেন। তিনি টাকা না দেওয়ার কারণ জানতে চান। নারায়ণ টাকা দেবেন না বলতেই ক্ষুব্ধ হয়ে নবাব হোসেন তাঁর ওপর হামলা চালান। এ সময় তাঁকে মারধর করে রাস্তায় ফেলে রেখে চলে যান নবাব। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন।
ঘটনাটি জানাজানি হলে চাঁইসাড়া গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের শতাধিক নারী-পুরুষ প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে বাগমারা থানায় গিয়ে বিক্ষোভ করেন। তাঁরা নবাব হোসেনকে গ্রেপ্তার এবং নিজেদের নিরাপত্তা দেওয়ার দাবি জানান। পরে পুলিশ মামলা নেওয়া, অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের আশ্বাস দিলে বেলা আড়াইটার দিকে তাঁরা থানা চত্বর ত্যাগ করেন। বিষয়টি জানতে পেরে নবাব পালিয়ে যান। পরে রাতেই নওগাঁর মান্দা উপজেলার কালীনগর এলাকায় অভিযান চালিয়ে নবাবকে গ্রেপ্তার করে বাগমারা থানা-পুলিশের একটি দল। এর আগে রাতেই নবাব হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ভুক্তভোগী নারায়ণ ভবানী।
এ বিষয়ে বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা অভিযোগ পেয়েই নবাবকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছি। পাড়ার বাসিন্দারা জানিয়েছেন যে অনেক দিন ধরে নবাব চাঁদা নিচ্ছিলেন। টাকা না পেলে মাছ, হাঁস ও মুরগি ধরে নিয়ে যেতেন। তবে তাঁরা আগে আমাদের জানাননি। আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।’
অতিষ্ঠ ছিল সংখ্যালঘুরা
তাঁতী দল নেতা নবাবের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন চাঁইসাড়া হিন্দুপাড়ার বাসিন্দারা। নবাব গ্রেপ্তার হলেও আতঙ্ক রয়েছে। তাঁরা জানিয়েছেন, আওয়ামী সরকারের পতনের পর থেকে নবাব তাঁদের ‘আওয়ামী লীগ’ ট্যাগ দিয়ে বলতেন—পাড়ায় থাকতে হলে তাঁকে টাকা দিয়ে থাকতে হবে।
গ্রামের এক স্কুলশিক্ষক বলেন, বাড়ি বাড়ি গিয়ে নবাব নিয়মিত চাঁদা নিয়ে যেতেন। কারও হয়তো পুকুরে মাছ আছে, সে মাছ ধরে নিয়ে যেতেন। পুকুরপাড় থেকে হাঁস নিয়ে যেতেন। গাছের কলার কাঁদি কেটে নিয়ে যেতেন। ধান মাড়াই করলে ধান দিতে হতো। কারও কিছু বলার সাহস ছিল না। কেউ কিছু বললে হাঁসুয়া নিয়ে এসে ভয় দেখাতেন। তাঁর কাছে সব সময় একটা ছোট ছোরা থাকত। টিপ দিলেই ছোরা বড় হয়ে যেত। এভাবে তিনি ভয় দেখাতেন।
ওই স্কুলশিক্ষক বলেন, ‘গ্রামের প্রায় প্রত্যেকেই নবাবকে টাকা দিয়েছে। সবচেয়ে খারাপ ব্যাপার ছিল, টাকা দিতে না চাইলে নবাব বাড়ির বয়স্ক মায়েদের গিয়ে ভয় দেখাত। বলত—আপনার ছেলেকে টাকা দিয়ে দিতে বলবেন। তা না হলে সমস্যা হবে। মায়েরা ভয়ে থাকতেন। রাস্তাঘাটে দেখা হলে ছেলেদের কাছে টাকা চাইত। দিলে ভালো, না দিলে পকেটে হাত দিয়ে যা পেত, সবই জোর করে নিয়ে নিত। বলত—এখন আমরা খাব। এটাই ছিল তার কথা।’
এ নিয়ে দলীয় স্থানীয় নেতাদের জানিয়েও প্রতিকার পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন পাড়ার বাসিন্দারা। গ্রামের আরও এক ব্যক্তি জানান, সম্প্রতি উপেন্দ্রনাথ সরকার নামের এক ব্যক্তি নবাবের এমন উৎপাতের কথা দলের লোকজনকে জানিয়েছিলেন। কয়েক দিন পর উপেন্দ্রনাথের সঙ্গে নবাবের দেখা হলে তিনি তাঁকে লক্ষ্য করে হাঁসুয়ার আঘাত করার চেষ্টা করেন। তবে উপেন্দ্রনাথ কোনো রকমে হাঁসুয়াটি ধরে ফেলেন। হাঁসুয়াটি লাগে হাতে থাকা বাজারের ব্যাগে। সম্প্রতি দামনাশ উচ্চবিদ্যালয়ে গিয়েও হাঙ্গামা করেন নবাব। সেদিন তাঁকে ধরে ধারালো অস্ত্রসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। পরে তিনি ছাড়া পেয়ে যান।
গোবিন্দাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হাবিবুর রহমান বলেন, ‘হিন্দুদের ওপর তার এত অত্যাচার শুরু হয়েছিল, তা বলার মতো না। মুসলমানদেরও যারা দুর্বল মানুষ, তারাও চাঁদা দিতে বাধ্য হচ্ছিল। গতকাল তার হাতে আহত নারায়ণ ভবানীর সঙ্গে আমি দেখা করেছি। আমাকে তিনি জানিয়েছেন যে, তাঁকে মারধর করে নবাব ১৫ হাজার টাকা কেড়ে নিয়েছে। এভাবে তো দলের নাম ভাঙিয়ে চলতে পারে না।’

‘হাফ ম্যাড’ বলছে বিএনপি
গত ৩১ জুলাই গোবিন্দপাড়া ইউনিয়ন তাঁতী দলের কর্মিসভা শেষে নতুন কমিটি গঠন করা হয়। সেদিন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদ পান নবাব হোসেন। এই কমিটি নিয়ে সেদিন বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। সেদিন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নবাবেরও নাম প্রকাশ হয়।
তবে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডি এম জিয়াউর রহমান দাবি করেছেন, নবাব ‘হাফ ম্যাড’। তিনি বলেন, ‘যখন যে দলের মিছিল হয়, নবাব সে দলের মিছিলেই যোগ দেয়। সে আসলে হাফ ম্যাড। তাঁতী দলের কর্মিসভার দিন সে এসে বলে তাকে সভাপতির পদ দিতে হবে, সাধারণ সম্পাদকের পদ দিতে হবে। তখন নেতারা বলেন—ঠিক আছে, তুই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এভাবে সে এই পদ পেয়ে যায়। এখন কোনো বিতর্ক উঠলে দল কিছু শুনছে না। দায় এড়াতে সরাসরি বহিষ্কার করছে। নবাবকেও বহিষ্কার করা হয়েছে।’
জিয়াউর রহমান দাবি করেন, নবাব বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। সংখ্যালঘুদেরই যে টার্গেট করে তিনি টাকা নিতেন, এমনটি নয়। তাই হিন্দুপাড়ার বাসিন্দারা গণমাধ্যমে একটি বিবৃতি দিতে চেয়েছেন। তাঁরা বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দেবেন যে—এটা দলীয় কোনো ইস্যু নয়, সংখ্যালঘু ইস্যুও নয়।
নবাব আসলেই বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী কি না—জানতে চাইলে হিন্দুপাড়ার এক বাসিন্দা বলেন, ‘জাতে মাতাল তালে ঠিক। এমন হলে সে কীভাবে বলে যে আপনারা বহুদিন ধরে আওয়ামী লীগ করেছেন, এখন আমাদের টাকা দিয়ে থাকতে হবে। এটা তো সম্ভব না। তার কিছু গুরু আছে। তারাই নবাবকে এ রকম বেপরোয়া করে তুলেছিল। এখনো আমরা ভয়ে।’
তাঁতী দলের কেন্দ্রীয় কমিটির এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নবাবের এমন কর্মকাণ্ড দলীয় সুনাম ও ভাবমূর্তি গুরুতরভাবে ক্ষুণ্ন করেছে, যা সংগঠনের গঠনতন্ত্র ও আদর্শের পরিপন্থী। তাই কেন্দ্রীয় কমিটি তাঁকে সাময়িক বহিষ্কারের জরুরি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তাঁর সঙ্গে দলীয় কোনো নেতা-কর্মীর সঙ্গে সাংগঠনিক সম্পর্ক ও যোগাযোগ না রাখার জন্য এবং তাঁকে দেখামাত্রই আইনের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, নবাবের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যতা যাচাই এবং ঘটনা উদ্ঘাটনের লক্ষ্যে ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় কমিটি একটি তদন্ত টিম গঠন করেছে। এ তদন্ত টিমের রিপোর্টের ভিত্তিতে তাঁর বিরুদ্ধে স্থায়ী ও চূড়ান্ত সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় হাতে টান পড়লেই হিন্দুপাড়ার বাসিন্দাদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করতেন স্থানীয় এক তাঁতী দল নেতা। ধরে নিয়ে যেতেন পুকুরের মাছ, হাঁস, গাছের কলার কাঁদি। কেউ বাধা দিতে গেলেই হাঁসুয়া নিয়ে তেড়ে যেতেন। বের করতেন ছোরা। সবশেষ চাঁদা দিতে না চাইলে একজনকে মারধরের পর হিন্দুপাড়ার বাসিন্দারা থানা ঘেরাও করেন।
এরপর পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে। আজ বুধবার তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাঁর নাম নবাব হোসেন ওরফে বাচ্চু (৩০)। তিনি উপজেলার গোবিন্দপাড়া ইউনিয়ন তাঁতী দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। আজ তাঁতী দলের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ ও সদস্যসচিব হাজি মজিবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে নবাব হোসেনকে দলীয় পদ থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কারের কথা জানানো হয়েছে।
নবাব হোসেনের বাড়ি চাঁইসাড়া গ্রামে। এ গ্রামের একপাশে প্রায় ১০০টি হিন্দু পরিবারের বাস। এলাকাটি হিন্দুপাড়া নামে পরিচিত। বছর দু-এক আগে হিন্দুপাড়ার পাশে ৩ শতক জায়গা কিনে বাড়ি করেন নবাব। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর নবাব এ পাড়ার বাসিন্দাদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় শুরু করেছিলেন। তা না হলে পাড়ায় থাকতে দেবেন না বলে হুমকি দিতেন। বাধ্য হয়ে সবাই নবাবকে চাঁদা দিয়ে আসছিলেন।
পাড়ার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সপ্তাহখানেক আগে নারায়ণ ভবানী (৬০) নামের এক ব্যক্তির কাছে পাঁচ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন নবাব। নবাব হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, গ্রামে থাকতে হলে তাঁকে টাকা দিতে হবে। তা না হলে সমস্যায় পড়তে হবে। তবে নারায়ণ ভবানী টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণ ভবানীকে দেখতে পেয়ে নবাব তাঁর পথরোধ করেন। তিনি টাকা না দেওয়ার কারণ জানতে চান। নারায়ণ টাকা দেবেন না বলতেই ক্ষুব্ধ হয়ে নবাব হোসেন তাঁর ওপর হামলা চালান। এ সময় তাঁকে মারধর করে রাস্তায় ফেলে রেখে চলে যান নবাব। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন।
ঘটনাটি জানাজানি হলে চাঁইসাড়া গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের শতাধিক নারী-পুরুষ প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে বাগমারা থানায় গিয়ে বিক্ষোভ করেন। তাঁরা নবাব হোসেনকে গ্রেপ্তার এবং নিজেদের নিরাপত্তা দেওয়ার দাবি জানান। পরে পুলিশ মামলা নেওয়া, অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের আশ্বাস দিলে বেলা আড়াইটার দিকে তাঁরা থানা চত্বর ত্যাগ করেন। বিষয়টি জানতে পেরে নবাব পালিয়ে যান। পরে রাতেই নওগাঁর মান্দা উপজেলার কালীনগর এলাকায় অভিযান চালিয়ে নবাবকে গ্রেপ্তার করে বাগমারা থানা-পুলিশের একটি দল। এর আগে রাতেই নবাব হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ভুক্তভোগী নারায়ণ ভবানী।
এ বিষয়ে বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা অভিযোগ পেয়েই নবাবকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছি। পাড়ার বাসিন্দারা জানিয়েছেন যে অনেক দিন ধরে নবাব চাঁদা নিচ্ছিলেন। টাকা না পেলে মাছ, হাঁস ও মুরগি ধরে নিয়ে যেতেন। তবে তাঁরা আগে আমাদের জানাননি। আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।’
অতিষ্ঠ ছিল সংখ্যালঘুরা
তাঁতী দল নেতা নবাবের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন চাঁইসাড়া হিন্দুপাড়ার বাসিন্দারা। নবাব গ্রেপ্তার হলেও আতঙ্ক রয়েছে। তাঁরা জানিয়েছেন, আওয়ামী সরকারের পতনের পর থেকে নবাব তাঁদের ‘আওয়ামী লীগ’ ট্যাগ দিয়ে বলতেন—পাড়ায় থাকতে হলে তাঁকে টাকা দিয়ে থাকতে হবে।
গ্রামের এক স্কুলশিক্ষক বলেন, বাড়ি বাড়ি গিয়ে নবাব নিয়মিত চাঁদা নিয়ে যেতেন। কারও হয়তো পুকুরে মাছ আছে, সে মাছ ধরে নিয়ে যেতেন। পুকুরপাড় থেকে হাঁস নিয়ে যেতেন। গাছের কলার কাঁদি কেটে নিয়ে যেতেন। ধান মাড়াই করলে ধান দিতে হতো। কারও কিছু বলার সাহস ছিল না। কেউ কিছু বললে হাঁসুয়া নিয়ে এসে ভয় দেখাতেন। তাঁর কাছে সব সময় একটা ছোট ছোরা থাকত। টিপ দিলেই ছোরা বড় হয়ে যেত। এভাবে তিনি ভয় দেখাতেন।
ওই স্কুলশিক্ষক বলেন, ‘গ্রামের প্রায় প্রত্যেকেই নবাবকে টাকা দিয়েছে। সবচেয়ে খারাপ ব্যাপার ছিল, টাকা দিতে না চাইলে নবাব বাড়ির বয়স্ক মায়েদের গিয়ে ভয় দেখাত। বলত—আপনার ছেলেকে টাকা দিয়ে দিতে বলবেন। তা না হলে সমস্যা হবে। মায়েরা ভয়ে থাকতেন। রাস্তাঘাটে দেখা হলে ছেলেদের কাছে টাকা চাইত। দিলে ভালো, না দিলে পকেটে হাত দিয়ে যা পেত, সবই জোর করে নিয়ে নিত। বলত—এখন আমরা খাব। এটাই ছিল তার কথা।’
এ নিয়ে দলীয় স্থানীয় নেতাদের জানিয়েও প্রতিকার পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন পাড়ার বাসিন্দারা। গ্রামের আরও এক ব্যক্তি জানান, সম্প্রতি উপেন্দ্রনাথ সরকার নামের এক ব্যক্তি নবাবের এমন উৎপাতের কথা দলের লোকজনকে জানিয়েছিলেন। কয়েক দিন পর উপেন্দ্রনাথের সঙ্গে নবাবের দেখা হলে তিনি তাঁকে লক্ষ্য করে হাঁসুয়ার আঘাত করার চেষ্টা করেন। তবে উপেন্দ্রনাথ কোনো রকমে হাঁসুয়াটি ধরে ফেলেন। হাঁসুয়াটি লাগে হাতে থাকা বাজারের ব্যাগে। সম্প্রতি দামনাশ উচ্চবিদ্যালয়ে গিয়েও হাঙ্গামা করেন নবাব। সেদিন তাঁকে ধরে ধারালো অস্ত্রসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। পরে তিনি ছাড়া পেয়ে যান।
গোবিন্দাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হাবিবুর রহমান বলেন, ‘হিন্দুদের ওপর তার এত অত্যাচার শুরু হয়েছিল, তা বলার মতো না। মুসলমানদেরও যারা দুর্বল মানুষ, তারাও চাঁদা দিতে বাধ্য হচ্ছিল। গতকাল তার হাতে আহত নারায়ণ ভবানীর সঙ্গে আমি দেখা করেছি। আমাকে তিনি জানিয়েছেন যে, তাঁকে মারধর করে নবাব ১৫ হাজার টাকা কেড়ে নিয়েছে। এভাবে তো দলের নাম ভাঙিয়ে চলতে পারে না।’

‘হাফ ম্যাড’ বলছে বিএনপি
গত ৩১ জুলাই গোবিন্দপাড়া ইউনিয়ন তাঁতী দলের কর্মিসভা শেষে নতুন কমিটি গঠন করা হয়। সেদিন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদ পান নবাব হোসেন। এই কমিটি নিয়ে সেদিন বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। সেদিন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নবাবেরও নাম প্রকাশ হয়।
তবে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডি এম জিয়াউর রহমান দাবি করেছেন, নবাব ‘হাফ ম্যাড’। তিনি বলেন, ‘যখন যে দলের মিছিল হয়, নবাব সে দলের মিছিলেই যোগ দেয়। সে আসলে হাফ ম্যাড। তাঁতী দলের কর্মিসভার দিন সে এসে বলে তাকে সভাপতির পদ দিতে হবে, সাধারণ সম্পাদকের পদ দিতে হবে। তখন নেতারা বলেন—ঠিক আছে, তুই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এভাবে সে এই পদ পেয়ে যায়। এখন কোনো বিতর্ক উঠলে দল কিছু শুনছে না। দায় এড়াতে সরাসরি বহিষ্কার করছে। নবাবকেও বহিষ্কার করা হয়েছে।’
জিয়াউর রহমান দাবি করেন, নবাব বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। সংখ্যালঘুদেরই যে টার্গেট করে তিনি টাকা নিতেন, এমনটি নয়। তাই হিন্দুপাড়ার বাসিন্দারা গণমাধ্যমে একটি বিবৃতি দিতে চেয়েছেন। তাঁরা বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দেবেন যে—এটা দলীয় কোনো ইস্যু নয়, সংখ্যালঘু ইস্যুও নয়।
নবাব আসলেই বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী কি না—জানতে চাইলে হিন্দুপাড়ার এক বাসিন্দা বলেন, ‘জাতে মাতাল তালে ঠিক। এমন হলে সে কীভাবে বলে যে আপনারা বহুদিন ধরে আওয়ামী লীগ করেছেন, এখন আমাদের টাকা দিয়ে থাকতে হবে। এটা তো সম্ভব না। তার কিছু গুরু আছে। তারাই নবাবকে এ রকম বেপরোয়া করে তুলেছিল। এখনো আমরা ভয়ে।’
তাঁতী দলের কেন্দ্রীয় কমিটির এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নবাবের এমন কর্মকাণ্ড দলীয় সুনাম ও ভাবমূর্তি গুরুতরভাবে ক্ষুণ্ন করেছে, যা সংগঠনের গঠনতন্ত্র ও আদর্শের পরিপন্থী। তাই কেন্দ্রীয় কমিটি তাঁকে সাময়িক বহিষ্কারের জরুরি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তাঁর সঙ্গে দলীয় কোনো নেতা-কর্মীর সঙ্গে সাংগঠনিক সম্পর্ক ও যোগাযোগ না রাখার জন্য এবং তাঁকে দেখামাত্রই আইনের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, নবাবের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যতা যাচাই এবং ঘটনা উদ্ঘাটনের লক্ষ্যে ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় কমিটি একটি তদন্ত টিম গঠন করেছে। এ তদন্ত টিমের রিপোর্টের ভিত্তিতে তাঁর বিরুদ্ধে স্থায়ী ও চূড়ান্ত সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় হাতে টান পড়লেই হিন্দুপাড়ার বাসিন্দাদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করতেন স্থানীয় এক তাঁতী দল নেতা। ধরে নিয়ে যেতেন পুকুরের মাছ, হাঁস, গাছের কলার কাঁদি। কেউ বাধা দিতে গেলেই হাঁসুয়া নিয়ে তেড়ে যেতেন। বের করতেন ছোরা। সবশেষ চাঁদা দিতে না চাইলে একজনকে মারধরের পর হিন্দুপাড়ার বাসিন্দারা থানা ঘেরাও করেন।
এরপর পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে। আজ বুধবার তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাঁর নাম নবাব হোসেন ওরফে বাচ্চু (৩০)। তিনি উপজেলার গোবিন্দপাড়া ইউনিয়ন তাঁতী দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। আজ তাঁতী দলের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ ও সদস্যসচিব হাজি মজিবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে নবাব হোসেনকে দলীয় পদ থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কারের কথা জানানো হয়েছে।
নবাব হোসেনের বাড়ি চাঁইসাড়া গ্রামে। এ গ্রামের একপাশে প্রায় ১০০টি হিন্দু পরিবারের বাস। এলাকাটি হিন্দুপাড়া নামে পরিচিত। বছর দু-এক আগে হিন্দুপাড়ার পাশে ৩ শতক জায়গা কিনে বাড়ি করেন নবাব। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর নবাব এ পাড়ার বাসিন্দাদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় শুরু করেছিলেন। তা না হলে পাড়ায় থাকতে দেবেন না বলে হুমকি দিতেন। বাধ্য হয়ে সবাই নবাবকে চাঁদা দিয়ে আসছিলেন।
পাড়ার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সপ্তাহখানেক আগে নারায়ণ ভবানী (৬০) নামের এক ব্যক্তির কাছে পাঁচ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন নবাব। নবাব হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, গ্রামে থাকতে হলে তাঁকে টাকা দিতে হবে। তা না হলে সমস্যায় পড়তে হবে। তবে নারায়ণ ভবানী টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণ ভবানীকে দেখতে পেয়ে নবাব তাঁর পথরোধ করেন। তিনি টাকা না দেওয়ার কারণ জানতে চান। নারায়ণ টাকা দেবেন না বলতেই ক্ষুব্ধ হয়ে নবাব হোসেন তাঁর ওপর হামলা চালান। এ সময় তাঁকে মারধর করে রাস্তায় ফেলে রেখে চলে যান নবাব। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন।
ঘটনাটি জানাজানি হলে চাঁইসাড়া গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের শতাধিক নারী-পুরুষ প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে বাগমারা থানায় গিয়ে বিক্ষোভ করেন। তাঁরা নবাব হোসেনকে গ্রেপ্তার এবং নিজেদের নিরাপত্তা দেওয়ার দাবি জানান। পরে পুলিশ মামলা নেওয়া, অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের আশ্বাস দিলে বেলা আড়াইটার দিকে তাঁরা থানা চত্বর ত্যাগ করেন। বিষয়টি জানতে পেরে নবাব পালিয়ে যান। পরে রাতেই নওগাঁর মান্দা উপজেলার কালীনগর এলাকায় অভিযান চালিয়ে নবাবকে গ্রেপ্তার করে বাগমারা থানা-পুলিশের একটি দল। এর আগে রাতেই নবাব হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ভুক্তভোগী নারায়ণ ভবানী।
এ বিষয়ে বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা অভিযোগ পেয়েই নবাবকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছি। পাড়ার বাসিন্দারা জানিয়েছেন যে অনেক দিন ধরে নবাব চাঁদা নিচ্ছিলেন। টাকা না পেলে মাছ, হাঁস ও মুরগি ধরে নিয়ে যেতেন। তবে তাঁরা আগে আমাদের জানাননি। আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।’
অতিষ্ঠ ছিল সংখ্যালঘুরা
তাঁতী দল নেতা নবাবের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন চাঁইসাড়া হিন্দুপাড়ার বাসিন্দারা। নবাব গ্রেপ্তার হলেও আতঙ্ক রয়েছে। তাঁরা জানিয়েছেন, আওয়ামী সরকারের পতনের পর থেকে নবাব তাঁদের ‘আওয়ামী লীগ’ ট্যাগ দিয়ে বলতেন—পাড়ায় থাকতে হলে তাঁকে টাকা দিয়ে থাকতে হবে।
গ্রামের এক স্কুলশিক্ষক বলেন, বাড়ি বাড়ি গিয়ে নবাব নিয়মিত চাঁদা নিয়ে যেতেন। কারও হয়তো পুকুরে মাছ আছে, সে মাছ ধরে নিয়ে যেতেন। পুকুরপাড় থেকে হাঁস নিয়ে যেতেন। গাছের কলার কাঁদি কেটে নিয়ে যেতেন। ধান মাড়াই করলে ধান দিতে হতো। কারও কিছু বলার সাহস ছিল না। কেউ কিছু বললে হাঁসুয়া নিয়ে এসে ভয় দেখাতেন। তাঁর কাছে সব সময় একটা ছোট ছোরা থাকত। টিপ দিলেই ছোরা বড় হয়ে যেত। এভাবে তিনি ভয় দেখাতেন।
ওই স্কুলশিক্ষক বলেন, ‘গ্রামের প্রায় প্রত্যেকেই নবাবকে টাকা দিয়েছে। সবচেয়ে খারাপ ব্যাপার ছিল, টাকা দিতে না চাইলে নবাব বাড়ির বয়স্ক মায়েদের গিয়ে ভয় দেখাত। বলত—আপনার ছেলেকে টাকা দিয়ে দিতে বলবেন। তা না হলে সমস্যা হবে। মায়েরা ভয়ে থাকতেন। রাস্তাঘাটে দেখা হলে ছেলেদের কাছে টাকা চাইত। দিলে ভালো, না দিলে পকেটে হাত দিয়ে যা পেত, সবই জোর করে নিয়ে নিত। বলত—এখন আমরা খাব। এটাই ছিল তার কথা।’
এ নিয়ে দলীয় স্থানীয় নেতাদের জানিয়েও প্রতিকার পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন পাড়ার বাসিন্দারা। গ্রামের আরও এক ব্যক্তি জানান, সম্প্রতি উপেন্দ্রনাথ সরকার নামের এক ব্যক্তি নবাবের এমন উৎপাতের কথা দলের লোকজনকে জানিয়েছিলেন। কয়েক দিন পর উপেন্দ্রনাথের সঙ্গে নবাবের দেখা হলে তিনি তাঁকে লক্ষ্য করে হাঁসুয়ার আঘাত করার চেষ্টা করেন। তবে উপেন্দ্রনাথ কোনো রকমে হাঁসুয়াটি ধরে ফেলেন। হাঁসুয়াটি লাগে হাতে থাকা বাজারের ব্যাগে। সম্প্রতি দামনাশ উচ্চবিদ্যালয়ে গিয়েও হাঙ্গামা করেন নবাব। সেদিন তাঁকে ধরে ধারালো অস্ত্রসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। পরে তিনি ছাড়া পেয়ে যান।
গোবিন্দাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হাবিবুর রহমান বলেন, ‘হিন্দুদের ওপর তার এত অত্যাচার শুরু হয়েছিল, তা বলার মতো না। মুসলমানদেরও যারা দুর্বল মানুষ, তারাও চাঁদা দিতে বাধ্য হচ্ছিল। গতকাল তার হাতে আহত নারায়ণ ভবানীর সঙ্গে আমি দেখা করেছি। আমাকে তিনি জানিয়েছেন যে, তাঁকে মারধর করে নবাব ১৫ হাজার টাকা কেড়ে নিয়েছে। এভাবে তো দলের নাম ভাঙিয়ে চলতে পারে না।’

‘হাফ ম্যাড’ বলছে বিএনপি
গত ৩১ জুলাই গোবিন্দপাড়া ইউনিয়ন তাঁতী দলের কর্মিসভা শেষে নতুন কমিটি গঠন করা হয়। সেদিন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদ পান নবাব হোসেন। এই কমিটি নিয়ে সেদিন বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। সেদিন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নবাবেরও নাম প্রকাশ হয়।
তবে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডি এম জিয়াউর রহমান দাবি করেছেন, নবাব ‘হাফ ম্যাড’। তিনি বলেন, ‘যখন যে দলের মিছিল হয়, নবাব সে দলের মিছিলেই যোগ দেয়। সে আসলে হাফ ম্যাড। তাঁতী দলের কর্মিসভার দিন সে এসে বলে তাকে সভাপতির পদ দিতে হবে, সাধারণ সম্পাদকের পদ দিতে হবে। তখন নেতারা বলেন—ঠিক আছে, তুই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এভাবে সে এই পদ পেয়ে যায়। এখন কোনো বিতর্ক উঠলে দল কিছু শুনছে না। দায় এড়াতে সরাসরি বহিষ্কার করছে। নবাবকেও বহিষ্কার করা হয়েছে।’
জিয়াউর রহমান দাবি করেন, নবাব বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। সংখ্যালঘুদেরই যে টার্গেট করে তিনি টাকা নিতেন, এমনটি নয়। তাই হিন্দুপাড়ার বাসিন্দারা গণমাধ্যমে একটি বিবৃতি দিতে চেয়েছেন। তাঁরা বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দেবেন যে—এটা দলীয় কোনো ইস্যু নয়, সংখ্যালঘু ইস্যুও নয়।
নবাব আসলেই বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী কি না—জানতে চাইলে হিন্দুপাড়ার এক বাসিন্দা বলেন, ‘জাতে মাতাল তালে ঠিক। এমন হলে সে কীভাবে বলে যে আপনারা বহুদিন ধরে আওয়ামী লীগ করেছেন, এখন আমাদের টাকা দিয়ে থাকতে হবে। এটা তো সম্ভব না। তার কিছু গুরু আছে। তারাই নবাবকে এ রকম বেপরোয়া করে তুলেছিল। এখনো আমরা ভয়ে।’
তাঁতী দলের কেন্দ্রীয় কমিটির এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নবাবের এমন কর্মকাণ্ড দলীয় সুনাম ও ভাবমূর্তি গুরুতরভাবে ক্ষুণ্ন করেছে, যা সংগঠনের গঠনতন্ত্র ও আদর্শের পরিপন্থী। তাই কেন্দ্রীয় কমিটি তাঁকে সাময়িক বহিষ্কারের জরুরি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তাঁর সঙ্গে দলীয় কোনো নেতা-কর্মীর সঙ্গে সাংগঠনিক সম্পর্ক ও যোগাযোগ না রাখার জন্য এবং তাঁকে দেখামাত্রই আইনের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, নবাবের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যতা যাচাই এবং ঘটনা উদ্ঘাটনের লক্ষ্যে ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় কমিটি একটি তদন্ত টিম গঠন করেছে। এ তদন্ত টিমের রিপোর্টের ভিত্তিতে তাঁর বিরুদ্ধে স্থায়ী ও চূড়ান্ত সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় হাতে টান পড়লেই হিন্দুপাড়ার বাসিন্দাদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করতেন স্থানীয় এক তাঁতী দল নেতা। ধরে নিয়ে যেতেন পুকুরের মাছ, হাঁস, গাছের কলার কাঁদি। কেউ বাধা দিতে গেলেই হাঁসুয়া নিয়ে তেড়ে যেতেন। বের করতেন ছোরা। সবশেষ চাঁদা দিতে না চাইলে একজনকে মারধরের পর হিন্দুপাড়ার বাসিন্দারা থানা ঘেরাও করেন।
এরপর পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে। আজ বুধবার তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাঁর নাম নবাব হোসেন ওরফে বাচ্চু (৩০)। তিনি উপজেলার গোবিন্দপাড়া ইউনিয়ন তাঁতী দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। আজ তাঁতী দলের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ ও সদস্যসচিব হাজি মজিবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে নবাব হোসেনকে দলীয় পদ থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কারের কথা জানানো হয়েছে।
নবাব হোসেনের বাড়ি চাঁইসাড়া গ্রামে। এ গ্রামের একপাশে প্রায় ১০০টি হিন্দু পরিবারের বাস। এলাকাটি হিন্দুপাড়া নামে পরিচিত। বছর দু-এক আগে হিন্দুপাড়ার পাশে ৩ শতক জায়গা কিনে বাড়ি করেন নবাব। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর নবাব এ পাড়ার বাসিন্দাদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় শুরু করেছিলেন। তা না হলে পাড়ায় থাকতে দেবেন না বলে হুমকি দিতেন। বাধ্য হয়ে সবাই নবাবকে চাঁদা দিয়ে আসছিলেন।
পাড়ার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সপ্তাহখানেক আগে নারায়ণ ভবানী (৬০) নামের এক ব্যক্তির কাছে পাঁচ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন নবাব। নবাব হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, গ্রামে থাকতে হলে তাঁকে টাকা দিতে হবে। তা না হলে সমস্যায় পড়তে হবে। তবে নারায়ণ ভবানী টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণ ভবানীকে দেখতে পেয়ে নবাব তাঁর পথরোধ করেন। তিনি টাকা না দেওয়ার কারণ জানতে চান। নারায়ণ টাকা দেবেন না বলতেই ক্ষুব্ধ হয়ে নবাব হোসেন তাঁর ওপর হামলা চালান। এ সময় তাঁকে মারধর করে রাস্তায় ফেলে রেখে চলে যান নবাব। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন।
ঘটনাটি জানাজানি হলে চাঁইসাড়া গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের শতাধিক নারী-পুরুষ প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে বাগমারা থানায় গিয়ে বিক্ষোভ করেন। তাঁরা নবাব হোসেনকে গ্রেপ্তার এবং নিজেদের নিরাপত্তা দেওয়ার দাবি জানান। পরে পুলিশ মামলা নেওয়া, অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের আশ্বাস দিলে বেলা আড়াইটার দিকে তাঁরা থানা চত্বর ত্যাগ করেন। বিষয়টি জানতে পেরে নবাব পালিয়ে যান। পরে রাতেই নওগাঁর মান্দা উপজেলার কালীনগর এলাকায় অভিযান চালিয়ে নবাবকে গ্রেপ্তার করে বাগমারা থানা-পুলিশের একটি দল। এর আগে রাতেই নবাব হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ভুক্তভোগী নারায়ণ ভবানী।
এ বিষয়ে বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা অভিযোগ পেয়েই নবাবকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছি। পাড়ার বাসিন্দারা জানিয়েছেন যে অনেক দিন ধরে নবাব চাঁদা নিচ্ছিলেন। টাকা না পেলে মাছ, হাঁস ও মুরগি ধরে নিয়ে যেতেন। তবে তাঁরা আগে আমাদের জানাননি। আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।’
অতিষ্ঠ ছিল সংখ্যালঘুরা
তাঁতী দল নেতা নবাবের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন চাঁইসাড়া হিন্দুপাড়ার বাসিন্দারা। নবাব গ্রেপ্তার হলেও আতঙ্ক রয়েছে। তাঁরা জানিয়েছেন, আওয়ামী সরকারের পতনের পর থেকে নবাব তাঁদের ‘আওয়ামী লীগ’ ট্যাগ দিয়ে বলতেন—পাড়ায় থাকতে হলে তাঁকে টাকা দিয়ে থাকতে হবে।
গ্রামের এক স্কুলশিক্ষক বলেন, বাড়ি বাড়ি গিয়ে নবাব নিয়মিত চাঁদা নিয়ে যেতেন। কারও হয়তো পুকুরে মাছ আছে, সে মাছ ধরে নিয়ে যেতেন। পুকুরপাড় থেকে হাঁস নিয়ে যেতেন। গাছের কলার কাঁদি কেটে নিয়ে যেতেন। ধান মাড়াই করলে ধান দিতে হতো। কারও কিছু বলার সাহস ছিল না। কেউ কিছু বললে হাঁসুয়া নিয়ে এসে ভয় দেখাতেন। তাঁর কাছে সব সময় একটা ছোট ছোরা থাকত। টিপ দিলেই ছোরা বড় হয়ে যেত। এভাবে তিনি ভয় দেখাতেন।
ওই স্কুলশিক্ষক বলেন, ‘গ্রামের প্রায় প্রত্যেকেই নবাবকে টাকা দিয়েছে। সবচেয়ে খারাপ ব্যাপার ছিল, টাকা দিতে না চাইলে নবাব বাড়ির বয়স্ক মায়েদের গিয়ে ভয় দেখাত। বলত—আপনার ছেলেকে টাকা দিয়ে দিতে বলবেন। তা না হলে সমস্যা হবে। মায়েরা ভয়ে থাকতেন। রাস্তাঘাটে দেখা হলে ছেলেদের কাছে টাকা চাইত। দিলে ভালো, না দিলে পকেটে হাত দিয়ে যা পেত, সবই জোর করে নিয়ে নিত। বলত—এখন আমরা খাব। এটাই ছিল তার কথা।’
এ নিয়ে দলীয় স্থানীয় নেতাদের জানিয়েও প্রতিকার পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন পাড়ার বাসিন্দারা। গ্রামের আরও এক ব্যক্তি জানান, সম্প্রতি উপেন্দ্রনাথ সরকার নামের এক ব্যক্তি নবাবের এমন উৎপাতের কথা দলের লোকজনকে জানিয়েছিলেন। কয়েক দিন পর উপেন্দ্রনাথের সঙ্গে নবাবের দেখা হলে তিনি তাঁকে লক্ষ্য করে হাঁসুয়ার আঘাত করার চেষ্টা করেন। তবে উপেন্দ্রনাথ কোনো রকমে হাঁসুয়াটি ধরে ফেলেন। হাঁসুয়াটি লাগে হাতে থাকা বাজারের ব্যাগে। সম্প্রতি দামনাশ উচ্চবিদ্যালয়ে গিয়েও হাঙ্গামা করেন নবাব। সেদিন তাঁকে ধরে ধারালো অস্ত্রসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। পরে তিনি ছাড়া পেয়ে যান।
গোবিন্দাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হাবিবুর রহমান বলেন, ‘হিন্দুদের ওপর তার এত অত্যাচার শুরু হয়েছিল, তা বলার মতো না। মুসলমানদেরও যারা দুর্বল মানুষ, তারাও চাঁদা দিতে বাধ্য হচ্ছিল। গতকাল তার হাতে আহত নারায়ণ ভবানীর সঙ্গে আমি দেখা করেছি। আমাকে তিনি জানিয়েছেন যে, তাঁকে মারধর করে নবাব ১৫ হাজার টাকা কেড়ে নিয়েছে। এভাবে তো দলের নাম ভাঙিয়ে চলতে পারে না।’

‘হাফ ম্যাড’ বলছে বিএনপি
গত ৩১ জুলাই গোবিন্দপাড়া ইউনিয়ন তাঁতী দলের কর্মিসভা শেষে নতুন কমিটি গঠন করা হয়। সেদিন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদ পান নবাব হোসেন। এই কমিটি নিয়ে সেদিন বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। সেদিন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নবাবেরও নাম প্রকাশ হয়।
তবে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডি এম জিয়াউর রহমান দাবি করেছেন, নবাব ‘হাফ ম্যাড’। তিনি বলেন, ‘যখন যে দলের মিছিল হয়, নবাব সে দলের মিছিলেই যোগ দেয়। সে আসলে হাফ ম্যাড। তাঁতী দলের কর্মিসভার দিন সে এসে বলে তাকে সভাপতির পদ দিতে হবে, সাধারণ সম্পাদকের পদ দিতে হবে। তখন নেতারা বলেন—ঠিক আছে, তুই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এভাবে সে এই পদ পেয়ে যায়। এখন কোনো বিতর্ক উঠলে দল কিছু শুনছে না। দায় এড়াতে সরাসরি বহিষ্কার করছে। নবাবকেও বহিষ্কার করা হয়েছে।’
জিয়াউর রহমান দাবি করেন, নবাব বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। সংখ্যালঘুদেরই যে টার্গেট করে তিনি টাকা নিতেন, এমনটি নয়। তাই হিন্দুপাড়ার বাসিন্দারা গণমাধ্যমে একটি বিবৃতি দিতে চেয়েছেন। তাঁরা বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দেবেন যে—এটা দলীয় কোনো ইস্যু নয়, সংখ্যালঘু ইস্যুও নয়।
নবাব আসলেই বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী কি না—জানতে চাইলে হিন্দুপাড়ার এক বাসিন্দা বলেন, ‘জাতে মাতাল তালে ঠিক। এমন হলে সে কীভাবে বলে যে আপনারা বহুদিন ধরে আওয়ামী লীগ করেছেন, এখন আমাদের টাকা দিয়ে থাকতে হবে। এটা তো সম্ভব না। তার কিছু গুরু আছে। তারাই নবাবকে এ রকম বেপরোয়া করে তুলেছিল। এখনো আমরা ভয়ে।’
তাঁতী দলের কেন্দ্রীয় কমিটির এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নবাবের এমন কর্মকাণ্ড দলীয় সুনাম ও ভাবমূর্তি গুরুতরভাবে ক্ষুণ্ন করেছে, যা সংগঠনের গঠনতন্ত্র ও আদর্শের পরিপন্থী। তাই কেন্দ্রীয় কমিটি তাঁকে সাময়িক বহিষ্কারের জরুরি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তাঁর সঙ্গে দলীয় কোনো নেতা-কর্মীর সঙ্গে সাংগঠনিক সম্পর্ক ও যোগাযোগ না রাখার জন্য এবং তাঁকে দেখামাত্রই আইনের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, নবাবের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যতা যাচাই এবং ঘটনা উদ্ঘাটনের লক্ষ্যে ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় কমিটি একটি তদন্ত টিম গঠন করেছে। এ তদন্ত টিমের রিপোর্টের ভিত্তিতে তাঁর বিরুদ্ধে স্থায়ী ও চূড়ান্ত সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিহত শামীমের মামা সাব্বির হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করেছিলাম শিয়ালের আক্রমণে এমন হয়েছে। কিন্তু হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা জানান, এটি শেয়াল-কুকুরের আক্রমণের চিহ্ন নয়, শিশুটির মাথা ও শরীরে আঘাত করা হয়েছে।’
২৩ মিনিট আগে
পটুয়াখালীর দুমকীতে অটোরিকশা ও সিমেন্টবাহী টমটমের সংঘর্ষে দুজন নিহত ও দুজন আহত হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে লেবুখালী-বাউফল মহাসড়কের রাজাখালী (স্থানীয় নাম পিছাখালী ব্রিজ) এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
৩১ মিনিট আগে
পরে শূন্য লাইনে অবস্থানরত ব্যক্তিদের পরিচয় ও ঠিকানা যাচাই করে তারা সবাই ভারতের ওডিশা প্রদেশের জগতসিংপুর সদর উপজেলার তারিকুন্ডা এলাকার বাসিন্দা বলে নিশ্চিত হওয়া যায়। যাচাই শেষে বিএসএফ তাদেরকে ভারতের অভ্যন্তরে ফিরিয়ে নিয়ে যায়।
১ ঘণ্টা আগে
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় মালবাহী দুটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে এক ট্রাকের চালক ও হেলপার গুরুতর আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছেন। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
২ ঘণ্টা আগেসখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

টাঙ্গাইলের সখীপুরে নিখোঁজের ৭ ঘণ্টা পর বন থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার হওয়া শিশু শামীম (১০) মারা গেছে। উদ্ধারের তিন দিন পর গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। আজ শুক্রবার সকালে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নিহত ব্যক্তির মামা সাব্বির হোসেন ও সখীপুর থানা-পুলিশ মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নিহত শামীম উপজেলার কালিয়ানপাড়া গ্রামের শাহিন আলমের ছেলে ও স্থানীয় কীর্তনখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
নিহত শিশুর পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার দুপুর ১২টার দিকে শামীম বাড়ি থেকে বের হয়। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও ফিরে না আসায় পরিবারের সদস্যরা সম্ভাব্য বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেন। একপর্যায়ে তাঁরা বাড়ির আশপাশের বনাঞ্চলে অনুসন্ধান চালান। পরে রাত ৮টার দিকে বাড়ি থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে একটি বন থেকে শামীমকে রক্তাক্ত ও অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। রাত ৯টার দিকে তাকে সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার ধানমন্ডিতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল।
নিহত শামীমের মামা সাব্বির হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করেছিলাম শিয়ালের আক্রমণে এমন হয়েছে। কিন্তু হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা জানান, এটি শেয়াল-কুকুরের আক্রমণের চিহ্ন নয়, শিশুটির মাথা ও শরীরের আঘাত করা হয়েছে।’
সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, নিহত শামীমের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। এ বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

টাঙ্গাইলের সখীপুরে নিখোঁজের ৭ ঘণ্টা পর বন থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার হওয়া শিশু শামীম (১০) মারা গেছে। উদ্ধারের তিন দিন পর গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। আজ শুক্রবার সকালে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নিহত ব্যক্তির মামা সাব্বির হোসেন ও সখীপুর থানা-পুলিশ মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নিহত শামীম উপজেলার কালিয়ানপাড়া গ্রামের শাহিন আলমের ছেলে ও স্থানীয় কীর্তনখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
নিহত শিশুর পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার দুপুর ১২টার দিকে শামীম বাড়ি থেকে বের হয়। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও ফিরে না আসায় পরিবারের সদস্যরা সম্ভাব্য বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেন। একপর্যায়ে তাঁরা বাড়ির আশপাশের বনাঞ্চলে অনুসন্ধান চালান। পরে রাত ৮টার দিকে বাড়ি থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে একটি বন থেকে শামীমকে রক্তাক্ত ও অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। রাত ৯টার দিকে তাকে সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার ধানমন্ডিতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল।
নিহত শামীমের মামা সাব্বির হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করেছিলাম শিয়ালের আক্রমণে এমন হয়েছে। কিন্তু হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা জানান, এটি শেয়াল-কুকুরের আক্রমণের চিহ্ন নয়, শিশুটির মাথা ও শরীরের আঘাত করা হয়েছে।’
সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, নিহত শামীমের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। এ বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় হাতে টান পড়লেই হিন্দুপাড়ার বাসিন্দাদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করতেন স্থানীয় এক তাঁতী দল নেতা। ধরে নিয়ে যেতেন পুকুরের মাছ, হাঁস, গাছের কলার কাঁদি। কেউ বাধা দিতে গেলেই হাঁসুয়া নিয়ে তেড়ে যেতেন। বের করতেন ছোরা। সবশেষ চাঁদা দিতে না চাইলে একজনকে মারধরের পর হিন্দুপাড়ার বাসিন্দারা থানা
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
পটুয়াখালীর দুমকীতে অটোরিকশা ও সিমেন্টবাহী টমটমের সংঘর্ষে দুজন নিহত ও দুজন আহত হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে লেবুখালী-বাউফল মহাসড়কের রাজাখালী (স্থানীয় নাম পিছাখালী ব্রিজ) এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
৩১ মিনিট আগে
পরে শূন্য লাইনে অবস্থানরত ব্যক্তিদের পরিচয় ও ঠিকানা যাচাই করে তারা সবাই ভারতের ওডিশা প্রদেশের জগতসিংপুর সদর উপজেলার তারিকুন্ডা এলাকার বাসিন্দা বলে নিশ্চিত হওয়া যায়। যাচাই শেষে বিএসএফ তাদেরকে ভারতের অভ্যন্তরে ফিরিয়ে নিয়ে যায়।
১ ঘণ্টা আগে
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় মালবাহী দুটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে এক ট্রাকের চালক ও হেলপার গুরুতর আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছেন। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
২ ঘণ্টা আগেদুমকী (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

পটুয়াখালীর দুমকীতে অটোরিকশা ও সিমেন্টবাহী টমটমের সংঘর্ষে দুজন নিহত ও দুজন আহত হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে লেবুখালী-বাউফল মহাসড়কের রাজাখালী (স্থানীয় নাম পিছাখালী ব্রিজ) এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বগা থেকে আসা যাত্রীবাহী অটোরিকশা বিপরীত দিক থেকে আসা সিমেন্টবাহী টমটমের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে দুমড়েমুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলে ছয় বছরের রবিউল নিহত হন। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে ৬০ বছর বয়সী ইব্রাহিম খানকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত সুমন সরদার (২৫) ও আব্দুল কাদেরকে (৫০) বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, আহত আব্দুল কাদেরের অবস্থা আশঙ্কাজনক। সুমনের একটি হাত সম্পূর্ণ ভেঙে গেছে। নিহত ও আহত ব্যক্তিদের বাড়ি বাউফল উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে।
দুমকী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সেলিম উদ্দীন জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে দুর্ঘটনাকবলিত অটোরিকশা ও টমটমটিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির পরিবার অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পটুয়াখালীর দুমকীতে অটোরিকশা ও সিমেন্টবাহী টমটমের সংঘর্ষে দুজন নিহত ও দুজন আহত হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে লেবুখালী-বাউফল মহাসড়কের রাজাখালী (স্থানীয় নাম পিছাখালী ব্রিজ) এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বগা থেকে আসা যাত্রীবাহী অটোরিকশা বিপরীত দিক থেকে আসা সিমেন্টবাহী টমটমের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে দুমড়েমুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলে ছয় বছরের রবিউল নিহত হন। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে ৬০ বছর বয়সী ইব্রাহিম খানকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত সুমন সরদার (২৫) ও আব্দুল কাদেরকে (৫০) বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, আহত আব্দুল কাদেরের অবস্থা আশঙ্কাজনক। সুমনের একটি হাত সম্পূর্ণ ভেঙে গেছে। নিহত ও আহত ব্যক্তিদের বাড়ি বাউফল উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে।
দুমকী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সেলিম উদ্দীন জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে দুর্ঘটনাকবলিত অটোরিকশা ও টমটমটিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির পরিবার অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় হাতে টান পড়লেই হিন্দুপাড়ার বাসিন্দাদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করতেন স্থানীয় এক তাঁতী দল নেতা। ধরে নিয়ে যেতেন পুকুরের মাছ, হাঁস, গাছের কলার কাঁদি। কেউ বাধা দিতে গেলেই হাঁসুয়া নিয়ে তেড়ে যেতেন। বের করতেন ছোরা। সবশেষ চাঁদা দিতে না চাইলে একজনকে মারধরের পর হিন্দুপাড়ার বাসিন্দারা থানা
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নিহত শামীমের মামা সাব্বির হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করেছিলাম শিয়ালের আক্রমণে এমন হয়েছে। কিন্তু হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা জানান, এটি শেয়াল-কুকুরের আক্রমণের চিহ্ন নয়, শিশুটির মাথা ও শরীরে আঘাত করা হয়েছে।’
২৩ মিনিট আগে
পরে শূন্য লাইনে অবস্থানরত ব্যক্তিদের পরিচয় ও ঠিকানা যাচাই করে তারা সবাই ভারতের ওডিশা প্রদেশের জগতসিংপুর সদর উপজেলার তারিকুন্ডা এলাকার বাসিন্দা বলে নিশ্চিত হওয়া যায়। যাচাই শেষে বিএসএফ তাদেরকে ভারতের অভ্যন্তরে ফিরিয়ে নিয়ে যায়।
১ ঘণ্টা আগে
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় মালবাহী দুটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে এক ট্রাকের চালক ও হেলপার গুরুতর আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছেন। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
২ ঘণ্টা আগেদৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সারা দেশে যখন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের কঠোর নজরদারি চলছে, ঠিক সেই সময় কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্ত দিয়ে ১৪ জন ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশে পুশ ইনের চেষ্টা চালিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। তবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) তৎপরতায় ওই চেষ্টা ব্যর্থ হয় এবং পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ১৪ ভারতীয় নাগরিককে জিরো লাইন থেকে ফেরত নিয়ে যায় বিএসএফ।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) দিবাগত গভীর রাতে দৌলতপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর বিওপির সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় নাগরিকদের বাংলাদেশে প্রবেশ করানোর চেষ্টা করা হয়।
বিজিবি সূত্র জানায়, বিএসএফের আহ্বানে কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে একটি পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়নের (৪৭ বিজিবি) অধীন মহিষকুন্ডি বিওপিতে কর্মরত সুবেদার আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের বিজিবি প্রতিনিধিদল এবং ১৪৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের নিউ উদয় কোম্পানি কমান্ডার এসি অনিল কুমারের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের বিএসএফ প্রতিনিধিদল বৈঠকে অংশ নেয়।
বৃহস্পতিবার বেলা ১টা ৪০ মিনিট থেকে ২টা ২০ মিনিট পর্যন্ত সীমান্তের মেইন পিলার ১৫৪/০৭ এস-সংলগ্ন ভারতের অভ্যন্তরে চাইডোবা মাঠে এই পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিজিবির পক্ষ থেকে বাংলাদেশে ভারতীয় নাগরিক পুশ ইনের ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয় এবং অবিলম্বে তাদের ফেরত নেওয়ার দাবি জানানো হয়।
পরে শূন্য লাইনে অবস্থানরত ব্যক্তিদের পরিচয় ও ঠিকানা যাচাই করে তারা সবাই ভারতের ওডিশা প্রদেশের জগতসিংপুর সদর উপজেলার তারিকুন্ডা এলাকার বাসিন্দা বলে নিশ্চিত হওয়া যায়। যাচাই শেষে বিএসএফ তাদেরকে ভারতের অভ্যন্তরে ফিরিয়ে নিয়ে যায়।
পুশ ইনের চেষ্টা করা ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন মৃত হারুন শেখের ছেলে শেখ জব্বার (৭০), তাঁর চার ছেলে শেখ হাকিম (৪৫), শেখ ওকিল (৪০), শেখ রাজা (৩০) ও শেখ বান্টি (২৮); শেখ ওকিলের স্ত্রী শাবেরা বিবি (৩০); শেখ হাকিমের স্ত্রী শমশেরি বিবি (৪০); শেখ রাজার স্ত্রী মাইনু বিবি (২৫); শেখ জব্বারের স্ত্রী আলকনি বিবি (৬০); মৃত শেখ হোসেনের স্ত্রী গুলশান বিবি (৯০); শিশুদের মধ্যে রয়েছে শাকিলা খাতুন (১১), নাছরিন আক্তার (১২), শেখ তাওহিদ (১১) ও আড়াই বছর বয়সী শেখ রহিত।
এই ঘটনায় সীমান্তবাসীর মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। নির্বাচনকালীন স্পর্শকাতর সময়ে ভারতের এমন পুশ ইন চেষ্টাকে কেন্দ্র করে সীমান্ত এলাকায় নানা আলোচনা ও প্রশ্ন উঠেছে।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া ৪৭ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রাশেদ কামাল রনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সীমান্ত দিয়ে কোনোভাবেই অবৈধ অনুপ্রবেশ বা পুশ ইন মেনে নেওয়া হবে না। সীমান্ত নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বিজিবি সব সময় কঠোর অবস্থানে রয়েছে।’

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সারা দেশে যখন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের কঠোর নজরদারি চলছে, ঠিক সেই সময় কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্ত দিয়ে ১৪ জন ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশে পুশ ইনের চেষ্টা চালিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। তবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) তৎপরতায় ওই চেষ্টা ব্যর্থ হয় এবং পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ১৪ ভারতীয় নাগরিককে জিরো লাইন থেকে ফেরত নিয়ে যায় বিএসএফ।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) দিবাগত গভীর রাতে দৌলতপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর বিওপির সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় নাগরিকদের বাংলাদেশে প্রবেশ করানোর চেষ্টা করা হয়।
বিজিবি সূত্র জানায়, বিএসএফের আহ্বানে কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে একটি পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়নের (৪৭ বিজিবি) অধীন মহিষকুন্ডি বিওপিতে কর্মরত সুবেদার আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের বিজিবি প্রতিনিধিদল এবং ১৪৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের নিউ উদয় কোম্পানি কমান্ডার এসি অনিল কুমারের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের বিএসএফ প্রতিনিধিদল বৈঠকে অংশ নেয়।
বৃহস্পতিবার বেলা ১টা ৪০ মিনিট থেকে ২টা ২০ মিনিট পর্যন্ত সীমান্তের মেইন পিলার ১৫৪/০৭ এস-সংলগ্ন ভারতের অভ্যন্তরে চাইডোবা মাঠে এই পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিজিবির পক্ষ থেকে বাংলাদেশে ভারতীয় নাগরিক পুশ ইনের ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয় এবং অবিলম্বে তাদের ফেরত নেওয়ার দাবি জানানো হয়।
পরে শূন্য লাইনে অবস্থানরত ব্যক্তিদের পরিচয় ও ঠিকানা যাচাই করে তারা সবাই ভারতের ওডিশা প্রদেশের জগতসিংপুর সদর উপজেলার তারিকুন্ডা এলাকার বাসিন্দা বলে নিশ্চিত হওয়া যায়। যাচাই শেষে বিএসএফ তাদেরকে ভারতের অভ্যন্তরে ফিরিয়ে নিয়ে যায়।
পুশ ইনের চেষ্টা করা ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন মৃত হারুন শেখের ছেলে শেখ জব্বার (৭০), তাঁর চার ছেলে শেখ হাকিম (৪৫), শেখ ওকিল (৪০), শেখ রাজা (৩০) ও শেখ বান্টি (২৮); শেখ ওকিলের স্ত্রী শাবেরা বিবি (৩০); শেখ হাকিমের স্ত্রী শমশেরি বিবি (৪০); শেখ রাজার স্ত্রী মাইনু বিবি (২৫); শেখ জব্বারের স্ত্রী আলকনি বিবি (৬০); মৃত শেখ হোসেনের স্ত্রী গুলশান বিবি (৯০); শিশুদের মধ্যে রয়েছে শাকিলা খাতুন (১১), নাছরিন আক্তার (১২), শেখ তাওহিদ (১১) ও আড়াই বছর বয়সী শেখ রহিত।
এই ঘটনায় সীমান্তবাসীর মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। নির্বাচনকালীন স্পর্শকাতর সময়ে ভারতের এমন পুশ ইন চেষ্টাকে কেন্দ্র করে সীমান্ত এলাকায় নানা আলোচনা ও প্রশ্ন উঠেছে।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া ৪৭ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রাশেদ কামাল রনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সীমান্ত দিয়ে কোনোভাবেই অবৈধ অনুপ্রবেশ বা পুশ ইন মেনে নেওয়া হবে না। সীমান্ত নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বিজিবি সব সময় কঠোর অবস্থানে রয়েছে।’

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় হাতে টান পড়লেই হিন্দুপাড়ার বাসিন্দাদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করতেন স্থানীয় এক তাঁতী দল নেতা। ধরে নিয়ে যেতেন পুকুরের মাছ, হাঁস, গাছের কলার কাঁদি। কেউ বাধা দিতে গেলেই হাঁসুয়া নিয়ে তেড়ে যেতেন। বের করতেন ছোরা। সবশেষ চাঁদা দিতে না চাইলে একজনকে মারধরের পর হিন্দুপাড়ার বাসিন্দারা থানা
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নিহত শামীমের মামা সাব্বির হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করেছিলাম শিয়ালের আক্রমণে এমন হয়েছে। কিন্তু হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা জানান, এটি শেয়াল-কুকুরের আক্রমণের চিহ্ন নয়, শিশুটির মাথা ও শরীরে আঘাত করা হয়েছে।’
২৩ মিনিট আগে
পটুয়াখালীর দুমকীতে অটোরিকশা ও সিমেন্টবাহী টমটমের সংঘর্ষে দুজন নিহত ও দুজন আহত হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে লেবুখালী-বাউফল মহাসড়কের রাজাখালী (স্থানীয় নাম পিছাখালী ব্রিজ) এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
৩১ মিনিট আগে
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় মালবাহী দুটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে এক ট্রাকের চালক ও হেলপার গুরুতর আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছেন। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
২ ঘণ্টা আগেসিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় মালবাহী দুটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে এক ট্রাকের চালক ও হেলপার গুরুতর আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছেন। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
শুক্রবার সকালে উল্লাপাড়া উপজেলার সলঙ্গা তালতলা এলাকায় ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন আজকের পত্রিকাকে জানান, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা গবাদিপশুর খাবার (ভুসি) বহনকারী একটি ট্রাকের সঙ্গে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা পাথরবোঝাই আরেকটি ট্রাকের সংঘর্ষ হয়। এতে একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে ছিটকে পড়ে এবং অপরটি মহাসড়কের ওপর দাঁড়িয়ে যায়।
দুর্ঘটনার পর রেকার দিয়ে ট্রাক সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আহত চালক ও হেলপারের পরিচয় এখনো জানা যায়নি বলে জানান ওসি।

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় মালবাহী দুটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে এক ট্রাকের চালক ও হেলপার গুরুতর আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছেন। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
শুক্রবার সকালে উল্লাপাড়া উপজেলার সলঙ্গা তালতলা এলাকায় ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন আজকের পত্রিকাকে জানান, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা গবাদিপশুর খাবার (ভুসি) বহনকারী একটি ট্রাকের সঙ্গে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা পাথরবোঝাই আরেকটি ট্রাকের সংঘর্ষ হয়। এতে একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে ছিটকে পড়ে এবং অপরটি মহাসড়কের ওপর দাঁড়িয়ে যায়।
দুর্ঘটনার পর রেকার দিয়ে ট্রাক সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আহত চালক ও হেলপারের পরিচয় এখনো জানা যায়নি বলে জানান ওসি।

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় হাতে টান পড়লেই হিন্দুপাড়ার বাসিন্দাদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করতেন স্থানীয় এক তাঁতী দল নেতা। ধরে নিয়ে যেতেন পুকুরের মাছ, হাঁস, গাছের কলার কাঁদি। কেউ বাধা দিতে গেলেই হাঁসুয়া নিয়ে তেড়ে যেতেন। বের করতেন ছোরা। সবশেষ চাঁদা দিতে না চাইলে একজনকে মারধরের পর হিন্দুপাড়ার বাসিন্দারা থানা
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নিহত শামীমের মামা সাব্বির হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করেছিলাম শিয়ালের আক্রমণে এমন হয়েছে। কিন্তু হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা জানান, এটি শেয়াল-কুকুরের আক্রমণের চিহ্ন নয়, শিশুটির মাথা ও শরীরে আঘাত করা হয়েছে।’
২৩ মিনিট আগে
পটুয়াখালীর দুমকীতে অটোরিকশা ও সিমেন্টবাহী টমটমের সংঘর্ষে দুজন নিহত ও দুজন আহত হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে লেবুখালী-বাউফল মহাসড়কের রাজাখালী (স্থানীয় নাম পিছাখালী ব্রিজ) এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
৩১ মিনিট আগে
পরে শূন্য লাইনে অবস্থানরত ব্যক্তিদের পরিচয় ও ঠিকানা যাচাই করে তারা সবাই ভারতের ওডিশা প্রদেশের জগতসিংপুর সদর উপজেলার তারিকুন্ডা এলাকার বাসিন্দা বলে নিশ্চিত হওয়া যায়। যাচাই শেষে বিএসএফ তাদেরকে ভারতের অভ্যন্তরে ফিরিয়ে নিয়ে যায়।
১ ঘণ্টা আগে